Loading AI tools
ঐতিহাসিক মসজিদের শহর উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মসজিদের শহর বাগেরহাট মূলত একটি বিলুপ্ত শহর। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত বাগেরহাট জেলার অন্তর্ভুক্ত বাগেরহাট শহরের একটি অংশ ছিল এই শহরটি। বাগেরহাট খুলনা থেকে ১৫ মাইল দক্ষিণ পূর্ব দিকে এবং ঢাকা থেকে ২০০ মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত।[১] এই শহরের অপর নাম ছিলো খলিফতাবাদ এবং এটি শাহী বাংলার পুদিনার শহর নামেও পরিচিত ছিল[২]। ১৫শ শতকে তুর্কি সেনাপতি খান-ই-জাহান এই শহরটি গড়ে তোলেন। [৩] বিশ্বের হারিয়ে যাওয়া ১৫টি শহরের একটি তালিকা তৈরী করেছিলো ফোর্বস, আর ৫০টির বেশি ইসলামিক স্থাপত্যের সমন্বয়ে তৈরী এই শহরটি এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ১৯৮৩ সালে এই শহরটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয় "স্থাপত্য কর্মের একটি অসাধারণ নিদর্শন হিসেবে যা মানব ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বর্ণনা করে।"[৪]। ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর মধ্যে ষাট গম্বুজ মসজিদ অন্যতম পরিচিত[২][৫]। এগুলো ছাড়াও এই শহরের অন্যান্য আরও বেশ কিছু স্থাপনা মূল শহরের অংশ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, এগুলোর মধ্যে রয়েছে খান জাহানের সমাধী, সিংগরা মসজিদ, নয় গম্বুজ মসজিদ, সিংগরা মসজিদ ইত্যাদি।[৪][৬]
ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান | |
---|---|
মানদণ্ড | সাংস্কৃতিক: ৪র্থ |
সূত্র | ৩২১ |
তালিকাভুক্তকরণ | ১৯৮৫ (৯তম সভা) |
মসজিদের শহর বাগেরহাট অবস্থিত গঙ্গা এবং ব্রহ্মপূত্র নদীর মিলনস্থানে এবং উপকূল থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার (৩৭মাইল)। শহরটির ক্ষেত্রফল ৫০ বর্গকিলোমিটার।[৪] এটি ভৈরব নদীর মরিবান্দ শাখার তীরে পূর্ব-পশ্চিম বরাবর প্রায় ৬ কিমি. এবং উত্তর-দক্ষিণ বরাবর ২৫ কিমি. জুড়ে বিস্তৃত। যা একসময় সুন্দরবন নামক লোনাপানির বনের অংশ হয়ে গিয়েছিল। প্রাচীন নিদর্শনগুলো পর্যবেক্ষণ করে বোঝা যায়, এই শহর ১৫ শতাব্দীতে নির্মিত হয় এবং ১৬ শতাব্দীতে এটি “খলিফাতাবাদ” নামে পরিচিত ছিল। ঘন জঙ্গলের প্রকৃতি এবং এতে বসবাসকারী বাঘের কথা মাথায় রেখে শহরটিকে বসবাসযোগ্য বানানোর জন্য অসাধারণ কাঠামোয় শহরটি তৈরি হয়।[২][৩][৪][৬][৭] বর্তমানে সবগুলো স্থাপত্য নিরাপদ পরিবেশে রয়েছে, যা জঙ্গল থেকে পরিবর্তিত হয়ে আজ পাম গাছে ঘেরা কৃষিজমি।[১]
আজকের বাগেরহাটের ইতিহাসের সন্ধান রয়েছে সুলতান নাসির আল-দীন মাহমুদ শাহ্ এর বাংলা সুলতানাতে। (১৪৪২-১৪৫৯[৮]) ১৫ শতাব্দীতে সুলতানাতের একজন প্রশাসক উলুঘ খান জাহান (১৪৩৩–১৪৫৯) এই শহর প্রতিষ্ঠা করেন। তার কবরে ১৪৫৯-কে তার মৃত্যুর সাল উল্লেখ করা হয়েছে যা থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে শহরটি ১৫ শতাব্দীতে নির্মাণ করা হয়। তিনি রাস্তা, সেতু এবং পানি সরবরাহের জলাশয়বিশিষ্ট (পুকুর- দুইটি পুকুর এখনো আছেঃ “ঘোড়াদীঘি” এবং “দারগাদিঘী”) একটি পরিকল্পিত শহর, জলাধার, অনেকগুলো মসজিদ ও মাজার, প্রাসাদ এবং তার নিজের মাজার তৈরি করেছিলেন যার সবগুলোই ছিল “খান জাহানের স্থাপত্যশৈলী”। খান জাহান এই শহরেই বাস করতেন এবং অনেক জনহিতকর কাজ করেছিলেন।