শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
জোনাথন সুইফট
এংলো-আইরিশ ব্যঙ্গ- রচয়িতা, প্রবন্ধকার ও কবি। উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
জোনাথন সুইফট (ইংরেজি: Jonathan Swift; জন্ম: ৩০ নভেম্বর, ১৬৬৭ - মৃত্যু: ১৯ অক্টোবর, ১৭৪৫) ছিলেন বিখ্যাত অ্যাংলো-আইরিশ[২] প্রাবন্ধিক, ব্যাঙ্গাত্মক-কবিতা লেখক ও পাদ্রী।[৩] তিনি ডাবলিনের সেন্ট প্যাট্রিক ক্যাথেড্রালের ডীন নিযুক্ত হয়েছিলেন।[৪] ১৭২৬ সালে গালিভার'স ট্রাভেলস নামের একটি ইংরেজি উপন্যাস রচনা করে তিনি স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। এটিকে ইংরেজি সাহিত্যের একটি ধ্রুপদি গ্রন্থ মনে করা হয়। এছাড়াও, এ টেল অব এ টাব (১৭০৪) ও এ মডেস্ট প্রোপোজাল (১৭২৯) নামের ছোট গল্পগুলোও তার অবিস্মরণীয় কীর্তিরূপে স্বীকৃত। ইংরেজি সাহিত্যে সুইফটকে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যাঙ্গাত্মক-কবিতা লেখক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রথমে হুইগ ও পরে কনজারভেটিভ (টোরি) দলের জন্যে ক্ষুদ্র পুস্তিকা রচনা করেছিলেন তিনি। ব্যাঙ্গাত্মক-কবিতার তুলনায় কবিতায় তিনি তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেননি। লেমুয়েল গালিভার, আইজ্যাক বিকারস্টাফ, এমবি ড্রাপিয়ারসহ বিভিন্ন ছদ্মনামে তার সকল রচনাসমগ্র প্রকাশ করেছেন।
Remove ads
Remove ads
প্রারম্ভিক জীবন
আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে জন্মগ্রহণকারী সুইফট ছিলেন জোনাথন সুইফট (১৬৪০-১৬৬৭) ও আবিগেইল এরিক দম্পতির একমাত্র সন্তান।[৫] ইংরেজ গৃহযুদ্ধের ফলে বাবার সম্পত্তি বিক্রি হয়ে যাওয়ায় ভাগ্যান্বেষণে তারা আয়ারল্যান্ডে চলে আসেন। ডাবলিনে থাকা অবস্থাতেই বাবার মৃত্যুর পর তার জন্ম হয়। ফলে মা পুনরায় ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন। গডউইন নামীয় চাচা অত্যন্ত যত্নসহকারে তাকে লালন-পালন করেন। গডউইনের নিকটতম বন্ধু স্যার জন টেম্পলের পুত্র পরবর্তীকালে তাকে তার একান্ত সচিব হিসেবে নিযুক্ত করেছিল।[৬] সুইফটের পরিবার বিভিন্ন সাহিত্যিক পরিমণ্ডলে যুক্ত ছিল।
গডউইন সুইফট কিশোর জোনাথনের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করেন ও তাকে বিখ্যাত দার্শনিক জর্জ বার্কলির তত্ত্বাবধানে কিলকেনি কলেজে ভর্তি করান। ১৬৮২ সালে ডাবলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি হন। গডউইনের পুত্র উইলাবি’র অর্থানুকূল্যে সেখান থেকে ১৬৮৬ সালে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন ও উইলিয়াম কনগ্রিভের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন।
Remove ads
কর্মজীবন
আয়ারল্যান্ডে গৌরবময় বিপ্লব ছড়িয়ে পড়লে তিনি স্নাতকোত্তর শ্রেণীর পড়াশোনা শেষ না করেই ইংল্যান্ডে চলে যান ১৬৮৮ সালে। সেখানে তার মা তাকে ফার্নহ্যামের ম্যুর পার্কে বসবাসকারী ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ ও কূটনীতিবিদ স্যার উইলিয়াম টেম্পলের সচিব ও ব্যক্তিগত সহকারীর চাকরি লাভে সহায়তা করেন।[৭] নিয়োগকর্তার বিশ্বাসভাজন সুইফট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রায়শই ভূমিকা পালন করতেন।[৮] তিন বছর পর টেম্পল তাকে ইংল্যান্ডের তৃতীয় উইলিয়ামের সচিবরূপে প্রেরণের সুপারিশ করেন।
২৭ জানুয়ারি, ১৬৯৯ সালে টেম্পল মৃত্যুবরণ করেন। তিনি সংক্ষিপ্তকালের জন্য ইংল্যান্ডে অবস্থান করেন ও টেম্পলের স্মৃতিমূলক গ্রন্থের সম্পাদনায় মনোনিবেশ করেন। ধারণা করেছিলেন যে, এতে হয়তোবা ইংল্যান্ডে ভালো কোন পদ নিয়ে সম্মানজনকভাবে অবস্থান করতে পারবেন। কিন্তু, সুইফটের কার্যকলাপে টেম্পলের পরিবার ও বন্ধুরা শত্রুতে পরিণত হয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনি সরাসরি রাজা উইলিয়ামের কাছে চলে যান ও টেম্পলের সাথে তার গভীর সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। তার বিশ্বাস ছিল, রাজা তাকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পদে নিযুক্ত করবেন। এতে ব্যর্থ হয়ে অপেক্ষাকৃত নিম্নপদ গ্রহণ করেন। কিন্তু আয়ারল্যান্ডে পৌঁছে তিনি দেখেন যে, পদটিতে ইতোমধ্যেই অন্য ব্যক্তিকে নিযুক্ত করা হয়েছে।
