শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

তাইওয়ান

পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

তাইওয়ানmap
Remove ads

তাইওয়ান (TY-WAHN চীনা: বা ; ফিনিন: Táiwān) সরকারিভাবে চীন প্রজাতন্ত্র (ROC; চীনা: ; ফিনিন: Zhōnghuá Mínguó), পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ[১২][১৩][১৪] যা তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বে অবস্থিত। এর উত্তর-পশ্চিমে চীনা মূল ভূখণ্ড, উত্তর-পূর্বে জাপান এবং দক্ষিণে ফিলিপাইন অবস্থিত । এর আয়তন ৩৫,৮০৮ বর্গ কি.মি.। যার পশ্চিমের দুই-তৃতীয়াংশ পাহাড় এলাকা এবং পশ্চিমের এক-তৃতীয়াংশ সমতল। এই পশ্চিমে নগরায়নের কারণে বেশিরভাগ জনগোষ্ঠী কেন্দ্রীভূত। তাইপে তাইয়ানের রাজধানী এবং সবচেয়ে বড় শহর। অন্যান্য বড় শহরের মাঝে আছে নিউ তাইপে, কাওহজং, তাইজং, তাইনান ও তাওয়ান। ২.৩৫৭ কোটি নাগরিক বহুল এই দেশটি পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা।

দ্রুত তথ্য প্রজাতন্ত্রী চীন 中華民國Zhōnghuá Mínguó, রাজধানী ...
Remove ads
দ্রুত তথ্য ঐতিহ্যবাহী চীনা, সরলীকৃত চীনা ...

অস্ট্রোনেশীয়ভাষী তাইওয়ানীয় আদিবাসী প্রায় ৬,০০০ বছর আগে এই দ্বীপে আসে। ১৭ শতকে, আংশিক ওলন্দাজ দ্বারা দখলের কারণে হান চীনারা এখানে আসতে পারে। তাইওয়ানের দক্ষিণ-পশ্চিম কিছু সময় তুংগিং রাজ্য দ্বারা শাসনের পরে ১৬৮৩ সালে চীনের কিংগ রাজবংশ দখল করে নেয়। যা জাপান রাজ্যের কাছে ১৮৯৫ সালে সমর্পন করে। চীন প্রজাতন্ত্র কিংগ রাজবংশকে ১৯১১ সালে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে। ১৯৪৫-এ জাপানের সমর্পনের পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মিত্রদের পক্ষ থেকে তাইওয়ানের দখল নেয় চীন প্রজাতন্ত্র। চীন গৃহযুদ্ধের কারণে চীন প্রজাতন্ত্র চীনের মূল ভূ-খন্ড চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কাছে হারায় ও ১৯৪৯-এ তাইওয়ানে পালিয়ে যায়। যদিও চীন প্রজাতন্ত্র বলতে থাকে তারাই চীনের আসল প্রতিনিধি, ১৯৫০ থেকেই তাদের আসল আইনগত এলাকা তাইওয়ান ও এর কাছাকাছি ছোট দ্বীপের কাছাকাছি সীমাবদ্ধ হয়।

সাধারণত প্রজাতন্ত্রী চীন-শাসিত এলাকা বোঝাতেও "তাইওয়ান" ব্যবহৃত হয়। প্রজাতন্ত্রী চীন প্রশান্ত মহাসাগরের তাইওয়ান দ্বীপ, অর্কিড আইল্যান্ড, শাসন করে থাকে। এছাড়া পিশকাদোরিশ (পর্তুগিজ: Pescadores প্যিশ্‌কাদ়োর‌্যিশ্‌ অর্থাৎ "মৎস্যজীবীগণ"), কিনমেন, ফুচিয়েন তীরবর্তী মাৎসু আইল্যান্ড প্রভৃতি দ্বীপও শাসন করে। তাইওয়ান ও ফেংহু দ্বীপপুঞ্জগুলো (তাইপে ও কাওসিউং পৌরসভা বাদে) প্রজাতন্ত্রী চীনের তাইওয়ান প্রদেশ হিসেবে প্রশাসিত হয়।

১৯৬০ দশকের শুরু থেকে তাইওয়ান দ্রুত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও শিল্পায়ন করতে থাকে যা "তাইওয়ান মিরাকেল" নামে পরিচিত। ১৯৮০-র দশকের শেষ থেকে ১৯৯০-র দশকের শুরুতে চীন প্রজাতন্ত্র একদল স্বৈরশাসন থেকে বহুদল বিশিষ্ট অর্ধ-রাষ্ট্রপতি শাসিত গণতন্ত্রের দিকে যায়। তাইওয়ানের রপ্তানিমুখী শিল্প জিডিপি হিসেবে পৃথিবীর ২১তম বৃহত্তম ও পিপিপি হিসেবে ২০তম। যার বেশিরভাগই লোহা, যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও রসায়ন শিল্প। তাইওয়ান একটি উন্নত দেশ। জিডিপির দিক থেকে ১৫তম। রাজনীতি, মানবাধিকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানব উন্নয়ন বিষয়ে অত্যন্ত উন্নত।

তাইওয়ানের রাজনৈতিক স্বায়ত্ত্ব বিবাদের বিষয়বস্তু। ১৯৭১-এ "চীন মানুষের প্রজাতন্ত্র" দ্বারা সরানোর পরে, চীন প্রজাতন্ত্র বর্তমানে আর জাতিসংঘের সদস্য নয়। "চীন মানুষের প্রজাতন্ত্র" তাইওয়ানকে নিজেদের বলে দাবি করে এবং যারা তাইওয়ান সরকারকে মেনে নেয় তাদের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখে না। তাইওয়ান ১৯৩ জাতিসংঘ সদস্যের মধ্যে ১৪ জনের এবং "হলি সি"-র সাথে রাষ্ট্রীয় কূটনৈতিক যোগাযোগ রাখে। অনেক দেশ অরাষ্ট্রীয়ভাবে তাইওয়ানের সাথে প্রতিনিধি অফিস ও সংস্থা দিয়ে যোগাযোগ রাখে, যা আসলে পররাষ্ট্র কেন্দ্রের মতই কাজ করে। যেসব সংস্থায় চীন আছে তারা হয় তাইওয়ানকে সদস্যতা দেয়না অথবা দেশহীন অবস্থায় যোগ দিতে দেয়। তাইওয়ান বিশ্ব ব্যবসা সংঘ, এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সংঘ ও এডিবি-তে বিভিন্ন নামে সদস্য। আঞ্চলিকভাবে মূলত চীনের সাথে একতাবদ্ধ হওয়া আর তাইওয়ানের আলাদা জাতিত্ব এই দুইভাগে রাজনীতি বিভক্ত। কিন্তু উভয় পক্ষই বৃহত্তর জনগোষ্ঠির সমর্থন পাওয়ার জন্য নিজেদের অবস্থান সংযত করেছে।

তাইওয়ান দ্বীপের মূল ভূখণ্ড ফুরমোজা (পর্তুগিজে ইলিয়া ফ়ুর্‌মোজ়া অর্থাৎসুন্দরী দ্বীপ) নামেও পরিচিত যা পূর্ব এশিয়ার চীনা মূল-ভূখণ্ড তীরবর্তী অঞ্চল এবং জাপানের মূল-ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। জাপানের রিউকিউ দ্বীপপুঞ্জের ঠিক পশ্চিমেই তাইওয়ান দ্বীপের অবস্থান। এর পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণে দক্ষিণ চীন সাগর ও লুজন খাড়ি, পশ্চিমে তাইওয়ান খাড়ি এবং পূর্বে পূর্ব চীন সাগর অবস্থিত। দ্বীপটি ৩৯৪ কিলোমিটার (২৪৫ মাইল) দীর্ঘ এবং ১৪৪ কিলোমিটার (৮৯ মাইল) প্রশস্ত। এখানে কাড়া পর্বত ও ট্রপিকাল বন রয়েছে।

তাইওয়ানের মোট লোকসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৩০ লক্ষ। তন্মধ্যে হোকলো সম্প্রদায় সর্বাধিক এবং আরো আছে হাক্কা, প্রাচীন তাইওয়ানবাসী, চীনা তাইওয়ানবাসী, প্রবাসী তাইওয়ানবাসী প্রমূখ সম্প্রদায়। প্রধান ভাষা হচ্ছে মান্দারিন এবং উপভাষা সমূহ হচ্ছে তাইওয়ানি (মিননান উপভাষা), হাক্কা উপভাষা ইত্যাদি। উচ্চপ্রযুক্তি, উষ্ণমন্ডলীয় কৃষিজাতপণ্য প্রভৃতি রপ্তানি করে অজস্র বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় করে। ন্যানোপ্রযুক্তি, অপ্টো(কাঁচ) ইলেকট্রনিক, পর্যটন প্রমুখ শিল্প তাইওয়ানের উন্নয়নে সহায়ক।[১৫][১৬]

Remove ads

ব্যুৎপত্তি

তাইওয়ান দ্বীপটির বিভিন্ন নাম প্রচলিত আছে, যার প্রত্যেকটি কোনো ঐতিহাসিক অভিযাত্রী বা শাসকের নাম থেকে নেওয়া। ফরমোসা(福爾摩沙) নামটি ১৫৪২-এর দিকের যখন পর্তুগিজ নাবিক একটা অচেনা দ্বীপ দেখেছিলো এবং ইলহা ফরমোসা(সুন্দর দ্বীপ) নামে মানচিত্রে লিখেছিল। ইউরোপীয় সাহিত্যে এই নামটা পরবর্তীতে অন্য সব নাম থেকে অধিক জনপ্রিয় হয় এবং ইংরেজভাষীদের মধ্যে এই নামটি বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত ব্যবহৃত হতে থাকে।