[২][৭] জানা যায় যে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে দিল্লীর সুলতানাত ভারতবর্ষের দূরবর্তী প্রান্তে বাংলায় ইসলাম প্রচার করতে চেয়েছিল এবং এই দুঃসাধ্য কাজের দায়িত্ব দেয়া হয় উলুঘ খান জাহানকে।[৯][২] উলুঘ খান জাহান প্রশাসক হিসেবে তার অসাধারণ দক্ষতা ( তিনি দক্ষিণ বাংলায় ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, এবং বরিশাল নামক জায়গার প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলেন ) এবং স্থাপত্য বিষয়ক জ্ঞানের জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি একজন পীর ও ছিলেন, একজন সাধু ব্যক্তি যিনি অপ্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত অর্জন থেকে বিরত থাকেন (তিনি রাজকীয় পদ থেকে বিরত থাকেন এবং তার নামে কোন জিনিস রাখেননি)। এজন্য তার সমাধি বাংলাদেশে গুরুত্ব সহকারে সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং অসংখ্য ধার্মিক ব্যক্তি এখানে আসেন।[৭] ১০ টি মসজিদের উপর গবেষণায় দেখা যায় যে এদের মধ্যে সাতটি মসজিদ- ষাট গম্বুজ মসজিদ এবং এরসাথে উলুঘ খান জাহান মাজার, রনবিজয়পুর মসজিদ, বিবি বেগনী মসজিদ, চুনখোলা মসজিদ এবং নয় গম্বুজ মসজিদ উলুঘ খান জাহানের রীতিতে তৈরি। অন্য তিনটি মসজিদ যা পরবর্তীতে তৈরি হয়েছিল সেগুলো হল দশ গম্বুজ মসজিদ, রেজাই খান মসজিদ এবং জিন্দা পীর মাজার।[৩][৭] ১৮৯৫ সালে এলাকাটিতে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় এবং ১৯০৩-০৪ এ ষাট গম্বুজ মসজিদের পুনরুদ্ধার দৃশ্যমান হয়। ১৯০৭-০৮ সালে ছাঁদের এবং ২৮টি গম্বুজ পুনরুদ্ধার করা হয়।[১০] ১৯৮২-৮৩ সালে ইউনেস্কো বাগেরহাট এলাকার জন্য একটি বৃহৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৫ সালে একে বিশ্বের উল্লেখযোগ্য স্থানের (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট) তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।[১১]
শহরটির পরিকল্পনায় ইসলামিক স্থাপত্যরীতির প্রভাব আছে; বিশেষত মসজিদের কারুকার্যে মুঘল এবং তুর্কী স্থাপত্যরীতির প্রভাব আছে। এই শহরে ৩৬০টি মসজিদ,[৪] (যাদের অধিকাংশের নকশা সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী এবং স্বতন্ত্র), অসংখ্য সরকারি ভবন, গোরস্থান, সেতু, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং জলাধার ছিল। এগুলো তৈরি করা হয়েছিল পোড়ামাটি দিয়ে যেগুলো শতাব্দীর পর শতাব্দী লবণাক্ত পরিবেশ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে।[৪][৬] সাম্প্রতিক সময়ে যখন এই ঐতিহাসিক শহরকে জঙ্গল থেকে মুক্ত করা হয় তখন এর গঠন কাঠামো পর্যবেক্ষণ করে বোঝা যায় যে এই শহরটি দুইটি অঞ্চলে উন্নয়ন হয়েছিল। মূল অঞ্চলটি হচ্ছে ষাট গম্বুজ মসজিদ এবং এর আশেপাশের এলাকা। আর এর পূর্ব দিকে অন্য অঞ্চলটি উলুঘ খান জাহানের মাজার ঘিরে অবস্থিত। দুইটি অঞ্চলের মধ্যবর্তী ব্যবধান ৬ কিমি.।[৪][৬]
বাংলাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত বাগেরহাটে ঠাকুর দিঘি নামে একটি স্বাদু পানির জলাশয়ের পূর্ব তীরে অবস্থিত ষাট গম্বুজ মসজিদ বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন মসজিদ এবং একে বর্ণনা করা হয়েছে “ঐতিহাসিক মসজিদ যা মুসলিম বাংলার স্বর্ণযুগের প্রতিনিধিত্ব করে”।[১২] It is laid is over an area of ১৬০ ফুট (৪৯ মি) by ১০৮ ফুট (৩৩ মি).[১] মসজিদটি এই কারণে অসাধারণ যে এর ৬০টি পিলার আছে যা ৭৭টি অসাধারণভাবে বাঁকানো “নিচু বর্গাকার গম্বুজ” ধারণ করে যা সময়ের সাথে ক্ষয় হচ্ছে; এর বেশ কয়েকটি চারকোণা গম্বুজ আছে যেগুলো বাংলা স্থাপত্যরীতিতে তৈরি।[১] খান জাহান আলি ১৪৪০ সালে এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি প্রার্থনা, সম্মেলন কেন্দ্র এবং মাদ্রাসা (ইসলামিক বিদ্যালয়) হিসেবে ব্যবহার হত। ৭৭টি গম্বুজ ছাঁদের উপর অবস্থিত এবং চারটি ছোট গম্বুজ মসজিদের চার কোণার মিনারে তথা টাওয়ারে অবস্থিত। মসজিদের পূর্ব দেয়ালে ১১টি বিরাট আকারের খিলান যুক্ত দরজা আছে। মাঝের দরজাটি অন্যগুলোর চেয়ে বড়। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালে আছে ৭টি করে দরজা। মসজিদের চার কোণায় ৪টি মিনার আছে। এগুলোর নকশা গোলাকার এবং এরা উপরের দিকে সরু হয়ে গেছে। এদের কার্নিশের কাছে বলয়াকার ব্যান্ড ও চূড়ায় গোলাকার গোলাকার ব্যান্ড আছে। মিনারগুলোর উচ্চতা, ছাঁদের কার্নিশের চেয়ে বেশি। সামনের দুটি মিনারে প্যাঁচানো সিঁড়ি আছে এবং এখান থেকে আযান দেবার ব্যবস্থা ছিল।[২] পশ্চিম দেয়ালে ১১ টি “মিহরাব” আছে যাতে পাথর ও টেরাকোটার কারুকার্য এবং মেঝেটি ইটের তৈরি। দেয়াল এবং “মিহরাব” গুলো সালফেট দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল। অধিকাংশ ক্ষতি সংস্কার করা হয়েছে। মসজিদটির অধিকাংশই টেরাকোটা এবং ইট দ্বারা সজ্জিত এবং বিশাল সংখ্যক পর্যটক আকৃষ্ট করে।[১৩][১][২][৪][৬][৮]
নয় গম্বুজ মসজিদ ১৫ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। এটি ঠাকুর দিঘি নামে পরিচিত একটি দিঘীর পশ্চিম দিকে অবস্থিত। এই মসজিদটির কাছেই খান জাহান আলীর মাজার রয়েছে। প্রথাগতভাবেই মসজিদটির পশ্চিম দিকের দেয়াল মক্কার দিকে মুখ করে আছে এবং এই দেয়ালের ভেতরের অংশেই বসানো হয়েছে মিহরাব; মিহরাবের চারপাশে ফুলের নকশার টেরাকোটা দেখা যায়। মসজিদটির চারটি কোনায় মিনার অর্থাৎ সুউচ্চ গোলাকার টাওয়ার আছে। মসজিদের দেয়ালগুলো বিশাল একটি গম্বুজ ধারণ করে যার চারপাশে আটটি অপেক্ষাকৃত ছোট গম্বুজ রয়েছে। নয় গম্বুজ মসজিদ সালফেট দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল। এরপর থেকে একে তাৎক্ষণিকভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মসজিদটির কাছেই জিন্দা পীর মসজিদ এবং মাজার রয়েছে।[২]
