Loading AI tools
পশ্চিম আফ্রিকায় সক্রিয় একটি জিহাদি গোষ্ঠী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বোকো হারাম হল নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সক্রিয় একটি জিহাদি জঙ্গি সংগঠন। এর আসল নাম হল, জামায়াতু আহলিস সুন্নাহ লিদ্দাওয়াতি ওয়াল জিহাদ (আরবি: جماعة اهل السنة للدعوة والجهاد)।[1] ২০০১ সালে মোহাম্মদ ইউসুফ নামে একজন নাইজেরীয় নাগরিক এটি প্রতিষ্ঠা করেন। তাদের প্রধান লক্ষ্য হল, পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থার বিরোধীতা করা এবং নাইজেরিয়ায় শরিয়া শাসিত একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।[2]
বোকো হারাম ( جماعة أهل السنة للدعوة والجهاد) | |
---|---|
প্রতিষ্ঠাতা | উস্তাজ মোহাম্মদ ইউসুফ |
প্রতিষ্ঠাতা নেতা | উস্তাজ মোহাম্মদ ইউসুফ |
নেতা |
|
মুখপাত্র | আবু কাকা |
অপারেশনের তারিখ | ২০০১–বর্তমান |
সদরদপ্তর | বর্নো রাজ্য, নাইজেরিয়া |
সক্রিয়তার অঞ্চল | উত্তর নাইজেরিয়া |
মতাদর্শ | ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা, পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থা বিরোধী, জিহাদবাদ |
মিত্র | আল কায়েদা |
বিপক্ষ | |
খণ্ডযুদ্ধ ও যুদ্ধ | বোকো হারাম বিদ্রোহ |
প্রতিষ্ঠাকালীন দলটি সম্পূর্ণ অহিংস ও অরাজনৈতিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও ২০০৯ সালে বোকো হারাম বিদ্রোহের পর তাদের নেতা মোহাম্মদ ইউসুফ এবং প্রায় ৮০০ সদস্য নিহত হওয়ার পর তারা সহিংস ও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে আস্তে আস্তে তারা অন্যান্য সহিংস জিহাদি গোষ্ঠিগুলির রূপ পরিগ্রহ করে এবং ভয়ংকর হয়ে ওঠে।[2]
১৯০০ সালে নাইজেরিয়া ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত বর্তমান বোকো হারাম যে অঞ্চলে সক্রিয়, সেই অঞ্চল বোরনু আমিরাত শাসন করেছিল। এটি ছিল একটি সার্বভৌম সালতানাত, যা মদিনার সংবিধানের নীতি অনুসারে পরিচালিত হয়েছিল এবং রাজ্যের প্রায় সকল জনগণ মুসলমান ছিল। ১৯০৩ সালে ব্রিটিশরা বোরনু আমিরাত ও সোকোতো খিলাফত উভয়ই দখল করে সেখানে উপনিবেশ কায়েম করে। সে সময়ে খ্রিস্টান মিশনারিরা এই অঞ্চলে খ্রিস্টান বার্তা ছড়িয়ে দেয় এবং সরকারী সহায়তায় নাইজেরীয় জনগণের একটি বড় অংশকে ধর্মান্তরিত করে।[3] ১৯৬০ সালে নাইজেরিয়া স্বাধীনতা লাভ করলে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে।[4][5] ১৯৭৯ ও ১৯৮৩ সালের এর মধ্যে একটি বেসামরিক শাসনের একটি সংক্ষিপ্ত সময় ব্যতীত ১৯৬৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত একাধিক সামরিক একনায়ক দ্বারা শাসিত হয়। ১৯৯৯ সালে নাইজেরিয়ায় গণতন্ত্রের আবির্ভাবের ঘটে।
বোরনো সুফি শেখ ফাতাহির মতে, মোহাম্মাদ ইউসুফ কানো শহরের সালাফি শেখ জাফর মাহমুদ আদামু কর্তৃক প্রভাবিত ছিলেন। তিনি কথাবার্তায় ইউসুফকে 'তরুণদের নেতা' বলে ডাকতেন। তারা দুজনেই মাইদুগুড়ির ইন্দিমি মসজিদে দাওয়াত প্রচার করেন এবং সেখানে বোর্নোর ডেপুটি গভর্নর উপস্থিত ছিলেন।[6][7] বোকো হারামের অনেকেই মোহাম্মদ মারওয়া দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিলেন, যিনি মাইতাৎসিন (যিনি অন্যকে অভিশাপ দেন) নামে পরিচিত ছিলেন এবং তিনি একমাত্র কুরআন ও ধর্মীয় বইপুস্তক ছাড়া অন্য বই পড়ার নিন্দা করতেন।[8][9][10][11] ২০০৯ সালে বিবিসির একটি সাক্ষাত্কারে মোহাম্মাদ ইউসুফ বিবর্তন বিরোধী, সমতল পৃথিবী ও বাষ্পীভবনের পরিবর্তে আল্লাহর হুকুমে বৃষ্টি প্রেরিত হয় এমন মন্তব্য প্রকাশ করেছিলেন। এটাকে তার ওপর মোহাম্মাদ মারওয়ার প্রভাব বলে মনে করা হয়। [12]
নাইজেরিয়ায় ১৯৬৭-১৯৭৯ সালের গৃহযুদ্ধের অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয় ধর্মীয় সহিংসতাকে। ব্রিটিশ শাসন শেষে নাইজেরীয় মুসলিমদের অনেকে ইসলামি শাসনের স্বপ্ন দেখেছিল এবং সামরিক সরকার তা বাস্তবায়ন করতে গড়িমসি করার কারণে ব্যাপকহারে ধর্মীয় সহিংসতা শুরু হয়। ফলে ১৯৮০ সালে দেশের উত্তরের বৃহত্তম শহর কানোতে ধর্মীয় সহিংসতা একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যায় এবং সেই দাঙ্গায় চার বা পাঁচ হাজার মানুষ মারা যান। পরবর্তীতে সামরিক ক্র্যাকডাউনে অনেক শরিয়াপন্থিকে হত্যা করা হয়, যা পরবর্তী বিশ বছরে উত্তরের অন্যান্য শহরগুলিতে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার মাত্রাকে উৎসাহিত করে।[13] ধর্মীয় ক্ষেত্রে সামাজিক বৈষম্য ও দারিদ্র্য উভয়ই বোকো হারামের বিদ্রোহের জন্য অবদান রাখে বলে ধারণা করা হয়।[14]
ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর থেকেই প্রধানত ইসলামি রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদরা নাইজেরিয়ায় পশ্চিমা শিক্ষার বিরুদ্ধে তাদের মৌলিক বিরোধিতা প্রকাশ করেন। তারা মূলত দেশের বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপকহারে পশ্চিমাধারার শিক্ষা চালু করার বিরোধী ছিলেন। সামরিক শাসনের অধীনে তাদের অধিকাংশে দমন করা হলেও রাজনৈতিক, সামরিক ও ধর্মীয় বিষয়ে তারা নাইজেরিয়ায় উন্নতি লাভ করে। দেশটিতে বেসামরিক শাসনে ফিরে আসার পর থেক তাদের গঠিত আধাসামরিক শাখাগুলি পরবর্তী বছরগুলিতে বেশিরভাগ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সাথে জড়িত ছিল। উত্তর নাইজেরিয়ার প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল আরেওয়া কনসালটেটিভ ফোরামের মিলিশিয়া শাখা আরেওয়া পিপলস কংগ্রেস একটি সামরিক ও গোয়েন্দা দক্ষতা সম্পন্ন গোষ্ঠী এবং গোপনে বোমা হামলাসহ বিভিন্ন সামরিক পদক্ষেপে জড়িত হতে সক্ষম বলে মনে করা হয়। [15]
২০০২ সালে মোহাম্মদ ইউসুফ উত্তর-পূর্ব রাজ্য বোর্নোর রাজধানী মাইদুগুরিতে বোকো হারাম নামে পরিচিত সম্প্রদায়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বোকো হারাম যাত্রার শুরুতে সম্পূর্ণ অহিংস ও অরাজনৈতিক দল ছিল। বোকো হারাম নেতারা প্রাথমিকভাবে মানুষদের সাহায্য করা শুরু করেন এবং হাসপাতালে তাদের খরচে চিকিৎসাসেবা চালু করেন। জনসেবামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি তারা পশ্চিমা শিক্ষা-সংস্কৃতির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। মানুষের তৈরি আইন ও আধুনিক বিজ্ঞানের বেশ কিছু তত্ত্বকে তারা অস্বীকার করে। তাদের ভাষায়, পশ্চিমা শিক্ষা মুসলমানদের দুর্নীতিগ্রস্ত করে তোলে। ২০০২ সালের শেষের দিকে ইউসুফ মাইদুগুরি নগরীতে ঘোষণা দেন যে, বোরনো রাজ্যে শরিয়া সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। ইউসুফ সেখানে মসজিদের পাশে একটি কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করেন। এই কমপ্লেক্সে অনেক গরিব নাইজেরীয় ও প্রতিবেশী দেশগুলির দরিদ্র মুসলিম পরিবারগুলিকে আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। তিনি তাদের শিক্ষা, খাওয়াদাওয়া ও থাকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেন।[16][2]
তাঁর কেন্দ্রের রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল, একটি ইসলামি রাষ্ট্র তৈরি করা। পুলিশ ও রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির নিন্দা করে ইউসুফ বেকার যুবকদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হন।[17][4][18][19] বোকো হারাম তার অস্তিত্বের প্রথম সাত বছর কমবেশি শান্তিপূর্ণভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং তাদের আন্দোলন তুলনামূলক স্থিতিশীল সমাজ থেকে দেশের উত্তর-পূর্বে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিয়ে যায়।[20] সংগঠনটির ক্রমবর্ধমান কার্যক্রম সম্পর্কে সরকার বারবার সতর্কতা উপেক্ষা করে।[21][22] দেশটির উলামা কাউন্সিল সরকার ও নাইজেরীয় টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে ইউসুফের কার্যক্রম প্রচার না করার পরামর্শ দিলেও তাদের সতর্কতা উপেক্ষা করা হয়। এরপর ইউসুফের গ্রেপ্তার তাকে বীরের মর্যাদায় উন্নীত করেছে। বোরনোর ডেপুটি গভর্নর আলহাজি দিবাল কথিতভাবে দাবি করেন যে, বোকো হারামের সাথে আল-কায়েদার সম্পর্ক ছিল।[6] স্টিফেন ডেভিস নামে একজন প্রাক্তন অ্যাঙ্গলীয় পাদ্রী, যিনি বোকো হারামের সাথে অনেকবার আলোচনা করেছেন, তিনি স্থানীয় নাইজেরীয় রাজনীতিবিদদের দোষারোপ করেন, যারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের জীবন কঠিন করে তোলার জন্য বোকা হারামকে সমর্থন করেন।[23]
এভাবে নাইজেরিয়ার কয়েকটি অঞ্চলে বোকো হারামের আধিপত্য সৃষ্টি হয়। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২০০৯ সালে বোকো হারাম উত্তর অঞ্চল থেকে সরকারি বাহিনীকে তাড়িয়ে দেয়। এটি বোকো হারাম বিদ্রোহ নামে পরিচিত। ফলে দেশটির সরকারি বাহিনী বোকো হারামের ওপর সশস্ত্র অভিযান চালায়।এতে বোকো হারামের ৮০০ এর বেশি সদস্য মারা যান। মোহাম্মদ ইউসুফকে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং পুলিশের হেফাজতে তাকে মেরে ফেলা হয়।[2]
তারপর থেকেই বোকো হারাম সহিংস, প্রতিশোধ পরায়ণ ও আক্রমণাত্মক হতে শুরু করে। আবু বকর সেকাউয়ের হাতে নতুন করে তাদের ভয়ংকর উত্থান ঘটে। তিনি এটিকে একটি গোপন বিদ্রোহী গোষ্ঠী থেকে ভয়ঙ্কর জিহাদি গোষ্ঠীতে পরিণত করেন। এরপর ২০১১ সালে নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজায় জাতিসংঘ অফিসে হামলা করে আলোচনায় আসে বোকো হারাম। সেখান তারা ২৩ জনকে হত্যা করে ও ৭৫ জনকে আহত করে। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে জোবি ও চিবকের দুটি পশ্চিমা বোডিং স্কুলে হামলা চালায় বোকো হারাম এবং সেখান থেকে তারা ২৭৬ জন মেয়েকে কিডন্যাপ করে এবং তখনই তারা বিশ্বব্যাপী খবরে আসে।[16]
হোয়াইট হাউস থেকে বোকো হারামের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তার সহধর্মিণী মিশেল ওবামাসহ অনেক মার্কিন নেতা। নাইজেরীয় সেনাবাহিনী অপহৃত মেয়েদের উদ্ধারে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েও মুক্ত করতে ব্যর্থ হয়। তবে পরবর্তীতে বোকো হারাম তাদের ছেড়ে দেয়। ফেরত দেওয়া অপহৃত ছাত্রীদের মাঝে তখন ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করা যায় এবং তাদের অনেকেকেই ধর্মকর্মে মনোযোগী হতে দেখা যায়।নাইজেরিয়ার একজন নাগরিক বলেন যে, শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যুদ্ধে তারা এত মানুষকে হত্যা করেছে যে, তা গণনা করা অসম্ভব ছিল। ২০১৫ সালে বামা ও গোজা শহর বোকো হারাম নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর আবাদামও কন্ট্রোলে নেয়। দামবোয়া ও চিবক দখল করে নাইজেরিয়ার বোরনো প্রদেশটিই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় বোকো হারাম।[16][2][24]
বোকো হারাম ও আইএসআইএল প্রাথমিকভাবে মিত্র ছিল। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে আবু বকর শেকাউ ১৬ মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। ভিডিওতে তিনি আইএসআইএলের তৎকালীন আমির আবু বকর আল-বাগদাদি, আল-কায়েদার প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরি ও আফগান তালেবান নেতা মোল্লা ওমরের প্রতি সমর্থন জানান।[25] ২০১৫ সালের মার্চে শেকাউ আইএসআইএসের স্বঘোষিত খলিফা আবু বকর আল-বাগদাদির প্রতি আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি দেন এবং বোকো হারাম নিয়ন্ত্রিত এলাকা আইএসের "পশ্চিম আফ্রিকীয় প্রদেশ" হয়ে ওঠে।
২০১৬ সালের আগস্টে আল-বাগদাদি শেকাউয়ের পরিবর্তে বোকো হারামের পূর্ববর্তী নেতা হিসেবে মোহাম্মদ ইউসুফের ছেলে আবু মুসাব আল-বারনাভিকে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছিল।[26] এর পিছনে কারণ ছিল যে, শেকাউ বেসামরিক মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তু বানানো বন্ধ করা বিষয়ে আবু বকর আল-বাগদাদির আদেশ অমান্য করেছিল। শেকাউ এই পদক্ষেপকে প্রত্যাখ্যান করে, যার ফলে বোকো হারাম কয়েক দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ২০১৭ সাল পর্যন্ত তাদের তিনটি উপদল ছিল এবং তাদের সবাই বোকো হারামের মূলমন্ত্র গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও পশ্চিমা প্রভাব" প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং দেশটিকে শরিয়া বাস্তবায়নকারী একটি ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল।[27]
২০১৮ সাল থেকে বোর্নো রাজ্যে বোকো হারামের আক্রমণে বড় ধরনের বৃদ্ধি ঘটে। বোকো হারামের হামলার ফলে ২০১৯ সালের প্রথমার্ধে ১৭০০ জনের বেশি প্রাণহানি ঘটেছে এবং এর মধ্যে তাদের নিজস্ব সদস্যদের হতাহতও রয়েছে।[28] সংগঠনটি দেশের দারিদ্র্যপীড়িত জনগণকে ছোট ঋণের প্রস্তাব [29] এবং বড় পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে লেক চাদ অববাহিকায় ব্যাপক সংখ্যক লোক নিয়োগ করতে সক্ষম হয়েছে। [30] এটি যুবক ছেলেদের অপহরণ করে তাদের নিজেদের দলে নিয়োগ করছে বলে জানা যায়। [31] বোকো হারাম কখনো কখনো পরিত্যক্ত ড্রোন ও অস্ত্র সজ্জিত যানবাহন দিয়ে নাইজেরীয় সেনাবাহিনীর ওপর অতর্কিত হামলা করে।[32] ফলে নিজেদের শক্তিশালী করার জন্য নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনী গ্রামীণ জনসংখ্যাকে গ্যারিসন শহরে কেন্দ্রীভূত করেছে। ২০১৯ সালে সেনাবাহিনী বোর্নো রাজ্যের ১০টি অঞ্চলের মধ্যে মাত্র ৪টির নিয়ন্ত্রণে ফিরে এসেছে বলে ধারণা করা হয়ে [32]
বিভক্ত হওয়ার পর থেকে অন্তত চার বছর ধরে দুটি গ্রুপ একে অপরের শত্রু ছিল না এবং কখনো কখনো কিছু হামলায় পারস্পরিক সহযোগিতাও করেছিল। ২০২১ সালে বোকো হারাম ও আইএসের পশ্চিম আফ্রিকীয় প্রদেশ (ISWAP) পরস্পরে শত্রু হয়ে ওঠে। ২০২১ সালে চালানো একটি হামলায় ISWAP এর বন্দুকধারীরা শেকাউকে লক্ষ করে গুলিবর্ষণ করে। হামলায় বোকো হারামের বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়। তখন শেকাউ নিজের গ্রেফতার এড়াতে নিজেকে বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেয় বলে তার বিরোধীরা দাবি করে।[33][34]এটি ছিল দুই গ্রুপের মধ্যে প্রথম বড় সংঘর্ষ। এরপর জুন মাসে বাকুরা সা'লাবার নেতৃত্বে তার অনুগতরা তার মৃত্যু নিশ্চিত করেছিল।[35]
সংগঠনটির নাম সর্বদা জামায়াতু আহলিস সুন্নাহ লিদ্দাওয়াতি ওয়াল জিহাদ ছিল।[36] তবে ২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেটের প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার করার পর এটি ইসলামিক স্টেট ইন ওয়েস্ট আফ্রিকা (ISWA) নামেও পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে গ্রুপটি ভেঙে গিয়ে ISWAP ও বোকো হারাম দুটি আলাদা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায় এবং এখনো তারা আলাদা গ্রুপ হিসেবে সক্রিয় আছে।[37]
