Loading AI tools
২০০২ হিন্দি চলচ্চিত্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দেবদাস (হিন্দি: देवदास) ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় হিন্দি চলচ্চিত্র। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর বিখ্যাত উপন্যাস দেবদাস অবলম্বনে নির্মাণ করা হয়েছে ছবিটি। এইটি দেবদাস গল্পের তৃতীয় বলিউড (হিন্দি) সংস্করণ এবং হিন্দিতে প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র সংস্করণ। ছবিটি পরিচালনা করেছেন সঞ্জয় লীলা বনশালি এবং নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান, সঙ্গে রয়েছেন মাধুরী দীক্ষিত এবং ঐশ্বর্যা রাই।
দেবদাস | |
---|---|
পরিচালক | সঞ্জয় লীলা বনশালি |
প্রযোজক | ভরত শাহ |
রচয়িতা | সঞ্জয় লীলা বনশালি |
উৎস | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কর্তৃক দেবদাস |
শ্রেষ্ঠাংশে | শাহরুখ খান মাধুরী দীক্ষিত ঐশ্বর্যা রাই জ্যাকি শ্রফ কিরণ খের |
সুরকার | ইসমাইল দরবার মন্টি শর্মা |
চিত্রগ্রাহক | বিনোদ প্রধান |
সম্পাদক | বেলা সেহগাল |
পরিবেশক | মেগা বলিউড |
মুক্তি | জুলাই ১২, ২০০২ |
স্থিতিকাল | ১৮৩ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
নির্মাণব্যয় | ৫০ কোটি টাকা |
আয় | ১৬৪.৩০ কোটি টাকা |
দেবদাস ভূমিকায় শাহরুখ খান এর অভিনয় সর্বোত্তম বিবেচনা করা হয়, এবং তাকে ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার প্রদান করে। গান "দোলা রে দোলা" ঐশ্বর্যা রাই এবং মাধুরী দীক্ষিত এর মধ্যে এক অনন্য নৃত্য একসঙ্গে দৃশ্যায়ন করা হয় এবং দৃশ্যটি বেশ প্রশংসিত হয়েছিল।
দেবদাস এর মুক্তির সময় পর্যন্ত বলিউড এটিই সবচেয়ে ব্যয়বহুল হিসেবে তৈরি করেছিল চলচ্চিত্র, বাজেট ছিল ভারতীয় মুদ্রায় ৫০ কোটি টাকা।[1] ছবি মুক্তির কিছু দিন পরে ছয়টি বৈকল্পিক ভাষায় সংস্করণ করে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল: ইংরেজি, ফরাসী, জার্মান, মান্দারিন, থাই, এবং পাঞ্জাবী।[2]
জমিদার স্যার নারায়ণ মুখোপাধ্যায় (বিজয় কৃষ্ণা) ও তার স্ত্রী কৌশল্যা (স্মিতা জ্যাকার) শোনেন, তাদের ছোটো ছেলে দেবদাস (শাহরুখ খান) ইংল্যান্ডে লেখাপড়া শেষ করে দশ বছর পর বাংলার তালসোনাপুরে তাদের গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসছে। কৌশল্যা ছেলের প্রত্যাবর্তনের খবরটি প্রতিবেশীনী সুমিত্রাকে দিলে, সুমিত্রাও দেবদাসের মায়ের মতোই খুশি হয়ে ওঠেন। কৌশল্যাকে তার মেয়ে পারোর সঙ্গে দেবদাসের ছেলেবেলাকার বন্ধুত্বের কথা বলতে গিয়ে তার চোখে জল এসে যায়। দেবদাসের স্মরণে পারো একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখে, প্রদীপটি সে কখনও নিভতে দেয় না।
দেবদাস গ্রামে ফিরে প্রথমে নিজের বাড়িতে না এসে যায় ছেলেবেলার প্রণয়িনী পারোর বাড়ি। এতে কৌশল্যা মনঃক্ষুণ্ণ হন। এরপর সুমিত্রা দেবদাসের সঙ্গে পারোর বিয়ের প্রস্তাব দিলে দেবদাসের পরিবার তাদের বংশমর্যাদা ও আভিজাত্যের কথা ভেবে সে প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সুমিত্রা প্রতিজ্ঞা করে দেবদাসের থেকেও ভাল পরিবারে তিনি পারোর বিয়ে দেবেন। অতঃপর জমিদার ভুবন চৌধুরীর সঙ্গে পারোর বিয়ে হয়। ভুবন চৌধুরী ছিলেন বিপত্নীক ও তিন সন্তানের পিতা। দেবদাসের আশাভঙ্গ হওয়ায় সে কলকাতায় গিয়ে বন্ধু চুন্নিবাবুর (জ্যাকি শ্রফ) সঙ্গে পতিতালয়ে যাতায়াত শুরু করে। এই পতিতালয়ে চন্দ্রমুখী (মাধুরী দীক্ষিত) নামে এক বাইজির সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে।
এদিকে পারো শ্বশুরবাড়ির সকলকে, এমনকি মৃতা সতীনের ছেলেমেয়েদেরও আপন করে নেয়। সুগৃহিণীর মতো বাড়ির সব দায়দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়। দেবদাস মদ খেতে শুরু করে। এদিকে দেবদাসের পিতৃবিয়োগ ঘটে। পারো দেবদাসকে দেখার বাসনায় দেবদাসের বাবার শ্রাদ্ধে উপস্থিত হয়। কিন্তু সেখানেও দেবদাস মদ্যপান করে অসভ্যতা করে। এরপর প্রচুর মদ্যপান করে অসুস্থ হয়ে পড়লে দেবদাস নিজের বাড়িতে থাকতে শুরু করে। কিন্তু দেবদাসের ভ্রাতৃবধূ তার বিরুদ্ধে চুরির গুরুতর অভিযোগ এনে তাকে ঘরছাড়া করে।
দেবদাসের মাদকাসক্তির কথা পারোর কানে যায়। সে দুর্গাপূজার জন্য বেশ্যাদ্বারমৃত্তিকা সংগ্রহের অছিলায় চন্দ্রমুখীর "কোঠা"য় গিয়ে হাজির হয়। চন্দ্রমুখীর সঙ্গে তার বাদানুবাদ হয়। পরে সে অনুভব করে, চন্দ্রমুখীও দেবদাসকে তার মতোই ভালবাসে। তখন পারো বাড়ির দুর্গাপূজায় নিমন্ত্রণ করে চন্দ্রমুখীকে। চন্দ্রমুখী পুজো দেখতে এলে, ভুবন চৌধুরীর জামাই চন্দ্রমুখীর পরিচয় সকলের সামনে ফাঁস করে দেয়। এতে দেবদাসের সঙ্গে পারোর সম্পর্কের কথাও জানাজানি হয়ে যায়। ভুবন পারোকে বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করেন।
এদিকে দেবদাসের অসুস্থতা মারাত্মক আকার নিলে, সে হাওয়া বদলে যায়। পথে চুনিবাবুর সঙ্গে ট্রেনে দেখা হয়ে গেলে, দুই বন্ধু প্রচুর মদ্যপান করে। দেবদাসের শরীর আরো খারাপ হয়। মৃত্যু আসন্ন জেনে সে পারোর শ্বশুরবাড়ির সামনে এসে উপস্থিত হয়। পারো বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসতে চায়। কিন্তু তার আগেই বাড়ির দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাড়ির বাইরে দেবদাসের মৃত্যু ঘটে।
অভিনেতা/অভিনেত্রী | ভুমিকা |
---|---|
শাহরুখ খান | দেবদাস মুখোপাধ্যায় |
মাধুরী দীক্ষিত | চন্দ্রমুখী |
ঐশ্বর্যা রাই | পার্বতী "পারু" চক্রবর্তী |
জ্যাকি শ্রফ | চুনিলাল ("চুনিবাবু") |
স্মিতা জ্যাকার | কৌশল্যা |
মনোজ যোশী | দ্বিজদাস মুখোপাধ্যায় |
অনন্যা খের | কুমুদ |
মিলিন্দ গুণাজি | কালীবাবু |
দীনা পাটক | ভুবনের মা |
বিজেয়েন্দ্র ঘাতজ | ভুবন চৌধুরী |
কিরণ খের | সুমিত্রা চক্রবর্তী |
তিকু তালসানিয়া | ধর্মদাস |
আভা মুখার্জী | দেবদাসের ঠাকুরমা |
জয়া ভট্টাচার্য | মনোরমা |
সুনীল রেজ | নীলকান্ত চক্রবর্তী |
বিজয় কৃষ্ণ | স্যার নারায়ণ মুখোপাধ্যায় |
অমরদীপ ঝা | কালীবাবুর মা |
অপরা মেহতা | বড়োদিদি |
মুনি ঝা | কাকা |
রাধিকা সিং | যশোমতী |