দিঘী বা খাঞ্জেলী দিঘীরপশ্চিম পাড়ে ১৬.৪৫ মিঃX১৬.১৫মিঃ ভূমি পরিকল্পনায় নির্মিত নয়গম্বুজ মসজিদটি অবস্থিত। এর দেয়ালগুলো ২.৫৯মিঃ পুরম্ন। মসজিদ অভ্যত্মরে দুসারি পাথরের থাম দিয়ে মোট নয়টি চৌকো খণ্ডে বিভক্ত। প্রতিটি খণ্ডের উপর মসজিদের ছাদের নয় গম্বুজ নির্মিত। সামনের দিকে ৩টি মাঝে ৩টি এবং পেছনের দিকে ৩টি মোট নয়টি গম্বুজ রয়েছে।গম্বুজ গুলি গুলি ধারাবাহিক ভাবে সাজানো, যাতে যেদিক দিয়েই দেখা হোক না কেন, মনে হবে প্রতিটি গম্বুজের একটি গম্বুজ থেকে আর একটি গম্বুজের দূরত্ব সমান। পশ্চিমের কিবলা দেয়ালে নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর একটি করে মোট তিনটি অবতল মিহরাব আছে। এগুলোর টিম্প্যানাম ও স্প্যানাড্রল অংশে পোড়ামাটির কারম্নকাজ লক্ষ্য করা যায়।মসজিদটির সামনের দিকে মোট ৩টা দরজা রয়েছে।
ষাট গম্বুজ মসজিদের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের রাস্তা ধরে অগ্রসর হলে দেখা যাবে সিংগরা মসজিদ। এই মসজিদের একটিমাত্র গম্বুজ রয়েছে যা দৃঢ় ভাবে নির্মিত এবং প্রশস্ত গম্বুজ। খান জাহান আলির নিজস্ব স্থাপত্যশৈলী অনুযায়ী গম্বুজটি পুরু দেয়ালের উপর দণ্ডায়মান এবং এর শীর্ষে রয়েছে বাঁকানো কার্নিশ। বিবি বেগনি মসজিদ এবং চুনাখোলা মসজিদ ও এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ কিন্তু এদের আকার সিংগরা মসজিদের তুলনায় অনেক বড়। মসজিদটি ক্রমশ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল এবং পুনরুদ্ধার কার্যক্রম অনিবার্য হয়ে পরে।[১][২]
রনভিজয়পুর মসজিদে বাংলাদেশের বৃহত্তম গম্বুজ রয়েছে।[২] এটি ১১ মিটার প্রশস্ত এবং খিলান ও pendentive এর উপর স্থাপিত।[১] The corners have tapering circular turrets while the external cornice has a slight curve. মসজিদের অভ্যন্তরভাগ খুবই সাধারন। তবে প্রধান মিহরাবে ফুলের নকশা আছে। এটি খুলনা বাগেরহাট সড়কে খান জাহান জাদুঘরের বিপরীত পাশে অবস্থিত। এই মসজিদ খান জাহানের স্থাপত্যরীতিতে নির্মাণ করা হয়েছে। ১৯৬০ থেকে ১৯৭০ এর মাঝে বেশ কয়েকবার এটি মেরামত করা হয়। তবে আর্দ্রতার প্রভাব দূর করতে মসজিদের ভিতরে ও বাইরে আরও মেরামত প্রয়োজন। [১][২]
চুনাখোলা গ্রামে (এককালে প্রচুর চুনাপাথরের নির্যাস পাওয়া যেত বলে এই নাম হয়েছে) ধানক্ষেতের মাঝে অবস্থিত চুনখোলা মসজিদটি ১৫ শতাব্দীতে নির্মিত। মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী খান জাহান আলীর স্থাপত্যশৈলী থেকে ভিন্নতার প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃত। এটি ৭.৭ মিটার চৌকোণা দালান যার দেয়ালগুলো ২.২৪ মিটার পুরু।[৭] মসজিদটির পূর্বদিকে ৩টি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে প্রবেশদ্বার রয়েছে। এতে তিনটি মিহরাব রয়েছে যার মধ্যে কেন্দ্রীয় মিহরাবটি সবচেয়ে বড়। এছাড়া রয়েছে squinches এবং অর্ধ গম্বুজ। বহির্ভাগ বিশেষত পূর্ব দিকের ফটকের গঠন যা depicts four rectangular panels bordered by foliated scrolls with merlons having plant motifs খান জাহানের স্থাপত্য রীতি থেকে ভিন্ন। It has four turrets with curved cornices. ইটের দেয়ালগুলো সালফেটের প্রভাবে নষ্ট হয়ে যায়। ইউনেস্কোর নির্দেশনা অনুযায়ী ১৯৮০-এর দিকে এর সংস্কার করা হয়।[১]