সপ্তদশ শতকের শুরুর দিকে ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি(ওলন্দাজ পূর্ব ভারত প্রতিষ্ঠান) জিল্যান্ডিয়া দুর্গের(আধুনিক আনপিং, তাইনান) সৈকতের বালুতে "তায়ুয়ান" নামে একটা বাণিজ্যিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। নামটি কাছাকাছি এক তাইওয়ানীয় আদিবাসীদের নাম, সম্ভবত তায়োভান মানুষ, থেকে উদ্ভূত। ওলন্দাজ ও পর্তুগীজ লেখকরা বিভিন্ন সময় তাদের নাম তায়োওয়াংগ, তায়োওয়ান, তেইজোয়ান, ইত্যাদি বলে আখ্যায়িত করেছে।

Remove ads

ইতিহাস

২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় গণচীনের জাপানী হামলা প্রতিরোধ যুদ্ধকালে চীনের কুওমিনতাং পার্টি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে জাপানের আগ্রাসন বিরোধী জাতীয় যুক্তফ্রণ্ট গড়ে তুলে জাপানী সাম্রাজ্যবাদীদের আক্রমণ প্রতিরোধ করে। জাপান-বিরোধী প্রতিরোধ যুদ্ধটি জয়যুক্ত হবার পর চিয়াং কাইশেকের নেতৃত্বাধীন কুওমিনতাং গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট হয়ে সারা দেশ জুড়ে গৃহযুদ্ধ বাধায়। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে চীনা জনগণ তিন বছরের বেশি সময় মুক্তিযুদ্ধ চালায়। তখনকার কুওমিনতাং গোষ্ঠির অনুসৃত গণবিরোধী নীতির দরুন সারা দেশের বিভিন্ন জাতির জনগণ এই গোষ্ঠী ঘৃণা করে, ফলে কুওমিনতাং পার্টির “চীন প্রজাতন্ত্র” (বা রিপাবলিক অব চায়না) সরকার উত্খাত করা হয়। ১৯৪৯ সালের ১লা অক্টোবর চীন গণ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তা চীনের একমাত্র বৈধ সরকার হয়ে দাঁড়ায়। কুওমিনতাং গোষ্ঠির কিছু সৈন্য বাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তা সরে গিয়ে তাইওয়ান আঁকড়ে ধরে বসে। তারা তখনকার মার্কিন সরকারের সমর্থনে তাইওয়ান প্রণালীর দু’ তীরের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করেন।

Remove ads

বর্ষপঞ্জিকা

বেশিরভাগ কাজেই গ্রেগোরিয়ান বর্ষপঞ্জিকা ব্যবহৃত হয়। বছর প্রায়ই মিংগুও বর্ষপঞ্জী ব্যবস্থায় প্রকাশিত হয়, যা ১৯১২ সালে শুরু হয়, যে সালে তাইওয়ান প্রতিষ্ঠিত হয়। যেমন ২০২১ হচ্ছে: ১১০ মিংগুও (民國১১০年)। পূর্ব এশীয় তারিখ পদ্ধতি চীনা ভাষার মাধ্যমে অনুসৃত হয়।

১৯২৯ এর আগে সরকারি বর্ষপঞ্জিকা ছিল চন্দ্র-সূর্য ব্যবস্থা, যা এখনো চন্দ্র নববর্ষ, ঝুলানো বাতি(ইংরেজি: Lantern) অনুষ্ঠান এবং ড্রাগন নৌকা অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়।

নোট

  1. See Names of the Republic of China.
  2. ওয়াইশেনগ্ৰেন সাধারণত ১৯৪৫ সালের পর চীনা ভূখণ্ড থেকে আসা লোকজন কে এবং চীন গৃহ যুদ্ধএর কারণে আসা শরণার্থী ও তাদের বংশধরদের বোঝায়। It does not include citizens of the People's Republic of China who more recently moved to Taiwan.
  3. Taiwanese aborigines are officially categorised into 14 separate ethnic groups by the Republic of China.
  4. Although the territories controlled by the ROC imply that the demonym is "Taiwanese", some consider that it is "Chinese" due to the claims of the ROC over all of China. Taiwanese people have various opinions regarding their own national identity.
  5. The UN has not calculated an HDI for the ROC, which is not a member nation. The ROC government calculated its HDI for 2012 to be 0.890, which would rank it 23rd among countries.
Remove ads

তথ্যসূত্র

Loading content...

আরও পড়ুন

বহিঃসংযোগ

Loading content...
Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads