Loading AI tools
ভারতীয় সাংবাদিক ও সাহিত্যিক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বিক্রমণ নায়ার (ইংরেজি: Vikraman Nair) পুরো নাম 'গোপালন বিক্রমণ নায়ার' [1](৯ আগস্ট, ১৯৩৬ ― ৩১ মে, ২০০৪) ছিলেন একজন খ্যাতনামা ভারতীয় সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। [2] জন্মসূত্রে কেরলীয় হয়েও শিক্ষা, কর্ম ও সাহচর্যে ছিলেন পুরোপুরিই বাঙালি।
বিক্রমণ নায়ার | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ৩১ মে ২০০৪ ৬৭) | (বয়স
পেশা | লেখক ও সাংবাদিক |
পরিচিতির কারণ | সাংবাদিকতা,বাংলা সাহিত্য রচয়িতা |
বিক্রমণ নায়ারের জন্ম ব্রিটিশ ভারতে অধুনা কেরালার আলেপ্পি জেলার আরুকুট্টি গ্রামে। শৈশবেই তিনি পিতৃহীন হন। পিতামাতার একমাত্র সন্তান তিনি পিতামহের উৎসাহে শান্তিনিকেতনে পড়তে আসেন। তিনি শান্তিনিকেতন বাংলা শেখার সঙ্গে প্রায় এগারোটি ভাষা আয়ত্ত করেন। সাবলীল ভাবেই বলতে ও লিখতে পারতেন। শান্তিনিকেতনে পাঠ শেষের সময় ছাত্র-শিক্ষকের এক সংঘর্ষের ঘটনায় বিতর্কিত ছাত্রদের সঙ্গে বিক্রমণের নাম যুক্ত হলে তাকে বহিষ্কৃত হতে হয়।
চাকরির সন্ধানে শেষ পর্যন্ত তিনি অসমে যান এবং সেখানকার তিনটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। পরে কলকাতায় এসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাইভেটে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ পাশ করেন এবং ডায়মন্ড হারবারের ফকিরচাঁদ কলেজে অধ্যাপনা করেন কিছুদিন। সে চাকরি স্থায়ী না হওয়ার কারণে তিনি 'সাব-এডিটর' হিসাবে হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় যোগ দেন। হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড বন্ধ হলে যোগ দেন বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এ। শেষে আনন্দবাজার পত্রিকার বার্তা বিভাগে নিযুক্ত হন। দীর্ঘ দিন আনন্দবাজারে কাজ করে একজন সফল সাংবাদিক, কমিউনিস্ট, অতি কমিউনিস্ট হিসাবে বিতর্কিত হয়ে ওঠেন। কিন্তু তার গ্রন্থ প্রেম ও সাহিত্যপ্রীতি ছিল সর্বজনবিদিত। ভারতের বিভিন্ন প্রত্যন্ত প্রদেশের গরিব-দুঃখীদের নানা খবর তুলে আনেন, কালাহান্ডির দুর্ভিক্ষের খবর, আদিবাসীদের বঞ্চনার খবর, ডাইনী প্রথার বিরুদ্ধেও সরব হন। মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্নে তার নানা কাজে তার বহু ভক্ত তৈরি হয় এবং তাদের নিয়ে গ্রামগঞ্জে ঘুরে বেড়ান- নানা কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। তা সে আদিবাসীদের সংবাদ পরিবেশনে হোক, বা গ্রামীণ মহিলাদের স্বনির্ভরতার উদ্যোগেই হোক না কেন। মানুষের অধিকার সচেতনা তৈরিই ছিল তার আসল উদ্দেশ্য। শেষের দিকে বিক্রমণ আনন্দবাজারের চেন্নাই অফিসের দায়িত্ব নিয়ে কলকাতা ছাড়েন। তবে তার অজস্র অনুরাগীদের জানান—
এ কাজে যেমন দক্ষিণের চার রাজ্যের চার ভাষার খবর করতে পারছি, অসুস্থ মাকেও দেখতে পাচ্ছি।
বাংলায় রচিত বিশ্বভ্রামণিক বিক্রমণের সাহিত্য গুণান্বিত ভ্রমণকাহিনী দুটি হল—
প্রথম বইটিতে নয়ের দশকে সুইডেন থেকে পোলাণ্ড, সেখান থেকে হাঙ্গেরি ও সোভিয়েত দেশ ভ্রমণে, জনজীবনের এক অভিজ্ঞতা, ভাঙনের প্রাক্কালে তীরের দিকে ধাবমান তরঙ্গপ্রবাহ, সঙ্গে সাহিত্য সংস্কৃতিতে এই মনোচাঞ্চল্যের টুকরো কথা উঠে এসেছে আর দ্বিতীয় বইটির কেন্দ্রে স্পেনকে রেখে কথায় কথায় নিয়ে এসেছেন সূর্য সেনের অনুগামী কৃষ্ণপদ চক্রবর্তী, কেরল সমুদ্রতীরের ধীবর, পশ্চিম বাংলার আশ্রয়দাতা গরীব শিক্ষক, জার্মান প্রবাসী সোভিয়েত বন্দিশিবিরে নির্বাসিত কেপেলভের কথা। ভাষা আর উপমার ব্যবহার পাঠককে চমৎকৃত করে। [3] মালয়ালম থেকে বাংলাতে কয়েকটি বই অনুবাদও করেছেন। মালয়ালম ভায়ায় রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল
শেষ বয়সে বিক্রমণ অসুস্থ হলে মস্তিষ্কে শল্যচিকিৎসা করাতে হয়। ক্যানসার হয়েছে জেনেও তিনি পত্রিকার কাজ করেছেন। অবশেষে অসুস্থ শরীরে যখন আর কাজ করতে পারছেন না তখনই তিনি কেরলের কোচি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেই ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ৩১ মে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নায়ারের মৃত্যুর পর কলকাতায় তার তিন দশকের সাংবাদিক জীবন নিয়ে ২০২২ খ্রিস্টাব্দে লিখলেন আর এক সাংবাদিক মানস ভট্টাচার্য- নায়ারদার কথা শীর্ষক একটি গ্রন্থ।[4]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.