রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য
পশ্চিমবঙ্গের বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পশ্চিমবঙ্গের বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য বা কুলিক পাখিরালয় বা কুলিক পক্ষীনিবাস (ইংরেজি: Raiganj Wildlife Sanctuary) (উচ্চারণ: Raegônj Bonnoprani Ôbhôearonno) পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার সদর শহর রায়গঞ্জের নিকটে অবস্থিত একটি বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য। এটি প্রথমে একটি পাখিরালয় রূপে পরিচিত ছিল। এই অঞ্চলটি বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষিত হয় ১৯৮৫ সালে।[১]
রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য | |
---|---|
কুলীক পাখিরালয় | |
আইইউসিএন বিষয়শ্রেণী II (জাতীয় উদ্যান) | |
![]() রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের প্রজাপতি | |
অবস্থান | পশ্চিমবঙ্গ, ভারত |
নিকটবর্তী শহর | রায়গঞ্জ |
স্থানাঙ্ক | ২৫°৩৮′১৩″ উত্তর ৮৮°০৭′১৬″ পূর্ব |
আয়তন | ১.৩ বর্গকিলোমিটার (০.৫০ বর্গমাইল) |
স্থাপিত | ১৯৮৫ |
কর্তৃপক্ষ | বন দপ্তর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার |
এটি জেলা শহর রায়গঞ্জের কেন্দ্র থেকে ৪ কিমি (২.৫ মা) উত্তরে অবস্থিত। এনএইচ ৩৪ এই পাখিরালয়ের পাশ দিয়ে চলেছে।[২][৩] রায়গঞ্জ কলকাতা থেকে ৪২৫ কিমি (২৬৪ মা) এবং শিলিগুড়ি থেকে ১৮১ কিমি (১১২ মা) দূরে অবস্থিত।[৪]
তাপমাত্রা (সেলসিয়াসে): গ্রীষ্মে - সর্বোচ্চ ৩৮, সর্বনিম্ন ২১; শীতে - সর্বোচ্চ ২৩ সর্বনিম্ন ৬[৪] বৃষ্টিপাতঃ ১৫৫০ mm (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর)।[৪]
১৯৭০ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার উন্নতি ঘটা শুরু হয়। প্রকল্পের মাধ্যমে কদম, জারুল, শিশু এবং ইউক্যালিপটাস গাছ লাগানো হয়। ছানা তোলার সময় এশীয় শামুকখোল এবং অন্যান্য পরিযায়ী পাখির প্রজাতিগুলো কৃত্রিম বাগানে ঘোরাঘুরি করে। ১৯৮৫ সালে অফিসিয়ালি "রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য" হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এটি কুলিক পক্ষী অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত কারণ কুলিক নদী অভয়ারণ্যটির পাশ দিয়ে প্রবাহিত।[২][৩]
এই পাখিরালয়ে ১৬৪ প্রজাতির পাখির আবাসস্থল রয়েছে।[২][৩] ২০০২ সালে শুমারি অনুসারে, সেবছর ৭৭,০১২টি পাখি অভয়ারণ্যটি পরিভ্রমণ করে।[৫] ২০০৩ সালে, সংখ্যাটি বাড়ে এবং ৮১,৩৮৪টিতে উন্নীত হয়। ২০০৮ সালের শুমারি অনুসারে ৯১,৫৪০টি পাখি অভয়ারণ্যটি পরিভ্রমণ করে।[৬] এবং এই পাখিরালয়ে প্রতিবছর প্রায় ৭০,০০০ থেকে ৮০,০০০ পরিযায়ী পাখি ভ্রমণ করে।[৭]
এখানে প্রতিবছর পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। নানা প্রজাতির পাখি দেখতে ভারত তথা বিদেশ থেকে পর্যটকেরা আসেন৷ এখানে পর্যটকদের থাকার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন বিভাগের অতিথিশালা রয়েছে৷ এছাড়া রায়গঞ্জ শহরে অনেক হোটেল আছে৷ রায়গঞ্জ কলকাতার সাথে সড়ক ও রেলপথে যুক্ত৷[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়কালে, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের বিভিন্ন জেলা থেকে অজস্র দর্শনার্থী অভয়ারণ্যটি ভ্রমণ করে, এবং তাদের অধিকাংশ পিকনিক সংগঠিত করে। তারা শুধু পাখিগুলোকে বিরক্তই করে না, জায়গা নোংরাও করে। রায়গঞ্জ সামাজিক বন বিভাগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে তারা একটি পিকনিক জায়গা ভাত্তাদিঘির নিকটে তৈরি করে দেবে , সেখানে জল, ছায়া, টয়লেট, ছোট পার্ক এবং হাঁটার রাস্তার সুবিধা থাকবে।[৮]
এই বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যে স্থানীয় কিছু প্রাণী যেমন, শিয়াল, খেঁকশিয়াল, খরগোশ, বনবিড়াল প্রভৃতি আশ্রয় পেয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকার কাঁকড়া ও মাছ পাওয়া যায়। প্রতি বছর জুন মাস থেকে অভয়ারণ্যটি পরিযায়ী পাখিতে ভরে যায়। এশীয় শামুকখোল, বক, পানকৌড়ি ইত্যাদি পাখি দেখা যায়।[১]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.