Loading AI tools
বাংলাদেশী সংগীতশিল্পী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কাজী মোহাম্মদ আলী জাহাঙ্গীর বালাম (যিনি বালাম নামে পরিচিত) বাংলাদেশের একজন সংগীতশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার ও কম্পোজার।
বালামের জন্ম ১৯৭৫ সালের ২৪শে ডিসেম্বর তারিখে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার হাজারীবাগের জিগাতলায়। তার পৈতৃক বাড়ি মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় অবস্থিত। তার বাবা কাজী জাহাঙ্গীর হাফিজ সেলিম এবং মা রোকসানা জাহাঙ্গীর। বালামের বড় দুই ভাইয়ের নাম যথাক্রমে বাবর ও বাপ্পী। তার একমাত্র বোন ফাতেমা জাহাঙ্গীর। বালামের স্ত্রী সাগুফতা ফারুক সাদিয়া ও একমাত্র সন্তান ফাবিয়ান জাহাঙ্গীর।[1]
সংগীতমনস্ক পরিবারে বেড়ে ওঠা বালাম শৈশব থেকেই গিটারে পারদর্শী ছিলেন। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় সুর করেন জনপ্রিয় ব্যান্ডদল ওয়ারফেজের "কৈশোর" গানটির। ১৯৯৪ সালে প্রকাশ হওয়া একই ব্যান্ডের 'নীল স্বপন' গানটির সুরও যৌথভাবে করেন বালাম ও বাবনা করিম। ১৯৯৫ সালে বালাম তার বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তোলেন ব্যান্ড "রেনিগেডস", যেখানে বালাম একইসঙ্গে গিটারিস্ট ও ভোকালিস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমান সময়ের আরেক সংগীত তারকা হাবিব ওয়াহিদ ছিলেন ব্যান্ডটির কিবোর্ডিস্ট। "মায়াবী এ রাত" ও "ফিরিয়ে দাও" শিরোনামে দুটি অ্যালবাম প্রকাশ করে রেনিগেডস। "ফিরিয়ে দাও" অ্যালবামের টাইটেল ট্র্যাকের জন্য অর্জন করে "কোকাকোলা ব্যান্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড"। একইসঙ্গে "আর্ক" এবং "পেন্টাগন" ব্যান্ডেও বালাম গিটারিস্ট ও কম্পোজার হিসেবে কাজ করতে থাকেন। ১৯৯৮ সালের শেষ দিকে বালাম লিড গিটারিস্ট ও ২য় ভোকাল হিসেবে যোগ দেন ওয়ারফেজে। ২০০০ সালে ওয়ারফেজ প্রকাশ করে তাদের ৩য় অ্যালবাম "আলো"। এতে বালামের কণ্ঠে তিনটি গান - "যতদূরে", "সময়" ও "নেই তুমি" ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয়তা লাভ করে। পরবর্তীতে এ অ্যালবামের সবচেয়ে জনপ্রিয় "যতদূরে" গানটি প্রসঙ্গে বালাম জানান গানটি তিনি তৈরি করেছিলেন ওয়ারফেজে যোগ দেয়ার বহু আগে। ২০০২ সালে মিজান ওয়ারফেজ ত্যাগ করলে বালাম উন্নীত হন ১ম ভোকাল হিসেবে। এসময় তার কণ্ঠে ওয়ারফেজ ২০০৩ সালে প্রকাশ করে অ্যালবাম "মহারাজ"। এ অ্যালবামের টাইটেল ট্র্যাক, "হারিয়ে তোমাকে", "সাইক্লোন", "বসন্ত" গানগুলো বালামকে নিয়ে যায় অনন্য উচ্চতায়।
ওয়ারফেজে দায়িত্বরত অবস্থায়ই বালাম ২০০৬ সালে তার কম্পোজিশনে প্রকাশ করেন মিশ্র অ্যালবাম "প্রেম শিকারী"। এতে ফিচার করেন জাহিদ পিন্টু, অভি ও জুলির মত প্রতিভাবান শিল্পীদের। শ্রোতামহলে প্রশংসিত হয় বালামের সুর ও সংগীতায়োজন। ২০০৭ এ ওয়ারফেজ ত্যাগ করার পর একক অ্যালবামের দিকে মন দেন বালাম। সে বছর লেজার ভিশনের ব্যানারে প্রকাশ করেন "বালাম" নামে নিজের প্রথম অ্যালবাম। এই অ্যালবামটিই তাকে এনে দেয় আকাশ্চুম্বী জনপ্রিয়তা। "বালাম" অ্যালবাম গান তিন মাস পর "এক মুঠো রোদ্দুর" "লুকোচুরি" "তোমার জন্য" "বিরহের সাম্পান" গান গুলো ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। একক শিল্পী হিসাবে কনসার্টে বালামের চাহিদা বেড়ে যাই। ২০০৮ সালে বালাম সঙ্গীতার ব্যানারে প্রকাশ পাই বালামের ২য় অ্যালবাম "বালাম ২" এই অ্যালবামে "প্রেমের ধুন" সুপারহিট গান, "রুদয়ের সিঁড়ি" "অপরুপা" "রিমঝিম" গান গুলো ছিলো। ২০১০ সালে বালামের ৩য় অ্যালবাম প্রকাশ পায় (বালাম ৩) এই অ্যালবামে "কি নেশা" "নতুন সকাল" "কাছে আসোনা" "একটু দাড়াও" গান গুলো রয়েছে। ইতোমধ্যে ২০০৯ সালে তার হাত ধরে সঙ্গীতার ব্যানারে "বালাম ফিচারিং জুলি" দিয়ে সঙ্গীতাঙ্গনে প্রবেশ করেন তার বোন জুলি , এই অ্যালবামে "ভালোবাসার উৎসবে" "অঝোর বৃষ্টি" " নগরদোলা" "সুখ পাখি" গান রয়েছে । ২০১০ এ তিনি তার বোনকে নিয়ে আবারও প্রকাশ করেন "বালাম ফিচারিং জুলি ২- স্বপ্নের পৃথিবী এই অ্যালবামের "তুমিহীনা" ডুয়েট গান রয়েছে অ্যালবামে। ভাইবোনের এই জুটি পৌঁছে যায় প্রজন্মের পছন্দতালিকার শীর্ষে।