দেবদাস ছবির প্রধান খন্ড চিত্রয়ন করা হয় মুম্বাই ফিল্মসিটিতে, এবং আগের পরবর্তী অংশ গুলো বিংশ শতাব্দী কলকাতায়।[3] ছবির শুটিংয়ের জন্য ছয়টি সেট নির্মাণ করা হয় যার ব্যায়কৃত মুল্য ভারতীয় মুদ্রায় দুইশত দশ লক্ষ রুপি।[4] চন্দ্রমুখীর কিছু দৃশ্যের জন্য আলাদা কোঠা তৈরি।[5] পার্বতী একটি কামরা সাজানো বার হাজার দুইশত কাচের খন্ড দিয়ে।[6]
চলচ্চিত্র গানের জন্য ইসমাইল দরবার এর মাধ্যমে আগে থেকে একত্র করা হয়েছিল এবং একটি বৈশিষ্ট্য রাখাহয়েছিল সঙ্গীতশিল্পী শ্রেয়া ঘোষাল (পার্বতী হিসেবে), কবিতা কৃষ্ণমূর্তি (চন্দ্রমুখী হিসেবে), এবং উদিত নারায়ন (দেবদাস হিসেবে) গাইবেন। শ্রেয়া ঘোষাল এই চলচ্চিত্রটির মধ্য দিয়ে তার বলিউড চলচ্চিত্রের গানে অভিষেক হয়। সে ইসমাইল দরবার এর মনোযোগ ধরেছিল যখন সে সা রে গা মা পা প্রতিযোগিতাতে অংশগ্রহণ করেছিল। সে বানশালীর রেখাপাত করেতেও সক্ষম ছিল যখন সে লতা মুঙ্গেসকর এর ভাজান গেয়েছিল।[7] সে ফটোগ্রাফে পাঁচটি গান গেয়েছিল, যা তাকে অধিক চরম সঙ্কটপূর্ণ উচ্চৈঃস্বরে প্রশংসা করা এবং কতিপয় ঐক্যভাবে জয় করেছিল।[8]
ট্রাক # | গান | কণ্ঠশিল্প | গ্রন্থন/গানের কথা |
---|---|---|---|
১ | "সিলসিলা ইয়ে চাহত কা" | শ্রেয়া ঘোষাল | ইসমাইল দরবার ও নুসরাত বাদ্র |
২ | "মার দালা" | কবিতা কৃষ্ণমুর্তি ও কে কে | প্রকাশ কাপাদিয়া ও নুসরাত বাদ্র |
৩ | "বেইরি পিয়া" | উদিত নারায়ন ও শ্রেয়া ঘোষাল | ইসমাইল দরবার ও নুসরাত বাদ্র |
৪ | "কাহে ছেদ মোহে" | পি টি বির্জু মাহারাজ, কবিতা কৃষ্ণমুর্তি ও মাধুরী দীক্ষিত | ইসমাইল দরবার ও নুসরাত বাদ্র |
৫ | "চলাক চলাক" | উদিত নারায়ন, বিনদ রাথদ ও শ্রেয়া ঘোষাল | ইসমাইল দরবার ও নুসরাত বাদ্র |
৬ | "হামিসা তুমকো চাহা" | কবিতা কৃষ্ণমুর্তি ও উদিত নারায়ন | ইসমাইল দরবার ও নুসরাত বাদ্র |
৭ | "ওহ্ চাঁদ জেইছি লাড়কি" | উদিত নারায়ন | ইসমাইল দরবার ও নুসরাত বাদ্র |
৮ | "মোরেই পিয়া" | জাসপিন্ডার নুরুলা ও শ্রেয়া ঘোষাল | শমীর |
৯ | "দেব'র - দেম" | রাশমি শর্মা, সুপ্রিয়া রাঘী চ্যাটার্জী | ইসমাইল দরবার ও নুসরাত বাদ্র |
১০ | "ডোলা রে ডোলা রে" | কবিতা কৃষ্ণমুর্তি, শ্রেয়া ঘোষাল ও কে কে | ইসমাইল দরবার ও নুসরাত বাদ্র |
দেবদাস ২০০২ সালে সর্বমোট দশটি বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করে।
দেবদাস জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এ ২০০২ সালে সর্বমোট পাঁচটি বিভাগে মনোনয়ন লাভ করে।
দেবদাস আইফা পুরস্কার এ ২০০২ সালে সর্বমোট ছয়টি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে।
দেবদাস ২০০৩ সালে এশীয় ছায়াছবি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন করা হয়েছিল।[10][11][12]
দেবদাস শ্রেষ্ঠ বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র, ২০০৩ এর জন্য বি এ এফ টি এ পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন করা হয়েছিল।
দেবদাস বক্স অফিসে একটি বিশাল আলোড়ন তুলেছিল। ছবিটি ভারতীয় মুদ্রায় ৮৯ কোটি রুপি আয় করেছিল যা বক্স অফিস এ সুপার হিট ছিল এবং ২০০২ এর সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে প্রকাশ পায়।[13]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.