Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মার্টিনাস উইলেম বাইয়েরিঙ্ক (ওলন্দাজ উচ্চারণ: [maɹˈtiːnʏs ˈʋiləm ˈbɛiə̯rɪnk], ১৬ই মার্চ ১৮৫১ - ১লা জানুয়ারি ১৯৩১) ছিলেন একজন ওলন্দাজ অণুজীববিজ্ঞানী এবং উদ্ভিদবিদ। তিনি ভাইরাস বিজ্ঞান এবং পরিবেশগত অণুজীববিজ্ঞানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
মার্টিনাস বাইয়েরিঙ্ক | |
---|---|
জন্ম | আমস্টারডাম, নেদারল্যান্ডস | ১৬ মার্চ ১৮৫১
মৃত্যু | ১ জানুয়ারি ১৯৩১ ৭৯) গর্সেল, নেদারল্যান্ডস | (বয়স
মাতৃশিক্ষায়তন | লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | ভাইরাস বিজ্ঞান এবং পরিবেশগত অণুজীববিজ্ঞানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ভাইরাসের ধারণামূলক আবিষ্কার (টোব্যাকো মোজাইক ভাইরাস) বৃদ্ধির মাধ্যমের ব্যবহার জৈব নাইট্রোজেন সংবদ্ধকরণ সালফেট হ্রাসকারী ব্যাকটেরিয়া নাইট্রোজেন সংবদ্ধকারী ব্যাকটেরিয়া আজোটোব্যাক্টর (অ্যাজোটোব্যাক্টর ক্রুকোকাম) রাইজোবিয়াম ডিসালফোভাইব্রিও ডিসালফিউরিকানস (স্পিরিলিয়াম ডিসালফিউরিকানস) |
পুরস্কার | লীউভেনহোক পদক (১৯০৫) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | অণুজীববিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ওয়াগিনেঞ্জেন বিশ্ববিদ্যালয় ডেলফ স্কুল অফ মাইক্রোবায়োলজি (প্রতিষ্ঠাতা) |
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন | অ্যাডলফ মায়ার |
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন | সের্গেই উইনোগ্রাডস্কি |
বাইয়েরিঙ্ক জন্মগ্রহণ করেছিলেন আমস্টারডামে। তিনি ডেলফ প্রযুক্তি কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন। সেখানে ১৮৭২ সালে তিনি রাসায়নিক প্রকৌশলীর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। তিনি ১৮৭৭ সালে লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অফ সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।[1]
সেই সময়, ডেলফ একটি পলিটেকনিক ছিল। তাই তাদের ডক্টরেট দেওয়ার অধিকার ছিলনা। তাই লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয় তাদের হয়ে ডক্টরেট প্রদান করেছিল। তিনি ওয়াগিনেঞ্জেনের কৃষি বিদ্যালয়ে (বর্তমানে ওয়াগিনেঞ্জেন বিশ্ববিদ্যালয়) এবং পরে পলিটেকনিশে হোগস্কুল ডেলফ এ (ডেলফ পলিটেকনিক, বর্তমানে ডেলফ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি) (১৮৯৫ থেকে) অণুজীববিজ্ঞানের শিক্ষক হন। তিনি ডেলফ স্কুল অফ মাইক্রোবায়োলজি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর কৃষি ও শিল্প মাইক্রোবায়োলজি নিয়ে গবেষণা, জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অনেক মৌলিক আবিষ্কারে সাহায্য করেছিল। তাঁর কৃতিত্বগুলো সম্ভবত তাঁর সমসাময়িক রোবের্ট কখ এবং লুই পাস্তুরদের কারণে চাপা পড়ে গিয়েছিল, কারণ, বাইয়েরিঙ্ক কখনও তাঁদের মত মানব রোগ নিয়ে গবেষণা করেন নি।
১৮৮৫ সালে তিনি রয়্যাল নেদারল্যান্ড একাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস এর সদস্য হন।[2]
তাঁকে ভাইরাস বিজ্ঞানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[3][4][5][6] ১৮৯৮ সালে, তিনি পরিস্রাবণ পরীক্ষাগুলোর ফলাফল প্রকাশ করে দেখিছিলেন যে ব্যাকটেরিয়ার চেয়ে ছোট সংক্রামকের মাধ্যমে টোব্যাকো মোজাইক রোগটি হয়।[7]
