রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে ২.৪ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যা বাংলাদেশের পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যার প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালে কার্যক্রম শুরু করবে।[1][2] এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি রাশিয়ার রোসাটোম স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি কর্পোরেশন-এর সহযোগিতায় নির্মিত হয়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র | |
---|---|
দেশ | বাংলাদেশ |
অবস্থান | রূপপুর, ঈশ্বরদী, পাবনা |
স্থানাঙ্ক | ২৪°৪′০″ উত্তর ৮৯°২′৫০″ পূর্ব |
নির্মাণ শুরু | ৩০ নভেম্বর ২০১৭ |
নির্মাণ ব্যয় | ১,১৩,০৯২ কোটি টাকা |
মালিক | বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন |
পরিচালক | নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বাংলাদেশ লিমিটেড |
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র | |
চুল্লির ধরন | চাপযুক্ত জল চুল্লি |
চুল্লী সরবরাহকারী | রোসাটম |
কুলিং উৎস | পদ্মা নদী |
বিদ্যুৎ উৎপাদন | |
তৈরি ও মডেল | ভিভিইআর-১২০০/৫২৩ |
Units under const. | ২ × ১২০০ মেগাওয়াট |
Units planned | ২ |
তাপীয় ক্ষমতা | ২ × ৩২০০ মেওতাপীয় |
নামফলক ধারণক্ষমতা | ২৪০০ মেগাওয়াট |
ওয়েবসাইট www |
বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা থেকে ২'শ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার অন্তর্গত পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর গ্রামে নির্মিত হয় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।[3] প্রকল্পটি পদ্মা নদীর উপরে নির্মিত হার্ডিঞ্জ ব্রীজ ও লালন শাহ সেতুর পাশেই নদীতীরে অবস্থিত।
১৯৬১ সালে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ১৯৬২ সালে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার পদ্মা নদীর পার্শ্ববর্তী রূপপুরকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থান হিসেবে নির্বাচন করা হয়। একাধিক সমীক্ষার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের যথার্থতা যাচাই করা হয়। এই প্রকল্পের জন্য ২৬০ একর এবং আবাসিক এলাকার জন্য ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ১৯৬৮ সালের মধ্যে ভূমি উন্নয়ন, অফিস, রেষ্ট হাউজ, বৈদ্যুতিক উপ-কেন্দ্র ও কিছু আবাসিক ইউনিটের নির্মাণ কাজ আংশিক সম্পন্ন করা হয়। ১৯৬৯ সালে ২০০ মেগা-ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাতিল করে দেয়।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ১৯৭৭-১৯৮৬ সালে "মেসার্স সোফরাটম" কর্তৃক একটি সম্ভাব্যতা অধ্যয়ন চালানো হয় ও এর মাধ্যমে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন যৌক্তিক বলে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। পরে একনেক কর্তৃক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ১২৫ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি।
১৯৮৭ সালে জার্মানী ও সুইজারল্যান্ডের দুইটি কোম্পানি কর্তৃক দ্বিতীয়বার সম্ভাব্যতা অধ্যয়ন করা হয়। এ অধ্যয়নে ৩০০-৫০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
২০০৯ সালে "রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে অপরিহার্য কার্যাবলী সম্পাদন" শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রাথমিক কার্যাবলী ও পারমাণবিক অবকাঠামো উন্নয়নের কার্যক্রম শুরু করা হয়। ২০০৯ সালের ১৩ মে, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং রুশ ফেডারেশনের রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশন (রোসাটোম)-এর মধ্যে ‘পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার’ বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। ২০১০ সালের ২১ মে, বাংলাদেশ সরকার এবং রুশ ফেডারেশন সরকারের মধ্যে ‘পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার’ বিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি জাতীয় কমিটি, মন্ত্রী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সভাপতিত্বে কারিগরি কমিটি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ ও ৮টি উপগ্রুপ গঠন করা হয়।
২০১০ সালের ১০ নভেম্বর, জাতীয় সংসদে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ২০১১ সালের ৯-১৫ নভেম্বর, বাংলাদেশের পারমাণবিক অবকাঠামোর সার্বিক অবস্থা মূল্যায়নের জন্য আইএইএ সমন্বিত পারমাণবিক অবকাঠামো পর্যালোচনা (আইএনআইআর) মিশন পরিচালিত হয়। ২০১১ সালের ২ নভেম্বর, বাংলাদেশ এবং রুশ ফেডারেশন সরকারের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত আন্তরাষ্ট্রিয় সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১২ সালের ১৯ জুন, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ পাশ করা হয়।
২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর রাশিয়া ফেডারেশন সফরকালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রাক-প্রারম্ভিক পর্যায়ের কার্যাদি সম্পাদনের জন্য রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। স্বাক্ষরিত আন্তরাষ্ট্রীয় চুক্তি এবং রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণ চুক্তির ভিত্তিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন (১ম পর্যায়) প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রথম পর্যায় কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর,পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিচালনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির বিধান সম্বলিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আইন-২০১৫ জারী করা হয়। ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অন্যান্য পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার জন্য নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড গঠন করা হয়। ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের মূল পর্যায়ের কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সাধারণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
