Loading AI tools
অনন্য মামুন পরিচালিত ২০১৫ সালের চলচ্চিত্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ব্ল্যাকমেইল ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশী প্রণয় ও অপরাধধর্মী পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। কাহিনি, চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনা করেছেন অনন্য মামুন। চলচ্চিত্রটি গোলাম মাওলা কায়েসের প্রযোজনায় মেঘ এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে নির্মিত। চলচ্চিত্রে ছোটবেলায় অনাথ হওয়া ও অবহেলার শিকার দুই বোনে গল্প চিত্রায়িত হয়েছে। বাংলাদেশের ঢাকা শহরের বিভিন্ন অপরাধী ও প্রভাবশালীদের ব্ল্যাকমেইল করে নিজেদের অনন্য অপরাধ জগৎ তৈরী ও একই সাথে একজন যুবকের প্রেমে পড়ে সম্পর্কের অবনতি- এই চলচ্চিত্রের মূল উপজীব্য। মূখ্য চরিত্রসমূহ রূপদান করেছেন আনিসুর রহমান মিলন, ইয়ামিন হক ববি, মৌসুমী হামিদ, মিশা সওদাগর, কাজী হায়াৎ ও অভিষিক্ত দিপালী আক্তার তানিয়া প্রমুখ। ২০১৪ সালের জুন হতে ব্ল্যাকমেইলের মূখ্য চিত্রগ্রহণ শুরু হয়। স্টুডিও'র বাইরে অধিকাংশ দৃশ্য বাংলাদেশের ঢাকা'র বিভিন্ন এলাকা ও নেপালের বিভিন্ন স্থানে ধারণকৃত। চলচ্চিত্রটি ২০১৫ সালের আগস্টে এবং সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের শতাধিক ও মালয়েশিয়ার দশটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়, এবং পরবর্তীতে ২০১৯ সালে 'ভিডিও স্ট্রিমিং' সেবায় উম্মুক্ত করা হয়।
ব্ল্যাকমেইল | |
---|---|
পরিচালক | অনন্য মামুন |
প্রযোজক | গোলাম মাওলা কায়েস |
চিত্রনাট্যকার | অনন্য মামুন[1] |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার |
|
চিত্রগ্রাহক |
|
সম্পাদক | এম একরামুল হক |
প্রযোজনা কোম্পানি | মেঘ ইন্টারটেনমেন্ট |
পরিবেশক |
|
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৪০ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
নির্মাণব্যয় | ৳ ১.২০ কোটি[2] |
ব্ল্যাকমেইল ঘোষণা ছাড়া নাম ও শিল্পী পরিবর্তন, নির্মাণ ও সেন্সর প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মূল পরিচালকের বদলে অন্য পরিচালকের নাম ব্যবহার এবং এটির চিত্রনাট্য ভারতীয় হিন্দি চলচ্চিত্র গুন্ডে'র নকল করার জন্য বিতর্কিত। নানাবিধ কারণে বিতর্কিত হলেও চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের কাছ থেকে ইতিবাচক অভ্যর্থনা লাভ করে।
ছোটবেলায় সিডরের কবলে পরে পরিবারকে হারিয়ে অনাথ হয় অরিন(ববি) ও মুসকান(মৌসুমী) নামের দুই বোন। বেঁচে থাকার তাগিদে ঢাকায় আসে, কাজ আর খাবার খোঁজে তারা। সবার অবহেলার শিকার, দুই বোনকে আশ্রয় দেয় এক বৃদ্ধ(জামিলুর)। বৃদ্ধ তাদের এক লোহা লক্করের দোকানে কাজ জুগিয়ে দেন। দোকান মালিক(ডন) অরিনকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে মুসকান দোকান মালিককে খুন করে। ভাল জীবনের আশা ছেড়ে দিয়ে অরিন ও মুসকান খারাপ পথ বেঁছে নেয়। তবে সাধারণ মানুষের ক্ষতি না করে বড় অপরাধী আর টেন্ডারবাজদের ব্ল্যাকমেইল শুরু করে। পরিণত দুইবোন বাংলাদেশের সরকারি গম বিরতণের টেন্ডার দখল নিতে গিয়ে এক অসাধু ব্যবসায়ী(শিবা শানু)কে হত্যা করে। ঢাকা শহরের অন্ধকার জগতের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে। দুইবোনের কর্মকাণ্ড আইনের চোখে 'অপরাধ' হিসেবে প্রমাণিত নাহলেও সরকার আর প্রভাবশালীদের নজরে পরে। তাদেরকে আইনের চোখে অপরাধী প্রমাণের জন্য চাপ দেয়া হয় বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তা মোঃ মমিনুল ইসলাম(কাজী হায়াৎ)কে। মমিনুল দুইবোনের কর্মকাণ্ড তদন্তভার দেন পাগলাটে এসিট্যান্ট কমিশনার মিশু চৌধুরী(মিশা)কে। অরিন ও মুসকানকে আইনের হাতে তুলে দিতে বিভিন্ন জাল বিছায় মিশু।
পরিণত বয়সে নগরীর ত্রাস হয়ে ওঠা এই দুই নারীর জীবনে আসে রোমিও(মিলন)। একই সাথে বক্সার রোমিওর প্রেমে পড়ে দুই বোন। এক খেলায় রোমিওকে অন্য বক্সার আঘাত করলে মুসকান সেই বক্সারকে গুলি করে হত্যা করে। সবার সামনে হত্যা আর মিশু চৌধুরীর হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে মুসকান পালিয়ে যায়। এইসময় অরিনের সাথে রোমিও'র প্রেম হয়। পলাতক মুসকান অরিনের প্রেম মেনে নিতে পারেনা। রোমিও'কে পাওয়ার আশায় এক মেলায় নিজ বোনকে গুলি করে সে, কিন্তু গুলি লাগে রোমিও'র গায়ে। মুসকানের আক্রোশ আর রোমিও'র প্রেমে দ্বিধাগ্রস্থ অরিনকে মিশু চৌধুরী কোর্টে গিয়ে বক্সার হত্যার জন্য মুসকানের বিরূদ্ধে স্বাক্ষী দিতে রাজি করায়। একটা সময় অরিন বুঝতে পারে রোমিও একজন পুলিশ অফিসার এবং তারা দুই বোন মিশু চৌধুরী'র ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছে।
এছাড়াও দুইবোনের কিশোর বয়সে আশ্রয়দাতা'র চরিত্রে জামিলুর রহমান শাখা, মুসকান ও অরিনের সকল কাজের তত্ত্বাবধায়কের চরিত্রে কাজী উজ্জল[11], কিশোরি অরিনকে ধর্ষণ চেষ্টাকারীর চরিত্রে ডন, ঢাকার সকল গমের টেন্ডার দখলকারী ও বিজলির বড়ভাইয়ের চরিত্রে শিবাশানু, হোটেল মালিকের চরিত্রে সোহেল রশিদ[12] এবং অন্যান্য প্বার্শচরিত্রে আশরাফ কবীর[9] বিপ্লব, সোহেল, বাপ্পি, তুহিন, মোস্তাক আহমেদ অভিনয় করেছেন।
