বিল ও’রিলি
অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উইলিয়াম যোসেফ বিল ও’রিলি (ইংরেজি: Bill O'Reilly; জন্ম: ২০ ডিসেম্বর, ১৯০৫ - মৃত্যু: ৬ অক্টোবর, ১৯৯২) নিউ সাউথ ওয়েলসের হোয়াইট ক্লিফে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। পাশাপাশি ক্রিকেট লেখক ও ধারাভাষ্যকার হিসেবেও তিনি যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছেন। ‘টাইগার’ ডাকনামে পরিচিত বিল ও’রিলি অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ক্রিকেট দলের অন্যতম বোলিংস্তম্ভ ছিলেন।
![]() ১৯৩০-এর দশকের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে বিল ও’রিলি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | উইলিয়াম যোসেফ বিল ও’রিলি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | হোয়াইট ক্লিফস, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া | ২০ ডিসেম্বর ১৯০৫|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৬ অক্টোবর ১৯৯২ ৮৬) সাদারল্যান্ড, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া | (বয়স|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | টাইগার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৬ ফুট ২ ইঞ্চি (১.৮৮ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি লেগ ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৪০) | ২৯ জানুয়ারি ১৯৩২ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৯ মার্চ ১৯৪৬ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯২৭–১৯৪৬ | নিউ সাউথ ওয়েলস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৭ মে ২০১৫ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[১] ডানহাতে লেগ ব্রেক বোলিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে ব্যাটিং করতেন তিনি। ক্রিকেটবোদ্ধারা তাকে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা বোলার হিসেবে অভিহিত করে থাকেন।
প্রারম্ভিক জীবন
সারাংশ
প্রসঙ্গ
ও’রিলি’র পৈতৃক সম্পর্কীয় দাদা পিটার আইরিশ বংশোদ্ভূত ছিলেন। আয়ারল্যান্ডে তিনি পুলিশের চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। ১৮৬৫ সালে আলস্টারের কো কাভান এলাকা থেকে সিডনিতে বসতি স্থাপন করেন। পিটার তার পূর্বেকার পুলিশের চাকরির সুবাদে নিউ সাউথ ওয়েলসেও একই কাজে নিয়োজিত থাকেন। ও’রিলি’র বাবা আর্নেস্ট বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। সেই সুবাদে মারে নদী তীরবর্তী এলাকার সর্বত্র শিক্ষা দিতেন। মা মিনা আইরিশ ও ওয়েলসের মিশ্র বংশোদ্ভূত ছিলেন। তিনি অ্যাডিলেডে পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের সন্তান ছিলেন।[২] নিউ সাউথ ওয়েলসের খনির শহর হিসেবে পরিচিত হোয়াইট ক্লিফসে ও’রিলি জন্মগ্রহণ করেন। আর্নেস্ট-মিনা দম্পতির চতুর্থ সন্তান ছিলেন ও’রিলি। তার জ্যেষ্ঠ দুই ভাই ও এক বোন ছিল।[৩]
ও’রিলি’র ক্রিকেটে দক্ষতা এসেছে মূলতঃ নিজ চেষ্টার ফসলরূপে। বাবার স্থানান্তরিত চাকরির ফলে তার পরিবার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে হতো। ফলে প্রশিক্ষণ লাভের জন্য তিনি খুব কম সুযোগই পেয়েছিলেন। তার ভাইদের সাথে ক্রিকেট খেলা শিখতে শুরু করেন। ভাইয়েরা ব্যাটিং করার অধিকার লাভ করায় তিনি বোলিং রপ্ত করে ফেলেন। লেগ স্পিনারদের তুলনায় তিনি দৌঁড়ে তার বোলিং ভঙ্গীমা প্রদর্শন করতেন। তরুণ অবস্থাতেই ও’রিলি লম্বাটে গড়নের ছিলেন ও দেখতে পূর্ণাঙ্গ খেলোয়াড়দের মতো ছিলেন।[৪]