তাঁর পরীক্ষার ফলাফল, ১৮৯২ সালে করা দিমিত্রি ইভানভস্কির পর্যবেক্ষণের সাথে মিলে গিয়েছিল।[8] ইভানভস্কি এবং ওয়াগিনেঞ্জেনে তাঁর পূর্বসূরী অ্যাডলফ মায়ারের মতো, বাইয়েরিঙ্ক ও পরিস্রাবিত সংক্রামক বস্তুটিকে আলাদা করতে পারেননি; কিন্তু, তিনি এই উপসংহারে পৌঁছে ছিলেন যে সংক্রামক উপাদানটি জীবন্ত গাছে প্রবেশ করে নিজেদের প্রতিলিপি তৈরি করে এবং সংখ্যায় অনেক গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে। এর প্রকৃতি যে ব্যাকটেরিয়ার মত নয়, সেটি নির্দেশ করতে তিনি এই নতুন রোগ সংক্রামক জীবাণুটির নাম দিয়েছিলেন ভাইরাস। বাইয়েরিঙ্ক নিশ্চিত ছিলেন যে এই ভাইরাসটি কিছুটা তরল প্রকৃতির। তিনি এর নাম দিয়েছিলেন "সংক্রামক ভাইভাম ফ্লুইডাম" (সংক্রামক জীবিত তরল)। ১৯৩৫ সালে ওয়েন্ডেল মেরেডিথ স্ট্যানলির টোব্যাকো মোজাইক ভাইরাসের (টিএমভি) স্ফটিক আকার দেখতে পাওয়া, ১৯৩৯ সালে টিএমভি এর প্রথম ইলেকট্রন মাইক্রো-লেখচিত্র পাওয়া এবং ১৯৩৯ সালে টিএমভি এর প্রথম রঞ্জন রশ্মি স্ফটিক বীক্ষণ বিশ্লেষণ করার পর জানা গিয়েছিল ভারাসটি কণার আকারের।
বাইয়েরিঙ্ক নাইট্রোজেন সংবদ্ধকরণ আবিষ্কার করেছিলেন।[9] এই পদ্ধতিতে দ্বি পরমাণু নাইট্রোজেন গ্যাস অ্যামোনিয়াম আয়নে রূপান্তরিত হয়ে যায় এবং গাছপালা মাটি থেকে তা টেনে নিতে পারে। কিছু গাছের (শুঁটি জাতীয়) মূলের কন্দের ভিতরে বাস করা ব্যাকটেরিয়া এই নাইট্রোজেন সংবদ্ধকরণে সাহায্য করে। মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি এবং কৃষিকার্যের জন্য প্রয়োজনীয় জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া আবিষ্কার করা ছাড়াও, বাইয়েরিঙ্ক উদ্ভিদ এবং ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে এই পারস্পরিক নির্ভরতার ও ব্যাখ্যা করেছিলেন।
বাইয়েরিঙ্ক ব্যাকটেরিয়ার সালফেট হ্রাস ঘটনাটি আবিষ্কার করেছিলেন, যেটি আসলে অবাত শ্বসনের একটি ধরন। তিনি জেনেছিলেন যে, ব্যাকটিরিয়া অক্সিজেনের পরিবর্তে প্রান্তীয় ইলেকট্রন গ্রাহক হিসাবে সালফেট ব্যবহার করতে পারে। বর্তমানে ভূজৈব-রসায়ন চক্র সম্যক বুঝতে গেলে এই আবিষ্কারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম পরিচিত সালফেট-হ্রাসকারী ব্যাকটিরিয়া স্পিরিলিয়াম ডিসালফারিক্যান, যা এখন ডিসালফোভাইব্রিও ডিসালফারিক্যান নামে পরিচিত,[10]সেটিকে বাইয়েরিঙ্ক আলদা করতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং ব্যাখ্যা করেছিলেন।
বাইয়েরিঙ্ক বৃদ্ধির মাধ্যমের ব্যবহার আবিষ্কার করেছিলেন। এটি পরিবেশের অণুজীব অধ্যয়নের একটি মৌলিক পদ্ধতি। অণুজীব সংক্রান্ত পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে লরেন্স ব্যাস বেকিংয়ের বলা "সবকিছুই সর্বত্র আছে, কিন্তু, পরিবেশ তাকে নির্বাচন করে" এই ধারণাটির কৃতিত্ব প্রায়শই ভুলভাবে বাইয়েরিঙ্ককে দেওয়া হয়।[11][12]
বাইয়েরিঙ্ক সামাজিকভাবে একটু উদ্ভট ব্যক্তিত্বের ছিলেন। তিনি ছাত্রদের সাথে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করতেন, কখনো বিবাহ করেননি, এবং তাঁর খুব কমই পেশাদার সহযোগী ছিল। তিনি তাঁর তপস্বী জীবনযাপনের জন্যও পরিচিত ছিলেন এবং তাঁর মত ছিল বিবাহ ও বিজ্ঞান একে অপরের পরিপূরক নয়। তিনি শ্রেণীকক্ষে অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে জীববিজ্ঞান পড়াতেন, তা সত্ত্বেও তাঁর ছাত্র এবং তাদের পিতামাতার মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা অত্যন্ত কম ছিল, যেজন্য তিনি পর্যায়ক্রমে হতাশায় ভুগতেন। ১৯২১ সালে, ৭০ বছর বয়সে, ডেলফ স্কুল অফ মাইক্রোবায়োলজি থেকে অবসর গ্রহণের পরে, তিনি গর্সেলে গিয়ে তাঁর দুই বোনের সাথে বাকি জীবন কাটিয়ে ছিলেন।[13]
বাইয়েরিঙ্কিয়া (ব্যাকটেরিয়ার একটি গণ), বাইয়েরিঙ্কিয়াসি (রাইজোবিয়ালস পরিবারভুক্ত), এবং বাইয়েরিঙ্ক (জ্বালামুখ) তার নামানুসারেই রাখা হয়েছে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.