Remove ads

কলকাতা মেট্রো লাইন ৪ বা হলুদ লাইন[৩] নোয়াপাড়া, বিমানবন্দর ও কলকাতার শহরতলি বারাসাত সংযুক্ত করবে।[৪] এই উত্তোলিত ও ভূগর্ভস্থ পথে নির্মাণাধীন কলকাতা মেট্রোর রেলপথ, যা কলকাতার উত্তর থেকে উত্তর পূর্ব দিক বরাবর বিস্তৃত রয়েছে। রেলপথটিতে নির্মাণাধীন ও প্রস্তাবিত সহ মোট ১০ টি স্টেশন রয়েছে, যার মধ্যে নির্মাণাধীন বিমানবন্দর স্টেশনে রেলপথটি কলকাতা মেট্রো লাইন ৬ বা কমলা লাইনের[৩] সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। এটি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মেট্রো রেল পরিষেবা প্রদান করবে। রেলপথটি এই পথের মোট দৈর্ঘ্য ১৮.১৩ কিলোমিটার (১১.২৭ মা), যার মধ্যে ৬.৮৭ কিলোমিটার (৪.২৭ মা) রেলপথ নির্মাণাধীন রয়েছে ও ৬.৩ কিলোমিটার (৩.৯ মা) রেলপথের ভূ-প্রযুক্তিগত ও নকশার জন্য ২০২০ সালে নির্মাণসংস্থাসমূহের থেকে দরপত্রের[৫] আহ্বান করা হয়েছিল।

দ্রুত তথ্য হলুদ লাইন (লাইন ৪), সংক্ষিপ্ত বিবরণ ...
হলুদ লাইন
(লাইন ৪)
Thumb
বাগজোলা খালের নিকট কলকাতা মেট্রো লাইন ৪ বা হলুদ লাইনের নির্মাণাধীন উত্তোলিত রেলপথ।
সংক্ষিপ্ত বিবরণ
অন্য নামনোয়াপাড়া–বারাসাত মেট্রো
স্থিতিনির্মাণাধীন
মালিকমেট্রো রেলওয়ে, কলকাতা
অঞ্চলকলকাতা মহানগর অঞ্চল, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
বিরতিস্থল
সংযুক্ত লাইন নীল লাইন 
 কমলা লাইন 
স্টেশন১০
পরিষেবা
ধরনদ্রুতগামী গণপরিবহন
ব্যবস্থাকলকাতা মেট্রো
পরিচালকমেট্রো রেলওয়ে, কলকাতা
ডিপোনোয়াপাড়া ডিপো
বিমানবন্দর ডিপো
দৈনিক যাত্রীসংখ্যা২.৫ লক্ষ প্রতিদিন (অনুমান করা হচ্ছে)
ইতিহাস
চালুর পরিকল্পনা২০১৩; ১১ বছর আগে (2013)
চালুজুলাই ২০১৩; ১১ বছর আগে (2013-07)
কারিগরি তথ্য
রেলপথের দৈর্ঘ্য১৮.১৩ কিলোমিটার (১১.২৭ মা)
(৬.৮৭ কিলোমিটার (৪.২৭ মা) (নির্মানাধীন)
১১.২৬ কিলোমিটার (৭.০০ মা) (পরিকল্পিত)[১]
ট্র্যাকসংখ্যা
বৈশিষ্ট্যউত্তলিত ও ভূগর্ভস্থ
ট্র্যাক গেজ১,৬৭৬ মিলিমিটার ( ফুট  ইঞ্চি) ব্রডগেজ
বিদ্যুতায়ন৭৫০ ভোল্ট ডিসি[২] (তৃতীয় রেলের ব্যবহার)
চালন গতি৮০ কিমি/ঘ (৫০ মা/ঘ)
বন্ধ

নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর স্টেশনের মধ্যে প্রথম বিভাগের নির্মাণকাজ শুরু হয়, এবং বর্তমান সময়ে, এই বিভাগের নির্মাণ কাজ চালু রয়েছে। এই বিভাগের বেশির ভাগ অংশ ভূগর্ভস্থ পথে স্থিত, শুধুমাত্র নোয়াপাড়া থেকে যশোর রোড স্টেশন পর্যন্ত অংশের রেলপথটি উত্তোলিত পথে স্থিত।

কলকাতা মেট্রো লাইন ৪ বা হলুদ লাইন চক্ররেলের দমদম ক্যান্টনমেন্ট থেকে বিমানবন্দরের মধ্যবর্তী রেলপথ প্রতিস্থাপন করবে, সেই জন্য চক্ররেলের উক্ত অংশটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়, এবং কলকাতা শহরতলি রেল পরিষেবা বন্ধ করা হয়।

হলুদ লাইনের একটি রেল ডিপো রয়েছে। হলুদ লাইন, ডিপোটিকে কলকাতা মেট্রো লাইন ১ বা নীল লাইনের সঙ্গে ভাগাভগি করে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এছাড়াও, বিমানবন্দর স্টেশনে একটি রেল ইয়ার্ড থাকবে, যা রেক বা রেলগাড়ি রাখার স্থান ও বিপরীতকরণকে সহজতর করবে।

Remove ads

পথ

কলকাতা মেট্রোর লাইন ৪ নোয়াপাড়া মেট্রো স্টেশন থেকে শুরু হয়। এই স্টেশনটি উত্তোলিত পথে অবস্থিত। এর স্টেশন থেকে লাইন ৪ দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে কেষ্টপুর খাল অতিক্রম করে লাইন ১ সঙ্গে একটি ক্রসওভার দ্বারাযুক্ত হয়। এর পরে রেলপথটি পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে প্রথম কেষ্টপুর খাল ও পরে নোয়াপাড়া ডিপোর প্রবেশ পথের রেল ট্র্যাক অতিক্রম করে। এর পর লাইন ৪ পূর্ব-দক্ষিণে বাঁক নিয়ে কেষ্টপুর খালের বামপাশে অগ্রসর হয়ে রবীন্দ্র সরণি (বেদিয়াপাড়া) অতিক্রম করে। এর পর রেলপথটি কেষ্টপুর খালের বামপাশে এবং ক্ষুদিরাম সরণির ডান পাশে অগ্রসর হয়। এর পর রেলপথটি শিয়ালদহ-বনগাঁ রেলপথের আগে উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে শিয়ালদহ-বনগাঁ রেলপথের বাম পাশ বরাবর অগ্রসর হয়। লাইন ৪ দমদম ক্যান্টনমেন্টের বনগাঁগামী প্রান্তে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে শিয়ালদহ-বনগাঁ রেলপথের অতিক্রম করে কলকাতা চক্ররেল-এর রেলপথ ধরে চলতে থাকে।

Thumb
দমদম ক্যান্টনমেন্টে কলকাতা মেট্রো লাইন ৪-এর নির্মাণাধীন ভায়াডাক্টের দুটি স্তম্ভের উপরে একটি কংক্রিট গার্ডার স্থাপন করা হচ্ছে।

রেলপথটি যশোর রোডের উপর উত্তর দিকে বাঁক নিয়ে যশোর রোডকে অতিক্রম করে এবং ডান পাশ বরাবর অগ্রসর হয়। রেলপথটি যশোর রোড থেমেট্রো স্টেশনে ভূমিস্তরে নেমে আসে এবং এই স্টেশনের পরে রেলপথটি ভূগর্ভস্ত সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে। এর পরে লাইন ৪ সুড়ঙ্গ পথে কাজী নজরুল ইসলাম সরণি (জাতীয় সড়ক ১২) অতিক্রম করে এবং কলকাতা বিমানবন্দরের পশ্চিম পাশ দিয়ে অগ্রসর হয়ে বিমানবন্দর স্টেশনে পৌছায়। বিমানবন্দর স্টেশনে থেকে পশ্চিমে বাঁক নিয়ে যশোর রোডের নিয়ে পৌছায় এবং যশোর রোডের বরাবর ভূগর্ভস্ত সুড়ঙ্গ পথে অগ্রসর হয়। মাইকেল নগরে রেলপথটি পূর্ব দিকে বাঁক নেয় নিউ ব্যারাকপুর মেট্রো স্টেশনে (প্রস্তাবিত) পৌছায়। এই স্টেশনের পরে রেলপথটি ভূগর্ভস্ত পথ থেকে উত্তোলিত পথে চলতে শুরু করে এবং বিদ্যাধরী খালে উত্তর দিকে বাঁক নিয়ে অগ্রসর হয়। এর পরে রেলপথটি শিয়ালদহ-বনগাঁ রেলপথের আগে উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে শিয়ালদহ-বনগাঁ রেলপথের ডান পাশে চলতে থাকে। লাইন ৪ মধ্যমগ্রামে সোদপুর রোড এবং বারাসাতে প্রথমে যশোর রোড ও বারাসাত স্টেশনের আগে বারাসাত উড়ালপুল অতিক্রম করে বারাসাত স্টেশনে সমাপ্ত হয়।[১]

Remove ads

ইতিহাস

পরিকল্পনা

কলকাতা মেট্রো লাইন ৪ বা নোয়াপড়া-বারাসাত মেট্রো রেলপথের জন্য প্রথম প্রস্তাবটি ২০১০-১১ সালের রেল বাজেটে নির্মাণের ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রস্তাবটি দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল। প্রথম বিভাগটি নোয়াপড়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ৬.২৪৯ কিলোমিটার (৩.৮৮৩ মা) দীর্ঘ ও দ্বিতীয় অংশটি বিমানবন্দর থেকে বারাসাত পর্যন্ত ১০.৬২৭ কিলোমিটার (৬.৬০৩ মা) দীর্ঘ ছিল। এই রেলপথ নির্মাণের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কলকাতা শহরতলি রেলের শিয়ালদা-বনগাঁ শাখায় যানজট হ্রাস করা ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী সড়ক পথের যানজট দূর করা।

নোয়াপাড়া – বিমানবন্দর

Thumb
দমদম ক্যান্টনমেন্ট মেট্রো স্টেশনের সম্মুখভাগ।
Thumb
নির্মাণাধীন বিমানবন্দর মেট্রো স্টেশন

নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ৬.৮৭ কিলোমিটার (৪.২৭ মা) রেলপথ ২০১০–২০১১ সালের রেল বাজেটে অনুমোদিত হয়েছিল। এই অংশরে নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালের ১৫ই জানুয়ারি করেছিলেন।[৬] ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের তথ্য অনুযায়ী, রেলপথটির নোয়াপাড়া ও বিমানবন্দরের মধ্যবর্তী রেলপথের নির্মাণ কাজ চালু রয়েছে। এই অংশের মোট চারটি স্টেশনের মধ্যে ২ টি স্টেশন উত্তোলিত পথে, ১ টি স্টেশন ভূমিগত ও ১ টি স্টেশন ভূগর্ভস্থ। যশোর রোড ও বিমানবন্দর স্টেশনের মধ্যে প্রায় ১.৭৫ কিলোমিটার (১.০৯ মা) কিলোমিটার রেলপথ ভূগর্ভস্থ পথে অবস্থিত। এটির নির্মাণকাজ ভারতের রেলমন্ত্রী দ্বারা ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চালু করা হয়েছিল।[৭] এই অংশের নির্মাণকার্য সেনবো ইঞ্জিনিয়ারিং দ্বারা পরিচালিত হয়।[৭] রেলপথের ভূগর্ভস্থ অংশটি কাট অ্যান্ড কভার পদ্ধতিতে নির্মাণ করা হয়েছিল।

বিমানবন্দর – নিউ ব্যারাকপুর

হলুদ লাইনের বিমানবন্দর ও বারাসাত পর্যন্ত রেলপথের অনুমোদন ২০১০-২০১১ সালের রেল বাজেটে প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু জমিগত সমস্যার জন্য নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

রেলওয়ে বোর্ড ২০১৮ সালে বিমানবন্দরনিউ ব্যারাকপুরের মধ্যবর্তী প্রযুক্তিগতভাবে চ্যালেঞ্জিং ৩.৬ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ রেলপথের অনুমোদন করেছিল, এবং প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত ১,৬২২ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছিল। এই পথে মোট নতুন ৩ টি স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এই রেল বাজেটে মাইকেল নগরে নতুন একটি মেট্রো স্টেশনের অনুমোদন করা হয়, স্টেশনটির অনুমোদন ২০১০-১১ সালের মূল পরিকল্পনায় করা হয়েছিল না।[৮] বিমানবন্দর ও নিউ ব্যারাকপুরের মধ্যবর্তী রেলপথের বেশিরভাগ অংশ যশোর রোডের নীচে ভূগর্ভস্থ পথে অবস্থিত হবে। এই ভূগর্ভস্থ পথে কাট-অ্যান্ড-কভার পদ্ধতিতে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

নিউ ব্যারাকপুর – বারাসাত

নিউ ব্যারাকপুর ও বারাসাতের মধ্যবর্তী রেলপথ ২০১০-১১ সালের রেল বাজেটে অনুমোদন লাভ করেছিল। মধ্যমগ্রাম ও বারাসতের মধ্যে প্রস্তাবিত ৫ কিমি রেলপথ নির্মাণের জন্য ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে লারসেন অ্যান্ড টুব্রো ২৮০ কোটি টাকার চুক্তি জিতেছিল। তবে, কাজ কখনই শুরু হয়নি কারণ প্রস্তাবিত রেলপথে ৮০০ দোকান সহ ১,৯০০ টি অননুমোদিত কাঠামো ছিল।[৮] এছাড়াও, নিউ ব্যারাকপুর থেকে বারাসাত পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল, যখন ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিউ ব্যারাকপুর থেকে বারাসত পর্যন্ত উত্তোলিত পথে রেলপথ নির্মাণে আপত্তি জানিয়েছিল। ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের আপত্তির পরে, এটিকে ভূগর্ভস্থ পথে নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের তথ্যমতে, কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে নিউ ব্যারাকপুর ও বারাসাতের মধ্যবর্তী রেলপথের জন্য কোন নির্মাণ সংস্থাকে নিযুক্ত করেনি।

Remove ads

ডিপো

নোয়াপাড়া ডিপো হল হলুদ লাইনের একমাত্র ডিপো। এই ডিপোটি নোয়াপাড়া স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এটি হলুদ লাইন ও নীল লাইন পরস্পরের মধ্যে ভাগাভাগি করে। এই ডিপোটি সর্বোচ্চ ৪০ টি রেক ধারণ করতে সক্ষম।

মেট্রো স্টেশন গুলি

আরও তথ্য #, স্টেশনের নাম ...
# স্টেশনের নাম অঞ্চল সংযোগ উদ্বোধন অবস্থান উল্লেখযোগ্য তথ্য সূত্র
নোয়াপাড়ানোয়াপাড়া  লাইন ১ (পরিচালনাগত)১০ জুলাই ২০১৩উত্তোলিত
[৯]
দমদম ক্যান্টনমেন্টদমদম ক্যান্টনমেন্ট, দমদম দমদম ক্যান্টনমেন্টনির্মিত
[৬]
যশোহর রোডদমদম
নির্মানাধীনভূমিগত
[৬]
জয় হিন্দদমদম  লাইন ৬ (নির্মাণাধীন) নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরনির্মানাধীনভূগর্ভস্থসুভাষচন্দ্র বসু সৃষ্ট "জয় হিন্দ" ধ্বনিটির নামানুসারে স্টেশনটির নামকরণ করা হয়েছে।[৬]
বিরাটিবিরাটি
নির্মানাধীন
[৬]
মাইকেল নগরনিউ ব্যারাকপুর
নির্মানাধীন
[৬]
নিউ ব্যারাকপুর
নির্মানাধীন
[৬]
মধ্যমগ্রামমধ্যমগ্রাম মধ্যমগ্রামপ্রস্তাবিত
[৬]
হৃদয়পুরবারাসত হৃদয়পুরপ্রস্তাবিত
[৬]
১০বারাসত বারাসাত জংশনপ্রস্তাবিত
বন্ধ
Remove ads

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

Remove ads

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.

Remove ads