এড জয়েস

আইরিশ ক্রিকেটার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

এড জয়েস

এডমন্ড ক্রিস্টোফার জয়েস (জন্ম: ২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৮) ডাবলিনে জন্মগ্রহণকারী আইরিশ ক্রিকেটার। তিনি আয়ারল্যান্ডইংল্যান্ডের জাতীয় ক্রিকেট দল - উভয় দলের পক্ষেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। মিডলসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের মাধ্যমে ক্রিকেট জীবনে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে সাসেক্স দলে স্থানান্তরিত হন। বামহাতি ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত এড জয়েস মাঝে-মধ্যে ডানহাতে মিডিয়াম পেস বোলিং করে থাকেন। তাকে আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা ক্রিকেটারদের একজনরূপে গণ্য করা হয়ে থাকে।[]

দ্রুত তথ্য ব্যক্তিগত তথ্য, পূর্ণ নাম ...
এড জয়েস
Thumb
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
এডমন্ড ক্রিস্টোফার জয়েস
জন্ম (1978-09-22) ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ (বয়স ৪৬)
ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড
ডাকনামজয়সি, স্পাড, পিস
উচ্চতা ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাশীর্ষসারির ব্যাটসম্যান
সম্পর্কএ জয়েস, ডিআই জয়েস (ভাই)
সিএনআই এম জয়েস, আইএমএইচসি জয়েস (বোন)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৯৩)
১৩ জুন ২০০৬ 
ইংল্যান্ড বনাম আয়ারল্যান্ড
শেষ ওডিআই৭ মার্চ ২০১৫ 
আয়ারল্যান্ড বনাম জিম্বাবুয়ে
ওডিআই শার্ট নং২৪
টি২০আই অভিষেক১৫ জুন ২০০৬ 
আয়ারল্যান্ড বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ টি২০আই২১ মার্চ ২০১৪ 
আয়ারল্যান্ড বনাম নেদারল্যান্ডস
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৯-২০০৮মিডলসেক্স
২০০৯-বর্তমানসাসেক্স (জার্সি নং ২৪)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা ওডিআই টি২০আই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৪৯ ১৮ ২১৫ ২৬৬
রানের সংখ্যা ১,৫৮৭ ৪০৫ ১৫,৪১৯ ৮,৭০২
ব্যাটিং গড় ৩৫.২৬ ৩৩.৭৫ ৪৭.৫৮ ৩৮.৬৭
১০০/৫০ ৩/১০ ০/১ ৩৯/৮১ ১৪/৫২
সর্বোচ্চ রান ১১৬* ৭৮* ২১১ ১৪৬
বল করেছে ১,২৮৭ ২৬৪
উইকেট ১১
বোলিং গড় ৯৩.১৮ ৫১.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - - -
সেরা বোলিং ২/৩৪ ২/১০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৬/– ৫/– ১৮৭/– ৮৮/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো, ১০ মার্চ ২০১৫
বন্ধ

কাউন্টি ক্রিকেট

১৯৯৯ সালে মিডলসেক্স কাউন্টি দলের মাধ্যমে ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। পরের বছরই তিনি এনবিসি ডেনিস কম্পটন পুরস্কার লাভ করেন। ২০০২ সাল পর্যন্ত তিনি মিডলসেক্সের নিয়মিত সদস্য ছিলেন। ২০০২ সালে চার সেঞ্চুরিসহ ৫১.০০ রান গড়ের অধিকারী ছিলেন। ওয়াইস শাহের পরিবর্তে ২০০৪ মৌসুমের মাঝামাঝি সময়কাল থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ছিলেন। কিন্তু ২০০৫ মৌসুমে তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন না।

২০০৮ সালের টুয়েন্টি২০ কাপ জয়ী মিডলসেক্স দলের অধিনায়ক ছিলেন। এ প্রতিযোগিতা শেষে শন উদালের কাছে অধিনায়কত্ব হস্তান্তরিত হয়। এরপর বর্তমান চুক্তি শেষ হলে তিনি আর নতুন করে চুক্তিবদ্ধ হননি।