Remove ads
লেখক জীবন
ফেব্রুয়ারি, ১৭০২ সালে জোনাথন সুইফট ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজ থেকে ডক্টর অব ডিভিনিটি ডিগ্রী লাভ করেন। ঐ বছরের বসন্তে ইংল্যান্ড সফরে যান। সহচর হিসেবে ছিলেন বিশ বছর বয়সী ইস্থার জনসন, রেবেকা ডিংলে। তারা অক্টোবরে আয়ারল্যান্ডে ফিরে আসেন। স্টেলা যিনি ইস্থার জনসন, জোনাথ সুইফটের সাথে সম্পর্ক নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা ও গুজব রয়েছে। সুইফটের নিকট বন্ধু থমাস শেরিদানের মতে তারা অত্যন্ত গোপনে ১৭১৬ সালে বিয়ে করেছেন। কিন্তু গৃহপরিচারিকা মিসেস ব্রেন্ট এবং ডিংলে তা গুজব ও ভিত্তিহীন হিসেবে দাবী করেন।[৯]
ইংল্যান্ডে ভ্রমণকালীন সময়ে ১৭০৪ সালে প্রকাশ করেন এ টেল অব এ টাব ও দ্য ব্যাটল অব দ্য বুকস। এরফলে তিনি লেখকরূপে মর্যাদা পেতে শুরু করেন। আলেকজান্ডার পোপ, জন গে এবং জন আর্বাটনটের সাথে আজীবন বন্ধুত্বের বন্ধন গড়ে উঠে তার। ১৭১৩ সালে তাদেরকে নিয়ে স্ক্রাইলেরাস ক্লাব গড়ে তোলেন।
সুইফট চমৎকার লেখক হিসেবে তার ব্যাঙ্গাত্মক-কবিতা রচনার জন্যে প্রসিদ্ধ ছিলেন। হার্বার্ট ডেভিসের সম্পাদনায় সাম্প্রতিককালে চৌদ্দ খণ্ডে কবিতাসমগ্র প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও, প্যাট রজেস ৯৫৩ পৃষ্ঠায় তার পূর্ণাঙ্গ কবিতা ও চিঠিপত্র নিয়ে ডেভিড ওলি ১৯৯৯ সালে তিন খণ্ডে পুস্তক প্রকাশ করেছেন।
রাজনৈতিক জীবন
সপ্তদশ শতকের শুরুতে জোনাথন সুইফট উত্তরোত্তর রাজনৈতিকভাবে জড়িত হতে থাকেন।[১০] লন্ডনে থাকাবস্থায় ১৭০৭ থেকে ১৭০৯ এবং পুনরায় ১৭১০ সালে লর্ড গডলফিনের নেতৃত্বাধীন হুইগ প্রশাসনে আইরিশ দাবী উত্থাপন করে ব্যর্থ হন। তিনি বিরোধী দলীয় টোরি নেতৃত্বের কাছ থেকে এ বিষয়ে সহানুভূতিসম্পন্ন আচরণ পান ও ক্ষমতাসীন অবস্থায় ১৭১০ সালে তাকে দলের মুখপত্ররূপে পরিচিত দি এক্সামিনার পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করে। ১৭১১ সালে রাজনৈতিক পুস্তিকা ’দ্য কনডাক্ট অব দি অ্যালাইজ’ প্রকাশ করেন যাতে ফ্রান্সের সাথে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ বন্ধে তাদের অক্ষমতার কথা তুলে ধরেন। ভবিষ্যতের টোরি সরকার খুবই গোপনে ও অবৈধপন্থায় ফ্রান্সের সাথে যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা চালায়। এরফলে ১৭১৩ সালে আটরেখট চুক্তি সম্পন্ন হয় ও স্পেনের উত্তরাধিকার বিষয়ে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।
সুইফট টোরি সরকার প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করেছিলেন।[১১] পররাষ্ট্র সচিব হেনরি সেন্ট জন ও প্রধানমন্ত্রী রবার্ট হার্লির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছেন। সুইফট তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও চিন্তাধারা আপদকালীন সময়ে ইস্থার জনসনের সাথে পত্রাকারে মতবিনিময় করতেন। এরফলেই পরবর্তীকালে পত্রগুচ্ছ নিয়ে প্রকাশ করেন ’দ্য জার্নাল টু স্টেলা’।
Remove ads
প্রভাব
জন রাসকিন তিনজন ব্যক্তির একজনরূপে সুইফটকে চিত্রিত করেছেন, যিনি তার জীবনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবান্বিত করেছেন।[১২][১৩]
নৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়ের সাথে একমত না হলেও জর্জ অরওয়েল তাকে অন্যতম সেরা লেখকরূপে গণ্য করেছেন যিনি তার জীবনে প্রভাববিস্তার করেছেন।[১৪]
মঙ্গল গ্রহের চাঁদ ডিমোসের সুইফট ক্র্যাটর নামকরণ হয়েছে জোনাথন সুইফটের নামানুসারে।[১৫]
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads