Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মেজর রাওশন ইয়াজদানি ভূঁইয়া (মৃত্যু ১৯৮৮) একজন বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যায় অংশ নেওয়ায় বাংলাদেশ সরকার তাকে অভিযুক্ত করেন এবং ১৯৮১ সালে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। [1][2]
রওশন ইয়াজদানী ভূঁইয়া | |
---|---|
মৃত্যু | ১৯৮১ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | বীর প্রতীক |
রওশন ইয়াজদানী ভূঁইয়ার জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার ভাটপিয়ারি গ্রামে। তার বাবার নাম ফরহাদ হোসেন ভূঁইয়া এবং মায়ের নাম রওশন আরা খাতুন। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। [3]
রাওশন ইয়াজদানি ভূঁইয়া ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি চাষাবাদে জড়িত থাকতে চেয়েছিলেন তাই ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পরে যখন তার বেশিরভাগ সহপাঠী সামরিক বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়েন তখন তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহে পড়তে যান ।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন রওশন ইয়াজদানী ভূঁইয়া। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে যোগ দেন। নিজ এলাকায় প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারীতে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন। সেখানে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শেষে তাকে পাঠানো হয় উচ্চতর প্রশিক্ষণে। সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মুক্তিবাহিনীর ১১ নম্বর সেক্টরের মানকারচর সাবসেক্টরে যুদ্ধ করেন। কোদালকাঠির যুদ্ধে তিনি যথেষ্ট রণকৌশল প্রদর্শন করেন। অক্টোবর মাসে ৮ নম্বর সেক্টরের বানপুর সাবসেক্টরে যোগ দেন। নভেম্বর মাসের শেষ দিকে তাকে দ্বিতীয় বাংলাদেশ ওয়ারকোর্সে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওয়ারকোর্সের প্রশিক্ষণ চলা অবস্থায় দেশ স্বাধীন হয়ে যায়। রওশন ইয়াজদানী ভূঁইয়া স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
১৯৭১ সালের ১৭ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার অন্তর্গত দত্তনগর কৃষি ফার্ম এলাকা ছিল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা। এখানে ছিল সরকারি কৃষি ফার্ম। তখন এই কৃষি ফার্ম বেশ প্রসিদ্ধ ছিল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনী শক্তিশালী একটি প্রতিরক্ষা ঘাঁটি স্থাপন করে। এই ঘাঁটিতে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনারা সহযোগী রাজাকারদের নিয়ে নিয়মিত সীমান্ত এলাকায় টহল দিত। নভেম্বর মাসের প্রথম দিক থেকে মুক্তিবাহিনী সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে। তাদের লক্ষ্য ছিল সীমান্ত এলাকা থেকে পাকিস্তানি সেনাদের বিতাড়ন করা। এরই ধারাবাহিকতায় মুক্তিবাহিনীর ৮ নম্বর সেক্টরের বানপুর সাবসেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা ১৭ নভেম্বর ভোররাতে দত্তনগর কৃষি ফার্মে আক্রমণ করেন। মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন তিনটি দলে বিভক্ত। একটি দল তেঁতুলিয়ার দিক থেকে, দ্বিতীয় দল নারায়ণপুরের দিক থেকে, তৃতীয় দল হাসনাবাদের দিক থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দত্তনগর কৃষি ফার্মের ক্যাম্পে সাঁড়াশি আক্রমণ চালায়। ত্রিমুখী আক্রমণে পাকিস্তানি সেনারা দিশেহারা হয়ে পড়ে। এই যুদ্ধে রওশন ইয়াজদানী ভূঁইয়া অসীম সাহস ও রণকৌশল প্রদর্শন করেন। দু-তিন ঘণ্টা যুদ্ধের পর পাকিস্তানি সেনাদের প্রবল প্রতিরোধ ভেঙে যায়। তখন তারা পালিয়ে আত্মরক্ষা করে। যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।[4][5]