৩ নভেম্বর, ২০০৮ তারিখে মিডলসেক্স থেকে তার সাসেক্সে স্থানান্তরিত হবার সংবাদ ঘোষণা করা হয়। মিডলসেক্সের প্রধান নির্বাহী বিনি কডরিংটন বলেন যে, জয়েস নতুনভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রয়োজন মনে করছেন বলে জানিয়েছেন। দলের সদস্যদের তালিকায় তার অবস্থান সর্বাগ্রে। তিনি অসাধারণ ও নিঃসন্দেহে তার চলে যাবার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে অনুধাবন করছি।[]

সাসেক্সে প্রথম মৌসুমেই তিনি তিনটি শতক হাঁকান ও ইংল্যান্ড নির্বাচক দলের মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হন। এরফলে ২০০৯ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রতিযোগিতায় ইংল্যান্ড দলের প্রাথমিক তালিকায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নভেম্বর, ২০০৯ সালে কাউন্টি দলের সাথে নতুন করে তিন বছরের চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করেন।[]

খেলোয়াড়ী জীবন

সারাংশ
প্রসঙ্গ

আইসিসি ট্রফি প্রতিযোগিতায় আয়ারল্যান্ড দলের পক্ষে অনেকগুলো খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ঐ প্রতিযোগিতায় তার ব্যাটিং গড় ছিল ৭০-এর অধিক। কিন্তু জুলাই, ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড দলে খেলার যোগ্যতালাভ করলে তিনি সেখানে নিজ আবাস গড়েন। অক্টোবর, ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট একাডেমির পক্ষে খেলার জন্য মনোনীত হন। এরপর ২০০৬ এর বসন্তে ইংল্যান্ড এ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যান। জুন, ২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলার জন্য ইংল্যান্ডের একদিনের দলের সদস্য হন। বেলফাস্টের স্টরমন্ট পার্কে ইংল্যান্ডের হয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআই অভিষেক ঘটে। তার ছোট ভাই ডমিনিক জয়েস আইরিশ দলে খেলেন। দুইদিন পর তিনি প্রথম টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে খেললেও হাঁটুর আঘাতে তাকে চার সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে অবস্থান করতে হয়। ১৪ জুলাই, ২০০৬ তারিখে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে তিনি তার সেরা ইনিংস ২১১ রান সংগ্রহ করেন।

১৫ নভেম্বর, ২০০৬ তারিখে মার্কাস ট্রেসকোথিকের আঘাতজনিত কারণে ইংল্যান্ডের নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতি ডেভিড গ্রাভানি জয়েসকে ২০০৬-০৭ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে তাকে অন্তর্ভুক্ত করেন। অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ওয়াইস শাহরবার্ট কী থাকা স্বত্ত্বেও তার দলে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি ক্ষাণিকটা বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল।[] কিন্তু সিরিজের কোন টেস্টেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাকে মাঠে নামানো হয়নি। কেভিন পিটারসনের আঘাতের কারণে পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে ২০০৬-০৭ মৌসুমের কমনওয়েলথ ব্যাংক সিরিজের একদিনের খেলায় নয়টি খেলায় ৩২.০০ গড়ে ২৮৮ রান করেন। তন্মধ্যে পার্থের ওয়াকা গ্রাউন্ডে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের বিপক্ষে তার প্রথম অর্ধ-শতক করেন। ঐ খেলায় তার দল পরাজিত হয়েছিল। ঐ সিরিজে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২ ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ তারিখে ইংল্যান্ড দলকে জয়ে সহায়তা করেন তিনি। ইনিংস উদ্বোধনে নেমে ১৪২ বলে ১০৭ রান করে দলকে ২৯২/৭ সংগ্রহে সহযোগিতা করেন। এরফলে প্রথম ইংরেজ ক্রিকেটার হিসেবে নিজ দেশের বাইরে ১৯টি ওডিআইয়ের পর প্রথম সেঞ্চুরি রান সংগ্রাহকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।[] খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান। এরফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে দলের সদস্য হন। ঐ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে টেস্ট বহির্ভূত দূর্বল দল - কানাডাকেনিয়ার বিপক্ষে অর্ধ-শতক পেলেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শূন্য রান করেন। সুপার এইট পর্বে নিজ জন্মভূমি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১ রান ও ১টি ক্যাচ ফেলে দেন তিনি।

