Loading AI tools
বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
শামসুর রহমান শরীফ (পূর্ণনাম: শামসুর রহমান শরীফ ডিলু; ১০ মার্চ ১৯৪০- ০২ এপ্রিল ২০২০) পাবনা জেলা বাসিন্দা এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ পাবনা জেলা শাখার ২০১৫-২০১৮ সেশনের জেলা সভাপতি ছিলেন।[1] তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করেন এবং ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[2] তিনি শেখ হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।[3][4] জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ভূমিমন্ত্রী থাকাকালীন তার ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে[5] জাতীয় দৈনিক ও বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলে[6] প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যদিও তার পরিবার তা অস্বীকার করেছে।[7] তার সংসদীয় এলাকা পাবনা-৪-এর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রূপপুর বালিশকাণ্ড ঘটেছিল।[8][9]
শামসুর রহমান শরীফ | |
---|---|
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | শামসুর রহমান শরীফ ১০ মার্চ, ১৯৪০ পাবনা |
মৃত্যু | ২ এপ্রিল ২০২০ |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
পেশা | সংসদ সদস্য, মন্ত্রী |
ধর্ম | ইসলাম |
ডাকনাম | ডিলু |
শামসুর রহমান শরীফ ১৯৪০ সালের ১০ মার্চ পাবনা জেলার সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর শানিরদিয়াঢ় গ্রামের মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন।[10] তার পিতার নাম লুৎফর রহমান এবং মাতার নাম জোবেদা খাতুন। তার পৈতৃক নিবাস পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের লক্ষ্মীকুন্ডা গ্রামে।[11] তার শৈশব-কৈশোর কাটে লক্ষ্মীকুন্ডায় ও পাবনা সদরে। শামসুর রহমান শরীফ লক্ষীকুন্ডা ফ্রী প্রাইমারি স্কুল ও পাকুড়িয়া মিডল ইংলিশ স্কুলে পড়াশুনা শেষ করে পাবনা জেলা স্কুলে ভর্তি হন। পাবনা জেলা স্কুল থেকে ১৯৫৭ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর পাবনা এ্যাডওয়ার্ড কলেজ থেকে ১৯৬০ সালে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৬২ সনে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।[10]
তার রাজনৈতিক জীবনে প্রথমসাফল্য আসে ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষিকুন্ডা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। [10] তারপরই তিনি সক্রিয় ভাবে রাজনিতীতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি উক্ত ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে ক্রমান্নয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি ও পরে ২০15 সালে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির মনোনীত হন এবং বর্তমানেও সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।[11] এর আগে তিনি ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর তৎকালীন সরকারের আমলে টানা ৫ বছর কারারুদ্ধ ছিলেন এবং এরশাদ সরকারের আমলেও তাকে কারাবরণ করতে হয়। তিনি সর্বপ্রথম ১৯৭৯ সালে পাবনা-৪ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং পরাজিত হন। পরে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে আবার পরাজিত হন।[10] ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তে পাবনা-৪ আসনে তাকে মনোনয়ন না দিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিববে মনোনয়ন দেয় আওয়ামীলীগ। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে দল তাকে মনোনয়ন দিলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১, ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[12] ২০১৯ সালে তিনি সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়েই তার সংসদীয় এলাকায় সারা দেশে আলোচিত রুপপুরে বালিশকাণ্ডের ঘটনা ঘটে যা থেকে বিভ্রান্ত না হতে[13] দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছিল পূর্ত মন্ত্রণালয়। যদিও পরবর্তীকালে অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় গণপূর্ত বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলম[14][15] সহ ১৩জনকে কারাগারে পাঠিয়েছিল আদালত।[16]
ভারত বিভাগের পর নব্য স্বাধীন হওয়া পাকিস্তানে মাতৃভাষার দাবীতে আন্দোলন শুরু হয়। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার দাবী জানায় ও আন্দোলন চালাতে থাকে। শামসুর রহমান শরীফ ভাষা আন্দোলনে যোগদান করেন। তখন তিনি পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।[10] ভাষার দাবীতে মিছিল করায় তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে ও জেলে বন্দী রাখে। ১৯৫৯ সালে আইয়ূব খানের মার্শাল ল' বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয়। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে গ্রেফতার হন। ১৯৬৭ সালে আবারও তিনি কারাবরণ করেন ছয় দফা আন্দোলনের প্রচার করতে গিয়ে। ১৯৬৯ এর গণ অভ্যুত্থানে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিলো। ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ পাবনার মাধপুরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। তার নেতৃত্বে তার বাহিনীর ১৭ জন মুক্তিযোদ্ধা গুলিতে মারা যায় এবং পাকিস্তানি সেনাদের অনেকেই ঐ যুদ্ধে হতাহত হয়। তিনি ৭ নং সেক্টরের অধীনে কাজীপাড়ায় সেনাবাহিনীর ব্রিগেড লিডারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। ভারতের জলঙ্গীতে তার ক্যাম্প ছিল।[12]
শামসুর রহমান শরীফ ডিলু-এর পুত্র শিরহান শরীফ তমাল পাবনায় এক সাংবাদিককে আক্রমণ করার জন্য গ্রেফতার হয়েছিলেন। তিনি ঈশ্বরদী উপজেলা যুব লীগের সভাপতি ছিলেন। ঘটনার পর তাকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে আক্রমণ ও লুণ্ঠনের জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা আছে এবং তমাল মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ও পরিচিত।[17][18]
ব্যক্তি জীবনে শামসুর রহমান শরীফ ৫ মেয়ে ও ৫ ছেলের পিতা।[11] তার স্ত্রীর নাম কামরুন্নাহার শরীফ।[10]
৮০ বছর বয়সে ২ এপ্রিল ২০২০ সালে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ।[19]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.