শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
সির দরিয়া
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
সির দরিয়া মধ্য এশিয়ার একটি নদী। এটি কিরগিজস্তান ও পূর্ব উজবেকিস্তানের তিয়ান সান পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন হয় এবং উজবেকিস্তান এবং দক্ষিণ কাজাখস্তানের মধ্য দিয়ে ২২১২ কিলোমিটার (১৩৭৪ মাইল) পশ্চিমে এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে আরাল সাগরের উত্তরে মিলিত হয়। এটি আরাল সাগরের এন্ডোরিচিক বেসিনে দুটি প্রধান নদীর অন্যতম (অন্যটি আমু দরিয়া)। সোভিয়েত যুগে, উভয় নদী জুড়ে বিস্তৃত সেচ প্রকল্পের নির্মাণ করা হয়, যার ফলে সোভিয়েত যুগের পরে, একদা পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম হ্রদ আরাল সাগর বর্তমানে প্রায় অবলুপ্ত।
Remove ads
Remove ads
নাম
নামের দ্বিতীয় অংশ (দরিয়া دریا)-এর অর্থ ফার্সি ভাষায় "সমুদ্র"। অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে বর্তমান নামটির অবহিতি পাওয়া যায়।
নদীটির প্রাচীনতম যে উল্লেখ পাওয়া যায়, তা হল, গ্রিক ভাষায় জাকার্তেস / ˌdʒæɡzɑːrtiːz / বা Iaxartes / ˌaɪ.əɡzɑːrtiːz/ (Ἰαξάρτης); এই নামের উল্লেখ পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রাচীন গ্রীক পুঁথিতে, এমনকি, আলেকজান্ডারের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন সূত্রগুলোতেও। গ্রিক নামটি পুরানো ফার্সি নাম ইয়খশা আর্তাকে ("সত্যিকারের মুক্তো") নির্দেশ করে; সম্ভবত হিমবাহ থেকে প্রবাহিত, জলরাশির রঙের কারণে নদীটির এই নামকরণ করা হয়। নদীটির তুর্কি নাম ছিল, ইয়িঞ্চু অথবা "মোতি নদী", যা আরব বিজয়ের আগে পর্যন্ত এর প্রচলিত নাম ছিল।
মুসলিম বিজয় লাভের পর, নদীটি সেয়হান (سيحون) হিসেবে সর্বত্র পরিচিতি লাভ করে। সেয়হান শব্দের অর্থ জান্নাত থেকে প্রবাহিত চারটি নদীর অন্যতম।[২] নদীটির বর্তমান স্থানীয় নাম, সির (শিয়ার), ষোড়শ শতকের আগে কোথাও পাওয়া যায় না। সপ্তদশ শতকে ইতিহাসবিদ ও খিবার শাসক আবু আল-গাজী বাহাদুর খান, আরাল সাগরকে "শিরের সমুদ্র" বা "সির চেঙ্গিজি" বলে অভিহিত করেন।
Remove ads
ভূগোল
সারাংশ
প্রসঙ্গ
নদীটির উৎপত্তি কির্গিজস্তান ও পূর্ব উজবেকিস্তানের তিয়ান সান পর্বতমালার প্রধানত দুটি আলাদা নদী প্রবাহ থেকে যথা: নারিন নদী এবং কারা দারিয়া। এই নদী দুটি ফার্গানা উপত্যকার উজবেক অংশে একত্রিত হয় এবং প্রায় ২,২১২ কিলোমিটার (১৩৭৪ মাইল) পশ্চিম এবং উত্তর- পশ্চিমে উজবেকিস্তান এবং দক্ষিণ কাজাখস্তানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আরাল সাগরে গিয়ে মিশে। সিরা দরিয়া ৮০০,০০০ বর্গ কিলোমিটার (৩১০,০০০ বর্গ মাইল) এলাকা অতিক্রম করে, কিন্তু ২০০,০০০ বর্গ কিলোমিটার (৭৭,০০০ বর্গ মাইল) প্রকৃতপক্ষে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে নদীটির জলপ্রবাহে; এমনকি, এর দুটি বৃহত্তম উপনদী, তালাস এবং চু, নদীতে পৌঁছানোর আগেই শুকিয়ে যায়। নদীটির বার্ষিক প্রবাহ ৩৭ ঘন কিলোমিটার (৩০,০০০,০০০ একর-ফিট)- যা এর যমজ নদী আমু দরিয়ার প্রবাহের প্রায় অর্ধেক।
প্রবাহপথে, সির দরিয়া কোকান্দ, খুজান্ড, কিজিলোর্ড ও তুর্কিস্তানের শহরগুলো সমেত সমগ্র মধ্য এশিয়ায় সর্বাধিক উৎপাদনশীল তুলো-উৎপাদক অঞ্চলকে সেচ প্রদান করে।
ঐতিহাসিকভাবে, বিভিন্ন সময়ের স্থানীয় সরকাররা এই নদীটির সাথে সম্পর্কিত খাল ব্যবস্থার উন্নতিসাধন এবং পরিবর্ধন করেছেন। এই খালগুলোই এই শুষ্ক অঞ্চলের কেন্দ্রীয় গুরুত্ব। সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকের গোড়ার দিকে অনেক খাল অপব্যবহারের শিকার হয়, কিন্তু 'কোকান্দের খানত' উনিশ শতকে প্রাথমিকভাবে উচ্চ ও মধ্য অববাহিকা অঞ্চলের খালগুলোর পুনর্গঠন ও উন্নতিসাধন করেন।
Remove ads
পরিবেশগত ক্ষতি
সোভিয়েত যুগে তুলো ও ধান উৎপাদক কৃষি ক্ষেত্রগুলোতে সেচকার্যের জন্যে, মধ্য ও নিম্ন সির দরিয়া অঞ্চলে, সেচ খালগুলোর ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করা হয়, যা এই অঞ্চলের পরিবেশে দীর্ঘকালীন ক্ষতিসাধন করেছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] নদী থেকে উত্তোলিত জলের পরিমাণ এমন ছিল যে, আর কিছু বছরের মধ্যে কোন জল আরল সাগরে পৌঁছেনি, যা কিনা উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের আমু দারিয়ার মতো পরিস্থিতি।
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ

মধ্য এশিয়ার স্তেপ অঞ্চলের ইতিহাসে সির দরিয়ার উত্তরাংশের ইতিহাস পাওয়া যায়। মহান আলেকজান্ডারের যুগের সময়, সির দরিয়া হেলেনিক বিজয়গুলোর উত্তরাঞ্চলীয় সীমা হিসেবে পরিচিত ছিল এবং এটি একটি বিখ্যাত যুদ্ধ জ্যাকার্তাসের যুদ্ধের স্থান হিসেবে চিহ্নিত। সির দরিয়ার উপকূলে ছিল সাইরাস শহর (গ্রিকের সাইপ্রোলিস) শহর যেখানে মহান আলেকজান্ডার একটি গ্যারিসন স্থাপন করেছিলেন এবং ৩২৯ খ্রীষ্ট-পূর্বাব্দে তিনি 'আলেকজান্দ্রিয়া এসচেট' অর্থাত "দূরতম আলেকজান্ডারিয়া" নামকরণ করেন। মুসলিম বিজয়ের পর থেকেই এই শহরটি খুজান্দ বলে পরিচিতি লাভ করে।
উনিশ শতকের মাঝামাঝি রুশ সাম্রাজ্যের তুর্কমেনিস্তান জয়ের সময়, সির দারিয়া নদীতে বাষ্পীয় জলপথ পরিবহনের সূচনা হয়, যা ১৮৪৭ থেকে ১৮৮২ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। এই সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদীবন্দর ছিল কাজালিন্স্ক বা কাজালি।
সোভিয়েত যুগে, একটি সম্পদ-ভাগাভাগি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়, যার মধ্যে কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তান গ্রীষ্মকালে কাজাখস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তানের সাথে আমু দরিয়া ও সির দারিয়া নদী থেকে উৎপন্ন জল ভাগ করে নিত। পরিবর্তে, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তান কাজাক, তুর্কমেনীয় এবং উজবেক কয়লা, গ্যাস এবং শীতকালে বিদ্যুৎ সরবরাহের ভাগ পেত। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই সিস্টেমটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং কেন্দ্রীয় এশীয় দেশগুলো এটি পুনর্বহাল করতে ব্যর্থ হয়। অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, দরিদ্র জল ব্যবস্থাপনা এবং পুরানো সেচ পদ্ধতি সবই এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।[৩]
Remove ads
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads