শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

মিয়ানমারের ইতিহাস

ইতিহাসের বিভিন্ন দিক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

মিয়ানমারের ইতিহাস
Remove ads
Remove ads

মিয়ানমারের ইতিহাস (পূর্বে দেশটি বার্মা নামে পরিচিত ছিল) ১৩,০০০ বছর পূর্বে এই ভূখণ্ডে প্রথম মানব বসতি স্থাপনের পর থেকে আধুনিক মিয়ানমারের সময়কাল পর্যন্ত ব্যাপ্ত। মায়ানমারের সবচেয়ে প্রাচীন অধিবাসি ছিল তিব্বতীয়-বার্মান ভাষাভাষি জনগোষ্ঠী। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এই জনগোষ্ঠি পাইয়ু নগর-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল।

Thumb
MyanmarEthnolinguisticMap1972

নবম শতকে বামার জনগোষ্ঠী নামে এর একদল মানুষ ইরাবতী উপত্যাকা থেকে এসে এই অঞ্চলে বসবাস শুরু করে এবং বেগান রাজ্য (১০৪৪-১২৮৭) স্থাপন করে। এই রাজ্য ছিল ইরাবতী এবং এর আশেপাশের অঞ্চলকে একিভূত করে গঠিত একটি স্বাধীন রাজ্য। এই সময়ে বর্মী ভাষা এবং বামার সাংস্কৃতি বিস্তার লাভ করে। ১২৮৭ সালে প্রথম মঙ্গল আগ্রাসনের পর আভা রাজ্য, হান্তাওয়ারি রাজ্য, এবং মারুক ইউ রাজ্য ছিল এই অঞ্চলের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। ১৬ শতকে টাউঙ্গু রাজবংশ (১৫১০-১৭৫২) পুনরায় বার্মাকে একিভূত করে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। তবে এই সম্রাজ্য ছিল ক্ষনস্থায়ী। পরবর্তী টাউঙ্গু সম্রাটরা কিছু অর্থনৈতিক এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে যা ১৭ এবং ১৮ শতকে বার্মাকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

১৮ শতকের দ্বিতীয় অংশে, কনবাউং বংশ (১৭৫২-১৮৮৫) ক্ষমতা দখল করে, এবং টাউঙ্গুদের রাষ্ট্র সংস্কার নীতি অনুসরণ করে। তারা আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে কেন্দ্রীয় ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করে এবং বার্মাকে এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে স্বাক্ষর রাষ্ট্রে পরিনত করে। এই বংশের শাসনামলে বার্মা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধে জরিয়ে পরে। ১৮২৪-৮৫ সালের এ্যংলো-বর্মী যুদ্ধের সূচনা হয়। এই যুদ্ধের ফল স্বরূপ বার্মায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

ব্রিটিশরা বার্মায় বেশকিছু স্থায়ী সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকে এবং প্রশাসনিক সংস্কার সাধন করে। এসব সংস্কার বার্মার প্রথাগত কৃষি নির্ভর সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন আনে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ব্রিটিশ শাসন, বার্মার অগণিত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদকে প্রকট করে। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের সময় থেকে দেশটি এক দীর্ঘ গৃহযুদ্ধে লিপ্ত আছে। ১৯৬২ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বার্মায় সামরিক শাসন বলবৎ ছিল। বার্মা পৃথিবীর অন্যতম স্বল্প উন্নত দেশ।

