বাংলাদেশি প্রকৌশলী ও সাংবাদিক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মাহমুদুর রহমান (জন্ম: ৬ জুলাই ১৯৫৩) একজন বাংলাদেশি প্রকৌশলী ও সাংবাদিক। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং পত্রিকায় আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করায় আওয়ামী সরকার পক্ষের রোষানলে পড়েন।
মাহমুদুর রহমান | |
---|---|
![]() ২০২৪ সালে মাহমুদুর রহমান | |
জন্ম | |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
শিক্ষা | বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | সাংবাদিক, লেখক, সমালোচক |
কর্মজীবন | ২০০৮ - বর্তমান |
পরিচিতির কারণ | আমার দেশ সংবাদপত্রের সম্পাদক হিসাবে |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (২০০১-২০০৪ স্ব-পদত্যাগ)[১] |
দাম্পত্য সঙ্গী | ফিরোজা খান |
পিতা-মাতা | মাহমুদা বেগম (মা)[২] |
পুরস্কার | একুশে পদক (২০২৫) |
২০০৮ সালে বেসামরিক সরকার পুনরুদ্ধার এবং আওয়ামী লীগের বিজয়ের পর থেকে রহমান তার সংবাদপত্রের মাধ্যমে সরকারের একজন শক্তিশালী সমালোচক হিসাবে ভূমিকা রাখেন। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৫০ বারের ও বেশি মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় অভিযুক্ত করাত বিভিন্ন দল এবং সরকারি কর্মকর্তারা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।[৩][৪] তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যাকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট অবমাননার দায়ে সাজা প্রদান করেছিল।[৫][৬][৭] তিনি ২০২৪ সালের ৩রা অক্টোবর জামিনে মুক্ত হন।[৮]
মাহমুদুর রহমান ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন।[৯] ১৯৭৭ সালে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অনার্স সম্পন্ন করেন।[৯][১০] জাপানে প্রকৌশল বিষয়ে কাজ করার সময় ১৯৮৬ সালে জাপান থেকে সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা অর্জন করেন। এরপর ১৯৮৮ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট থেকে ব্যবসা প্রশাসনের উপর এমবিএ করেন।
মাহমুদুর তার কর্মজীবন ব্রিটেনের গ্যাস কোম্পানি ব্রিটিশ অক্সিজেন কোম্পানিতে অপারেশন ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি মুন্নু সিরামিক, ডাকান ব্রাদার্স, বেক্সিকো গ্রুপ, পদ্মা টেক্সটাইল গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। জাপানেও সুনামের সহিত কাজ করেছেন।[৯]
১৯৯৮ সালে মাহমুদুর বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৯৯ সালে তিনি আর্টিসান সিরামিক লিমিটেড নামে কোম্পানি গড়ে তোলেন।[৯] এটিই সিরামিকে দেশের প্রথম প্রযুক্তিগত “ব্রেক থ্রো” ও চীনা বোন কারখানা ছিল। ২০১৩ সালে তিনি আর্টিসান বিক্রি করে দেন।[১১]
২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে ২০০২ মাহমুদুর জাতীয় বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।[৯] তিনি বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে পাচঁ আই ("five 'I's") থিওরি প্রচলন করেন।[১২] তার উল্লেখযোগ্য কাজ হল মেঘনা এনার্জি লিমিটেড, কাচঁপুরের জন্য বিদেশী বিনিয়োগ আনয়ন।[১৩] ২০০২ থেকে ২০০৩ সালে বাংলাদেশের বিদেশী বিনিয়োগ ৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ১২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বৃদ্ধি পায়; যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ।[১৪] ২০০৪ সালে জাতিসংঘ প্রতিবেদন অনুসারে বাংলাদেশের বিদেশী বিনিয়োগ ছিল ৪৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।[১৫]
২০০৪ সালে ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২০ জন নিহত ও ৩০০ অধিক আহত হয়; ফলে সরকার বিরোধী হরতাল লাগাতার চলতে থাকে। মাহমুদুর উভয় পক্ষের সমালোচনা করে বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতা ও অস্থিরতা বিদেশি বিনিয়োগের জন্য হুমকি, এবং এর জন্য সরকারি নিরাপত্তা প্রদান করা উচিত।[১৬] ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে রাজনৈতিক অস্থিরতার জের ধরে এর প্রতিবাদ স্বরুপ প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নিকট পদত্যাগ পত্র জমা দেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা প্রত্যাখ্যান করলে তার চুক্তির দুই বছর বিনিয়োগ বোর্ডের দায়িত্ব সমাপ্ত করেন।[১৭]
২০০৮ সাল থেকে মাহমুদুর রহমান আমারদেশ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।[১৮]
১১ এপ্রিল ২০১৩ ইং, বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে নয়টার দিকে তাকে কাওরান বাজারের আমার দেশ পত্রিকার কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্লগারদের লেখা ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশ করে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ রয়েছে।[১৯]
তিনি ২০১৯ সালে The Political History of Muslim Bengal নামে শাহী বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের উপর একটি গ্রন্থ রচনা করেন।[২০][২১]
মাহুমুদুর রহমান সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারে অনবদ্য অবদানের জন্য একুশে পদক-২৫ সালের জন্য মনোনীত হয়েছেন।[২২]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.