জগন্নাথগঞ্জ ঘাট রেলওয়ে স্টেশন
বাংলাদেশের রেলওয়ে স্টেশন উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
জগন্নাথগঞ্জ ঘাট রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার একটি অব্যবহৃত রেলওয়ে স্টেশন।
জগন্নাথগঞ্জ ঘাট রেলওয়ে স্টেশন | |
---|---|
বাংলাদেশের রেলওয়ে স্টেশন | |
অবস্থান | জামালপুর জেলা ময়মনসিংহ বিভাগ বাংলাদেশ |
মালিকানাধীন | বাংলাদেশ রেলওয়ে |
পরিচালিত | বাংলাদেশ রেলওয়ে |
লাইন | জামালপুর-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব লাইন |
প্ল্যাটফর্ম | নাই |
ট্রেন পরিচালক | পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে |
নির্মাণ | |
গঠনের ধরন | পরিত্যক্ত |
পার্কিং | নাই |
সাইকেলের সুবিধা | আছে |
প্রতিবন্ধী প্রবেশাধিকার | নাই |
ইতিহাস | |
চালু | ১৮৯৯ |
অবস্থান | |
![]() |
জগন্নাথগঞ্জ ঘাট রেলওয়ে স্টেশন নির্মিত হয় ১৮৯৯ সালে। জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলায় যমুনার পাড়ে জগন্নাথগঞ্জ ঘাট রেলওয়ে স্টেশনের অবস্থান।
এ লাইন জামালপুর-ময়মনসিংহ-ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথের সাথে সংযুক্ত। এদিকে যমুনা নদীর অপর পাড়ে ঈশ্বরদী থেকে সিরাজগঞ্জ ঘাট পর্যন্ত রেলপথ নির্মিত হয় ১৯১৫-১৬ সালে। সে সময় সিরাজগঞ্জ ঘাট থেকে জগন্নাথগঞ্জ ঘাট পর্যন্ত রেলওয়ে পরিচালিত স্টিমারে করে যাত্রী পারাপারের ব্যবস্থা ছিল।
পরবর্তী সময়ে সিরাজগঞ্জ ঘাট থেকে জগন্নাথগঞ্জ ঘাট পর্যন্ত রেলওয়ে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়। বালাসী-বাহাদুরাবাদের মতো এখানেও রেলওয়ে ফেরিতে করে বগি এবং মালগাড়ি পারাপার করা হতো। অখণ্ড ভারতবর্ষের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিস্থাপনের জন্য বাহাদুরাবাদ এবং জগন্নাথগঞ্জ ঘাট ছিল অতি পরিচিত নাম। পশ্চিমবঙ্গ, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া এবং এদিকে ঢাকা, বৃহত্তর ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম এবং সিলেট, গৌহাটি এবং বার্মার সাথে রেলপথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল জগন্নাথগঞ্জ এবং বাহাদুরাবাদ ঘাট। সেই বিংশ শতাব্দীর শুরুতেই অল্প খরচে রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল, সার, কয়লা, কৃষিজাতপণ্য, রড-সিমেন্ট, পাথরসহ নির্মাণ সামগ্রী ও অন্যান্য মালামাল অতি সহজে আনা-নেওয়া করা যেত এ ঘাট দিয়ে। শতবর্ষের পুরনো এ ঘাট দিয়ে কত ব্রিটিশ ব্যবসায়ী, কত ফেরিওয়ালা, হকার, কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, জেলখানার কয়েদি কিংবা নববিবাহিত দম্পতি পার হয়েছে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই জগন্নাথগঞ্জ ঘাটে এক বিশাল জনসভায় ছয় দফা দাবির উপর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেছিলেন। বালিয়াটির জমিদার এবং বিশিষ্ট সমাজসেবী জগন্নাথ বাবুর নামানুসারে ঘাটকে 'জগন্নাথগঞ্জ থানা' করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। যেমন জগন্নাথ বাবুর নাম নিয়ে 'জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়' এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'জগন্নাথ হল' এখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
বাহাদুরাবাদের ন্যায় ২০০৪ সালে যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হলে জগন্নাথগঞ্জ ঘাটটিও বন্ধ হয়ে যায়। ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস ট্রেনটি একসময় ঐতিহাসিক জগন্নাথগঞ্জ ঘাট থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত চলাচল করত। যমুনা সেতু চালু হলে জগন্নাথগঞ্জ ঘাট আপার থেকে একটি লাইন জগন্নাথগঞ্জ ঘাটকে বাইপাস করে যমুনা সেতুর পূর্ব পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে বর্তমানে জগন্নাথগঞ্জ ঘাটে আর কোনো ট্রেন চলাচল করে না।
জগন্নাথগঞ্জ ঘাটে এখন আর লঞ্চ নেই, ফেরি নেই, ঐতিহাসিক সেই জগন্নাথগঞ্জ ঘাটটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অনেক আগেই। তবে বাংলার রেল ইতিহাস যতদিন বিদ্যমান থাকবে, ততদিন জগন্নাথগঞ্জ ঘাটের নাম মুছে যাবে না।
ইতিহাস
ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৯৯ সালে জামালপুর থেকে সরিষাবাড়ী হয়ে জগন্নাথগঞ্জ ঘাট পর্যন্ত রেললাইন তৈরি করা হয়। ঈশ্বরদী-সিরাজগঞ্জ লাইন তৈরি হলে রেলওয়ের নিজস্ব রেলফেরি দ্বারা যমুনা নদী পার হয়ে মালামাল ও যাত্রীরা সিরাজগঞ্জ ঘাট রেলওয়ে স্টেশন হয়ে উত্তরাঞ্চল ও কলকাতা পর্যন্ত চলাচল করতো যমুনা সেতু তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত। কিন্তু ১৯৯৮ সালে যমুনা সেতু চালু ও ২০০৩ সালের মধ্যে জামতৈল-জয়দেবপুর লাইন চালু হলে এই রেলপথের সকল ট্রেন সেতু হয়ে চলাচল শুরু করে। এতে বন্ধ করে দেওয়া হয় এই ঘাট লাইনটি।[১] সর্বশেষ এই ঘাট স্টেশন থেকে ৩৭/৩৮ ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম পর্যন্ত চলাচল করতো। পরে ২০১২ সালে জগন্নাথগঞ্জ ঘাট আপার থেকে যমুনা সেতু পূর্ব রেলওয়ে স্টেশন নতুন রেলপথ তৈরি হলে এই ট্রেনটিও যমুনা সেতু পূর্ব থেকে চলাচল শুরু করে। তখন থেকে এই জগন্নাথগঞ্জ ঘাট লাইনটি অব্যবহৃত রয়েছে।[২]
পরিষেবা
জগন্নাথগঞ্জ ঘাট রেলওয়ে স্টেশনে বর্তমানে কোনো ট্রেন পরিষেবা নেই।
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.