ইওসিন বা ইয়োসিন উপযুগ (প্রতীক Eo[2] ) হল ভূতাত্ত্বিক সময়ের হিসেবে সিনোজোয়িক মহাযুগের প্রথম যুগ প্যালিওজিনের দ্বিতীয় অংশ। সময়ের হিসেবে আজ থেকে ৫ কোটি ৬০ লক্ষ বছর আগে থেকে শুরু করে ৩ কোটি ৩৯ লক্ষ বছর আগের সময়সীমাকে এই উপযুগ নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে। প্যালিওজিন যুগের অন্তর্ভুক্ত এর আগের উপযুগটি হল প্যালিওসিন উপযুগ ও পরবর্তী উপযুগটি অলিগোসিন উপযুগ। এইসব যুগ ও উপযুগগুলির সময়সীমা সাধারণভাবে বিভিন্ন যুগান্তকারী ঘটনার দ্বারা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এইধরনের বিভিন্ন যুগান্তকারী ঘটনার মধ্যে ভূতাত্ত্বিক, আবহাওয়া ও জীবাশ্মবিদ্যাগত ঘটনাগুলিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। ইয়োসিন যুগের সূচনাবিন্দু হিসেবে যে অপেক্ষাকৃত সংক্ষিপ্ত সময়টিকে বেছে নেওয়া হয়, সেটি এরকমই একটি পরিবর্তন দ্বারা চিহ্নিত। সেই সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন আইসোটোপ 12C'র তুলনায় 13C'র ঘনত্ব ছিল অস্বাভাবিক রকম কম।[3] অপরদিকে আজ থেকে ৩ কোটি ৩৯ লক্ষ বছর আগে সাইবেরিয়ায় এবং উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপকূলে চেসাপিক উপসাগরে এক বা একাধিক বৃহৎ উল্কাপাতের অভিঘাতে যে মহাবিপর্যয়ের ফলে পার্থিব পরিবেশ ও জীবজগতের স্বাভাবিক ধারাবাহিকতায় একটি বৃহৎ ছেদ ঘটে যায়, ভূতাত্ত্বিক ভাষায় সেই গ্রঁদ ক্যুপিওর নামে অভিহিত ঘটনাপঞ্জীকেই এই উপযুগের অন্তিম-পর্ব ও পরবর্তী অলিগোসিন উপযুগের সূচনাপর্ব বলে ধরে নেওয়া হয়।[3] তবে এই উপযুগের সূচনা ও শেষবিন্দু হিসেবে চিহ্নিত ঘটনাগুলি সুনির্দিষ্ট হলেও ঠিক কবে সেগুলি ঘটেছিল, তা মোটামুটিভাবে নির্দিষ্ট করা গেছে, কিন্তু সুনির্দিষ্ট করে চিহ্নিত করা এখনও সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

আরও তথ্য যুগ, উপযুগ ...
যুগ উপযুগ অধোযুগ বয়স (মিলিয়ন বছর আগে)
নিওজিন মায়োসিন আকুইতানিয়ান নবীনতর
প্যালিওজিন অলিগোসিন চ্যাটিয়ান ২৩.০৩–২৮.১
রুপেলিয়ান ২৮.১–৩৩.৯
ইওসিন প্রায়াবোনিয়ান ৩৩.৯–৩৮.০
বার্তোনিয়ান ৩৮.০–৪১.৩
লুতেশিয়ান ৪১.৩–৪৭.৮
য়িপ্রেশিয়ান ৪৭.৮–৫৬.০
প্যালিওসিন থ্যানেশিয়ান ৫৬.০–৫৯.২
সেলান্ডিয়ান ৫৯.২–৬১.৬
দানিয়ান ৬১.৬–৬৬.০
ক্রিটেশিয়াস অন্ত্য মাস্ট্রিক্টিয়ান প্রাচীনতর
২০১৩ খ্রিস্টাব্দে জানুয়ারি মাসে ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন স্ট্র্যাটিগ্রাফি অনুসারে
প্যালিওজিন যুগের বিভাগ[1]
বন্ধ
ইয়োসিন যুগের পৃথিবীর মানচিত্র (ভূ-প্রত্নতাত্ত্বিক তত্ত্বের উপর নির্ভর করে পুনর্গঠিত)। এখানে বিন্দু বিন্দু অংশগুলি ইওসিন উপযুগে মহাদেশগুলির অবস্থান নির্দেশ করছে।

ইওসিন শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ἠώς (ইওস, সূচনা) এবং καινός (কাইনোস, নতুন) অর্থাৎ নতুন সূচনা বোঝাচ্ছে, এটি সেই সময়ের নতুন প্রাণীকুলের আগমন নির্দেশ করে।[4]


এছাড়াও, একপ্রকার রন্ঞ্জক এর নাম ইয়োসিন বা ইয়োসিন‌। এটি রক্তের শ্বেতকণিকা ইওসিনোফিলের লাল দানার রংয়ের জন্য দায়ী(2)।আরো, লাল লিপস্টিকেও এর ব্যবহার করা হয়(1)। এবং, নানা রোগ নির্ণয়ে এর ব্যবহার বর্তমানে করা হচ্ছে(3)।[৫]

তথ্যসূত্র

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.