২০১৬ সালের ১০-১৪ মে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পারমাণবিক অবকাঠামো প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আইএইএ-এর সুপারিশ বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করার জন্য আইএনআইআর ফলো-আপ মিশন পরিচালনা করা হয়। ২১ জুন, ২০১৬ তারিখে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থান লাইসেন্স প্রদান করা হয়। ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মূল পর্যায়ের কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং রুশ ফেডারেশন সরকারের মধ্যে রাষ্ট্রীয় ক্রেডিট চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন বিষয়ে রুশ ফেডারেশন ও বাংলাদেশ পক্ষের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ সমন্বয় কমিটির একটি সভা ২০১৬ সালের ২২ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৭ সালের ১৫ মার্চ, বাংলাদেশ ও রুশ ফেডারেশনের মধ্যে “রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্পেন্ট ফুয়েল রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিতে পারস্পরিক সহায়তা” সংক্রান্ত একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার এবং গ্লোবাল সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার এনার্জি পার্টনারশিপ, ভারতের পরমাণু শক্তি সংস্থা, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পেন্ট ফুয়েল রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও রুশ ফেডারেশনের সাথে ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট এক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর, একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নকশা ও নির্মাণ লাইসেন্স প্রদান করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ নং ইউনিটের প্রথম কংক্রিট ঢালাইয়ের উদ্বোধন করেন।[4]
২০২১ সালের ১০ অক্টোবর এবং ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যথাক্রমে এই কেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লিপাত্র বা রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেন। উভয় অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাবনার ঈশ্বরদীতে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। রূপপুরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রুশ আণবিক শক্তি সংস্থা-রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সিই লিখাচেভ।[5][6]
২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর, আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ রাশিয়ার কাছে থেকে পারমাণবিক জ্বালানির প্রথম চালান গ্রহণ করে। এ উপলক্ষে একটি ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যাতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন উপস্থিত ছিলেন।[7]
২০২৪ সালের ১৩ অক্টোবর প্রথম ইউনিট ও ২০২৫ সালের ১৭ অক্টোবর দ্বিতীয় ইউনিট চূড়ান্ত হস্তান্তর করার কথা থাকলেও ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকল্পের সময়সীমা দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৭ সাল পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।[8]
২০১৯ সালে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের জন্য আসবাবপত্র ক্রয়কালীন ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সেসময়, একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, প্রকল্পে ক্রয়কৃত একেকটি বালিশের দাম দেখানো হয় প্রায় ছয় হাজার টাকা এবং নিচ থেকে উপরে উঠানোর খরচ দেখানো হয় প্রায় সাতশত টাকা। এটি নিয়ে সারা দেশজুড়ে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ বিষয়ে তদন্ত শুরুর ঘোষণা দেয়।[9][10][11]
এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্বাচিত পারমাণবিক চুল্লিতে নিম্নবর্ণিত পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকবে:[12]
পারমাণবিক চুল্লির পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রথমটি হচ্ছে ফুয়েল পেলেট, যা অতি উচ্চ তাপমাত্রায় তার জ্বালানী বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে পারে। ফুয়েল পেলেট সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরী করা হয়, ফলে তেজস্ক্রি ফিশন প্রোডাক্টসমূহ পেলেটের ভেতরে অবস্থান করে।
ফুয়েল পেলেটগুলো জিরকোনিয়াম অ্যালয়ের তৈরী ফুয়েল ক্ল্যাডিং দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। বিশেষ কোন কারণে সামান্য পরিমাণ ফিশন প্রোডাক্ট ফুয়েল পেলেট থেকে বের হয়ে আসলেও তা এই ক্ল্যাডিং এ ভেদ করতে পারবে না।
নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের জন্য বিশেষ মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পুরু ইস্পাতের প্রেশার ভেসেল তৈরী করা হয় যা, উচ্চ তেজষ্ক্রিয় অবস্থাতেও দীর্ঘস্থায়ী হয়।
রিইনফোর্সড কনক্রিট দিয়ে ১.২ মিটার পুরুত্বের প্রথম কন্টেইনমেন্ট ভবন তৈরী করা হয়, যা যেকোন পরিস্থিতিতে তেজস্ক্রিয়তা পরিবেশে ছড়িয়ে পড়া থেকে বিরত রাখে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা অধিকতর জোরদার করার জন্য আধুনিক নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টগুলোতে প্রথম কন্টেইনমেন্ট ভবন-এর পর আরও ০.৫ মিটার পুরুত্বের আরও একটি কন্টেইনমেন্ট ভবন যুক্ত করা হয় যা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিমান দুর্ঘটনা ইত্যাদি থেকে প্লান্টকে সুরক্ষা করে।
এই পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যের কারণে মনুষ্য সৃষ্ট ঘটনা/দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন- শাক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়, ভুমিকম্প, বন্যা,জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদিও প্রভাব মোকাবেলায় সক্ষম থাকবে এই পারমাণবিক চুল্লি।