Loading AI tools
লস এঞ্জেলস ভিত্তিক আমেরিকান হেভি মেটাল ব্যান্ড উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মেটালিকা একটি আমেরিকান হেভি মেটাল ব্যান্ড। এটি ১৯৮১ সালে লস এ্যাঞ্জেলস, ক্যালিফোর্নিয়াতে গঠিত হয় এবং এর কর্মজীবনের অধিকাংশ সময় সান ফ্রান্সিসকোতে অবস্থান করেছে।[1][2] ড্রামার লারস আলরিক স্থানীয় একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যান্ডটি গঠন করেন। ব্যান্ডটির প্রাথমিক লাইন-আপ ছিল ড্রামসে লারস আলরিক, রিদম গিটার ও ভোকালে জেমস হেটফিল্ড, লিড গিটারে কারক হ্যামেট এবং বেইজ গিটারিস্ট ছিলেন পরলোকগত ক্লিফ বারটন। বেইজ গিটারে বর্তমানে আছেন রবার্ট ট্রুজিলো। ২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী, ১২৫ মিলিয়ন রেকর্ড বিক্রি করে মেটালিকা বর্তমানে সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ হেভি মেটাল ব্যান্ড হিসেবে পরিচিত।[3]
মেটালিকা | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
উদ্ভব | লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া, ইউএস |
ধরন | |
কার্যকাল | ১৯৮১-বর্তমান |
লেবেল |
|
সদস্য |
|
প্রাক্তন সদস্য |
|
ওয়েবসাইট | metallica |
১৯৮৬ সালে মাস্টার অব পাপেটস অ্যালবামটি প্রকাশের সাথে সাথে তাদের আন্ডারগ্রাউন্ড ভক্ত ও সমালোচকদের সুদৃস্টি গড়ে ওঠে। ব্যান্ডটিকে প্রথম ৪টি বড় থ্রাশ মেটাল ব্যান্ডের মধ্যে (স্লেয়ার, মেগাডেথ ও অ্যানথ্রাক্স অন্যতম ধরা হয়ে থাকে। মেটালিকা ২টি লাইভ অ্যালবাম, ৪৫টি সিংগেলস, ২৪টি ভিডিও, ২টি ইপি এবং ৯টি স্টুডিও অ্যালবাম প্রকাশ করেছে। তাদের ৫ম অ্যালবাম বিলবোর্ডের ১ম স্থান দখল করে, যা তাদের মূলধারার শ্রোতাদের কাছাকাছি নিয়ে আসে। মেটালিকা ৯টি গ্রামি এডওয়ার্ড জিতে নেয়। ১৯৯১ সালে মেটালিকার 'ব্ল্যাক' (মেটালিকা) অ্যালবাম ১৬ মিলিয়ন কপি আমেরিকায় ও ২২ মিলিয়ন কপি সারা বিশ্বে বিক্রি হয় যা ছিল ২৫তম সর্বাধিক বিক্রিত অ্যালবাম।এ পর্যন্ত তাদের ৫,২২,৭১,০০০ কপি অ্যালবাম শুধুমাত্র আমেরিকাতে বিক্রি হয়েছে।
১৯৮১ সালে লারস আলরিক বিজ্ঞাপন দেন পত্রিকায় যে একজন ড্রামার জ্যাম করার জন্য অন্যান্য মিউজিশিয়ান খুঁজছে। বিজ্ঞাপনে সাড়া দেন জেমস হেটফিল্ড। লারস আলরিক ব্রায়ান স্লাগেলকে অনুরোধ করেন মেটাল ম্যাসাকার প্রজেক্টের জন্য তাদের গান রেকর্ড করে দিতে যদিও তখনও ব্যান্ডটি গঠিত হয়নি। ২য় বিজ্ঞাপনটি প্রকাশিত হয় সেই একই দ্যা রিসাইকেলার নামের খবরের কাগজে একজন লিড গিটারিস্ট পাওয়ার জন্য। ডেভ মাস্টেইন উত্তর দেন বিজ্ঞাপনের। তার দামী গিটার দেখে লারস ও হেটফিল্ড তাকে লিড গিটারিস্ট হিসেবে নিয়োগ দেন। প্রাথমিকভাবে জেমস হ্যাটফিল্ডের বন্ধু রন ম্যাকগভনিকে বেজিস্ট হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তারপর ১৯৮২ সালে নাইট ক্লাবের একটি শো তে হেটফিল্ড ও লারস ক্লিফ বারটন নামের একজন বেজিস্টের বেইজ বাজানো ও বিশেষ করে তার ‘ওয়াহ-ওয়াহ প্যাডেলের’ চমৎকার ব্যবহার দেখে ভীষণ মুগ্ধ হন। এদিকে আবার হ্যাটফিল্ড ও ডেভ তাদের তৎকালীন বেজিস্টের বেইজ বাজানো নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তারা মনে করতেন ম্যাক গভনি তাদের ব্যান্ডে খুব বেশি অবদান রাখতে পারছে না। তাই তারা তাদের ব্যান্ডে বারটনকে সদস্য হতে প্রস্তাব দেন। বারটন রাজী হন। তারপর এক পর্যায়ে ব্যান্ড সদস্যরা ডেভ মাস্টেইনকে ব্যান্ড থেকে বাদ দিতে সম্মত হন তার অ্যালকোহলে আসক্তি ও আক্রমণাত্নক আচরণ দেখে। এক্সোডাস গিটারিস্ট কারক হ্যামেট ঐদিন বিকালেই যোগ দেন ব্যান্ডে। তারপর ডেভ মাস্টেইন বেজিস্ট ডেভিড এলিফসনকে নিয়ে মেগাডেথ নামের ব্যান্ড গড়ে তোলেন এবং বলেন যে কারক হ্যামেট তার চাকরি চুরি করেছে ও তার লেখা গিটার লিড চুরি করে জনপ্রিয় হয়েছে। যাহোক মেটালিকার প্রথম অ্যালবাম কিল এ্যাম অল প্রকাশের পর তেমন বাণিজ্যিক সাফল্য না পেলেও অনেক ভক্ত গড়ে তোলে আন্ডারগ্রাউন্ডে। ১৯৮৪ সালে ভেনম ব্যান্ডের সাথে মেটালিকা কনসার্ট করে হল্যান্ড-এ প্রায় ৭,০০০ লোকের সামনে। তাদের রাইড দ্যা লাইটেনিং অ্যালবাম ডেনমার্ক-এ রেকর্ড হয় এবং বিলবোর্ডের ১০০তম স্থান দখল করে। ১৯৮৬ সালে ব্যান্ডের বেজিস্ট বারটন গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। সাময়িকভাবে ব্যান্ডটি স্থবির হয়ে যায়। তারপর ব্যান্ডের অন্যান্য সদস্যদের সম্মতিক্রমে ব্যান্ড আবার তাদের যাত্রা শুরু করে। নতুন বেজিস্ট এর জন্য অডিশন হয়। অডিশনে প্রায় ৪০ জনের মধ্য থেকে নিউস্টেডকে নতুন বেজিস্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০০১ সালে বেজিস্ট জেসন নিউস্টেড তার ব্যক্তিগত সাইড প্রজেক্ট করতে ব্যান্ড থেকে বিদায় নেন। পরে ২০০৩ সালে রবার্ট ট্রুজিল্লোকে স্থায়ী বেজিস্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
‘কিল এম অল’ মেটালিকার প্রথম অ্যালবাম। এটি বাণিজ্যিকভাবে সফল না হলেও মেটাল দুনিয়াতে মেটালিকা এই অ্যালবামের মাধ্যমে নিজেদের জায়গা তৈরী করতে সক্ষম হয়। ‘জাম্প ইন দি ফায়ার’ বা ‘সিক এন্ড ডেসট্রয়’ এর মতো গানগুলো তাদেরকে শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় করে তোলে। এরপর ১৯৮৪ সালে তাদের দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘রাইড দা লাইটেনিং’ বের হয়। তারপর ১৯৮৬ সালে আসে ‘মাস্টার অব পাপেটস’ যার মাধ্যমে মেটালিকা প্রথম সারির হেভি মেটাল ব্যান্ডে পরিণত হয়। ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত ‘...এ্যান্ড জাস্টিস ফর অল’ অ্যালবামটি বাণিজ্যিক সাফল্য পায় বিলবোর্ডের ৬ষ্ঠ স্থান দখল করে। এরপর ১৯৯১ সালে বাজারে আসা ‘মেটালিকা’ অ্যালবামটি তাদেরকে বাণিজ্যিকভাবে সফল হতে সাহায্য করে। এই অ্যালবামটি আমেরিকাতে ১৬ মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়। ১৯৮৯ সালে সবাই ধারণা করেছিল যে মেটালিকা গ্রামি পাবে। মেটালিকা তাদের ওয়ান গানটি পরিবেশনের পর মঞ্চের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিল গ্রামি নেওয়ার জন্য, কিন্তু সেটা পায় জেথ্রও তুল ক্রেস্ট অব আ নেভ অ্যালবামের জন্য। মেটালিকা তাদের প্রথম মিউজিক ভিডিও ওয়ান গানটির জন্য বানায় যা জনি গট হিজ গান সিনেমার ফুটেজের সাথে মিশ্রিত ছিল। গানটি ৩৮তম স্থান দখল করে এমটিভি ১০০ সর্বকালের টপ ভিডিও তালিকায়। ১৯৯২ সালে গানস এ্যান্ড রোজেস ব্যান্ডের সাথে সফরের সময় জেমস হেটফিল্ড আগুনের আঘাতে আহত হন এবং বাহুতে, হাত, মুখে পোড়া আচ লাগে। এরপর ১৯৯৬ ও ১৯৯৭ সালে যথাক্রমে ‘লোড’ ও ‘রিলোড’ অ্যালবাম বাজারে আসে। ১৯৯৯ সালে মেটালিকা সিম্ফোনি অর্কেস্টার সাথে গান গায় মাইকেল কামেনের নির্দেশনায়। মাইকেল কামেনের ১০০ জনেরও বেশি স্টাফ গানগুলো অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের সাথে পরিবেশন করে। কনসার্টির ভিডিও ফুটেজ ও অডিও বের হয় ১৯৯৯ সালে ও বিলবোর্ডের ২য় স্থান দখল করে। ২০০১ সালে বেইজ গিটার বাদক জেসনের বিদায় ও জেমস হেটফিল্ড এর অ্যালকোহলে আসক্তির জন্য পুনর্বাসনকেন্দ্রে ভর্তি অন্যান্য সদস্যদের উপর প্রভাব বিস্তার করে। ফলে তাদের নতুন অ্যালবাম রেকর্ডিং অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তারপর হেটফিল্ড রিহ্যাব থেকে ফিরে আসেন এবং নতুন অ্যালবামের জন্য অন্যান্য সদস্যরা মনোনিবেশ করেন। তারপর ২০০৩ সালে ব্যান্ডের নিজস্ব বেজিস্ট ছাড়াই সংগীত শিল্পী ও প্রযোজক বব রক এর বাজানো বেইজে তাদের অষ্টম অ্যালবাম ‘সেইন্ট এঙ্গার’ বাজারে আসে। অ্যালবামটি শোতাদের ভেতরে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। এর কারণ হিসেবে অপর্যাপ্ত গিটার সলো এবং স্ন্যার ড্রামের ধাতব আওয়াজকেই অধিকাংশ শ্রোতারা দায়ী মনে করে। তারপর যাহোক তাদের নবম অ্যালবাম ‘ডেথ ম্যাগনেটিক’ এর মাধ্যমে মেটালিকা আবার তার স্বস্থানে ফিরে আসতে স্বক্ষম হয়। তারা তাদের স্থান ‘রক এন্ড রোল হল অব ফেইম’ এ নিয়ে যায়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.