ছয়-গম্বুজ মসজিদ (রেজাখোদা মসজিদ নামেও পরিচিত) ১৫ শতাব্দীতে “ঠাকুর দিঘী” পুকুরের কাছে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মসজিদের ছয়টি কলাম ছিল যা পাথরের কলামের সহায়তায় টিকে থাকত। প্রাচীন নিদর্শন সংক্রান্ত আইনের আওতায় সংরক্ষিত প্রধান “মিহরাবটি” একটি শিকল ও ঘণ্টা নকশা প্রদর্শন করত। তবে এটি প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় একটি নতুন দালান তৈরি হয় যাদের অপসারণ করা হয়েছে এবং প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ টিকে আছে।[১]
খান জাহানের সমাধিটি একটি জলাশয়ের উত্তর তীরে অবস্থিত যাতে কুমির রয়েছে এবং জলাশয়টি ঠাকুর দিঘি নামে পরিচিত। এটি বর্গাকৃতি এবং খননের সময় উত্তলিত পদার্থ দিয়ে পাড় তৈরি করে তার উপর সমাধি তৈরি করা হয়েছে। পাড় থেকে প্রশস্ত ও উলম্ব ধাপ তৈরি করা হয়েছে যা দিয়ে জলাশয়ে যাওয়া যায়। সমাধিটি ৪৫ বর্গফুট জায়গার উপর স্থাপিত একটি একক গম্বুজ বিশিষ্ট কাঠামো।[১৪] নির্দিষ্ট আকৃতির পাথরের পাঁচটি স্তর দ্বারা ভিত্তি (বেজমেন্ট) তৈরির পর ইটের দেয়াল দ্বারা মাজারের গঠন সম্পূর্ণ করা হয়। ১৮৮৬ সালে নথিভুক্ত সূত্র থেকে জানা যায় যে মেঝে বিভিন্ন রং এর ষড়ভুজাকৃতি টাইলস দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল যাদের অধিকাংশের রং ছিল নীল, সাদা এবং হলুদ। তবে বর্তমানে মাজারের অল্প কিছু জায়গায় সেরকম টাইলস খুঁজে পাওয়া যায়। কাল পাথর তিন ধাপে সাজিয়ে খান জাহানের কবর তৈরি করা হয়েছে। সেখানে পবিত্র কুরআন শরীফ এর আয়াত আরবি ও পার্সিয়ান ভাষায় লিখা আছে। কবর যে কক্ষে রয়েছে সেই কক্ষের দেয়ালে প্রাপ্ত লেখা থেকে খান জাহানের জীবন সম্পর্কে ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায়। অবসর গ্রহণের পর খান জাহান এখানে তার বাকি জীবন কাটান এবং ১৪৫৯ সালের ২৫ অক্টোবর মৃত্যুবরণের পর এখানেই তাকে সমাহিত করা হয়। [১৪] এখন এই স্থানটি মানুষের কাছে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং মানুষ এখানে সেই ব্যক্তিকে শ্রদ্ধা নিবেদনে আসেন যিনি একটি শহর ও এর গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন তৈরির জন্য আজীবন কাজ করেছেন। পীর আলীর মাজার (পীর আলী খান জাহানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী) এখন এই মাজারের অংশ মনে হলেও এটি একটি ভিন্ন কাঠামোর স্থাপনা। খান জাহান আলীর মাজারের কাছে দারঘা মসজিদ নামে একটি মসজিদ [১][২][১৪]
ইউনেস্কো এর সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ষাট গম্বুজ মসজিদের সামনে একটি ছোট জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করে। ঐতিহাসিক এলাকাটি থেকে প্রাপ্ত প্রাচীন নিদর্শনসমূহ এখানে সংরক্ষণ করা হয়েছে যাতে বাগেরহাটের ইতিহাস সম্পর্কে মানুষকে জানানো যায়। এখানে তিনটি প্রদর্শনী কক্ষ রয়েছে যেখানে “বাগেরহাটের ঐতিহাসিক মসজিদের শহর” সংক্রান্ত প্রাচীন লেখনী, সিরামিক, টেরাকোটা ও কারুকার্যময় ইটের নিদর্শন রয়েছে। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দালানের ছবিও প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে।[১৫][১৬]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.