বোকো হারাম নামটির অর্থ সাধারণত 'পশ্চিমা শিক্ষা নিষিদ্ধ' হিসাবে করা হয়। 'বোকো' শব্দটি হাউসা ভাষা থেকে, অর্থ ধর্মনিরপেক্ষ পশ্চিমা শিক্ষা। 'হারাম' শব্দটি আরবি حَرَام থেকে এসেছে; অর্থ নিষিদ্ধ বা শরিয়া অনুমোদিত নয় এমন।[38][8][39] ২০০৯ সালের একটি বিবৃতিতে তারা এই অনুবাদটিকে 'কাফের মিডিয়ার কাজ' বলে নিন্দা করে এবং বলে যে, প্রকৃত অনুবাদটি হল "পশ্চিমা সভ্যতা নিষিদ্ধ"। তারা পশ্চিম থেকে আসা আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বিরোধী নয় বরং এতে তারা বিশ্বাসী। তারা ধর্মনিরপেক্ষ পশ্চিমা সভ্যতার বিরোধী, যা পশ্চিমা শিক্ষার মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বে অনুপ্রবেশ করেছে।[40][41] এই নামের ইংরেজিতে অন্যান্য অনুবাদের মধ্যে রয়েছে "পশ্চিমী প্রভাব একটি পাপ" ও "ধর্মবিশ্বাস পাশ্চাত্যকরণ।[42][43] এর প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইউসুফের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলটি ইউসিফিয়া নামেও পরিচিত ছিল।[6][8][39][44][45]
কিছু বিশ্লেষক বোকো হারামের সাফল্যের কারণ হিসেবে অর্থনৈতিক কারণের ওপর জোর দিয়েছেন। [46] নাইজেরিয়ায় অধিকাংশ সম্পদ একটি ছোট রাজনৈতিক অভিজাত গোষ্ঠীর মধ্যে কেন্দ্রীভূত হয়ে আছে এবং তারা প্রধানত দেশের দক্ষিণে বসবাসকারী খ্রিস্টান।[46][47] খনিজ তেল সমৃদ্ধ নাইজেরিয়া হল আফ্রিকার বৃহত্তম অর্থনীতি। কিন্তু দেশের ১৭৩ মিলিয়ন জনসংখ্যার ৬০% (২০১৩) দৈনিক ১ ডলারের কম টাকায় জীবিকা নির্বাহ করে। তাই স্বাভাবিকভাবে জনগণ দুর্নীতিপরায়ণ রাষ্ট্রব্যবস্থার বিপক্ষে বোকো হারামকে সমর্থন দেয় এবং বোকো হারাম তাদের দখলীকৃত এলাকা অনেকটা দুর্নীতিমুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছে। [48][49]
ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির চাপে নাইজেরীয় সরকার ২০০০ সালের জানুয়ারিতে জামফারা থেকে শুরু করে এবং ২০০২ সালের শেষের দিকে উত্তর নাইজেরিয়ার ১২টি রাজ্যে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শরিয়া আইন আরোপ করে। এই পদক্ষেপ বোকো হারাম ও সরকারি রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সম্পর্ককে উন্নীত করতে পারে বলে ধারণা করা হলেও গোষ্ঠীটি এটিকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে বিবেচনা করে। তাদের মতে, দুর্নীতি ও আর্থিক বৈষম্য বজায় রেখে শরিয়া আইন চালু করা যায় না।[14][50]
নাইজেরীয় জনগণের ঔপনিবেশিকতার প্রতি ক্ষোভ বোকো হারামের লড়াইয়ে ব্যাপক সমর্থন জুগিয়েছে। ঔপনিবেশিক ব্রিটিশরা তৎকালীন ইসলামি বারনো আমিরাতকে দখল করে ইসলামি আইন উচ্ছেদ করে দেয় এবং বোকো হারাম এই অঞ্চলে নিজেদের বারনো সাম্রাজ্যের ঐতিহাসিক উত্তরসূরী হিসেবে উপস্থাপন করে। মোহাম্মদ ইউসুফ প্রচার করতেন যে, আমাদের ভূমি কাফের দেশে পরিণত হওয়ার আগে এটি একটি ইসলামী রাষ্ট্র ছিল এবং বর্তমান ব্যবস্থা প্রকৃত মুসলিম বিশ্বাসের পরিপন্থী"।
নাইজেরিয়ার অভিজাতদের রাজনৈতিক স্বার্থ ও পক্ষপাতিত্ব সংগঠনের কার্যক্রমের বিকাশে একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে বলে মনে করা হয়।
উড্রো উইলসন সেন্টার কর্তৃক আয়োজিত একটি আলোচনায় নাইজেরিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রধান ওলুসেগুন ওবাসাঞ্জো বোকো হারামের স্থায়ীত্বে অবদান হিসাবে দেশের উত্তরাঞ্চলে সাক্ষরতা এবং শিক্ষার নিম্ন স্তরের কথা তুলে ধরেন। ওবাসাঞ্জোর মতে নিরক্ষর এবং অশিক্ষিত শিশু ও যুবকদের গোষ্ঠিটির তালিকায় আসার সম্ভাবনা বেশি।[51]
বোকো হারামের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইউসুফ বিতর্কিত ইসলাম প্রচারক মোহাম্মদ মারওয়া মুইতাতসিন দ্বারা অনুপ্রাণিত হন বলে ধারাণা করা হয়, যিনি কুরআন ও ইসলাম ধর্মীয় বইপুস্তজ ব্যতীত অন্য কোনো বই পড়ার নিন্দা করেছিলেন।[9][10][11] ইউসুফ নিজেই ২০০৯ সালের একটি সাক্ষাৎকারে শুধুমাত্র পশ্চিমা সভ্যতা ও শিক্ষার প্রতিই নয়, তিনি বিবর্তন তত্ত্ব ও গোলাকার পৃথিবীর ধারণার প্রতি বিরোধিতা প্রকাশ করেন।[12] বোকো হারাম নাইজেরীয় সমাজের পশ্চিমীকরণের বিরোধিতা করে[46] এবং তারা বলে যে, এটিই নাইজেরিয়ার দুর্নীতির সংস্কৃতির জন্য দায়ী।[43] তারা এই দুর্নীতি নির্মূল করে নাইজেরিয়ায় একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি করে। এটি ২০০৯ সালে একটি জিহাদি দলে পরিণত হয়। সুন্নি সালাফি জিহাদি হিসেবে দলটি ইসলামী খেলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে এবং আধুনিক রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের দেশপ্রেম অনুভূতিকে দূর করে সমস্ত মানুষকে এর ডোমেইনের অধীনে আনার জন্য প্রচেষ্টা করে।[52] আন্দোলনটি বেশ বিস্তৃত এবং এর সাথে যুক্ত যোদ্ধারা সালাফি মতবাদ অনুসরণ করে।
তাকফির
তাকফির অর্থ কোনো মুসলমানকে কাফির আখ্যায়িত করা। গোষ্ঠীটির সদস্যদের বিশ্বাসগুলি ওহাবিবাদের কঠোর ব্যাখ্যার উপর কেন্দ্রীভূত থাকে, যা সুন্নি ইসলামের একটি অত্যন্ত কঠোর রূপ। তারা ইসলামের অন্যান্য অনেক রূপকে মূর্তিপূজা হিসাবে দেখে।[53][17][21][54][55] গোষ্ঠীটি সুফি ও শিয়া সম্প্রদায়ের সদস্যদের কাফের বলে নিন্দা করে [56] এবং মূলধারার সে সকল সুন্নি মুসলিমদেরও কাফের বলে, যারা তাদের জিহাদ সমর্থন করতে ব্যর্থ হয়েছে।[57]
তাকফির একটি মুসলিম সরকারকে উৎখাত করতে চাওয়া একটি মূলধারার ইসলামি বিদ্রোহের জন্য আবশ্যক। এতে তার বিদ্রোহ করে সরকারকে উৎখাত বিষয়টি শাস্ত্রীয় ভিত্তি পায়। তাকফির শুধুমাত্র মুসলিমদের ধর্মত্যাগীই ঘোষণা করে; বরং এটি তাদের হত্যাকে একটি "ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা" করে তোলার সুবিধা দেয়। ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর নিজেদের কমান্ডারদের কাছে একটি বক্তৃতায় শেকাউ ঘোষণা করেন যে, যদি একজন মহিলা নামাজ ও রোজা পালন করে এবং সাথে সাথে একবার সে গণতন্ত্রে জড়িত হয় তাহলে আমি তাকে যুদ্ধে বন্দি করতে পারি।[58][59][58]
মোহাম্মদ ইউসুফ ২০০২ সালে বোকো হারাম প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০০৯ সালে বোকো হারাম বিদ্রোহের পর তার মৃত্যু পর্যন্ত তিনি নিজেই এই গোষ্ঠীটির নেতৃত্ব দেন। তার মৃত্যুর পর তার ডেপুটি আবু বকর শেকাউ গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ নেন ২০২১ সাল পর্যন্ত এটির নেতৃত্ব দেন। তারপর মোহাম্মদ ইউসুফের ছেলে আবু মুসাব বর্নাভি এর নেতৃত্বে আসেন। ২০২২ সালের আগস্টে সরকার দাবি করে যে, তাকেও হত্যা করা হয়েছে।
যদিও বোকো হারাম একটি সামগ্রিক নেতৃত্বের অধীনে একটি শ্রেণিবদ্ধ কাঠামোতে সংগঠিত হয়, তবে গ্রুপটি নেটওয়ার্ক কাঠামো ব্যবহার করে গোপন সেল সিস্টেম হিসাবেও কাজ করে। [60] প্রতিটি ইউনিটে ৩০০ থেকে ৫০০ যোদ্ধা রয়েছে। তাদের মোট যোদ্ধা সংখ্যার অনুমান ৫,০০০ থেকে ৯,০০০ এর মধ্যে।[61][62][63]
বোকো হারাম মুক্তিপণের মাধ্যমে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছে বলে জানা যায়। ২০১৩ সালে বোকো হারাম ক্যামেরুনে ছুটিতে থাকা সাত ফরাসি পর্যটকের একটি পরিবারকে অপহরণ করে এবং দুই মাস পর বোকো হারাম $১.১৫ মিলিয়ন মুক্তিপণের বিনিময়ে তারাসহ অন্য ১৬ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয়। [64]
স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে শরয়ী হিসাব জাকাত, ওশর ও খারাজ বাবদ চাঁদা আদায়ের পাশাপাশি বোকো হারাম স্থানীয় রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অর্থ আদায়েরও দাবি করে। বোকো হারামের একজন মুখপাত্র দাবি করেন যে, কানো রাজ্যের গভর্নর ইব্রাহিম শেখরাউ ও বাউচি রাজ্যের গভর্নর ইসা ইউগুদা তাদের মাসিক অর্থ প্রদান করেছেন। [65]
আল-কায়েদার সঙ্গে বোকো হারামের সম্পর্ক ছিল বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করা হয়। ২০১১ সালে বোকো হারামের কিছু চিঠি ওসামা বিন লাদেনের কম্পাউন্ডে পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।[66] ২০০৯ সালে বোকো হারামের বিদ্রোহ শুরু হওয়ার তিন সপ্তাহ পর আল-কায়েদা ইন ইসলামিক মাগরেব বোকো হারামের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে। [67] ২০১২ সালের নভেম্বরে সাংবাদিকদের সাথে ফোনে কথা বলার সময় গ্রুপের মুখপাত্র আবু কাকা বলেন, "আমরা আল-কায়েদার সাথে একসাথে আছি। কারণ তারা ইসলাম প্রচার করছে; ঠিক যেমন আমরা করছি। তাই তারা আমাদের সংগ্রামে সাহায্য করে এবং আমরাও তাদের সাহায্য করি"। ২০১২ সালে রয়টার্সের বিশেষ প্রতিবেদনে বিশদ বিবরণ দেওয়া হয় যে, কীভাবে বোকো হারামের যোদ্ধারা আল-কায়েদার সহযোগীদের সাথে কমপক্ষে ৬ বছরের মধ্যে ছোট ছোট দলে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। [68]
২০১৪ সালের ল মে মাসে আল-কায়েদা নিষেধাজ্ঞা শাসনের অধীনে বোকো হারামের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের তালিকা অনুসারে, [69] দলটি "প্রশিক্ষণ এবং বস্তুগত সহায়তার উদ্দেশ্যে AQIM এর সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছে", এবং "নির্মাণ সম্পর্কে মূল্যবান জ্ঞান অর্জন করেছে। AQIM থেকে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস"। জাতিসংঘ দেখেছে যে "সন্ত্রাসী দক্ষতা নিয়ে নাইজেরিয়ায় ফিরে আসার আগে 2012 এবং 2013 সালে মালিতে আল কায়েদার সহযোগী গোষ্ঠীর সাথে বোকো হারামের একটি সংখ্যক সদস্য লড়াই করেছিল"। AQIM হল আল-কায়েদার একটি আঞ্চলিক শাখা, যার নেতা আবু মুসাব আবদেল ওয়াদৌদ আল-কায়েদার সিনিয়র নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্যের শপথ নিয়েছেন। [70]