ক্রিকেট বিশ্বকাপ

সারাংশ
প্রসঙ্গ

ইংল্যান্ড দলে খেলার যোগ্যতালাভের পর তিনি ২০০৬-০৭ মৌসুমে অ্যাশেজ সিরিজে২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলেছেন। কিন্তু ইংল্যান্ড দল নির্বাচকদের উপেক্ষার ফলে আইসিসি’র মধ্যস্থতায় তিনি ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ড দলের হয়ে খেলেন।[]

ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড কর্তৃপক্ষ ৫ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে ২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য জয়েসসহ ১৫-সদস্যের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে।[] ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ তারিখে আয়ারল্যান্ড দল গ্রুপ-পর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম খেলায় অংশগ্রহণ করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশাল ৩০৪/৭কে তাড়া করতে গিয়ে পল স্টার্লিংয়ের সাথে ২য় উইকেটে ১০৬ রানে জুটি গড়েন। পরবর্তীতে নায়ল ও’ব্রায়ানের ৬০ বলে অপরাজিত ৭৯* রানের সুবাদে চার ওভারেরও বেশি বল বাকী থাকতে তার দল ৪ উইকেটে জয় পায়। ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে টেস্টখেলুড়ে দলের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডের চতুর্থ জয়লাভ।[]

৭ মার্চ, ২০১৫ তারিখে হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে অনুষ্ঠিত গ্রুপ পর্বের ৪র্থ খেলায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কৃতিত্বপূর্ণ সেঞ্চুরি করেন।[] ঐ খেলায় মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে জিম্বাবুয়ে দলকে পরাজিত করে তার দল।[১০] এছাড়াও জেরেমি ব্রে, কেভিন ও’ব্রায়ানপল স্টার্লিংয়ের পর ৪র্থ আইরিশ ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে শতরান করেন।[] ওডিআইয়ে এটি তার তৃতীয় শতরান। ১০৩ বলে ৩ ছক্কা ও ৯ চারের সাহায্যে ১১২ রান সংগ্রহ করেন তিনি। অ্যান্ড্রু বালবির্নি'র (৯৭) সাথে ৩য় উইকেটে ১৩৮ রানের জুটি গড়েন যা টেস্টভূক্ত দলগুলোর বিপক্ষে তৃতীয়বারের মতো সহযোগী দেশগুলো করতে সক্ষম হয়েছে।[] অ্যালেক্স কুস্যাক-কেভিন ও’ব্রায়ান ২০১১ সালের বিশ্বকাপে গড়া ১৬২-রান করে শীর্ষে রয়েছেন। সহযোগী সদস্যভূক্ত দেশগুলোর মধ্য থেকে স্টিভ টিকোলো (৭৬৮), নায়ল ও’ব্রায়ান (৫৩১) ও রবি শাহের (৫০০) পর ৪র্থ খেলোয়াড় হিসেবে তিনি বিশ্বকাপে ৫০০+ রান করেন।[]

ব্যক্তিগত জীবন

ডাবলিনে জন্মগ্রহণকারী জয়েস উইকলো কাউন্টির ব্রে এলাকায় অবস্থিত আরাভন স্কুল ও প্রেজেন্টেশন কলেজে অধ্যয়ন শেষে ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজে পড়াশোনা করেন। ক্রীড়ানুরাগী পরিবারের সন্তান জয়েসের ভাই গাস জয়েস ও ডমিনিক জয়েস আইরিশ পুরুষ দলের সদস্য। তন্মধ্যে ডমিনিক আয়ারল্যান্ড দলের হয়ে তিনটি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। দুই যমজ বোন ইসোবেলসেসেলিয়া আয়ারল্যান্ডের মহিলা ক্রিকেট দলের হয়ে দীর্ঘদিন ধরে খেলে চলছেন।[১১] তার মা মরেন ২০০২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত মহিলাদের দুইটি ওডিআইয়ে স্কোরার ছিলেন। বড় ভাই জন সফলতম দাবাড়ু। আয়ারল্যান্ডের শীর্ষ ২০ ও জাতীয় পর্যায়ে অনূর্ধ্ব-১৯ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.