অন্য ব্যবহারের জন্য, দেখুন আনোয়ারুল আজীম (দ্ব্যর্থতা নিরসন)

দ্রুত তথ্য মোঃ আনোয়ারুল আজিম, জন্ম ...
মোঃ আনোয়ারুল আজিম
Thumb
জন্ম(১৯৩১-১২-১৩)১৩ ডিসেম্বর ১৯৩১
রানীনগর, নওগাঁ জেলা
মৃত্যুমে ৫, ১৯৭১(1971-05-05) (বয়স ৩৯)
নাটোর জেলার গোপালপুরের নর্থ বেঙ্গল চিনির কারখানার শহীদ সাগর চত্বরের পুকুর পাড়ে
জাতীয়তাবাংলাদেশি
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সালের পূর্বে)
 পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ (১৯৭১ সালের পর)
দাম্পত্য সঙ্গীবেগম শামসুন্নাহার
পুরস্কারস্বাধীনতা পুরস্কার, (২০১৮)
বন্ধ

মোহম্মদ আনোয়ারুল আজিম (১৩ ডিসেম্বর ১৯৩১ - ৫ মে ১৯৭১) বাংলাদেশের একজন শিল্প প্রশাসক, শহীদ বুদ্ধিজীবী। তিনি ১৯৭১ সালের ৫ মে তার প্রায় দুইশত সহকর্মী শহীদ সাগর চত্বরে ইতিহাসের নির্মমতম গণহত্যার শিকার হন। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে তিনি স্বাধীনতা পদক পান। [1]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

আনোয়ারুল আজিম দিনাজপুর জিলা স্কুল থেকে ১৯৪৯ সালে ম্যাট্রিকুলেশন[2] এবং দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে ১৯৫১ সালে আইএসসি পাস করেন। তিনি ১৯৫৩ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ছাত্রজীবনেই আনোয়ারুল আজিম দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ি পাড়ায় তরুণদের জন্য ‘শক্তি পাঠাগার’ নামে একটি পাবলিক লাইব্রেরি স্থাপন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালিয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের ছাত্র ইউনিয়নের সেক্রেটারি ছিলেন।

কর্মজীবন

আনোয়ারুল আজিম কর্মজীবন শুরু করেন নারায়ণগঞ্জের এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপক হিসেবে। তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান শিল্পোন্নয়ন কর্পোরেশনে বিভিন্ন পদমর্যাদায় চাকরি করেন। পরে তিনি লতিফ বাওয়ানী জুট মিলে লেবার অফিসার হিসেবে যোগ দেন। তিনি ১৯৬৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক লেবার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। দেশে ফিরে তিনি ইপিআইডিসির নারায়ণগঞ্জ ডক ইয়ার্ডে সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কিছুদিন পাকিস্তান আর্মি কমিশনে (পিএএসআরও) চাকরি করেন এবং লেফটেন্যান্ট পদে উন্নীত হন। ১৯৬৮ সালের শেষদিকে তিনি নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের জেনারেল ম্যানেজার পদে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি উক্ত পদেই কর্মরত ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে অবদান

Thumb
একটি কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালে আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশন।

১৯৭১ সালের ৫ই মে তারিখের গোপালপুরের ঐ গণহত্যার শিকার হওয়ার পূর্বে তিনি প্রাণপন সবাইকে বাঁচাতে চেষ্টা করেন। হিন্দু কর্মচারীদের সবাইকে কয়েকদিন আগেই ছুটি দিয়ে দেন। ঐ দিন সকালে সকল কর্মচারীকে পাশের গ্রাম নিয়ে লুকিয়ে থাকেন। যখন খবর পান পাক সেনারা চিনির মিলে লুটপাট করছে, তখন তিনি তার দ্বায়িত্বের জন্য ফিরে আসেন। তখন পাক সেনারা মিল চালু করতে বললে তিনি মিল চালু করেন। ভেবেছিলেন মিল চালু করলে সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তখন পাকিস্থানী বাহিনীরা সবাইকে আটক শুরু করে। এক পর্যায়ে তাদের দাঁড় করিয়ে দেয়া হয় পুকুর পাড়ে । তখন তিনি চিৎকার করে বলেছিলেন যে তাকে না গুলি করে তার কোন কর্মচারীকে গুলি করা যাবে না। পরে ঘটল ইতিহাসের নির্মমতম গণহত্যা। ৯টি রাইফেল দিয়ে তিনি সহ প্রায় ২শত কর্মচারীকে গুলি করা হয়। পানিতে লাশের পরে লাশ স্তুপ হয়ে জমা হতে থাকে।[3] একজন কুরআন পড়ছিল কিন্তু তাকেও কুরআন সহ বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

মো. আনোয়ারুল আজিম ১৯৭১ সালে বিভিন্নভাবে যুদ্ধে অংশ নেন। তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ :-

  • স্টেশন এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা[3]
  • ঈশ্বরদী বিমানবন্দর অবরোধ[3]
  • ধলাইদহে পাক বাহিনীর সাথে মুখোমুখি যুদ্ধ
  • পাকিস্তানি মেজর রাজা আসলামকে আটক ও হত্যায় সহযোগীতা কর।

পুরস্কার ও সম্মাননা

বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৫ সালের ১৪ই ডিসেম্বর এই বুদ্ধিজীবী শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্মরণে একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করে।[4] এছাড়া সম্মানে নাটোরের গোপালপুর রেলস্টেশনের নাম পরিবর্তন করে আজিমনগর রাখা হয়। ২০১৮ সালে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার পান।

তথসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.