Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সেমেটারি এইচ সংস্কৃতি (Cemetery H culture) ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরাঞ্চলের পাঞ্জাব অঞ্চলের একটি ব্রোঞ্জ যুগের সংস্কৃতি, প্রায় ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে প্রায় ১৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত ছিল এর সময়কাল। এটি হরপ্পীয় (সিন্ধু উপত্যকা) সভ্যতার শেষ পর্যায়ের একটি আঞ্চলিক রূপ ছিল (গুজরাটের রংপুর সংস্কৃতি ও সিন্ধুর ঝুকার সংস্কৃতির পাশাপাশি)।
সেমেটারি এইচ সংস্কৃতি বর্তমান ভারত ও পাকিস্তানের পাঞ্জাব অঞ্চলের আশেপাশে অবস্থিত ছিল। হরপ্পার "এরিয়া এইচ" এলাকায় পাওয়া একটি সমাধিস্থলের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়। সংস্কৃতির ধ্বংসাবশেষের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে প্রায় ১৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত।
রফিক মুঘলের মতে, ১৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ হিসেবে সিন্ধু সভ্যতার উত্তরাঞ্চল থেকে পাঞ্জাব দশার অংশ সেমেটারি এইচ সংস্কৃতি বিকশিত হয়।[1] পাঞ্জাব দশা হচ্ছে সিন্ধু সভ্যতার ঐতিহ্যের স্থানীয়করণ যুগ বা "শেষ হরপ্পীয় পর্যায়" এর তিনটি সাংস্কৃতিক দশার একটি।[2] [3] কেনোয়ারের মতে, সেমেটারি এইচ সংস্কৃতি "পূর্বে প্রস্তাবিত প্রারম্ভিক হরপ্পীয় দশার সাংস্কৃতিক ধারাবাহিকতার ছেদ, নগর পতন, বহির্জাতীয় আক্রমণ বা স্থান পরিত্যাগকে নির্দেশ করেনা, বরং এটি প্রারম্ভিক হরপ্পীয় দশায় যে বসতি সংগঠনের নকশা দেখা যায় তা থেকে মনোযোগের স্থানান্তরনকে নির্দেশ করে।"[4] কেনেডি এবং ম্যালোরি ও অ্যাডামসের মতে, সেমেটারি এইচ সংস্কৃতি হরপ্পার পূর্ববর্তী জনসংখ্যার সাথে "স্পষ্ট জৈবিক সম্পৃক্ততা" প্রদর্শন করে॥ [5] [6]
সেমেটারি এইচ সংস্কৃতির কিছু বৈশিষ্ট্য সোয়াত সংস্কৃতির সাথে যুক্ত করা হয়েছে, এই সোয়াত বা গান্ধার গ্রেভ সংস্কৃতি ভারতীয় উপমহাদেশ অভিমুখে ইন্দো-আর্য অভিপ্রায়ণের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।[6] পারপোলার মতে, সেমেটারি এইচ সংস্কৃতি ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ইন্দো-আর্য অভিপ্রায়ণের প্রথম তরঙ্গের প্রতিনিধিত্ব করে, যেটার পর ১৭০০-১৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পাঞ্জাবে ইন্দো-আর্যদের অভিপ্রায়ণ ঘটে। [7] কোছারের মতে, পাঞ্জাবে হরপ্পীয় সেমেটারি এইচ দশা (২০০০-১৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) প্রতিষ্ঠায় চতুর্থ সোয়াত (গান্ধার গ্রেভ সংস্কৃতির চতুর্থ দশা) এর অবদান ছিল, যেখানে পঞ্চম সোয়াতের ঋগ্বেদী ইন্দো-আর্যগণ সেমেটারি এইচ সংস্কৃতিকে নিজেদের মধ্যে শোষণ করে নেয় এবং এর ফলে পেইন্টেড গ্রে অয়ার সংস্কৃতির (১৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) উত্থান ঘটে।
গান্ধার গ্রেভ সংস্কৃতি এবং অকার কালারড পটারি সংস্কৃতিকে সাথে নিয়ে সেমেটারি এইচ সংস্কৃতিকে কতিপয় পণ্ডিত বৈদিক সভ্যতা গঠনের একটি উৎপাদক বা ফ্যাক্টর বলে মনে করেন।[8]
এই সংস্কৃতির বিশিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে:[9]
সেমেটারি এইচ অন্তেষ্টিক্রিয়ার শবাধারকে (দেহাবশেষ রাখার পাত্র) বৈদিক পুরাণের দৃষ্টিতে দেখেছেন: উদাহরণস্বরূপ, ফাঁপা শরীরের ময়ূর এবং ভেতরের একজন ক্ষুদ্র মানুষকে, মৃতের আত্মা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, এবং এখানে একটি শিকারী কুকুর দেখা যায় যাকে মৃত্যু দেবতা যমের শিকারী কুকুর (Hound) হিসেবে বিবেচনা করা যায়।[6] [11] এটি এই সময়ের মধ্যে নতুন ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রবর্তন নির্দেশ করতে পারে, যদিও প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ এই অনুমানকে সমর্থন করে না যে, সেমেটারি এইচ সংস্কৃতির জনগণ হরপ্পা নগরের ধ্বংসকারী ছিল।[6]
ভারতে শ্মশান প্রথমে কবরস্থান এইচ সংস্কৃতিতে সত্যায়িত হয়, যা পূর্বে বেদে বর্ণিত একটি অনুশীলন। ঋগ্বেদ এ, উঠতি অনুশীলন একটি রেফারেন্স রয়েছে আরভি 10 .15.14, যেখানে পূর্বপুরুষদের "উভয় দাহ (agnidagdhá-) এবং uncremated (ánagnidagdha-)" প্রার্থনা করছে।
ভারতে প্রথম অগ্নিদাহ সেমেটারি এইচ সংস্কৃতিতেই সংঘটিত হয়েছিল, যে অগ্নিদাহের কথা বেদে বর্ণিত হয়েছে। ঋগ্বেদের ১০/১৫/১৪ শ্লোকে এই উদীয়মান চর্চার উল্লেখ পাওয়া যায়, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পূর্বপুরুষদেরকে "অগ্নিদগ্ধ" (আগুনে পুড়িয়ে) এবং "অনগ্নিদগ্ধ" (আগুনে না পুড়িয়ে) উভয় উপায়েই সমাহিত করা হত।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.