মথুরাপুর দেউল বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার মথুরাপুর গ্রামে অবস্থিত একটি দেউল বা মঠ। এই প্রত্নতাত্ত্বিক অবকাঠামোটি আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীতে তৈরি করা হয়েছিলো বলে ধারণা করা হয়; তবে কারো কারো অনুমান এটি সপ্তদশ শতকের স্থাপনা।[1]

দ্রুত তথ্য মথুরাপুর দেউল (মথুরাপুর মঠ), অবস্থান ...
মথুরাপুর দেউল
(মথুরাপুর মঠ)
Thumb
কেন্দ্রীয় মন্দিরের দৃশ্য
অবস্থান
অবস্থানবাংলাদেশফরিদপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ
দেশ বাংলাদেশ
স্থাপত্য
স্থাপত্য শৈলীটেরাকোটা
ধরনসাংস্কৃতিক
বন্ধ

অবস্থান

বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার গাজনা ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামে মথুরাপুর দেউলটি অবস্থিত।[2][3] এই দেউলটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মধুখালী বাজার থেকে মধুখালী-রাজবাড়ী ফিডার সড়কের দেড় কিলোমিটার উত্তরে[3] এবং মধুখালী-বালিয়াকান্দি আঞ্চলিক সড়কে মধুখালী সদর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে গাজনা ইউনিয়নে সড়কের পশ্চিম দিকে অবস্থিত যার বিপরীত দিক (সড়কের পশ্চিম দিক) দিয়ে বয়ে গেছে চন্দনা নদী।[4]

ইতিহাস

কথিত আছে সংগ্রাম সিং নামক বাংলার এক সেনাপতি এটি নির্মাণ করেছিলেন ৷ ১৬৩৬ সালে ভূষণার বিখ্যাত জমিদার সত্রাজিতের মৃত্যুর পর সংগ্রাম সিংকে এলাকার রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং তৎকালীন শাসকের ছত্রছায়ায় তিনি বেশ ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন ৷ এলাকার রীতি অনুসারে তিনি কাপাস্তি গ্রামের এক বৈদ্য পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করেন এবং মথুরাপুর গ্রামে বসবাস শুরু করেন ৷ অন্য এক সূত্রমতে, সম্রাট আকবরের বিখ্যাত সেনাপতি মানসিং রাজা প্রতাপাদিত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ের স্মারক হিসেবে এই দেউল নির্মাণ করেছিলেন ৷ সে অনুযায়ী, মথুরাপুর দেউল একটি বিজয়স্তম্ভ ৷ তবে সূত্রটির সত্যতা নিরুপন সম্ভব হয়নি ৷

বর্ণনা

এই দেউলটি বারোকোন বিশিষ্ট এবং মাটি থেকে প্রায় ২১.২ মিটার উঁচু; যার ভিতর একটি ছোট কক্ষ রয়েছে।[2]

এর গঠন প্রকৃতি অনুসারে একে মন্দির বললে ভুল হবে না ৷ এটি একটি রেখা প্রকৃতির দেউল ৷ ষোড়শ শতাব্দীর স্থাপনা গুলোর মধ্যে মথুরাপুর দেউল সম্ভাবত একমাত্র রেখা প্রকৃতির দেউল ৷ দেউলটি বারো কোণ বিশিষ্ঠ একটি ভবনের মত স্থাপনা ৷ দেউলটিতে দুইটি প্রবেশ পথ আছে, একটি দক্ষিণ মুখী অন্যটি পশ্চিম মুখী ৷

এটি তৎকালীন ভবনগুলোর মধ্যে একমাত্র বারো কোণবিশিষ্ঠ কাঠামো ৷ বারোটি কোণ থাকায় উপর থেকে দেখলে এটিকে তারার মত দেখা যায় ৷ দেউলটির উচ্চতা ৮০ ফুট ৷ স্থাপনাটির মূল গঠন উপাদান চুন-সুরকির মিশ্রণ ৷ দেউলের বাইরের দেয়ালটি লম্বালম্বিভাবে সজ্জিত, যা আলোছায়ার সংমিশ্রণে এক দৃষ্টিনন্দন অনুভূতির সৃষ্টি করে ৷ পুরো স্থাপনা জুড়ে টেরাকোটার জ্যামিতিক ও বাহারী চিত্রাংকণ রয়েছে ৷ রামায়ণ কৃষ্ণলীলার মত হিন্দু পৌরাণিক কাহিনির চিত্র, গায়ক, নৃত্যকলা, পবন পুত্র বীর এবং যুদ্ধচিত্রও এই দেউলের গায়ে খচিত রয়েছে ৷ প্রতিটি কোনের মাঝখানে কৃত্তিমূখা স্থাপন করা রয়েছে ৷ তবে দেউলটির কোথাও কোন লেখা পাওয়া যায় নি ৷ বাংলার ইতিহাসে এর নির্মাণশৈলী অনন্য বৈশিষ্ট্য বহন করে ৷ এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একটি সুরক্ষিত সম্পদ ৷

চিত্রশালা

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.