Remove ads

প্রাগৈতিহাসিক ইতিহাস

সবচেয়ে প্রাচীন প্রত্নতাত্মিক নিদর্শন থেকে জানা যায় যে বার্মায় খ্রীস্টপূর্ব ১১,০০০ সালে সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল। মধ্যাঞ্চলের শুষ্ক এলাকায় এই সভ্যতার বেশিরভাগ নিদর্শন পাওয়া যায়। ইরাবতী নদীর কাছে এই প্রত্ন নিদর্শন অঞ্চলগুলো বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এনিয়াথিয়ান কাল বা বার্মার পুরাতন প্রস্থর যুগ, ইউরোপের মধ্য পুরাতন প্রস্তর যুগের সমসাময়িক ছিল। নবপ্রস্তর যুগে মানুষ যখন গৃহপালিত পশুর ব্যবহার শুরু করে এবং কৃষিকাজের সূচনা করে। বার্মার টাংগােই এলাকার শান মালভূমির তিনটি গুহায় এ সময়ের পাথরনির্মিত পালিশ করা যন্ত্রপাতির ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত নিদর্শনগুলো খ্রীষ্টপূর্ব ১০০০০ থেকে ৬০০০ বছর পুরান বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।[] প্রায় ১৫০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলের মানুষ তামাকে ব্রোন্জে রূপান্তর করতে পারত। তারা ধান উৎপাদন এবং গৃহপালিত মুরগি ও শুকরের ব্যবহার শুরু করে। খ্রীষ্টপূর্ব ৫০০ অব্দে বর্তমান মান্দালয়ের দক্ষিণে লৌহ-নির্মাণকারী জনগোষ্ঠীর আবির্ভাব হয়। মৃৎপাত্রে পূর্ণ ব্রোন্জ নির্মিত কফিন এবং সমাধীস্থানের ভগ্নাবশেষ থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।[] সামন উপত্যকার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে জানা যায় যে, এ অঞ্চলের কৃষিনির্ভর জনগোষ্ঠী ৫০০ থেকে ২০০ খ্রীস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত চীনে ধান রপ্তানি করত।[] লৌহ যুগের বিভিন্ন প্রত্ন নিদের্শন থেকে জানা যায় যে, নবজাতকদের মৃতদেহ সৎকারে ভারতীয় রীতির প্রভাব লক্ষ করা যায়। নবজাতককে যে পাত্রে সমাহিত করা হত তার আকার নির্ভর করত তার পরিবারের সামাজিক মর্যাদার উপর।[]

Remove ads

পিয়ু নগর-রাষ্ট্র

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
প্রধান পিয়ু নগর-রাষ্ট্র

পিয়ু জনগোষ্ঠির মানুষ খ্রীষ্টপূর্ব ২য় শতকে ইরাবতী নদীর অববাহিকায়, বর্তমান ইউন্নান প্রদেশে আগমন করে এবং বেশ কছিু নগর কেন্দ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে। বার্মা ভাষায় (বর্মী: ပျူ မြို့ပြ နိုင်ငံများ)। কিংহাই হ্রদ ছিল পাইয়ু জনগোষ্ঠির মূল আবাসস্থল। বর্তমানে যা কিংহাই বা গানসু নামে পরিচিত।[] এযাবতকালে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, পাইয়ু জনগোষ্ঠি হল বার্মার সবচেয়ে প্রাচীন বসতি স্থাপনকারী জনগোষ্ঠি।[] এ সময়ে বার্মা ছিল চীন ও ভারতের মধ্যকার বাণিজ্য পথের একটি অংশ। এই বাণিজ্যিক পথের মাধ্যমে দক্ষিণ ভারত থেকে চীনে বৌদ্ধ ধর্মের আবির্ভাব হয়। চতুর্থ শতকে ইরাবতী অববাহিকার জনগণ বৌদ্ধ ধর্মে দিক্ষিত হয়।[] বর্তমান পিএই এর দক্ষিণে অবস্থিত শ্রী কেসট্রা রাজ্য ছিল এই অঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ ও শক্তিশালী নগর-রাষ্ট্র। [] মার্চ ৬৩৮ সালে হাইয়ু ও শ্রী কেষ্ট্র রাষ্ট্র দুটি একত্রে একটি নতুন বর্ষপঞ্জী প্রচলন করে যা বর্তমানে বার্মিজ বর্ষপঞ্জী নামে পরিচিত।[]

অষ্টম শতাব্দীর চৈনিক নথীতে, সমগ্র ইরাবতী অববাহিকায় অবস্থিত ১৮টি পিয়ু রাষ্ট্রের উল্লেখ পাওয় যায় যেখানে এসকল রাষ্ট্রগুলোকে শান্তীপূর্ণ ও মানবিক রাষ্ট্র হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেখানের অধিবাসীদের কাছে ‘যুদ্ধ’ ছিল সম্পূর্ণ অজানা একটি শব্দ। এখানকার অধিবাসীরা রেশমের বদলে সূতীর বস্ত্র ব্যবহার করত যাতে রেশম পোকা হত্যা করতে না হয়। চৈনিক নথী থেকে আরো জানা যায় যে, পাইয়ুরা জ্যোতির্বিজ্ঞানে পারদর্শী ছিল এবং পাইয়ু বালকরা সাত বছর থেকে বিশ বছর বয়স পর্যন্ত সন্ন্যাস ধর্ম পালন করত।[]

পিয়ু সভ্যতা একটি দীর্ঘ সময় পারি দিয়ে নবম শতক পর্যন্ত টিকে ছিল। এরপর উত্তরের “দ্রুত অশ্বারোহী”, বামাররা ইরাবতী নদী অবাবাহিকার এই অঞ্চলে আগমন করে। নবম শতকের শুরুতে পিয়ুরা নানজাহাও (বর্তান ইউন্নান) এর আক্রমণের শিকার হয়।

Remove ads

মোন রাজ্য

৬ষ্ঠ শতকের শুরুতে, মোন নামে আরো একটি জনগোষ্ঠী বার্মার নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করতে শুরু করে। যারা মূলত বর্তমান থাইল্যান্ডের বাসিন্দা ছিল। ৯ম শতকের ভিতরে মোনরা অন্তত দুইটি রাজ্য (অথবা নগর-রাষ্ট্র) প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিল।

পাগান বংশ (৮৪৯-১২৯৭)

সারাংশ
প্রসঙ্গ

প্রারম্ভিক পাগান

উত্তরাঞ্চল থেকে যে বার্মান জাতি ৯ম শতকের শুরুতে পাইয়ু রাষ্ট্র আক্রমণ করেছিল তারা মূলত বার্মার উচ্চভূমিতে বসবাস করত। (৭ম শতকের শুরু থকেই কিছু সংখ্যক বার্মান এই অঞ্চলে তাদের অভিবাসন শুরু করে। []) নবম শতকের দ্বিতীয় ভাগে পাগানরা ইরাবতী ও চিন্দইউন নদীর পর্যন্ত সুরক্ষিত বসতি গড়ে তোলে।[১০] নানজাহোরা তাদের আশেপাশের শত্রুদের শান্ত করার জন্য বিশেষ ভাবে গড়ে তুলেছিল।[১১]

পাগান সাম্রাজ্য (১০৪৪ - ১২৮৭)

Thumb
Narapatisithu আমলে পাগান সম্রাজ্য

পরবর্তি ৩০ বছরে, আনওয়ারাহটা, ‍পাগান সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট, প্রতিবেশী রাজনৈতিক শক্তিসমূহকে জোটবদ্ধ করেন যা পরবর্তিতে আধুনিক বার্মার জন্ম দেয়। তার বংশধররা ১২শ শতকের মধ্যে আরো দক্ষিণে মালয় উপদ্বীপ পর্যন্ত তাদের প্রভাব বিস্তার করে।[১২] বার্মিজ ইতিহাসের বর্ণনা অনুসারে তারা চাও ফ্রারাইয়া নদী পর্যন্ত তাদের আধিপত্য বিস্তার করে। থাই ইতিহাসের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে মালাক্কা প্রণালী নিচে মালয় উপদ্বীপ পর্যন্ত পাগানরা তাদের সম্রাজ্য বিস্তার করেছিল।[১১][১৩]

১২ শতকের শুরুর দিকে, পাগানরা খেমার সম্রাজ্যের পাশাপাশি আর একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসাবে আবির্ভূত হয়। চীনের সং ও ভারতের চোল রাজারাও তাদের স্বীকৃতি দেয়। ১৩ শতকের মাঝামাঝিতে বার্মার বেশিরভাগ ভূখণ্ড হয় পাগান বা খেমারদের অধীনে ছিল।[১৪]

১৩ শ শতকের শুরুতে, সান শাসকরা পাগানদের উত্তর ও পূর্ব দিক থেকে ঘিরে ফেলতে শুরু করে। ইতিপূর্বে মঙ্গলরা ১২৫৩ সালে বামারদের এলাকা দখল করে নিয়েছিল। ১২৭৭ সারে মঙ্গলরা পাগানদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে এবং ১২৫৩ সালে তাদের হাতে দীর্ঘ ২৫০ বছরের পাগান শাসনামলের কার্য়তঃ সমাপ্তি ঘটে। এরপরও বার্মার কেন্দ্রে আরো দশ বছর পাগান শাসন টিকে ছিল। ১২৯৭ সালে মাইসাইং শাসকদের হাতে পাগানদের চূড়ান্ত পতন ঘটে।

Remove ads

ক্ষুদ্র রাজ্য

সারাংশ
প্রসঙ্গ

পাগানদের পতনের পর, মঙ্গলরা ইরাবতী উপত্যাকা পরিত্যাগ করে। পাগান সম্রাজ্য ক্ষ্রদ্র ক্ষুদ্র খণ্ডে বিভক্ত হয়ে পরে। ১৪ শতকের মধ্যে বার্মা বেশ সংগঠিত হয় এবং শান দের অধিনে উর্ধ বার্মা এবং আরাকানদের অধিনে নিম্ন বার্মা, এই দুই অংশে বিভক্ত হয়ে পরে। ছোট দেশীয় রাজ্যগুলোর হাতেই অধিকাংশ ক্ষমতা ছিল। এসময়ে একর পর এক যুদ্ধ সংগঠিত হতে থাকে। বিবাদমান ছোট রাজ্যগুলো নিজেদের মধ্যে জোটবদ্ধ হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হত। অনেক ক্ষুদ্র রাজ্য প্রায়ই জোট পরিবর্তন করে ক্ষমতার পালাবদলে ভূমিকা রাখত।

আভা (১৩৬৪-১৫৫৫)

আভা রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয় ১৩৬৪ সালে। আভারা নিজেদের পাগান শাসকদের আইনগত উত্তরাধিকারী মনে করত। তারা ভূতপূর্ব পাগান সাম্রাজ্যকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছিল। আভারা টাঙ্গু শাসিত রাজ্য এবং আশেপাশের সান রাজ্যগুলো দখল করতে সক্ষম হলেও বাদবাকী অঞ্চল তারা দখল করতে পরেনি। চল্লিশ বছর এর যুদ্ধে (১৩৮৫-১৪২৪) Hanthawaddy সাথে দীর্ঘ যুদ্ধে আভারা দূর্বল হয়ে পরে এবং তাদের ক্ষমতা হ্রাস পায়। আভা শাসকদের প্রতিনিয়ত সামান্ত রাজাদের বিদ্রোহ দমন করতে ব্যস্ত থাকতে হত। ১৪৮০ সালে তারা এসব বিদ্রোহী সামন্তরাজদের ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। ১৫ শতকে প্রোমি রাজ্য এবং সান রাজ্য ভেঙে পরে। ১৬ শতকে আভারা তাদের পুরাতন শত্রু ভূতপূর্ব সামান্তদের আক্রমণের শীকার হয়। ১৫২৭ সালে, মোহনিনের নেতৃত্বে সান কনফেডারেশান আভা রাজ্য দখল করে।

আভা শাসনামলে বার্মার বর্তমান ভাষা ও সংস্কৃতি স্বকীয় রূপ লাভ করে।

হাথাবতী রাজ্য (১২৮৭-১৫৩৯, ১৫৫০-৫২)

১২৮৭ সালে পাগানদের পতনের পর রামানদেশ নামে একটি মন ভাষাভাষী রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

Remove ads

টঙ্গু বংশ (১৫১০–১৭৫২)

প্রথম টঙ্গু সাম্রাজ্য (১৫১০-১৫৯৯)

Thumb
Political Map of Burma (Myanmar) in 1530 at Tabinshwehti's accession
Thumb
Bayinnaung's Empire in 1580.

১৪৮০ সাল থেকে আভা সাম্রাজ্যকে যুগপৎ আভ্যন্তরিন বিদ্রোহ এবং সানদের আক্রমণের মোকাবেলা করতে হয়, ফলস্রুতিতে সান রাজ্য ক্রেমেই ভেঙে পড়তে থাকে। ১৫১০ সালে, আভা সাম্রাজ্যের দক্ষিণপূর্বে অবস্থিত টাউঙ্গু রাজ্য স্বাধীনতা ঘোষণা করে।[১৫] শান রাজ্যের কনফেডারেশন ১৫২৭ সালে আভা রাজ্য দখল করে নেয়ার পর প্রচুর শরনার্থী তঙ্গুর দক্ষিণপর্বে পালিয়ে যায়। সে সময় তঙ্গু রাজ্য ছিল একমাত্র যুদ্ধবিহীন রাজ্য। টাউঙ্গুর আশে পাশে বৃহৎ ও যুদ্ধরত রাজ্যগুলোর অবস্থান ছিল। তঙ্গুর রাজা Tabinshwehti ছিল একজন উচ্চাকাঙ্খী নরপতি। তার ডেপুটি জেনারেল বায়িন্নাউং (Bayinnaung) পাগানদের পতনের পর ছোট ছোট রাজ্যগুলো আক্রমণ করে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে।

অতি বৃহৎ আকারের কারণে ১৫৮১ সালে Bayinnaung এর মৃত্যুর পর তঙ্গু সাম্রাজ্যের বাঁধন ধীরে ধীরে দূর্বল হতে থাকে। ১৬০৫ সাল পর্যন্ত বার্মা শ্যামদেশ (মধ্যযুগে থাইল্যান্ডের নাম)-এর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। ১৫৯৭ সালের ভিতরে তঙ্গু সহ বার্মার বেশিরভাগ এলাকা তাদের হাতছাড়া হয়ে যায়।

Remove ads

কোনবাউং রাজবংশ (১৭৫২-১৮৮৬)

ব্রিটিশ শাসন

সারাংশ
প্রসঙ্গ

ব্রিটিশরা বার্মাকে ভারতের একটি প্রদেশে পরিনত করে। ১৮৮৬ সালে রেঙ্গুনকে বার্মা প্রদেশেরে রাজধানী করা হয়। রাজতন্ত্রের পতন, ধর্ম ও রাজনীতি এই দুয়ের সম্পর্ক ছিন্ন হবার ফলে তৎকালীন বার্মিজ সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। যুদ্ধ শুরু হবার মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ শেষ হলেও উত্তর বার্মায় ১৮৯০ সাল পর্য়ন্ত প্রতিরোধ চলতে থাকে। ব্রিটিশ সেনারা গ্রামাঞ্চলে গেরিলা তৎপরতা বন্ধ করার জন্য নিয়মতান্ত্রিক ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করে। সেই সাথে সমাজের অর্থনেতিক ব্যবস্থার নাটকীয় পরিবর্তন হয়। সুয়েজ খাল খোলার পর বার্মীজ চালের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। প্রচুর জমিতে ধান চাষ শুরু হয়। ধান চাষের জন্য কৃষকদেরকে ভারতীয় মহাজানদের কাছ থেকে চড়া সুদে অর্থ ধার করতে বাধ্য করা হয়। ভারতীয় এই মহাজানরা চাত্তিয়ার নামে পরিচিত ছিলেন। সুদের হার বেশি হবার দরুন কৃষকরা সর্বসান্ত হত। এমনকি তারা তাদেরকে জমিজমা ও ভটামাটি থেকে উচ্ছেদ করা হত। বেশিরভাগ চাকুরীতে ভারতীয়দের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হত। স্থানীয় বার্মার নাগরিকদের ডাকাত অভিযোগে এসকল চাকুরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হত। এমনকি একটি সমগ্র গ্রামকেও এই অভিযোগে নিষিদ্ধ করা হত। বার্মিজ অর্থনীতির উন্নতি হলেও সমস্ত ক্ষমতা ও সম্পদ রয়ে যায় ব্রিটিশ সংস্থা, এ্যাংলো বার্মিজ জনগোষ্ঠী এবং ভারতীয় অভিবাসীদের হাতে।[১৬] সরকারী কর্মচারীদের মধ্যে এ্যাংলো বার্মিজ ও ভারতীয়দের আধিক্য ছিল। সামরিকবাহিনীতেও বার্মিজদের অংশগ্রহণ ছিল অত্যন্ত সামান্য। দেশের সামগ্রিক উন্নতি হলেও বার্মার অধিকাংশ মানুষ তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হত। জর্জ অরওয়েলের উপন্যাস বার্মিজ ডেজে ব্রিটিশ শাসনাধীন বার্মার চিত্র পাওয়া যায়। ব্রিটিশ শাসনামলে এ্যাংলো বার্মিজ জনগোষ্ঠী বার্মার শাসন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক ছিল যা সাধারন জনগণের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি করে।

২০ শতকের শুরুতে Young Men's Buddhist Association (YMBA) এর মধ্য দিয়ে বার্মীজ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সূচনা হয়। পরে একই আদর্শভিত্তিক আর একটি সংগঠন, General Council of Burmese Associations (GCBA) নামে আর একটি সংগঠন বার্মায় অধিক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এসময়ে একটি নতুন প্রজন্মের নেতাদের আবির্ভাব হয় যাদের অনেকে আইন শাস্ত্র নিয়ে ইংল্যান্ডে লেখাপড়া করেছিল। তারা বিশ্বাস করত যে সংস্কারের মাধ্যমে বার্মার অবস্থার উন্নতি করা সম্ভব। ১৯২০ সালের দিকে একটি সীমিত ক্ষমতা সম্পন্ন আইনসভা, একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভারতীয় শাসনের মধ্যেই বার্মার কিছুটা স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিত করেছিল। ১৯২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় অইনের বিরুদ্ধে ধর্মঘটের ডাক দেয়। তাদের মতে এই আইনটি ছিল বৈষম্যমূলক এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকে স্থায়ী করার হাতিয়ার। ‘জাতীয় স্কুল’ গুলো সমগ্র ঔপনিকেশিক শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এবং সমগ্র বার্মায় জাতীয় দিবস পালিত হয়।[১৭]

Remove ads

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও জাপানের দখলদারি

স্বাধীনতা

স্বাধীনতার পরবর্তীকালে মিয়ানমার (১৯৪৮-১৯৬২)

মিয়ানমারে সমাজতন্ত্র (১৯৬২-১৯৮৮)

১৯৬২ সালের সামরিক অভ্যুত্থান ও সূচনা

বার্মার নাম পরিবর্তন

অবসান

সামরিক শাসন (১৯৮৮-২০১১)

২০১১- বর্তমান

রোহিঙ্গা মুসলিম সংকট

মিয়ানমারের বেশ কয়েকিট ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অস্তিত্ব আছে। তাদের সবাই সুদূর অতীতে বার্মার বাইরে থেকে এসেছে। রোহিঙ্গারা তেমনি একটি ক্ষুদ্র জাতি যারা মুসলিম ধর্মালম্বী। আনুমানিক ৬০০ বছর আগে রোহিঙ্গারা পূর্ব বাংলা থেকে আরাকান রাজ্যে গিয়ে বসতি স্থাপন করে। নরমেখলা নামের এক আরকান রাজা রাজ্য হারিয়ে বাংলার সুলতান জালালুদ্দিন শাহের আশ্রয় নেন। ১৪৩০ সালে বাংলার সুলতান তাকে তার রাজ্য পুনরোদ্ধারে সাহায্য করেন। বাংলাদেশ থেকে তার এই অভিযানে সাহায্য করার জন্য যাদেরকে তিনি নিয়ে যান তারাই পরবর্তীতে রহিঙ্গা নামে পরিচতি হন।[১৮]

১৯৪৬ সালে যখন ভারত ও পাকিস্তান ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল তখন আরকানের রোহিঙ্গা মুসলিম নেতারা পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হবার জন্য চেষ্টা করে। পাকিস্তানে মুসলিম লীগ নেতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ আরাকানের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা পাকিস্তানের সাথে একিভূত করতে আগ্রহ দেখাননি। [১৯]

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থান

তথ্যসূত্র

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads