গণধর্ষণ

উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

গণধর্ষণ

গণধর্ষণ হচ্ছে একদল লোক কর্তৃক একজন একক ব্যক্তিকে ধর্ষণ। দুই বা ততোধিক ব্যক্তি (সাধারণত কমপক্ষে তিনজন[1]) কর্তৃক ধর্ষণ সারা বিশ্বে প্রচুর ঘটে থাকে। কিন্তু এই সমস্যা সম্পর্কিত নিয়মতান্ত্রিক তথ্য এবং পরিসংখ্যান সীমিত।

Thumb
গণধর্ষণের একটি চিত্রকর্ম
Thumb
১৮৩০ সালের একটি জাপানি চিত্রকর্ম, যেটিতে একটি গণধর্ষণের দৃশ্য রয়েছে

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, গণধর্ষণের ক্ষেত্রে অধিকাংশ আক্রমণকারী এবং ভুক্তভোগীই কমবয়সী এবং তাদের কর্মহীন থাকার সম্ভাবনাও প্রবল। গণধর্ষণের ক্ষেত্রে দেখা যায়, মদ এবং নেশাজাতীয় দ্রব্যের প্রভাবে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে, দিনের তুলনায় রাতে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে, এক্ষেত্রে অধিকাংশ ভুক্তভোগী নিষ্ঠুর যৌন আক্রমণের শিকার হয়, এবং এক ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণের তুলনায় এ ধরনের আক্রমণে কম অস্ত্র ব্যবহৃত হয় এবং ভুক্তভোগীর প্রতিরোধের মাত্রাও কম হয়[2]। আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, একক ব্যক্তির দ্বারা ধর্ষণের চেয়ে গণধর্ষণ বেশি হিংস্র হয় এবং ভুক্তভোগীর প্রতিরোধ তীব্রতর হয়, গণধর্ষণের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের আত্মহত্যা করা কিংবা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়ার হারও বেশি। তবে দুইটি সমীক্ষাতেই দেখা গেছে, মাদকদ্রব্যের ব্যবহার এ ধরনের আক্রমণে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে[3]

গণধর্ষণকে কখনো কখনো 'দলগত ধর্ষণ'ও বলা হয়ে থাকে[4]

কারণ এবং বৈশিষ্ট্যসমূহ

একটি গণধর্ষণের চিত্র

দেশভেদে ব্যাপকতা

সারাংশ
প্রসঙ্গ

ইথিওপিয়া

ইন্দোনেশিয়া

ইরান

ইরানে প্রচুর গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে পুলিশ কর্তৃপক্ষ "হিজাব" পরিধান না করার জন্য ধর্ষিতাদের দোষারোপ করে এবং একটি ঘটনায় ধর্ষিতা ও দুই জন নারী অধিকার কর্মীকে গ্রেপ্তার করে[5][6]

ইরানে সরকারিভাবে গণধর্ষণ সম্পর্কিত পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয় না, কিন্তু ইরানি সংবাদপত্রগুলোতে নিয়মিতভাবে গণধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তদের জনসম্মুখে ফাঁসি দেয়ার ঘটনা প্রচারিত হয়[7][8][9]

কানাডা

চীন

দক্ষিণ আফ্রিকা

নাইজেরিয়া

নাইজেরিয়ায় প্রতি বছর হাজার হাজার গণধর্ষণ সংঘটিত হয়[10][11]। ২০১১ সালে আবিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি গণধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকরা ঘটনাটি ভিডিও করে এবং নাইজেরিয়া জুড়ে আন্দোলনের সূচনা করে[12]। গণধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির ফলে দেশটিতে যৌনব্যাধির প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে বলে ধারণা করা হয়[13][14]

পাকিস্তান

পাপুয়া নিউগিনি

ফ্রান্স

ফ্রান্সে প্রতি বছর ৫,০০০ থেকে ৭,০০০ গণধর্ষণের মামলা হয়[15]

২০১২ সালের অক্টোবরে দুইজন মেয়ে প্যারিসের শহরতলিতে দৈনিক বহুসংখ্যক ছেলের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছে বলে অভিযোগ করে। তাদের একজন বর্ণনা করে যে, তাকে ধর্ষণ করার জন্য ৫০ জন ছেলে 'সারিবদ্ধ' হয়ে ছিল[16]। ১৪ জন অভিযুক্তের মধ্যে ১০ জন ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং ৪ জন প্রাপ্তবয়স্ক। অপ্রাপ্তবয়স্কদের খালাস দেয়া হয় এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ০ থেকে ১২ মাসের কারাবাস দেয়া হয়[16][17]। ২০১৪ সালে প্যারিসে একজন কানাডীয় নারী পর্যটককে চারজন পুলিশ কর্মকর্তা গণধর্ষণ করে এবং ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশ

২০১৩ সালের একটি জরিপ অনুসারে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের ১.৯% এবং শহরাঞ্চলের ১.৪% পুরুষ অন্তত একজন নারীর ওপর গণধর্ষণে অংশ নিয়েছেন। গণধর্ষণের উদ্দেশ্য ছিল বিবিধ। গণধর্ষণে অংশগ্রহণকারীদের দুই-তৃতীয়াংশ বিনোদন লাভের উদ্দেশ্যে গণধর্ষণ করেছেন, ৩০% রাগের কারণে গণধর্ষণে অংশ নিয়েছেন এবং ১১% মদ্যপানের পর গণধর্ষণে লিপ্ত হয়েছেন[18]

ব্রাজিল

ব্রাজিলে প্রচুর গণধর্ষণ (estupro coletivo) সংঘটিত হয়। কেবল রিও ডি জেনেরিও প্রদেশেই প্রতি বছর ৬,০০০-এর বেশি সংখ্যক ধর্ষণ সংঘটিত হয় (অর্থাৎ ধর্ষণের হার প্রতি লক্ষে ৩৭ জন)[19]। ২০১১ সালে সংঘটিত মোট ধর্ষণের ঘটনাসমূহের ১৯.৬% ছিল গণধর্ষণ[20]

ভারত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

মালয়েশিয়া

একটি আলোচিত ঘটনায় মালয়েশিয়ার কেতেরাহ কেলান্তানে ১৫ বছর বয়সী একজন স্কুলছাত্রী ৩০ জনেরও বেশি পুরুষের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হয়[21][22]। ২০১২ সালে মালয়েশিয়ায় প্রায় ৩,০০০ ধর্ষণের ঘটনা লিপিবদ্ধ করা হয়, অর্থাৎ ১,০০,০০০ মানুষ প্রতি ১০.৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষিতাদের ৫২% ছিল ১৬ বছরের কম বয়সী[21]। অন্য অনেক দেশের মতো মালয়েশিয়াও ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনাগুলো পৃথক করে না।

মিশর

যুক্তরাজ্য

শ্রীলঙ্কা

সংযুক্ত আরব আমিরাত

সুইডেন

সৌদি আরব

স্পেন

স্পেনে সংঘটিত গণধর্ষণের ঘটনাগুলোর মধ্যে একজন ব্রিটিশ পর্যটকের গণধর্ষণ (যেটিতে একজন ধর্ষক ছিল ৭০ বছর বয়সী)[23] এবং হুলেভায় ১৩ বছর বয়সী এক মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ের গণধর্ষণের ঘটনা উল্লেখযোগ্য[24]

শাস্তি হিসেবে শিরশ্ছেদ

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.