মেরিনা তাবাসসুম
বাংলাদেশী স্থপতি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মেরিনা তাবাসসুম বাংলাদেশের একজন স্থপতি। তিনি 'মেরিনা তাবাসসুম আর্কিটেক্টস' -এর প্রধান স্থপতি। তিনি ২০১৬ সালে স্থাপত্যের জন্য আগা খান পুরস্কার পান।[১][২] ঢাকার উত্তরে দক্ষিণখান এলাকায় স্বীয় দাদীর দেয়া জমিতে স্থাপিত বায়তুর রউফ মসজিদের স্থাপত্যের জন্য মেরিনা তাবাসসুম এই পুরস্কার পান।[৩] এর আগে ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রথমবার তিনি এ পুরস্কারের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন লাভ করেছিলেন। আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক প্রতি তিন বছরে একবার এই পুরস্কার প্রদান করে থাকে।
মেরিনা তাবাসসুম | |
---|---|
![]() মেরিনা তাবাসসুম | |
জন্ম | ১৯৬৮/১৯৬৯ (৫৫–৫৬ বছর) |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
মাতৃশিক্ষায়তন | বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় |
পুরস্কার | স্থাপত্যের জন্য আগা খান পুরস্কার (২০১৬), অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার |
২০২০ সালে, স্থপতি মেরিনা তাবাসসুমকে কোভিড-১৯ যুগের তৃতীয়-বড় চিন্তাবিদ হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। ম্যাগাজিনটি লিখেছিল, "প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভবন নির্মাণে সম্মিলিতভাবে এই গ্রহের জন্য আমরা যা করছি, এই বাংলাদেশি স্থপতি তার দ্বারা সৃষ্ট নকশায় এই চ্যালেঞ্জগুলি গ্রহণ করছেন।"[৪]
মেরিনা তাবাসসুম ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মিত ভূগর্ভস্থ স্বাধীনতা জাদুঘরের দু’জন নকশাবিদের একজন।[৫][৬][৭] অন্যজন হলেন স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী।
প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা
মেরিনা তাবাসসুম ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন ক্যান্সার চিকিৎসক। ১৯৪৭ সালে, তার পরিবার বঙ্গভঙ্গের সময় ভারত থেকে বাংলাদেশের ঢাকায় পাড়ি জমান। তিনি হলি ক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এবং কলেজে পড়াশুনা করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
পেশাগত জীবন
সারাংশ
প্রসঙ্গ
১৯৯৫ সালে স্থপতি তাবাসসুম, স্থপতি কাশেফ চৌধুরীর সাথে বাংলাদেশের ঢাকা শহরভিত্তিক একটি স্থাপত্য ফার্ম আরবানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। [৮][৯] ফার্মটি প্রায় দশ বছর ধরে বেশ কয়েকটি প্রকল্প নকশা করেছিল।
২০০৫ সালে তাবাসসুম তার নিজস্ব ফার্ম, মেরিনা তাবাসসুম আর্কিটেক্টস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং তিনি এর প্রধান স্থপতি হিসাবে কাজ করা শুরু করেন।
২০০৫ সাল থেকে তাবাসসুম ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পরিদর্শন অধ্যাপক,[১০] যেখানে তিনি সমসাময়িক দক্ষিণ এশিয়ার স্থাপত্যের উপর শিখিয়েছেন। তিনি এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্টুডিওগুলিও পরিচালনা করেন এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সম্মেলনে বক্তৃতা ও উপস্থাপনা দিয়েছেন। তিনি ২০১৫ সাল থেকে স্থাপত্য, ভূদৃশ্য এবং বসতিগুলির জন্য বেঙ্গল ইনস্টিটিউটে একাডেমিক প্রোগ্রামের পরিচালক ছিলেন।[১১] তিনি বাংলাদেশে সিএএ ২০১৩ সালে ভারতের অন্যতম সেরা স্থপতি বিজয় জৈনের আমন্ত্রণ প্রস্তাব করেছিলেন।
তাবাসসুম ছিলেন ঢাকায় অবস্থিত বায়তুর রউফ মসজিদের স্থপতি, যা ২০১২ সালে বানানো শেষ হয়েছিল।[১২] ২০১৬ সালে প্রকল্পটি আগা খান পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল।[১৩]
মার্কিন সাময়িকী টাইম-এর ২০২৪ সালের বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান পেয়েছেন মেরিনা। উদ্ভাবক ক্যাটাগরিতে তিনি এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন। ১৭ এপ্রিল ২০২৪ সালের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এই তালিকা প্রকাশ করা হয়।[১৪]
উল্লেখযোগ্য কাজসমূহ

- ১৯৯৭-২০০৬: স্বাধীনতা জাদুঘর, ঢাকা,বাংলাদেশ।
- ২০০১: এ৫ বাসভবন, ঢাকা, বাংলাদেশ।
- ২০০৬-২০১১: কমফোর্ট রিভেরি, ঢাকা, বাংলাদেশ।
- ২০০৯: ফরিদাবাদের অবকাশ বাড়ি, ঢাকা, বাংলাদেশ।
- ২০১২: বায়তুর রউফ মসজিদ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
- ২০১৮: পানিগ্রাম ইকো রিসোর্ট ও স্পা, যশোর, বাংলাদেশ।
- ২০২০: খুদি বাড়ি, বাংলাদেশের উপকূলবর্তী চরসমূহ।
পুরস্কার ও সম্মাননা

- স্বাধীনতা স্তম্ভ এবং স্বাধীনতা জাদুঘরের নকশার জন্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বারা প্রথম স্থান পুরস্কার প্রাপ্ত (১৯৯৭)
- বর্ষসেরা স্থপতি পুরস্কার, ভারতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ভৈরোঁ সিং শেখাওয়াত দ্বারা পুরস্কৃত (২০০১)
- অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার (২০০৪)[১০][১৫]
- এ৫ বাসভবনের জন্যে আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার পুরস্কারের জন্যে ফাইনালিস্ট (২০০৪)[১২]
- নিসর্গ স্থাপত্য প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানার্স-আপ পুরস্কার প্রাপ্ত (২০০৬)[১৬]
- আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার (২০১৬)
- আর্নল্ড ডাব্লিও. ব্রুনার স্মৃতি পুরস্কার (২০২১)[১৭]
- সোয়ান মেডেল (২০২১)[১৮]
- আজীবন সম্মাননা পদক (২০২২)[১৯]
প্রদর্শনীসমূহ
- মেরিনা তাবাসসুম আর্কিটেক্টস: বাংলাদেশে (২০২৩)[২০]
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.