সন্ন্যাসব্রত

উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

সন্ন্যাসব্রত

অ্যাসেটিসিজম বা বাংলায় সন্ন্যাসব্রত (মূল গ্রীকঃ অ্যাস্কেসিস; অর্থঃ অনুশীলন, প্রশিক্ষণ) হচ্ছে ঐন্দ্রিক ভোগবিলাস থেকে বিরত থেকে আধ্যাত্মিকতা অর্জনের লক্ষ্যে জীবনধারণ করা। সন্ন্যাসীরা জাগতিক জীবনাচার পরিত্যাগ করতে পারে বা সমাজের সাথে যুক্তও থাকতে পারে। কিন্তু মূলত তারা স্থাবর সম্পত্তি ও দৈহিক বাসনা ত্যাগ করে মিতব্যয়ী জীবন ধারণ করে। এবং তারই সাথে উপবাস করার মাধ্যমে ধর্ম বা আধ্যাত্মিক সাধনাতে মগ্ন থেকে জীবনাতিপাত করে থাকে।[]

বঙ্গের একজন সুফি মুসলিম সন্ন্যাসী (ফকির), ১৮৬০ দশক

ঐতিহাসিকভাবে নানা ধর্মে - যেমন বৌদ্ধ, জৈন, হিন্দু, খ্রিস্টানইহুদিতে সন্ন্যাসব্রতের নিদর্শন পাওয়া যায়। সম্প্রতি মূলধারার ইসলাম ধর্মে আরবি রমযান মাসে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযা রাখার মাধ্যমে মুসলিমরাও সন্ন্যাসব্রত পালন করে থাকে। এসময়ে মুসলিমরা পানি-খাদ্যসহ জাগতিক মোহসম্পর্কিত সকল কাজ থেকে বিরত থাকে। রমযান মাসে রোযা রাখাটা সম্পূর্ণভাবে সৃষ্টিকর্তার জন্য এবং তার সাথে বন্ধন তৈরি করার জন্য পালন করা হয়। আর সিয়াম বা রোযা যেহেতু ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি, তাই সকল মুসলমানের জন্য এটা পালন করা বাধ্যতামূলক। সুফি ঐতিহ্য বছরের পর বছর ধরে তীব্রভাবে সন্ন্যাসব্রত অনুসরণ করে আসছে।[][]

এই মতাবলম্বীরা মোক্ষ[], পরিত্রাণআধ্যাত্মিকতা[] লাভের উদ্দেশ্যে যাবতীয় ইহজাগতিক বাসনা থেকে বিরত থাকে। প্রাচীন ধর্মতত্ত্বে সন্ন্যাসব্রতকে এক ধরনের আত্মিক রূপান্তরের মাধ্যম বা যাত্রা হিসেবে দেখা হয় যেখানে সাধারণই যথেষ্ট, শান্তি পুরোপুরি আভ্যন্তরীণ এবং মিতাচারই প্রয়োজনের অধিক।[] অপরদিকে, জরাথ্রুস্টবাদ, প্রাচীন মিশরীয় ধর্ম,[] ডায়োনিসিয়ান ধর্মমতের মত বেশ কিছু প্রাচীন ধর্মমতে, এমনকি বামহস্তরীতির মত কিছু আধুনিক ধর্মমতে সন্ন্যাসব্রতকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের ভোগ-সুখবাদে জোর দেয়া হয়েছে।

তথ্যসূত্র

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.