শিক্ষক হিসেবে প্রশিক্ষণ নেয়ার সময় ও’রিলি সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় রেজিম্যান্টে যোগ দেন। কিন্তু সামরিকবাহিনীতে তিনি তেমন আনন্দ পাননি। তারপরও শিক্ষাজীবনে অর্থ বৃদ্ধিকল্পে দ্বিতীয় বছরের জন্য স্বাক্ষর করেন। ছুটিতে সিডনি থেকে রেলগাড়ীতে উইংগেলো ফেরার পথে বোরালে নেমে পড়েন। তার দলীয় সঙ্গীদের সহায়তাকল্পে ক্রিকেট খেলায় অংশ নেন। সেখানেই প্রথমবারের মতো ১৭-বছর বয়সী ডন ব্রাডম্যানের সাথে প্রথমবারের মতো পরিচিত হন।[৫]
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
১৯২৭-২৮ মৌসুমে নর্থ সিডনির পক্ষে গর্ডনের বিপক্ষে অনুশীলনী খেলায় অংশ নেন। মিডিয়াম পেস ধরনের লেগ ব্রেকে ময়েজকে বোল্ড করেন।[৬] রাজ্য দলের প্রশিক্ষণে ও’রিলি’র নতুন দলীয় সঙ্গী ও লেগ স্পিনার আর্থার মেইলি বোলিংয়ে গ্রিপ প্রয়োগে পরামর্শ দেন। কিন্তু ঊনবিংশ শতকের টেস্ট বোলার চার্লস টার্নার তাকে নিজস্ব ধারায় বোলিং করার পরামর্শ দেন যা ও’রিলি সানন্দে গ্রহণ করেন।[৭]
ভিক্টোরিয়ান বুশর্যাঞ্জার্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় একাদশের খেলায় ৩/৮৮ লাভ করে ১৯২৭-২৮ মৌসুমে তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। ঐ মৌসুমে তিন খেলায় সাত উইকেট দখল করেন।[৮] প্রথম খেলায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২/৩৭ ও ১/৫৩ পান। বেশ কয়েক বছর পর শেফিল্ড শিল্ডের খেলায় নেমে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে উইকেটবিহীন অবস্থায় মাঠ ত্যাগ করেন। কিন্তু তাসমানিয়ার বিপক্ষে ৪/৩৫ পান।[৯]
খেলোয়াড়ী জীবন
সারাংশ
প্রসঙ্গ
টেস্টে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে দল নির্বাচকমণ্ডলী নতুন খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণের সুযোগ দেন।[১০] অ্যাডিলেড ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। দলের জ্যেষ্ঠ লেগ স্পিনার ক্ল্যারি গ্রিমেট ১৪ উইকেট ও ব্র্যাডম্যান ২৯৯* করেন। খেলায় তার অংশগ্রহণ ছিল উভয় ইনিংসে ২ উইকেট লাভ। ঐ খেলায় অস্ট্রেলিয়া দল জয়লাভ করে। এমসিজিতে চূড়ান্ত টেস্টে বৃষ্টির কারণে পিচের অবস্থা ভাল ছিল না। প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা মাত্র ৩৬ রানে অল-আউট হয়। তিনি বোলিংয়ের সুযোগ পাননি। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট তুলে নেন। সফরকারী দল ৪৫ রানে সবকটি উইকেট হারায়।[১১] প্রথম টেস্ট সিরিজে ২৪.৮৫ গড়ে ৭ উইকেট পান।[১২]
১৯৩২-৩৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে নিয়মিত সদস্য হিসেবে কুখ্যাত বডিলাইন সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ টেস্টেই অংশ নেন।[১৩] অস্ট্রেলীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর মতে ও’রিলি দলের প্রধান বোলার হিসেবে ছিলেন। তাই সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক খেলায় তাকে মাঠে নামাননি।
শর্ট পিচের বোলিংয়ের ফলে স্বাগতিক দল ইনিংসের ব্যবধানে পরাজিত হয়। সফরকারী ইংল্যান্ড দলের ৫৩০ রানের মধ্যে ও’রিলি ৪/৮৬ লাভ করেন। তন্মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ইংরেজ ব্যাটসম্যান ওয়ালি হ্যামন্ড ঐ টেস্টে জোড়া শূন্য লাভ করেন ও’রিলি’র হাতে।[১২][১৪] ঐ সিরিজে ২৭ উইকেট নিয়ে দলের শীর্ষ বোলার ছিলেন।[১৩] আট-বলের সমন্বয়ে গড়া ৩৮৩ ওভারে দুইরানেরও কম দেন।[১৩] প্রথম খেলায় ৬৭ ওভারে ৩/১১৭ লাভ করেন। কিন্তু ইংল্যান্ড ৫৩০ করে ও দশ উইকেটে জয় পায়।
অবসর
সারাংশ
প্রসঙ্গ
১৯৪৬-এর শুরুতে অস্ট্রেলিয়া দল ৪ খেলার সিরিজে অংশ নেয়ার উদ্দেশ্যে নিউজিল্যান্ড সফর করে। এ সফরটিই ছিল ও’রিলি’র সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ।[১৫] বিল ব্রাউনের নেতৃত্বাধীন দলে তিনি সহঃ অধিনায়ক ছিলেন। ওয়েলিংটনে চারদিনের খেলার মাধ্যমে সফর শুরু হয়। এ প্রেক্ষিতেই ১৯৪৮ সালে দু’দেশের মধ্যকার প্রথম টেস্ট চারদিনের হয়েছিল। বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলায় টসে জয়ী হয়ে নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৪২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৫৪ রান তুলে।[১৬] তোশ্যাকের সাথে পাল্লা দিয়ে ও’রিলি ৫/৩৪ ও ৩/১৯ পান।[১৭] খেলায় অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ও ১০৩ রানের ব্যবধানে জয় পায়। নিউজিল্যান্ড সফরেই তিনি টেস্ট খেলা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। খেলা শেষে ড্রেসিং রুম থেকে নিজের বুট জোড়া জানালা দিয়ে ফেলে দেন।[১৮]
অবসর পরবর্তীকালে ক্রিকেট লেখক ও ধারাভাষ্যকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ও’রিলি। পাশাপাশি সাংবাদিকতার দিকে ঝুঁকে পড়েন। জ্যাক ফিঙ্গলটনের সাথে প্রায়শঃই তিনি ব্রাডম্যানের সমালোচনায় মুখর ছিলেন।[১৯] ব্র্যাডম্যানের চূড়ান্ত টেস্টে উভয়েই প্রেস বক্স থেকে তার শূন্য রানের বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন ও অট্টহাসিতে প্রতিবেদন লিখতে শুরু করেন।[২০]
খেলোয়াড় হিসেবে অবসর নেয়ার পর দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ড পত্রিকায় ক্রিকেট বিষয়ে লেখালেখির দায়িত্ব পান। ১৯৮৮ সালে শারীরিক অবস্থা ভেঙ্গে যাওয়ার পূর্ব-পর্যন্ত এ পদে ছিলেন তিনি।[২১] ১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া দলের সাথে ইংল্যান্ডের সফর নিয়ে প্রথমবারের মতো দায়িত্ব পান। এ সময়েই লন্ডনের ডেইলি এক্সপ্রেসের সাথে তার সম্পর্ক গড়ে উঠে।

খেলার ধরন
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা স্পিন বোলারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। দুই আঙ্গুলে গ্রিপ করে বল ছুড়তেন। প্রায় মিডিয়াম পেসের কাছাকাছি পর্যায়ে লেগ ব্রেক, গুগলি, টপ স্পিন বোলিং করতে নিখুঁত নিশানা লক্ষ্য করে।[২২] ৬ ফুট ২ ইঞ্চি বিশাল উচ্চতার অধিকারী ও’রিলি’র ঘূর্ণি বলে ব্যাটসম্যানগণ বিভ্রান্ত হতেন। বামহাতে ব্যাট হাতে তিনি মূলতঃ নিচেরসারিতে মাঠে নামতেন। প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাবের অধিকারী ও’রিলি পেসম্যানের ন্যায় আগ্রাসী ছিলেন।
মূল্যায়ন
সারাংশ
প্রসঙ্গ
ক্রিকেট জগতে ব্রাডম্যান ও ও’রিলি প্রভাববিস্তার করলেও ব্যক্তিগতভাবে উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল না। অস্ট্রেলীয় সমাজে আইরিশ বংশোদ্ভূত ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্টদের মধ্যে সংঘাত বাড়তে থাকে। তন্মধ্যে, ও’রিলি ক্যাথলিক এবং ব্র্যাডম্যান প্রোটেস্ট্যান্ট ছিলেন।[২৩] ব্র্যাডম্যান মদপান করতেন না ও সংযত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। কথা বলতেন খুব কম ও দলীয় সঙ্গীদের সাথে একত্রে চলতেন না কিংবা মদপানে অংশ নিতেন না। ফলে দলীয় সঙ্গীদের কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন।[২৪] তাদের মধ্যকার এ সংঘাত স্বত্ত্বেও মৃত্যুর কয়েক বছর পূর্বে ব্রাডম্যানের সাথে গ্রেগ চ্যাপেল ও অ্যালান বর্ডারের তুলনান্তে লিখেন যে, তারা নিতান্তই শিশুতোষ খেলা উপহার দিয়েছেন।[২৩]
তার মৃত্যুর পর স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান বলেছিলেন যে, তার বোলিংয়ের মুখোমুখি হওয়া কিংবা তার দেখা সর্বকালের সেরা বোলার ছিলেন তিনি।[২৫]
১৯৩৫ সালে উইজডেন ও’রিলি’র ইংল্যান্ডে অ্যাশেজ সফরে সফলতার বিষয়ে মন্তব্য করে যে, নিঃসন্দেহে তিনি সর্বকালের অন্যতম সেরা বোলার।[২২][২৬] একই সালে তাকে বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে ঘোষণা করা হয়।[২২]
জীবনের শেষদিকে বেশকিছু সম্মাননা লাভ করেন ও’রিলি। ১৯৮০ সালে ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ ও লেখক হিসেবে ভূমিকা রাখার জন্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার পদবী লাভ করেন তিনি।[২৭] ১৯৮৫ সালে উইংগেলোয় ওভালে তার সম্মানে নামাঙ্কিত হয়। ১৯৮৮ সালে এসসিজি’র গ্রাসস্ট্যান্ড পরিবর্তিত করে বিল ও’রিলি স্ট্যান্ড রাখা হয়।[২৮] একই বছরে হোয়াইট ক্লিফসের ওভাল নাম পরিবর্তিত করে তার নামে রাখা হয়। সিডনি মর্নিং হেরাল্ড গ্রেড ক্রিকেটে সেরা খেলোয়াড়দের জন্য তাদের পদক ও’রিলির সম্মানে রাখে।[২৮] অস্ট্রেলিয়ার দ্বি-শতবার্ষিকী উদযাপনে ২০০ ব্যক্তির অন্যতম ব্যক্তি ছিলেন তিনি।[২৯]
১৯৯৬ সালে নবপ্রবর্তিত অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট হল অব ফেমে দশ অন্তর্ভুক্তি সদস্যদের একজন হিসেবে তাকে মরণোত্তর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৩০] ২০০০ সালে শতাব্দীর সেরা অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ড দলেও তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৩১] ২০০৯ সালে আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে ৫৫জন উদ্বোধনী তালিকায় একজনরূপে তাকে অন্তভূক্ত করা হয়। জানুয়ারি, ২০১০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।[৩২]
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের এলজি রেটিংয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ১৯৩২ থেকে ১৯৪৬ সালের মধ্যবর্তী সময়কালে সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনের অধিকাংশ সময়ই তিনি বিশ্বের সেরা বোলার ছিলেন।[৩৩][৩৪]
ব্যক্তিগত জীবন
১৯৩৩ সালে ও’রিলি ম্যারি অ্যাগনেস মলি হার্বার্ট নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তারা দক্ষিণ সিডনির হার্স্টভিলে চলে যান।[৩৫] এ দম্পতির এক কন্যা ও এক পুত্র ছিল।[৩৬] আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে আসার পরও তিনি শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু ১৯৩৪ সালে ইংল্যান্ডে ছয়মাসেরও অধিক সময় অবস্থান করায় তিনি স্বেচ্ছায় সরকারী চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। এর কারণ হিসেবে প্রায়শঃই তার বিদেশ সফরকে দায়ী করেন।[৩৭] কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করেননি তিনি।[৩৭] নিজস্ব আত্মজীবনী লেখার পাশাপাশি ক্রিকেট বিষয়ক দু’টি গ্রন্থ প্রকাশ করেন ও’রিলি।
দেহাবসান
দূর্বল স্বাস্থ্য নিয়ে শেষজীবন অতিবাহিত করেন তিনি। তন্মধ্যে তার একটি পা হারিয়ে যায়।[৩৮] ১৯৮৮ সালের শেষদিকে বড়ধরনের হৃদযন্ত্রের সমস্যায় পড়ে দুই মাস হাসপাতালে কাটাতে হয়।[৩৯] ৮৬ বছর বয়সে ১৯৯২ সালে সাদারল্যান্ডের হাসপাতালে তার দেহাবসান ঘটে।[৪০] আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে শেন ওয়ার্নের ন্যায় নতুন লেগ স্পিনারের আগমনের মাত্র কয়েকমাস পূর্বে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।[৪১]
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
আরও পড়ুন
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.