বোকো হারামের সাথে ঐতিহাসিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও, আল-কায়েদা কেন্দ্রীয় কখনই আনুষ্ঠানিকভাবে বোকো হারামকে একটি সহযোগী হিসেবে স্বীকার করেনি। AQ এবং বোকো হারামকে বিভক্ত করার বিষয়গুলি আবুবকর শেকাউ-এর চরমপন্থার সাথে সম্পর্কিত তার ঘোষণার সাথে যে নাইজেরিয়ার সমগ্র মুসলিম জনসংখ্যা অমুসলিম। শেকাউ যুক্তি দিয়েছিলেন যে তার বিশ্বাসের ভিত্তিতে মুসলিম বেসামরিক লোকদের হত্যা করা বৈধ ছিল যে নাইজেরিয়ান মুসলমানদের সাধারণ জনগণের মধ্যে ধর্মত্যাগ ব্যাপক ছিল কারণ তারা নির্বাচনে ভোট দিয়েছে। আল-কায়েদা বিশ্বাস করে যে নাইজেরিয়ার সাধারণ মুসলিম জনসংখ্যাকে মুসলিম হিসাবে বিবেচনা করা উচিত এবং আল-কায়েদার দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে, বেসামরিক লোকদের হত্যা অগ্রহণযোগ্য। [67] [71]
বোকো হারাম আইএস ডব্লিউ আফ্রিকার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে।
১৯৯০ এর দশক পর্যন্ত অন্যান্য আফ্রিকীয় দেশের তুলনায় নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনীকে পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীল ও শক্তিশালী বাহিনী হিসাবে দেখা হত। [72] কিন্তু ২০১৪ সাল নাগাদ এটি সাঁজোয়া যানসহ অন্যান্য মৌলিক সরঞ্জামের অভাব অনুভব করে। মনোবলও আগের তুলনায় কমে এসেছে বলে রিপোর্ট করা হয়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সামরিক জিনিসপত্র ক্রয় ও বাজেট তহবিল নিজেদের পকেটে করছে বলে অভিযোগ করা হয়। দেশটির প্রতিরক্ষা বাজেট নিরাপত্তা বাজেটের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি; প্রায় ৫.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু এই অর্থের মাত্র ১০% সামরিক ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল।[72] ২০১৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মূল্যায়নে বলা হয় যে, বোকো হারাম সংকটের জন্য নাইজেরীয় প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি দায়ী। তবে দুর্নীতির অভিযোগে কয়েকজন প্রাক্তন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করার পর সেনাবাহিনীতে মনোবলের উন্নতি হয়েছে।[53]
২০১৩ সালের গ্রীষ্মে নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনী উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ার তিনটি রাজ্যে মোবাইল ফোন কভারেজ বন্ধ করে দেয। যেন এতে বোকো হারামের যোগাযোগ ও আইইডি বিস্ফোরণের ক্ষমতা ব্যাহত হয়। তবে এই পদক্ষেপ সেসব অঞ্চলে বসবাসকারী নাগরিকদের (মোবাইল বন্ধের নেতিবাচক সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিণতির কারণে) ক্ষুব্ধ করে এবং এটি রাষ্ট্রে নেতিবাচক মতামতের জন্ম দেয়। এই পদক্ষেপে বোকো হারাম তাদের কার্যক্রমের কেন্দ্র সাম্বিসা বনে স্থানান্তরিত করে।[73]
২০১৪ সালে নাইজেরিয়া বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বিদ্রোহী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। বছরে ১৪৬টি হামলায় প্রায় ৩,৪৭৭ জন নিহত হয়েছে। [74] ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বোর্নোর গভর্নর কাশিম শেট্টিমা বলেন, [75]
বোকো হারাম আমাদের সৈন্যদের তুলনায় অধিক সশস্ত্র ও অনুপ্রাণিত। বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বোকো হারামকে পরাজিত করা আমাদের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব।
২০১৮ সালের এপ্রিলে নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদু বুহারি দেশে বিদ্রোহ ও বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুমোদন দেন। উত্তর নাইজেরিয়ায় বোকো হারামের হামলায় ১৮ জন নিহত হওয়ার কয়েকদিন পর এই ঘোষণা দেওয়া হয়। [76] ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে নাইজেরিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বার্নার্ড ওনিউকো প্রায় ৬,০০০ বোকো হারাম বিদ্রোহীর আত্মসমর্পণের ঘোষণা করেন [77]
দেশ/সংস্থা | তারিখ |
---|---|
অস্ট্রেলিয়া | ২৬ জুন, ২০১৪ [78] |
বাহরাইন | [79] |
কানাডা | ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৩ [80] |
গণচীন | [81] |
ইরাক | [82] |
মালয়েশিয়া | ২০১৪ [83] |
নিউজিল্যান্ড | মার্চ ২০১৪ [84] |
সংযুক্ত আরব আমিরাত | ১৫ নভেম্বর, ২০১৪ [85] |
যু্ক্তরাজ্য | ১০ জুলাই, ২০১৩ [86][87] |
জাতিসংঘ | ২২ মে,২০১৪ [88] |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ১৪ নভেম্বর, ২০১৩ [89] |
লাগাতার কয়েক মাস ধরে একাধিক বৈঠকের পর ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর ক্যামেরুনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, বোকো হারামসহ অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শীঘ্রই একটি যৌথবাহিনী গঠন করা হবে।[90][91][92] এই বাহিনীতে বেনিন, চাদ, ক্যামেরুন, নাইজার ও নাইজেরিয়ার ৩,৫০০ সৈন্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে।[93][94] ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে একটি বৃহত্তর সামরিক শক্তি গঠন করা প্রসঙ্গে ইকোয়াসে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়ে।[95]
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারির মাসে আফ্রিকান ইউনিয়ন বেনিন, ক্যামেরুন, চাদ ও নাইজার থেকে ৭,৫০০ সৈন্য প্রদানের একটি চুক্তিতে অস্থায়ীভাবে পৌঁছোয়। সে মাসেই নাইজেরীয় সেনাবাহিনী দাবি করে, নাইজেরিয়া চাদি ও ক্যামেরুনের সৈন্যদের নিয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর আক্রমণের পর তারা মাফা, মাল্লাম ফাতোরি, আবদাম ও মার্তের কাছাকাছি শহরগুলি বোকো হারামের কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করেছে।[96] [97] ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনী একটি সমন্বিত বিমান ও স্থল আক্রমণে মঙ্গুনোকে পুনরুদ্ধার করে। ২০১৫ সালের ৬ মার্চ আফ্রিকান ইউনিয়ন বোকো হারামের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ৮,০০০ এরও বেশি সৈন্যের একটি আঞ্চলিক বাহিনী গঠনের অনুমোদন দেয়। [98]
২০১৪ সালের মে মাসে চীন নাইজেরিয়াকে সহায়তার প্রস্তাব দেয়। এর মধ্যে স্যাটেলাইট ডেটা এবং সামরিক সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। [81]
২০১৫ সালের অক্টোবরে কলম্বিয়া নাইজেরীয় সরকার ও সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একটি প্রতিনিধি দল সেখানে পাঠায়।[99] ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে লেফটেন্যান্ট জেনারেল তুকুর ইউসুফ বুরাটাইয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বোকো হারামের বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিষয়ে তথ্য বিনিময় করতে কলম্বিয়া সফর করেছিল।[100][101]
২০১৫ সালের মার্চে রিপোর্ট করা হয় যে, আগামী ২৮ মার্চের নির্বাচনের আগে নাইজেরিয়া বোকো হারামের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে কয়েকশ ভাড়াটে লোক নিয়োগ করেছিল।[102]
ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমন্বয় করে বোকো হারামের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করার জন্য নাইজেরিয়াতে প্রশিক্ষক ও উপাদান সহায়তা পাঠিায়। [81] ফ্রান্স তার সাবেক উপনিবেশ অঞ্চলে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের জন্য ৩,৫০০ সৈন্য ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছিল। ইসরায়েল ও কানাডাও সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। [103]
২০১৭ সালে যুক্তরাজ্য ২৫৯ মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি জরুরি সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করে। যুক্তরাজ্য নাইজেরিয়াকে সামরিক সহায়তা ও সন্ত্রাসবিরোধী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহায়তা করেছে। ব্রিটিশ সরকার বোকো হারামের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করার জন্য ২৮,০০০ নাইজেরীয় সামরিক সৈন্যকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। ৪০টিরও বেশি ব্রিটিশ সৈন্যকে দীর্ঘমেয়াদী স্থাপনার জন্য নাইজেরিয়াতে পাঠানো হয়েছে। [104]
২০১৮ সালের আগস্টে ব্রিটিশ সরকার একটি প্রেস রিলিজ প্রকাশ করে। এতে যুক্তরাজ্য ও নাইজেরিয়ার মধ্যে সদ্য চালু হওয়া অংশীদারিত্বের বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়। এটি বোকো হারামের দ্বারা দুই দেশের নাগরিকদের জন্য সৃষ্ট হুমকি কমানোর প্রয়াসে গঠিত হয়েছিল। প্রেস রিলিজটি নাইজেরিয়ায় বোকো হারামের হামলার প্রভাব প্রতিরোধ ও হ্রাস করার একাধিক পদ্ধতির প্রতি অন্তর্দৃষ্টি দেয়।[105]
২০১২ সালে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে বোকো হারামকে FTO (বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন) তালিকায় স্থান দেবে কিনা তা নিয়ে একটি অভ্যন্তরীণ বিতর্ক হয়।[106][106] বিচার বিভাগ, এফবিআই, সিআইএ ও কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরকে বোকো হারামকে একটি বিদেশী জঙ্গি সংগঠন হিসাবে মনোনীত করার আহ্বান জানায়।[107] তবে নাইজেরীয় সরকার FTO উপাধির বিরোধিতা করে উদ্বেগ প্রকাশ করে যে, এটি বোকো হারামের মর্যাদা আরো বাড়াবে এবং বোকো হারাম যে অঞ্চলে পরিচালিত হয় সেখানে মানবিক সহায়তার ওপর প্রভাব ফেলবে।[106] নাইজেরিয়ার বিশজন একাডেমিক বিশেষজ্ঞ মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন, যাতে বোকো হারামকে FTO হিসাবে মনোনীত না করার আহ্বান জানানো হয়। বলা হয় যে, এটি এই অঞ্চলে এনজিও প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং বোকো হারামের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রচেষ্টায় নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনকে বৈধতা দিতে পারে।[106][108][109]