২০১০ সালে বালাম সাগুফতা ফারুক সাদিয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিছুদিন পর স্ত্রীর গুরুতর অসুস্থতা বালামকে ঠেলে দেয় দীর্ঘ বিরতির দিকে।
২০১৩ সালে বালাম ঈগল মিউজিকের ব্যানারে প্রকাশ করেন তার ৪র্থ একক অ্যালবাম "ভূবন (বালাম ৪)"।[2] আশানুরূপ সাড়া জাগাতে ব্যর্থ হয়ে আবারও অন্তরালে চলে যান তিনি। দুই বছর বিরতির পর ২০১৫ সালে তার মিউজিক ভিডিও "মেঘে ঢাকা" প্রকাশ পায়। ২০১৬ সালের ভালোবাসা দিবসে প্রকাশ করেন "কৌশিক তাপস ফিচারিং বালাম-কী জ্বালা" গানটি। একই বছর জুলির সঙ্গে দ্বৈত গান "কত যে খুঁজেছি তোমায়" প্রকাশ করেন। ২০১৭ সালের ভালোবাসা দিবসে রবি-এয়ারটেল ইয়োন্ডার মিউজিকের ব্যানারে তিনি তার ৫ম একক অ্যালবাম "গল্পের শহর" প্রকাশ করেন।[3] ইয়োন্ডার পরবর্তীতে সেবা বন্ধ করে দিলে আরেক শীর্ষস্থানীয় টেলিকম প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক নিয়ে আসে 'ভাইব' অ্যাপটি। এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন বালাম, হাবিব, শাফিন আহমেদসহ জনপ্রিয় তারকারা। 'ভাইব' অ্যাপে বালাম প্রকাশ করেন 'হঠাৎ', 'বালাম ফিচারিং কনা - আদরে' এবং 'বালাম ফিচারিং আনিকা তাসনিম - খোলা আকাশ' গানগুলো। 'হঠাৎ' গানটি পরবর্তীতে মিউজিক ভিডিও হিসেবে প্রকাশ পায় যাতে বালামের সঙ্গে অভিনয় করেন অভিনেত্রী সুজানা জাফর।[4] দর্শক শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয় ভিডিওটি।
২০১৯ সালে কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চুর প্রয়াণের পর তাঁর নিজ হাতে গড়া "এলআরবি" ব্যান্ডে যোগ দিয়ে বালাম নতুন করে আলোচনার শীর্ষে উঠে আসেন।[5] কিন্তু আইয়ুব বাচ্চুর পরিবারের আপত্তিতে ব্যান্ডের নাম পাল্টে 'বালাম অ্যান্ড দ্যা লিগ্যাসি' করা হলে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে পড়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই পদত্যাগ করেন বালাম।[6]
২০২০ সালে প্রকাশিত হয় বালামের সর্বশেষ মিউজিক ভিডিও "তুমি রূপকথায়"।[7]
"প্রেম শিকারি" ছাড়াও বালাম বিভিন্ন মিশ্র অ্যালবাম, চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপনচিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। একাধিক টিভি নাটকেও অভিনয় করেছেন গুণী এই শিল্পী।
নং. | শিরোনাম | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|
১. | "আশার নীলাচল" | ৫:১৬ |
২. | "বিরহের শম্পান" | ৫.২২ |
৩. | "এক মুঠো রোদ্দুর" | ৫.২২ |
৪. | "লুকোচুরি" | ৪.৪৮ |
৫. | "নূপুর বাজে" | ৫.০০ |
৬. | "রংধনু" | ৪.৪২ |
৭. | "রূপকথা" | ৫.০৮ |
৮. | "সমর্পন" | ৪.৪৬ |
৯. | "তোমার জন্য" | ৫.১৮ |
নং. | শিরোনাম | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|
১. | "প্রেমের ধুন" | ৫:২৯ |
২. | "সঙ্গী হবে কি" | ৫.২৯ |
৩. | "রিমঝিম" | ৫.২৭ |
৪. | "অপরূপা" | ৪.৫৭ |
৫. | "করনা বারণ" | ৫.২১ |
৬. | "হৃদয়ের সিঁড়িতে" | ৪.২২ |
৭. | "মাতাল মন" | ৪.০২ |
৮. | "পিছুটান" | ৪.৫২ |
৯. | "দ্যা জোকার" | ৪.৪২ |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.