ভাল্লুক

স্তন্যপায়ী প্রাণীর একটা পরিবার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

ভাল্লুক

ভাল্লুক বা ভালুক শ্বাপদ বর্গের (order carnivora) স্তন্যপায়ী প্রাণী। পৃথিবীতে আট রকম প্রজাতির ভাল্লুক পাওয়া যায় । সাধারণত ভাল্লুকের চেহারা ভারী এবং পা ছোট আর মোটা হয় । ভাল্লুকের মুখ লম্বাটে, গায়ে বড় বড় লোম । ভাল্লুকের থাবায় পাঁচটি আঙ্গুল আর আঙ্গুলে নখ থাকে ।

দ্রুত তথ্য বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস, Genera ...
ভাল্লুক
সময়গত পরিসীমা: ৩.৮–০কোটি
কা
পা
ক্রি
প্যা
Late Eocene – Recent
Thumb
পোলার চিড়িয়াখানায় একটি বাদামী ভাল্লুক
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণীজগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: স্তন্যপায়ী
বর্গ: মাংশাশী
উপবর্গ: Caniformia
পরিবার: Ursidae
G. Fischer de Waldheim, 1817
Genera
  • Ailuropoda
  • Helarctos
  • Melursus
  • Ursus
  • Tremarctos
  • Agriarctos
  • Agriotherium
  • Amphicticeps
  • Amphicynodon
  • Arctotherium
  • Arctodus
  • Indarctos
  • Kolponomos
  • Parictis
  • Plionarctos
  • Ursavus
বন্ধ

নামকরণ

সারাংশ
প্রসঙ্গ

ভাল্লুকের নাম বিয়ার এসেছে পুরাতন ইংরেজি বেরা থেকে এবং পরিবার নাম এসেছে ভাল্লুকের জার্মান নাম থেকে।[] ইংরেজি শব্দ "bear" এসেছে প্রাচীন ইংরেজি শব্দ bera থেকে এবং এটি জার্মানিক ভাষাগুলির মধ্যে ভাল্লুকের বিভিন্ন নামের পরিবারের অন্তর্ভুক্ত, যেমন সুইডিশ ভাষায় björn, যা একটি ব্যক্তিনাম হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এই শব্দটি প্রচলিতভাবে প্রোটো-ইন্ডো-ইউরোপীয় শব্দের সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়, যার অর্থ "বাদামী"। অর্থাৎ, "bear" শব্দটির অর্থ হবে "বাদামী প্রাণী"।[][]

তবে ডোনাল্ড রিঞ্জ উল্লেখ করেছেন যে, এই ব্যাখ্যাটি অর্থবোধক হলেও, প্রাক-ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষায় "বাদামী" অর্থের কোনো শব্দের এমন গঠন পাওয়া যায় না। তিনি প্রস্তাব করেছেন যে, "bear" শব্দটির উৎপত্তি মূলত প্রাক-ইন্দো-ইউরোপীয় শব্দ *ǵʰwḗr- ~ *ǵʰwér থেকে, যার অর্থ "বন্য জন্তু"।[]

এই শব্দের ব্যবহার বা নিষিদ্ধ শব্দ এড়ানোর কৌশল হিসেবে এসেছে যে প্রাক-জার্মানি গোষ্ঠীগুলো তাদের প্রাচীন "bear" শব্দ, অর্থাৎ arkto শব্দটি পরিত্যাগ করে। আর ভয়ে এ ধরনের একটি রূপ ব্যবহার শুরু করে। কারণ, তারা বিশ্বাস করত যে জন্তুটির আসল নাম উচ্চারণ করলে সেটি উপস্থিত হতে পারে।[][] লেখক রালফ কিস - এর মতে, এটিই এখন পর্যন্ত জানা প্রাচীনতম গোপন শব্দ ব্যবহারের উদাহরণ।[]

ভাল্লুক সম্পর্কিত শ্রেণিবিভাগের নামগুলো যেমন Arctoidea এবং Helarctos এসেছে প্রাচীন গ্রিক শব্দ ἄρκτος (arktos) থেকে, যার অর্থ "ভাল্লুক"।[] এছাড়াও, "arctic" এবং "antarctic" শব্দগুলোও এসেছে এই একই গ্রিক শব্দ থেকে, যা Ursa Major বা "Great Bear" নামে পরিচিত একটি তারা-গুচ্ছের নামের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই তারা-গুচ্ছটি উত্তর আকাশে খুবই সুপরিচিত।[]

