Loading AI tools
ভারতীয় কবি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পণ্ডিত নরেন্দ্র শর্মা (২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯১৩ - ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৯) [1] ছিলেন একজন ভারতীয় হিন্দি কবি এবং কিংবদন্তি গীতিকার ও লেখক। এসবের পাশাপাশি পত্রিকা সম্পাদনা আর চলচ্চিত্রের জন্য অবিস্মরণীয় গান রচনা করেছেন। আকাশবাণীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে জনপ্রিয় চ্যানেল বিবিধ ভারতী প্রচার তরঙ্গের সূত্রপাত করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। [2]
পণ্ডিত নরেন্দ্র শর্মা | |
---|---|
জন্ম | জাহাঙ্গীরপুর, গৌতম বুদ্ধ নগর আগ্রা ও অবধের যুক্তপ্রদেশ ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ) | ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯১৩
মৃত্যু | ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৯ ৭৫) মুম্বই, মহারাষ্ট্র, ভারত | (বয়স
পেশা | কবি, গীতিকার |
ভাষা | হিন্দি |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
শিক্ষা | এম.এ |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | পদ্মভূষণ |
দাম্পত্যসঙ্গী | সুশীলা দেবী (বি.১৯৪৭) |
সন্তান | লাবণ্য শাহ সহ তিন কন্যা ও এক পুত্র |
পণ্ডিত নরেন্দ্র শর্মা ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের আগ্রা ও অবধের যুক্তপ্রদেশ অধুনা উত্তরপ্রদেশের গৌতম বুদ্ধ নগরেরর জাহাঙ্গীরপুরে এক ভরদ্বাজ ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। নরেন্দ্রর চার বৎসর বয়সের সময় পিতা পূর্ণলাল শর্মা মারা যান। সেকারণে তার মাতা গঙ্গা দেবী এবং পিতৃব্য গনপত তাউজি তাকে প্রতিপালন করেন। তিনি এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষাবিজ্ঞান ও ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন।[3]
পণ্ডিত নরেন্দ্র শর্মা ছোটবেলা থেকেই সাহিত্য রচনা শুরু করেন। ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে তার প্রথম কবিতা 'চাঁদ' প্রকাশিত হয়। তিনি ২১ বৎসর বয়সে ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে পণ্ডিত মদনমোহন মালব্যের প্রয়াগে প্রতিষ্ঠিত সাপ্তাহিক " অভ্যুদয়" পত্রিকা সম্পাদনার কাজ শুরু করেন। কাশী বিদ্যাপীঠে হিন্দি ও ইংরেজি কবিতার অধ্যাপনার কাজের পাশাপাশি তিনি সাহিত্য সৃষ্টি করতে থাকেন। একজন অত্যন্ত সচেতন, অধ্যয়নশীল এবং আবেগপ্রবণ কবি হিসাবে নরেন্দ্র শর্মা তৎকালীন উদীয়মান কবিদের মধ্যে বিশেষ স্থান করে নেন। জনপ্রিয়তার নিরিখে তিনি হরিবংশ রাই বচ্চনের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে যান। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি মৈথিলীশরণ গুপ্তের কাব্য রচনা ' যশোধরা' - এর একটি পর্যালোচনাও লেখেন । ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে কবি সুমিত্রানন্দন পন্থ , কুনওয়ার সুরেশ সিংয়ের আর্থিক সহায়তায়, 'রূপভা' নামে একটি নতুন সামাজিক-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্পন্দন সম্বলিত একটি গবেষণাপত্র সম্পাদনা করার সিদ্ধান্ত নেন। নরেন্দ্র শর্মা এর সম্পাদনায় অবদান রাখেন। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ প্রশাসন বিরোধী কার্যকলাপের জন্য ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক গ্রেফতার হন এবং ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি বারাণসী , আগ্রা এবং দেওলি সহ নানা কারাগারে শচীন্দ্রনাথ সান্যাল , সোহানসিংহ জোশ, জয়প্রকাশ নারায়ণ এবং সম্পূর্নানন্দের মতো ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কারাবাস করেন। এই সময়ে তিনি ঊনিশ দিন উপবাস করেছিলেন। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে 'চিত্রলেখা'র লেখক ভগবতীচরণ বর্মা তাকে বোম্বাইয়ে নিয়ে আসেন বিখ্যাত বোম্বে টকিজের গীতিকার হিসেবে কাজ করার জন্য। তিনি অনেক চলচ্চিত্রের জন্য গান রচনা করেন।
১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে, অল ইন্ডিয়া রেডিওর বাণিজ্যিক কার্যক্রমের নতুন শাখা পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু তাকে আমন্ত্রণ জানান। সম্পূর্ণ নতুন এক প্রচার তরঙ্গ বিবিধ ভারতী চালু করেন ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের ৩ অক্টোবর। বিবিধ ভারতীর অনুষ্ঠানগুলির কাব্যিক নামকরণ করেছিলেন তিনিই । যেমন- 'জয়মালা', 'ছায়াগীত', 'হাওয়ামহল', 'রঙতরঙ' ইত্যাদি। তাছাড়া অনুষ্ঠান শুরুর গানটিও অনিল বিশ্বাস সুরারোপিত এবং মান্না দের কণ্ঠে মেঘমল্লারে গীত নাচ ময়ূরা নাচ ছিল তারই সৃষ্টি। শুরু হওয়ার সাথে সাথেই প্রচার তরঙ্গটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ শ্রোতার সংখ্যা ৯৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। উদ্বোধনীর এই গানটি পরবরতীকালে এইচএমভি তাদের বর্ষার গানের অ্যালবামে যোগ করে।[4] মোটের উপর হিন্দি চলচ্চিত্রের গান এবং এর গানের প্রতি আগ্রহ পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বিবিধ ভারতী গুরুত্বপূর্ণ ছিল।[5] ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দ হতে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি মুখ্য প্রযোজক ছিলেন।[6] ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে অবসরের পর নরেন্দ্র শর্মা ফিরে যান সঙ্গীতের জগতে। লেখালেখির কাজ চলতে থাকে নিরবচ্ছিন্নভাবে। পণ্ডিত শর্মা তেইশটি গ্রন্থ রচনা করে হিন্দি সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেন। হিন্দি চলচ্চিত্রের জন্য তার কিছু স্মরণীয় গান হল—
১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে এশিয়ান গেমস্ এর থিম সঙ্ রচনা করেছিলেন তিনি —
ভারতীয় সংস্কৃতির প্রধান গ্রন্থ 'রামায়ণ' ও 'মহাভারত' ছিল নরেন্দ্র শর্মার সবচেয়ে প্রিয় গ্রন্থ। মহাভারতের প্রতি আগ্রহের কারণে তিনি 'মহাভারত' সিরিয়ালের প্রযোজক বি.আর. চোপড়ার ঘনিষ্ঠ হন। তিনি 'মহাভারত' সিরিয়াল নির্মাণ শুরু করলে নরেন্দ্র তার উপদেষ্টা হন। তার জীবনের শেষ রচনাটি ছিল 'মহাভারত'-এর এই পদটি: "शंखनाद ने कर दिया, समारोह का अंत, अंत यही ले जाएगा, कुरुक्षेत्र पर्यन्त" তথা "শঙ্খের ধ্বনি অনুষ্ঠানের অবসান ঘটিয়েছে, শেষে এইই আমাদের কুরুক্ষেত্র পর্যন্ত নিয়ে যাবে"।
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ১১ মে নরেন্দ্র শর্মা মুম্বাই-এ চারুকলা স্নাতক সুশীলাজীকে বিবাহ করেন। তাদের তিন কন্যা এবং এক পুত্র। পণ্ডিত নরেন্দ্র শর্মা ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে ১১ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোক গমন করেন।
ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সেরা গায়িকা লতা মঙ্গেশকর প্রথম থেকেই পণ্ডিত নরেন্দ্র শর্মাজীকে পিতৃতূল্য মেনে বাবা সম্বোধন করতেন। তিনি যুক্তরাজ্যের এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি পণ্ডিতজির কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন এবং তার পরামর্শে তিনি জীবনের অনেক সমস্যার সমাধান করতে পেরেছেন। [8]
পণ্ডিত নরেন্দ্র শর্মা রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্য গ্রন্থগুলি হল—
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.