টেড ডেক্সটার
ইংরেজ ক্রিকেটার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
এডওয়ার্ড রাল্ফ টেড ডেক্সটার, সিবিই (ইংরেজি: Ted Dexter; জন্ম: ১৫ মে, ১৯৩৫–মৃত্যু: ২৫ আগস্ট, ২০২১) ইতালির মিলানে জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।[২] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬০-এর দশকে ইংল্যান্ড দলকে নেতৃত্ব দেন। এছাড়াও, কাউন্টি ক্রিকেটে সাসেক্স দলের অধিনায়কত্ব করেন। মাঝারিসারির আক্রমণধর্মী ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় আবির্ভূত হতেন। পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন 'লর্ড টেড' ডাকনামে পরিচিত টেড ডেক্সটার।
ব্যক্তিগত তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | এডওয়ার্ড রাল্ফ ডেক্সটার | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | মিলান, ইতালি | ১৫ মে ১৯৩৫||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৫ আগস্ট ২০২১ ৮৬) উল্ভারহাম্পটন, ইংল্যান্ড[১] | (বয়স||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | লর্ড টেড | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম পেস | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | টম লংফিল্ড (শ্বশুর) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৩৮৮) | ২৪ জুলাই ১৯৫৮ বনাম নিউজিল্যান্ড | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২২ আগস্ট ১৯৬৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৬–১৯৫৮ | কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৭–১৯৬৮ | সাসেক্স | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৭–১৯৬৫ | এমসিসি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকেটআর্কাইভ, ২৬ মে ২০১৭ |
প্রারম্ভিক জীবন
র্যাডলি কলেজে অধ্যয়ন করেন তিনি। সেখানেই তিনি প্রথম একাদশে ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত খেলতে থাকেন। আত্মবিশ্বাসের সাথে চলাফেরা করায় তিনি ‘লর্ড টেড’ ডাকনামে পরিচিতি পান। ১৯৫৬-৫৭ সালে মালয়ে জরুরী অবস্থা চলাকালে জাতীয় সেবা হিসেবে ১১শ হাসার্সে সেকেন্ড লেফট্যানেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ফলশ্রুতিতে মালয় প্রচারণা পদক লাভ করেন। অক্টোবর, ১৯৫৫ সালে কেমব্রিজের জেসাস কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি গল্ফ ও রাগবি’র পাশাপাশি ক্রিকেটে অংশ নেন।
কাউন্টি ক্রিকেট
১৯৫৬, ১৯৫৭ ও অধিনায়ক হিসেবে ১৯৫৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলাগুলোয় অংশ নেন। ১৯৫৭ সালে জেন্টলম্যানের বিপক্ষে ৫/৮ ও ৩/৪৭ লাভ করে সকলের দৃষ্টি কাড়েন। একই বছরে সাসেক্সে যোগ দেন। পরবর্তীতে ডেক্সটার সাসেক্সের অধিনায়কত্ব করেন ও ১৯৬৫ সালে অবসরের পূর্ব-পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন।
জিলেট কাপের উদ্বোধনী আসরটি প্রথম বড় ধরনের একদিনের প্রতিযোগিতারূপে চিহ্নিত হয়ে আসছে। লর্ডসের ফাইনালে টেড ডেক্সটার সাসেক্সের অধিনায়কত্ব করেন।[৩] তিনি নতুন ধরনের এ ক্রিকেটকে ‘মৌচাকে একটি মৌমাছির প্রবেশরূপে’ আখ্যায়িত করেন। উইজডেন অ্যালমেনাক ফাইনালে তার বৃহৎ কৌশলকে চিহ্নিত করে। নরম পিচে সাসেক্স ১৬৮ রানে অল-আউট হলে বৃষ্টি ওরচেস্টারশায়ারের অগ্রযাত্রাকে রুখে দেয়। এমনকি দলটি ১৫৪ রান সব উইকেট হারালে সাসেক্স নাটকীয়ভাবে ১৪ রানের জয় পায়। পরের বছরও সাসেক্স শিরোপা অক্ষুণ্ন রেখেছিল।
টেস্ট ক্রিকেট
সারাংশ
প্রসঙ্গ
১৯৫৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। খেলায় তিনি ৫২ রান সংগৃহীত করেন। ই.ডব্লিউ. সোয়ানটন ভেবেছিলেন যে, তাকে হয়তো ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে পিটার মে’র এমসিসি দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়ায় নেয়া হবে।[৪] শেষ পর্যন্ত প্যারিসে অবস্থানরত মডেল স্ত্রীর কাছ থেকে ফিরে এসে পিটার মে’র আঘাতে জর্জরিত দলে পুণরায় অন্তর্ভুক্ত হন। সফরের মাঝামাঝি সময়ে ডেক্সটার যোগ দেন ও প্রস্তুতির সময় না নিয়েই প্রস্তুতিমূলক খেলায় অংশ নেন। এ খেলাগুলোয় ভালো করলেও টেস্টে ব্যর্থ হন। তাস্বত্ত্বেও সফর চালিয়ে যান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকান। ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে ভারত ও ক্যারিবীয়ায় দূর্দান্ত সময় অতিবাহিত করলেও দলে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন। কিন্তু ওয়েস হল ও চার্লি গ্রিফিথের ন্যায় ফাস্ট বোলারদের মোকাবেলা করে উপযুক্ত জবাব দেন। প্রথম টেস্টে অপরাজিত ১৩২*, চতুর্থ টেস্টে ১১০ সহ ৬৫.৭৫ গড়ে ৫২৬ রান তোলেন ও ইংল্যান্ডের ব্যাটিং গড়ে শীর্ষস্থানে আরোহণ করেন। এরফলে ১৯৬১ সালে উইজডেন কর্তৃপক্ষ তাকে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে ঘোষণা করে।[৫]