এছাড়াও, "arctic" এবং "antarctic" শব্দগুলোও এসেছে এই একই গ্রিক শব্দ থেকে, যা "Great Bear" নামে পরিচিত একটি তারা-গুচ্ছের নামের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই তারা-গুচ্ছটি উত্তর আকাশে খুবই সুপরিচিত।[]

Ursidae এবং Ursus প্রজাতির নামগুলো এসেছে ল্যাটিন শব্দ Ursus/Ursa থেকে, যার অর্থ "পুরুষ ভাল্লুক/মহিলা ভাল্লুক"।[] "Ursula" নামটি, যা মূলত খ্রিস্টান সন্ত Ursula-এর নাম থেকে নেওয়া, এর অর্থ "ছোট মেয়ে ভাল্লুক" (ল্যাটিন ursa-এর সঙ্কুচিত রূপ)। সুইজারল্যান্ডে "Urs" নামটি পুরুষদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়, এবং বার্ন শহর ও অঞ্চলের নামটির উৎপত্তিও Bär (জার্মান ভাষায় "ভাল্লুক") থেকে এসেছে বলে কিংবদন্তি রয়েছে। জার্মানিক নাম Bernard (Bernhardt এবং অনুরূপ অন্যান্য রূপসহ) এর অর্থ "ভাল্লুকের মতো সাহসী", "ভাল্লুকের মতো শক্তিশালী", বা "বীর ভাল্লুক"।[১০][১১] পুরনো ইংরেজি নাম Beowulf একটি চিত্রকল্পের মাধ্যমে শব্দ ব্যবহারের কৌশল, যার অর্থ "মৌমাছি-নেকড়ে" বা "ভাল্লুক", অর্থাৎ একজন সাহসী যোদ্ধা।[১২]

বিবর্তন

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
Plithocyon armagnacensis skull, a member of the extinct subfamily Hemicyoninae from the Miocene

Ursidae পরিবারের প্রাচীনতম সদস্যরা বিলুপ্ত উপপরিবার অ্যামফিসাইনোডন্টিনির অন্তর্গত ছিল। এর মধ্যে রয়েছে Parictis (প্রবীণ ইওসিন থেকে মধ্য মায়োসিন, ৩৮–১৮ মিলিয়ন বছর আগে) এবং এর চেয়ে সামান্য কম বয়সী Allocyon (প্রারম্ভিক ওলিগোসিন, ৩৪–৩০ মিলিয়ন বছর আগে), যারা উত্তর আমেরিকায় বাস করত। এই প্রাণীগুলি আজকের ভাল্লুকের মতো দেখতে ছিল না। বরং এরা ছোট আকারের মতো দেখতে ছিল। এদের সামগ্রিক চেহারা র‍্যাকুন-এর মতো দেখতে ছিল। সম্ভবত এদের খাদ্যাভ্যাসও ব্যাজার(গর্তবাসী এক জাতীয় ক্ষুদ্রাকৃতির নিশাচর প্রাণী) মতোই ছিল। Parictis ইউরেশিয়া ও আফ্রিকায় মায়োসিন সময়ের আগ পর্যন্ত দেখা যায়নি।[১৩]

এটি স্পষ্ট নয় যে উত্তর-ইওসিন যুগের উরসিডরা ইউরেশিয়াতেও উপস্থিত ছিল কি না। তবে, বেরিং স্থল সেতুর মাধ্যমে প্রাণী সম্প্রদায়ের আদান-প্রদান সম্ভব হতে পারে, বিশেষত উত্তর-ইওসিন যুগের (প্রায় ৩৭ মিলিয়ন বছর আগে) সমুদ্রপৃষ্ঠের বড় নিম্ন অবস্থানের সময় থেকে প্রাথমিক অলিগোসিন যুগ পর্যন্ত।[১৪] ইউরোপীয় প্রজাতি, যেগুলো শারীরিক গঠনে Allocyon-এর সঙ্গে খুবই সাদৃশ্যপূর্ণ এবং আমেরিকার তুলনামূলকভাবে অল্প বয়সী Kolponomos (প্রায় ১৮ মিলিয়ন বছর পূর্বের) এর সঙ্গেও মিল রয়েছে,[১৫] সেগুলো ওলিগোসিন যুগ থেকে পরিচিত, যার মধ্যে Amphicticeps এবং Amphicynodon উল্লেখযোগ্য।[১৪] এছাড়া বিভিন্ন শারীরিক প্রমাণে দেখা গেছে যে অ্যাম্ফিসাইনোডনটাইন প্রজাতির সঙ্গে পিনিপেড (pinniped)-এর সংযোগ ছিল। উভয় প্রজাতিই আধা-জলজ এবং উটারের মতো গঠনবিশিষ্ট স্তন্যপায়ী ছিল।[১৬][১৭][১৮] পিনিপেড এবং অ্যাম্ফিসাইনোডনটাইনদের একত্রে একটি গোষ্ঠী হিসেবে সমর্থনকারী প্রমাণ ছাড়াও, বিভিন্ন শারীরিক ও কিছু আণবিক প্রমাণ দ্বারা দেখা গেছে যে ভাল্লুকরা পিনিপেডদের জীবিত নিকটতম আত্মীয়।[১৭][১৮][১৯][২০][২১][২২]