ব্ল্যাকমেইল প্রথমত বিদ্যা সিনহা সাহা মীম, হিরণ চট্টোপাধ্যায় ও মৌসুমী হামিদকে শ্রেষ্ঠাংশে রেখে নির্মাণ শুরুর ঘোষণা করা হয়েছিল।[3][13] পরবর্তীতে মীমের পরিবর্তে ইয়ামিন হক ববি[14] ও হিরণের পরিবর্তে আনিসুর রহমান মিলনকে নিয়ে ২০১৪ সালের ২৯ জুন হতে 'ফ্রেন্ডশীপ' শিরোনামে এটির মুখ্য চিত্রগ্রহণ শুরু হয়।[15] বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের স্টুডিও'র বাইরে বাংলাদেশের ঢাকার সদরঘাট, লালবাগ কেল্লা, মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়াম, আশুলিয়া ল্যান্ডিং স্টেশন, পূর্বাচল, উত্তরা, মহেরা জমিদার বাড়ি, কমলাপুর ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন এবং নেপালের বিভিন্ন স্থানে দৃশ্যধারণ করা হয়।[16][2] সংলাপ দৃশ্যায়নের পাশাপাশি ব্ল্যাকমেইলে ইবরার টিপু, ইমরান মাহমুদুল, এলিটা করিম, সাবরিনা পড়শী, পূজা ও লেমিসের কন্ঠে ধারণকৃত ৫টি গান ব্যবহার করা হয়।[17] নির্মাণ শেষে চলচ্চিত্রটির সেন্সর প্রাপ্তি ও ট্রেইলার প্রকাশের সময় পূর্বনাম ফিরিয়ে আনা হয়।[5][18]
ব্ল্যাকমেইল চলচ্চিত্রটি ঘোষণা ছাড়া নাম পরিবর্তন, নিষেধাজ্ঞার কারণে মূল পরিচালকের জায়গায় অন্য পরিচালকের নাম ব্যবহার ও ভারতীয় চলচ্চিত্র হতে নকলের জন্য আলোচিত।[2][14] অনন্য মামুন চলচ্চিত্রটির মূল পরিচালক ছিলেন, কিন্তু চলচ্চিত্র নির্মাণে তার উপর নিষেধাজ্ঞার থাকায় চিত্রগ্রহণের শুরুতে চন্দন চৌধুরী'র নাম ব্যবহার করা হয়।[14] ছায়াছবির সেন্সর সনদ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নির্মাতা হিসেবে সাইদুর রহমান মানিকের নাম ব্যবহার করা হয়।[1] নিজের নাম গোপন রাখতে অনন্য মামুন ব্ল্যাকমেইল নাম দিয়ে নির্মাণ ঘোষণা দেয়ার পর চিত্রগ্রহণ শুরুর সময় নাম পরিবর্তন করে 'ফ্রেন্ডশীপ' রেখেছিলেন।[19] এছাড়াও নির্মাণের ক্ষেত্রে ব্ল্যাকমেইল-এর চরিত্রগুলির নাম ও চিত্রগ্রহণের স্থান নির্বাচনে ভিন্নতা ব্যতীত চলচ্চিত্রটির দৃশ্যায়ণ ও সংলাপ ভারতীয় গুন্ডে হতে নকলের অভিযোগ ছিল।[20][21]
ব্ল্যাকমেইল ২০১৫ সালের ১৪ আগস্ট মেঘ এন্টারটেইনমেন্টের পরিবেশনায় স্বল্প পরিসরে এবং ২৮ আগস্ট বৃহৎ পরিসরে বাংলাদেশের শতাধিক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।[17] একই বছর ২৪ সেপ্টেম্বর হতে ইদুল আজহার সময় ডি-সিনেমা'র পরিবেশনায় মালয়শিয়ার ১০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।[22] প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির চার বছর পর জি-সিরিজ তাদের নিজস্ব পরিবেশনায় ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর চলচ্চিত্রটি ইউটিউবে উম্মুক্ত করে।[23]
ব্ল্যাকমেইল চলচ্চিত্রটি নকল চিত্রনাট্যের ভিত্তিতে নির্মিত হলেও সমালোচকদের কাছ ইতিবাচক অভ্যর্থ্যনা লাভ করে। বাংলা মুভি ডেটাবেজে দুইটি ভিন্ন সমালোচনার শিরোনামে চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে "নকল হলেও ভাল..." এবং "শতভাগ বিনোদনে ঠাসা ব্ল্যাকমেইল" মন্তব্য করা হয়।[24][12]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.