Loading AI tools
বাংলাদেশী ফাউন্ডেশন উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন (সংক্ষেপে বিএফএফ) হল বাংলাদেশের একটি সেচ্ছাসেবী সংস্থা যেটি দারিদ্রতা হতে মুক্তি, অজ্ঞতা হতে মুক্তি এবং নিপীড়ন হতে মুক্তির লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন মূলত দেশের বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে অনুদান প্রদান করে থাকে।[1] নব্বই দশকের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্ড ফাউন্ডেশন তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার প্রাক্কালে বাংলাদেশে একটি সেবামূলক (ফ্রিল্যানথ্রপি) ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠায় ইচ্ছা প্রকাশ করে এবং এতে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদানে আগ্রহ প্রকাশ করে। ফোর্ড ফাউন্ডেশনের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে দ্য ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহফুজ আনামকে সভাপতি এবং বাংলাদেশের স্বনামধন্য আরও কয়েকজন নাগরিকের সমন্বয়ে একটা উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে মাহফুজ আনামকে সভাপতি ও অধ্যাপক রেহমান সোবহানকে কোষাধ্যক্ষ করে সংস্থাটি যাত্রা শুরু করে। মূলত প্রতিষ্ঠাকালীন ফোর্ড ফাউন্ডেশন প্রদত্ত এককালীন অনুদান এবং উক্ত অনুদান থেকে বিনিয়োজিত অংশের লভ্যাংশ থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে সংস্থাটি পরিচালিত হয়। এছাড়াও সংস্থাটি সমমনা অন্যান্য কিছু প্রতিষ্ঠান থেকেও আর্থিক অনুদান গ্রহণ করে।
নীতিবাক্য | বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার |
---|---|
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৯৭ |
ধরন | স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা |
নিবন্ধন নং | ১২৫৭ |
সদরদপ্তর | বাড়ি: ৬/৫এ (লেভেল-৫), সড়ক: স্যার সৈয়দ রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭ |
অবস্থান | |
এলাকাগত সেবা | বাংলাদেশ |
মূল ব্যক্তিত্ব | ইফতেখারুজ্জামান, চেয়ারপারসন |
ওয়েবসাইট | https://www.freedomfound.org |
বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ ট্রাস্ট অ্যাক্ট, ১৮৮২ এর অধীনে নিবন্ধিত হয়। পরবর্তীতে সংস্থাটি ২০ এপ্রিল, ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ সরাকারের এনজিও বিষয়ক ব্যুরোতে নিবন্ধিত হয়। ফলে সংস্থা কর্তৃক বিদেশী অনুদান গ্রহণের পথ সুগম হয়। সংস্থাটির একমাত্র কার্যালয় ৬/৫এ, স্যার সৈয়দ রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকায় অবস্থিত।[1]
বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের সার্বিক তত্ত্বাবধান নূন্যতম ৭ জন এবং সর্বোচ্চ ১৩ জন ট্রাস্টির সমন্বয়ে গঠিত একটি ট্রাস্টি বোর্ড বা পরিচালনা পর্ষদের ওপর অর্পিত থাকে। ট্রাস্টি বোর্ড মূলত প্রতিষ্ঠানের তহবিল গঠন, বিনিয়োগ, ব্যয়, নিরীক্ষা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতকরণের তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনা দিয়ে থাকে। বোর্ড প্রণীত নীতিমালা বাস্তবায়ন ও দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য একজন নির্বাহী পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়।[2]
সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাকালীন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা হলেন:
সংস্থাটির বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা হলেন:
এছাড়াও প্রথম বাংলাদেশী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সংস্থাটির অ্যামিরেটাস ট্রাস্টি হিসেবে রয়েছেন। বর্তমানে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী।[3]
বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন সর্বদা জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক উন্নয়নে ক্ষুদ্র আকারে অনুদান প্রদান করে থাকে। তবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অর্জন, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক কিংবা জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি করে বা কোন ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি করে এমন ক্ষেত্রে অনুদান দেয় না। প্রথমদিকে সংস্থাটি নারী ও শিশু অধিকার, সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রতিবন্ধীতা মোকাবেলা, অবহেলিতদের জন্য সমাজভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা, ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষা, তথ্য ও সংস্কৃতি চর্চা এবং সামাজিক অংশগ্রহণমূলক উদ্যোগ এই পাঁচটি বৃহত্তর বিভাগে ভাগ করে অনুদান প্রদান করত। পরবর্তীতে, ২০১০ সাল থেকে এটি মুলত মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে নিবন্ধিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সাথে সহযোগিতা বা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে আসছে।[4] [5]এছাড়াও এটি সময়ে সময়ে বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক ও জাতীয় পর্যায়ে ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে থাকে।[6][7]
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন নিয়মিত বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সমমনা সংগঠনের সাথে এক হয়ে সেসব প্রকল্প সম্পূর্ণ করেছে। নিচে এরূপ চলমান ও সমাপ্ত কিছু প্রকল্পের নাম ও সহযোগী সংস্থা/সংগঠনের নাম উল্লেখ করা হল।
সংস্থাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৭০টির অধিক প্রকল্প সম্পূর্ণ করেছে।[11] এরূপ উল্লেখযোগ্য কিছু সমাপ্ত প্রকল্প ও সহযোগী বা অংশীদার সংগঠন হচ্ছে-
প্রকল্পের নাম | সহযোগী/অংশীদার সংগঠনের নাম |
আউটরিচ প্রোগ্রাম উইথ দ্যা স্কুল স্টুডেন্ট | মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ঢাকা |
অতি দরিদ্র যুবকদের জন্য কমিউনিটি ভিত্তিক কর্মসংস্থান প্রকল্প | ইনস্টিটিউট ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (আইএসএ), মৌলভীবাজার |
ঢাকা মহানগরীর বস্তিতে পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন | সোসাইটি ফর আরবান হেলথ (এসইউএইচ) |
প্রজনন ও যৌন স্বাস্থ্য পরিষেবা | আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সহায়তা কেন্দ্র, ঝিনাইদহ |
মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য সহায়তা | অল্টারনেটিভ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন ফর রিসার্চ এন্ড ইভেল্যুশন, খুলনা |
ইনস্টলেশন অব বায়ো-গ্যাস প্ল্যান্ট ফর ডিসপোজাল অফ এনিমেল এন্ড বার্ড | ভেলায়েত হোসেন বহুমুখী উচ্চা বিদ্যালয়, টাঙ্গাইল |
বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন প্রতিনিয়ত এর সাংগঠনিক নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ের উপর গবেষণা করা এবং সহযোগী সংগঠনকে গবেষণায় সহযোগিতা করে আসছে। গবেষণার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দ্যা ফোরাম অন ওমেন ইন সিকিউরিটি এন্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (ফাওসিয়া) প্রকল্পের মাধ্যমে ফওসিয়া রিসার্চ ফেলোশিপস-এর অধীনে স্থানীয় সংস্কৃতি, উন্নয়ন এবং মানবাধিকার সম্পর্কিত সমস্যা বিষয়ক গবেষণা করা।
সংস্থাটি বিজ্ঞান চিন্তা নামক একটি নিউজলেটার প্রকাশ করে থাকে। এছাড়াও সংস্থাটি তাদের বাৎসরিক নিরীক্ষিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে।[12]
সংস্থাটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে আসছে।
প্রকল্প সমাপ্তি সাপেক্ষে এবং প্রয়োজন মাফিক সংস্থাটির জাতীয় পর্যায়ের সহযোগী সংস্থাও পরিবর্তিত হয়। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সহযোগী সংস্থা প্রায় অপরিবর্তিত থাকে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.