১২ শতকের হিন্দু দার্শনিক, রাষ্ট্রনায়ক, লিঙ্গায়তাবাদের কন্নড় ভক্তি কবি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বসব (অন্যান্য নাম বসবেশ্বর, বসবন্ন) ছিলেন দ্বাদশ শতাব্দীর ভারতীয় রাষ্ট্রনীতিবিদ, দার্শনিক, কবি, সমাজ সংস্কারক এবং শৈব ভক্তিবাদী লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের সন্ত।[৪] কল্যাণী চালুক্য/কলচুরি রাজবংশের শাসনকালে তিনি সমাজ সংস্কারে প্রবৃত্ত হয়েছিলেন। উভয় রাজবংশের রাজত্বকালেই বসব সক্রিয় ছিলেন, কিন্তু তাঁর প্রভাব সর্বাধিক বৃদ্ধি পেয়েছিল রাজা দ্বিতীয় বিজ্জলের শাসনকালে।[২][৫][৬]
জগজ্যোতি বসব | |
---|---|
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১১৩১ খ্রিস্টাব্দ[১] |
মৃত্যু | ১১৯৬ খ্রিস্টাব্দ [১] কুদলসঙ্গম, কর্ণাটক, ভারত |
ধর্ম | লিঙ্গায়েত ধর্ম |
সম্প্রদায় | লিঙ্গায়েত (শরণ)[২][৩] |
যে জন্য পরিচিত | সামাজিক-ধর্মীয় সংস্কার, অনুভব মন্তপ, বচন সাহিত্য, দক্ষিণ ভারতে নারী ক্ষমতায়ন আন্দোলন |
ঊর্ধ্বতন পদ | |
সাহিত্যকর্ম | বচন |
পেশা: বিজয়পুর প্রদেশের প্রধানমন্ত্রী | রাষ্ট্রনীতিবিদ, কবি, সমাজ সংস্কারক, দার্শনিক |
‘বচন’ নামে পরিচিত স্বরচিত কবিতার মাধ্যমে বসব সামাজিক সচেতনতার প্রসার ঘটাতেন। তিনি সামাজিক বৈষম্য, কুসংস্কার ও আচার-অনুষ্ঠান প্রত্যাখ্যান করেন[১] এবং ‘ইষ্টলিঙ্গ’ নামক কণ্ঠহারের প্রচলন ঘটান। শিবলিঙ্গ-সম্বলিত এই কণ্ঠহারটির[৭] উদ্দেশ্য ছিল বর্ণ ও লিঙ্গ নির্বিশেষে প্রত্যেককে প্রতি নিয়ত শিবভক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া। রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি অনুভব মন্তবের মতো নাগরিক প্রতিষ্ঠানগুলি প্রতিষ্ঠা করেন।[৮] এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানে সকল প্রকার সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে আগত নরনারী ধর্মীয় ও জীবনের দৈনন্দিন জিজ্ঞাস্য বিষয়গুলি সকলের সঙ্গে আলোচনা করত।[৯]
প্রথাগত কিংবদন্তি ও ধর্মীয় জীবনীসাহিত্যগুলিতে বসবকে লিঙ্গায়েত ধর্মের প্রবর্তক আখ্যা দেওয়া হয়েছে। যদিও আধুনিক গবেষকেরা কলচুরি অভিলেখ ইত্যাদি ঐতিহাসিক প্রমাণের উপর নির্ভর করে মনে করেন যে, কবি ও দার্শনিক বসব পূর্বাবধি বিদ্যমান একটি ধর্মবিশ্বাসকে পুনরুজ্জীবিত করে তুলেছিলেন।[১][২][১০] কন্নড় কবি হরিহর রচিত বসবরাজদেবর রাগালে (যার ২৫টির মধ্যে ১৩টি অংশই পাওয়া যায়, আনুমানিক ১১৮০) হল বসবের জীবন-সংক্রান্ত তথ্যের আদি উৎস। এই গ্রন্থটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়, কারণ এর রচয়িতা ছিলেন বসবের প্রায় সমসাময়িক ব্যক্তিত্ব।[১১] বসবের জীবন ও ধ্যানধারণার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ পাওয়া যায় পলকুরিকি সোমনাথ রচিত ত্রয়োদশ শতাব্দীর তেলুগু ধর্মগ্রন্থ বসবপুরাণ-এ।[১২]
কন্নড় ভাষায় রচিত বচন সাহিত্যের মধ্যে বসবের রচনাও অন্তর্ভুক্ত। তিনি ‘ভক্তিভাণ্ডারী’ (অর্থাৎ ‘ভক্তির কোষাধ্যক্ষ’) নামেও পরিচিত ছিলেন।[১৩]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.