২০১৩ সালের নভেম্বরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বোকো হারাম ও এর শাখা আনসারুকে একটি জঙ্গি সংগঠন হিসাবে মনোনীত করে।[110] পররাষ্ট্র দফতর আনসারু কর্তৃক ২০১৩ সালে সাতজন আন্তর্জাতিক নির্মাণ শ্রমিককে অপহরণ ও মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার কথাও উল্লেখ করে।[110][110][111] পররাষ্ট্র দফতর ২০১১ সালে আবুজায় জাতিসংঘের অফিসে বোমা হামলার পর বোকো হারামকে জঙ্গি গোষ্ঠী হিসাবে মনোনীত করার পূর্বের আহ্বানকে প্রত্যাহার করে। [112] আল-কায়েদা নেতৃত্বের কাছ থেকে সমর্থন ও সংহতির পর্যায়ক্রমিক প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও মার্কিন সরকার বিশ্বাস করে না যে, বোকো হারাম বর্তমানে (২০১৪) আল-কায়েদার কেন্দ্রের সাথে যুক্ত। তবে সরকার আল কায়েদা ইসলামি মাগরিব শাখা ও বোকো হারামের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।[53]
নাইজেরিয়ার সরকার দাবি করে যে, বোকো হারামের আল-কায়েদা আন্দোলনের পশ্চিম আফ্রিকা শাখা আল-শাবাব ও মালির আল কায়েদা ইসলামি মাগরিব শাখার সংযোগ রয়েছে এবং নাইজেরিয়ার সরকার বোকো হারামের সাথে লড়াইয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে। এই অভিযোগের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীকে ট্রাক ও সরঞ্জাম সরবরাহ করেছিল, কিন্তু কোবরা হেলিকপ্টার বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিল। ২০১৫ সালের নভেম্বরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর আবারো কোবরা সরবরাহ করতে অস্বীকার করে।[113][114][115][116]
২০১৪ সালের ১লা ডিসেম্বর আবুজায় মার্কিন দূতাবাস ঘোষণা করে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাইজেরীয় সরকারের অনুরোধে একটি নাইজেরীয় ব্যাটালিয়নকে প্রশিক্ষণ দেওয়া বন্ধ করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলে যে, আমরা এই প্রশিক্ষণের অকাল সমাপ্তির জন্য দুঃখিত। এটি একটি বৃহত্তর পরিকল্পিত প্রকল্পের প্রথম ভাগ ছিল, যা নাইজেরীয় সেনাবাহিনীকে বোকো হারামের মোকাবেলায় সক্ষমতা তৈরিতে সহায়তা করার লক্ষ্যে অতিরিক্ত ইউনিটকে প্রশিক্ষিত করবে। মার্কিন সরকার নাইজেরিয়ার সাথে বিস্তৃত দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা সম্পর্কের অন্যান্য দিক সেইসাথে অন্যান্য সমস্ত সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। মার্কিন সরকার নাইজেরিয়ার সাথে অংশীদারিত্বের দীর্ঘ ঐতিহ্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের জন্য ভবিষ্যতের অনুরোধগুলি গ্রহণ করবে। [116]
২০১৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউস বোকো হারামের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত আফ্রিকীয় মিত্রদের জন্য একটি সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করে। প্যাকেজটিতে বেনিন, ক্যামেরুন, চাদ, নাইজার ও নাইজেরিয়ার প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য সহায়তার জন্য ৪৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল। [117] ২০১৫ সালের ১৪ অক্টোবর হোয়াইট হাউস একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। এতে যুদ্ধ ক্ষমতার রেজোলিউশন অনুসারে বায়ুবাহিত আইএসআর পরিচালনার জন্য ক্যামেরুনে ৩০০ সৈন্য মোতায়েনের ঘোষণা করে এবং বলে যে, এই বাহিনীগুলি তাদের নিজস্ব বাহিনী সুরক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে অস্ত্রে সজ্জিত এবং নিরাপত্তা ও সমর্থনের প্রয়োজন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্যামেরুনেই থাকবে।" [118]
২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ক্রমাগত হুমকি সত্ত্বেও যখন ক্যামেরুন থেকে হাজার হাজার শরণার্থী উত্তর নাইজেরিয়ায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়েেছিল, তখন জাতিসংঘ অত্যন্ত শঙ্কিত ছিল। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, এই পদক্ষেপটি সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল এবং এটি হাজার হাজার শরণার্থীর জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। তিনি ক্যামেরুনকে তার উন্মুক্ত দরজা ও অতিথি পরায়ণনীতি অব্যাহত রাখার আবেদন জানান।[119] ২০২১ সালের মার্চ মাসে জাতিসংঘ ঘোষণা করে যে, বোকো হারামের দীর্ঘ ১১ বছরের বিদ্রোহের কারণে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনে আনুমানিক ৯ মিলিয়ন উত্তর নাইজেরীয় নাগরিককে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্য নিয়ে আবুজাতে ১ বিলিয়ন ডলারের আপিল শুরু করেছে। [120]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.