ঘরোয়া টেস্ট সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নিষ্প্রভ ছিলেন। কিন্তু, এজবাস্টনে অনুষ্ঠিত ১৯৬১ সালের অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩২১ রানের ইনিংস পরাজয় এড়াতে নামে। এ ইনিংসে তিনি ৩১ বাউন্ডারী সহযোগে ১৮০ তোলেন যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইংল্যান্ডের সর্ববৃহৎ সেঞ্চুরি ছিল। কিন্তু খেলার শেষদিকে ববি সিম্পসনের বলে ছক্কা হাঁকাতে গেলে তিনি স্ট্যাম্পড হন। ওল্ড ট্রাফোর্ডে খ্যাতনামা চতুর্থ টেস্টে ৮৪ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে দর্শনীয় ৭৬ রান তোলেন। খেলায় ইংল্যান্ডের আর দরকার ছিল মাত্র ১০৬ রান ও হাতে ছিল ৯ উইকেট। তাস্বত্ত্বেও ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ে ধ্বস নামে ও টেস্টে পরাজিত হওয়াসহ সিরিজে পরাজয়বরণ করে।
অবসর
১৯৬৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেয়ার লক্ষ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে নিজ নাম প্রত্যাহার করেন।[৬] কিন্তু নির্বাচনে পরাজিত হবার পর এম.জে.কে. স্মিথের সহকারী অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৫ সালে ওয়েস্ট লন্ডনে জাগুয়ার গাড়ি দুর্ঘটনায় পা ভেঙ্গে ফেলার প্রেক্ষিতে তার খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে।[৭][৮][৯] ১৯৬৮ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর সাংবাদিক, অনুষ্ঠান পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন ও পিআর কোম্পানী প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮০-এর শেষদিকে বব উইলিসের সাথে ফাস্ট বোলারের সন্ধানে যোগ দেন।
আইসিসি প্লেয়ার র্যাঙ্কিং
১৯৮৭ সালে টেস্ট ক্রিকেটারদের র্যাঙ্কিং প্রথা প্রবর্তনের সাথে জড়িয়ে পড়েন। পরিসংখ্যানবিদ গর্ডন ভিন্স ও রব ইস্টাওয়ে’র সাথে তিনি ডিলোইটেস রেটিংস চালু করেন। রেটিংটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করতে থাকে ও ২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে। এরপর থেকেই এটি আইসিসি প্লেয়ার র্যাঙ্কিং হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ২০০৫ সালে ক্রিকেটার সাময়িকীর এ নিবন্ধে তিনি বলেন যে, র্যাঙ্কিংয়ের ধারণাটি ক্রিকেট জীবনে সর্বাপেক্ষা বৃহৎ অংশগ্রহণ। এক্সটা-কভার ড্রাইভে কয়েকটি জোড়ালো আঘাতে সংগৃহীত রানের চেয়ে এটিই সেরা।
ইসিবি সভাপতি
১৯৮৯ সালে পিটার মে’র পরিবর্তে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতিরূপে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ব্যবসায়িক ক্ষতি পোষাতে তাঁকে ৬০,০০০ পাউন্ড-স্টার্লিং প্রদান করা হয় যা সভাপতি হিসেবে প্রথম।[১০] তাঁর সময়কালে ইংল্যান্ড দল দূর্বলতম সময় অতিবাহিত করে। তাস্বত্ত্বেও কিছু সফলতা আসে। তন্মধ্যে, ১৯৯০ সালে ১৯ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় উল্লেখযোগ্য। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে ‘ব্রাউনওয়াশ’ নামে পরিচিত ৩-০ ব্যবধানে ভারতের কাছে পরাজিত হবার পর ডেভিড গাওয়ারকে বিতর্কিতভাবে দল থেকে বাদ দেয়া হয়। কিন্তু, ১৯৯৩ সালের শেষ দিকে এ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। ইংরেজ ক্রিকেটকে তিনদিন থেকে চারদিনে রূপান্তরের প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসার ফলে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। এ প্রেক্ষিতে রিচি বেনো মন্তব্য করেন যে, সামনের বছরগুলোয় ইংরেজ ক্রিকেট ব্যাপকভাবে সুফল ভোগ করবে। সেইসাথে আমি মনে করি না যে, অন্য কেউ এ কৃতিত্বের ভাগিদার হবে।[১১] এছাড়াও তিনি এমসিসি’র সভাপতি মনোনীত হন ও টনি লুইস ২০০৩ সালে তার স্থলাভিষিক্ত হবার পূর্ব-পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন।[১২] প্রশাসনিক দায়িত্ব হিসেবে এমসিসি’র ইংল্যান্ড কমিটিরও সভাপতি ছিলেন। ২০০১ সালে নববর্ষের সম্মাননা হিসেবে সিবিই পদবীতে ভূষিত হন তিনি।[১৩]
ব্যক্তিগত জীবন
কেন্টের সাবেক ক্রিকেটার টম লংফিল্ডের কন্যা সুজান জর্জিনা লংফিল্ডকে বিয়ে করেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক-পূর্ব শ্রেণীতে অধ্যয়নকালীন এক পার্টিতে তার সাথে স্বাক্ষাৎ হয় ও প্রথম দেখাতেই তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।[৭] মডেল হিসেবে কাজ করে ও ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে স্বামীর সাথে যান। সেখানে তিনি গণমাধ্যমের দিকে ঝুঁকে পড়েন ও যে-কোন ক্রিকেটারের তুলনায় অধিক অর্থ উপার্জনে সক্ষম ছিলেন।[১৪] তাদের সংসারে টমাস ও জেনেভিভ নামে পুত্র-কন্যা রয়েছে।
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.