১৯৭১ সালের ১৭ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার অন্তর্গত দত্তনগর কৃষি ফার্ম এলাকা ছিল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা। এখানে ছিল সরকারি কৃষি ফার্ম। তখন এই কৃষি ফার্ম বেশ প্রসিদ্ধ ছিল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনী শক্তিশালী একটি প্রতিরক্ষা ঘাঁটি স্থাপন করে। এই ঘাঁটিতে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনারা সহযোগী রাজাকারদের নিয়ে নিয়মিত সীমান্ত এলাকায় টহল দিত। নভেম্বর মাসের প্রথম দিক থেকে মুক্তিবাহিনী সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে। তাদের লক্ষ্য ছিল সীমান্ত এলাকা থেকে পাকিস্তানি সেনাদের বিতাড়ন করা। এরই ধারাবাহিকতায় মুক্তিবাহিনীর ৮ নম্বর সেক্টরের বানপুর সাবসেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা ১৭ নভেম্বর ভোররাতে দত্তনগর কৃষি ফার্মে আক্রমণ করেন। মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন তিনটি দলে বিভক্ত। একটি দল তেঁতুলিয়ার দিক থেকে, দ্বিতীয় দল নারায়ণপুরের দিক থেকে, তৃতীয় দল হাসনাবাদের দিক থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দত্তনগর কৃষি ফার্মের ক্যাম্পে সাঁড়াশি আক্রমণ চালায়। ত্রিমুখী আক্রমণে পাকিস্তানি সেনারা দিশেহারা হয়ে পড়ে। এই যুদ্ধে রওশন ইয়াজদানী ভূঁইয়া অসীম সাহস ও রণকৌশল প্রদর্শন করেন। দু-তিন ঘণ্টা যুদ্ধের পর পাকিস্তানি সেনাদের প্রবল প্রতিরোধ ভেঙে যায়। তখন তারা পালিয়ে আত্মরক্ষা করে। যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। [5]
তবে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন এবং স্বাধীনতার পর রাওশন ইয়াজদানি ভূঁইয়াকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন দেওয়া হয়। তিনি দেরীতে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন এজন্য তিনি যখন মেজর ছিলেন তখন কলেজের সহপাঠীরা সেনাবাহিনীতে কর্নেল বা ব্রিগেডিয়ার ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যায় রাওশন ইয়াজদানি ভূঁইয়ার ভূমিকা অস্পষ্ট। কারণ সেই রাতে সেনাবাহিনীর যে দলটির সার্কিট হাউসে গিয়েছিলেন সেই দলের তিনি অন্যতম সদস্য ছিলেন না।
তবে রাওশন ইয়াজদানি ভূঁইয়াকে দুর্গম চট্টগ্রাম গ্রাম কাপ্তাই থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন তিনি জেনারেল মনজুরের স্ত্রী এবং পরিবারের সাথে ছিলেন। তাদের জন্য একটি নিরাপদ জায়গা খোঁজার চেষ্টা করেছিলেন। ততক্ষণে জেনারেল মনজুরকে হত্যা করা হয়। রওশানের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মতে, "অন্যরা যখন স্বাচ্ছন্দ্যে জেনারেল মনজুরের সমর্থন ছেড়ে তৎকালীন সিএএস হুসেন মুহাম্মদ এরশাদের সাথে যোগ দিয়েছিল তখন রাওশন ইয়াজদানি ভূঁইয়া কাঁধে তুলেছিলেন পতিত জেনারেলের পরিবারকে বাঁচানোর দায়িত্ব।"
রাওশন ইয়াজদানি ভূঁইয়াকে মিলিটারি ট্রাইব্যুনাল দোষী সাব্যস্ত করে।
ক্যাডেট কলেজের রওশনের নিকটতম বন্ধু ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফ যিনি তখন এনএসআইয়ের চিফ এবং তৎকালীন সিএএস হুসেন মুহাম্মদ এরশাদের ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন। রওশানের আরেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমিন (সিএসপি) রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পিএস ছিলেন এবং একই চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে হত্যার সময় উপস্থিত ছিলেন।
রওশানের শেষ ইচ্ছা হিসাবে, কারা কর্তৃপক্ষ তাকে সম্ভবত তার নিকটতম বন্ধু হিসাবে বিবেচিত ব্যক্তির কাছে একটি সংক্ষিপ্ত টেলিগ্রাম পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে। রওশন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফকে একটি টেলিগ্রাম পাঠিয়েছিলেন যা বলেছিল "সেভ লাইফ"। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফ টেলিগ্রাম পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফও নিশ্চিত করেছিলেন যে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ইয়াযদানি লড়াই করছিল এবং তার বাঁধা পা দিয়ে কূপটিতে আরোহণের চেষ্টা করেছিল যাতে এভাবে তার মৃত্যু ও যন্ত্রণা দীর্ঘায়িত হয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.