Thumb
Life restoration of Arctotherium bonariense

র‍্যাকুনের আকারের এবং কুকুরের মতো দেখতে Cephalogale হল Hemicyoninae উপপরিবারের সবচেয়ে পুরনো পরিচিত সদস্য। এটি প্রাক মধ্য ওলিগোসিন যুগে, প্রায় ৩০ মিলিয়ন বছর আগে (Mya), ইউরেশিয়ায় আবির্ভূত হয়েছিল।[১৪] এই উপপরিবারে আরও কিছু পরবর্তী প্রজন্মের প্রজাতি অন্তর্ভুক্ত, যেমন Phoberocyon (২০–১৫ Mya) এবং Plithocyon (১৫–৭ Mya)। একটি Cephalogale-সদৃশ প্রজাতি থেকে ওলিগোসিন যুগের শুরুতে (৩০–২৮ Mya) Ursavus নামে একটি প্রজাতির উদ্ভব ঘটে। এই প্রজাতি এশিয়ায় বিভিন্ন প্রজাতিতে বিস্তৃত হয় এবং বর্তমানে জীবিত সমস্ত ভাল্লুকের পূর্বপুরুষ বলে বিবেচিত। Ursavus প্রজাতির কিছু সদস্য মায়োসিন যুগের শুরুতে (২১–১৮ Mya) উত্তর আমেরিকায় প্রবেশ করে, সাথে Amphicynodon এবং Cephalogale-এর কিছু প্রজাতিও প্রবেশ করেছিল।

জেনেটিক এবং শারীরিক তথ্য অনুযায়ী, পান্ডা (Ailuropodinae) প্রথম প্রজাতি হিসেবে জীবিত ভাল্লুকদের অন্য লাইনেজ থেকে প্রায় ১৯ Mya সময়ে পৃথক হয়ে যায়। তবে, এই উপপরিবারের কোনো জীবাশ্ম প্রায় ১১ Mya-এর আগে পাওয়া যায়নি।[২৩][২৪]

রঙ

সব ভাল্লুকের গায়ের রঙ একরকম নয়। যেমন, আমেরিকান কালো ভাল্লুকের গায়ের রঙ কালো, বাদামি, নীলাভ কালো ইত্যাদি হয়ে থাকে। সূর্য ভাল্লুকের (সূর্য ভাল্লুক)বুকের রঙ ধূসর এবং মুখে বিভিন্ন রকমের দাগ থাকে। অন্যদিকে মেরু ভাল্লুক হয় সাদা রঙের, তবে এদের সাদা রঙের লোম এর নিচে কালো লোম থাকে।

আচরণ

মা ও শাবক ছাড়া বাকি সব ভাল্লুকই একা বাস করে। তবে মাঝে মাঝে তারা দল বেঁধে খাবার খোঁজে। খাবারের খোঁজে এরা বিশাল এলাকা ঘুরে বেড়ায়। ভাল্লুক তার খাবার সংগ্রহের পথ ভালভাবে মনে রাখে। অধিকাংশ ভাল্লুকই গাছে চড়তে পারে। তাদের শক্তিশালী থাবা ও ধারালো নখ এ কাজে সাহায্য করে।

ঝগড়া করার সময় ভালুক প্রতিপক্ষকে ভয় দেখানোর জন্য দুই পায়ে দাঁড়িয়ে যায়।

ভাল্লুক প্রজাতি

১। সূর্য ভাল্লুক

২। এশীয় কালো ভাল্লুক

৩। বাদামি ভাল্লুক

৪। মেরু ভালুক

৫। আমেরিকান কালো ভাল্লুক|

৬। পান্ডা

৭। চশমাছোপ ভাল্লুক

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.