সময় পদ্ধতি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
জিএমটি বা গ্রীনিচ মান সময় (ইংরেজি: Greenwich Mean Time) এক ধরনের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রণীত সময় পদ্ধতি। এ সময় অঞ্চলটি যুক্তরাজ্য,আয়ারল্যান্ড, পর্তুগালসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনুসরণ করা হয়। ইউটিসি’র সাথে এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও উভয়ের মধ্যে খুবই স্বল্পপরিসরে পার্থক্য বিরাজমান।
গ্রিনিচ মান সময় | |
---|---|
সময় অঞ্চল | |
ইউটিসি অফসেট | |
জিএমটি | ইউটিসি±০০:০০ |
বর্তমান সময় ( | )|
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৩৬:২২ পূর্বাহ্ণ | |
দিবালোক সংরক্ষণ সময় পালন | |
সমগ্র সময় অঞ্চল জুড়ে দিবালোক সংরক্ষণ সময় পালন করা হয়। |
হালকা নীল | পশ্চিম ইউরোপীয় সময় / |
নীল | পশ্চিম ইউরোপীয় সময় / |
গোলাপী | কেন্দ্রীয় ইউরোপীয় সময় (ইউটিসি+১) কেন্দ্রীয় ইউরোপীয় গ্রীষ্মকালীন সময় (ইউটিসি+২) |
হলুদ | পূর্ব ইউরোপীয় সময় / |
গাঢ় হলুদ | পূর্ব ইউরোপীয় সময় (ইউটিসি+২) পূর্ব ইউরোপীয় গ্রীষ্মকালীন সময় (ইউটিসি+৩) |
হালকা সবুজ | অধিকতর-পূর্ব ইউরোপীয় সময় / (ইউটিসি+৩) |
এ নামের অর্থ হচ্ছে ইংল্যাণ্ডের জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত মান-মন্দির থেকে , সৌর সময়ে 0° দ্রাঘিমায় অবস্থিত। এর মাধ্যমে মধ্যরেখা থেকে সৌর সময়ের দ্বারা অন্যান্য অঞ্চলের সময়ের হিসাব-নিকাশ করা হয়। মধ্যরেখা বা দ্রাঘিমা রেখার এ দ্রাঘিমাকে মূল মধ্যরেখা বা গ্রীনিচ মধ্যরেখা নামে অভিহিত।[১][২][৩]
"জিএমটি" সাধারণত ইংল্যাণ্ড এ অধিক ব্যবহৃত হয়ে থাকে যেমন বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস, রয়েল ন্যাভি, মেট অফিস। তাছাড়া এটি কমন ওয়েলথ দেশেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যাণ্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ায় এর নীতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
প্রকৃতপক্ষে লন্ডনের গ্রীনিচ এলাকায় স্থানীয় সময়, সৌর সময় নির্ধারণে গ্রীনিচ মান সময়ের উৎপত্তি যা পরবর্তীতে ধীরেধীরে বৈশ্বিক আদর্শ সময়ে রূপান্তরিত হয়। ইউটিসি’র সাথে বিভ্রান্তি এবং সময় অঞ্চলকে তুলে ধরতে যুক্তরাজ্যের বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস,[৪] রাজকীয় নৌবাহিনী, মেট অফিস এবং আরব বিশ্বের মিডল ইস্ট ব্রডকাস্টিং সেন্টার এবং ওএসএনে গ্রীনিচ মান সময় ব্যবহার করা হতো। এ পরিভাষাটি যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়াসহ কমনওয়েলথভূক্ত দেশ এবং প্রাচীন বিশ্বের অনেক দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। ইংরেজি ভাষাভাষি দেশগুলোয় নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থাপনাসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে অদ্যাবধি জিএমটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
স্থানীয় সময় পদ্ধতি থেকে স্পষ্টভাবে নির্দেশনা ও বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যেই গ্রীনিচ মান সময় ব্যবহার করা হতো। জ্যোতিঃশাস্ত্রীয় সনাতনী ধারায় জ্যোতির্বিদগণ সর্বদাই গ্রীনিচ মান জ্যোতিঃশাস্ত্রীয় সময় (জিএমএটি) ব্যবহার করতেন যা জিএমটি’র অনুরূপ ছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে তা মধ্যাহ্নকাল থেকে শুরু হতো। জ্যোতির্বিদগণ মধ্যরাত থেকে জ্যোতিঃশাস্ত্রীয় দিবস চালু হওয়ায় ১৯২৫ সালে জিএমটি গ্রহণ করেন যা সাধারণ দিনের সময়ের অনুরূপ। পারিভাষিক দৃষ্টিভঙ্গীতে কিছু বিভ্রান্তি দেখা দেয়ায় ১৯২৮ সালে আন্তর্জাতিক জ্যোতিঃশাস্ত্রীয় সংস্থা গ্রীনিচ মধ্যরেখার প্রমাণ সময়কে বৈশ্বিক সময়ে পরিবর্তন করে। কিন্তু জ্যোতির্বিদগণ গ্রীনিচ মান সময় পরিভাষাটি দীর্ঘদিন ব্যবহার করেননি। পরবর্তীকালে সাধারণ্যের ব্যবহারের উদ্দেশ্যে কিছুটা পরিবর্তিত করে স্থানাংকিত আন্তর্জাতিক সময় (ইউটিসি) রাখা হয়। ১ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে ইউটিসি প্রবর্তনের পূর্বে গ্রীনিচ মান সময় বা জুলু সময় বৈশ্বিক সময়ের সাথে মিল ছিল ও আদর্শ জ্যোতিঃশাস্ত্রীয় ধারণা হিসেবে অনেক কারিগরী বিষয়ে ব্যবহার করা হয়েছিল।
যুক্তরাজ্যে শীতকালে আনুষ্ঠানিকভাবে জিএমটি এবং গ্রীষ্মকালে ব্রিটিশ গ্রীষ্মকালীন সময় ব্যবহৃত হচ্ছে। জিএমটি পশ্চিম ইউরোপীয় সময়ের অনুরূপ।[৫]
ঐতিহাসিকভাবে জিএমটি শব্দটি দুইটি ভিন্ন সম্মেলনের মাধ্যমে ব্যবহারের উপযোগী করা হয়। কখনো কখনো নম্বরকৃত ঘণ্টা মধ্যরাত এবং কখনো কখনো দুপুর থেকে শুরু হয়েছে। অন্য দু’টি পৃথক ও স্বতন্ত্র পরিভাষা বৈশ্বিক সময় এবং স্থানাংকিত আন্তর্জাতিক সময় এ বিতর্কে অংশগ্রহণ করেনি। এরা সর্বদাই মধ্যরাতকে শূন্য ঘণ্টারূপে নির্দেশ করে আসছে। জ্যোতির্বিদগণ পরবর্তী জিএমটি সম্মেলনে তাদের পর্যবেক্ষণকৃত তথ্য সরলীকরণের উদ্দেশ্যে প্রত্যেক বর্ষপঞ্জীর তারিখগুলোয় মধ্যরাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.