Loading AI tools
বাংলাদেশী আঞ্চলিক গানের শিল্পী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
শেফালী ঘোষ (জানুয়ারি ১১, ১৯৪১ - ডিসেম্বর ৩১, ২০০৬) ছিলেন একজন বাংলাদেশী আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী। তিনি বাংলাদেশের চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরেছেন যা উপমহাদেশের সংগীতকে সমৃদ্ধ করেছে।[2] প্রায় পাঁচ দশকের সংগীত জীবনে তিনি প্রায় সহস্রাধিক গান গেয়েছেন। তার গাওয়া গান নিয়ে দুই শতাধিকের বেশি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বেশ কয়েকটি বাংলা চলচ্চিত্রের গানেও প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে কণ্ঠ দিয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের প্রায় ২০টিরও বেশি দেশে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন।[1][3]
শেফালী ঘোষ | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্ম | বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম, পাকিস্তান (অধুনা বাংলাদেশ) | ১১ জানুয়ারি ১৯৪১
মৃত্যু | ৩১ ডিসেম্বর ২০০৬ ৬৫) বাংলাদেশ | (বয়স
ধরন | আঞ্চলিক সঙ্গীত |
পেশা | গায়ক |
লেবেল | ইএমআই পাকিস্তান,[1] মিউজিক ফেয়ার |
তার গাওয়া বিখ্যাত গানের মধ্যে রয়েছে এম এন আখতার রচিত এবং সুরারোপিত "যদি সুন্দর একখান মুখ পাইতাম", আহমেদুল হক সিদ্দিকী রচিত ও সুরে "ও রে সাম্পানওয়ালা", মলয় ঘোষ দস্তিদার রচিত ও সুরে "ছোট ছোট ঢেউ তুলি" প্রভৃতি। তিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সাংস্কৃতিক ভূমিকা রেখেছেন। সঙ্গীতের পাশাপাশি যাত্রা এবং মঞ্চনাটকেও তার নিয়মিত অংশগ্রহণ ছিল।[1]
শেফালী ঘোষ ১৯৪১ সালে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগোপাড়ায় একটি বাঙালি কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই তার শৈশব কেটেছে। পাঁচ ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়।[1][3] তার পিতার নাম কৃষ্ণ গোপাল ঘোষ এবং মাতার নাম আশালতা ঘোষ। শেফালী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপন শেষে ভর্তি হন স্থানীয় মুক্তাকেশী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
পরিবারের অনুপ্রেরণায় বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন সময়ে তার গান গাওয়ার এবং শেখার সূত্রপাত ঘটে। তার গানের প্রথম ওস্তাদ ছিলেন তেজেন সেন। পরবর্তীতে অধ্যক্ষ ওস্তাদ শিবশঙ্কর মিত্র, জগদানন্দ বড়ুয়া, নীরদ বড়ুয়া, মিহির নদী, গোপালকৃষ্ণ চৌধুরীসহ বিভিন্ন সংগীতজ্ঞের কাছে তিনি শিক্ষাগ্রহণ করেন।[1] শিল্পীজীবনের সূচনালগ্নে প্রথমে রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত এবং আধুনিক গান শিখতে শুরু করলেও এক পর্যায়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন তিনি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামের লোকসঙ্গীত- অর্থাৎ আঞ্চলিক গান, পল্লিগীতি, মাইজভান্ডারী গান, পীর মুর্শিদের শানে রচিত গান গাওয়ার দিকে আগ্রহী হয়ে উঠেন।[4] বলতে গেলে, জীবনের শেষ পর্যন্ত তিনি রমেশ শীল, আবদুল গফুর হালী, এম এন আখতার, কবিয়াল এয়াকুব আলী, সৈয়দ মহিউদ্দিন, অচিন্ত্য কুমার চক্রবর্তী, চিরঞ্জিৎ দাশ, মোহাম্মদ নাসির, মোহনলাল দাশ প্রমুখ গীতিকার ও সংগীতজ্ঞের গান বেশি গেয়েছেন।
১৯৬৩ সালে, শেফালীর তখন ২২ বছর। চট্টগ্রাম বেতারের তৎকালীন আঞ্চলিক পরিচালক শেফালী ঘোষ এবং আঞ্চলিক গানের সম্রাট শ্যামসুন্দর বৈষ্ণবকে আঞ্চলিক ভাষায় গান গাইতে প্রস্তাব জানালেন। এতে দুইজনই রাজি হলেন এবং তাদের সেই দ্বৈত কণ্ঠের গান ইথারে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে।[5][6]
১৯৭০ সালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে শেফালী ঘোষ শিল্পী হিসেবেই অংশ নেন। তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত শিল্পী হিসেবে গান গেয়ে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সাহায্য সংগ্রহ করেন।[1]
১৯ বছর বয়সে শেফালী ঘোষ গান শেখার জন্য চট্টগ্রাম শহরে আসেন। সেখানে তার পরিচয় ঘটে সংগীতানুরাগী ননী গোপাল দত্তর সঙ্গে। পরবর্তীতে পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের বিয়ে হয়। শেফালী ঘোষের এক ছেলে রয়েছে।[7]
শেফালী ঘোষ জীবদ্দশায় তিনটি এবং মৃত্যুর পর একটি জাতীয় পুরস্কার পান[1][3][5]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.