ঋষভনাথ

১ম জৈন তীর্থঙ্কর উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

ঋষভনাথ

ঋষভনাথ (সংস্কৃত ভাষায় যার অর্থ ‘বৃষ প্রভু’) (বা ঋষভদেব) হলেন জৈন বিশ্বাস অনুসারে বর্তমান কাল-চক্রার্ধের প্রথম তীর্থঙ্কর (শিক্ষক ঈশ্বর)।[][] ‘তীর্থঙ্কর’ শব্দটির অর্থ ‘তীর্থের প্রতিষ্ঠাতা’। জৈনধর্মে ‘তীর্থ’ বলতে বোঝায় ‘সংসার নামে পরিচিত ধারাবাহিক জন্ম ও মৃত্যুর অনন্ত সমুদ্রের মধ্য দিয়ে প্রসারিত গমনযোগ্য পথ’। ঋষভনাথ আদিনাথ (অর্থাৎ, ‘প্রথম প্রভু’) নামেও পরিচিত।

দ্রুত তথ্য ঋষভনাথ, অন্যান্য নাম ...
ঋষভনাথ
প্রথম তীর্থঙ্কর
Rishabhanatha
ঋষভনাথের বিগ্রহ, কুণ্ডলপুর তীর্থ, মধ্যপ্রদেশ, ভারত
অন্যান্য নামআদিনাথ, আদীশ জিন (প্রথম জিন), আদিপুরুষ (প্রথম যথার্থ মানব), ইক্ষ্বাকু
উত্তরসূরিঅজিতনাথ
রাজপরিবার
রাজবংশ/বংশইক্ষ্বাকু (প্রতিষ্ঠাতা)[]
পূর্বসূরিরাজা নাভি
উত্তরসূরিভরত চক্রবর্তী, বাহুবলী ও ৯৮ জন অন্যান্য পুত্র
পরিবার
পিতামাতানাভি (পিতা)
মরুদেবী (মাতা)
সন্তানভরত
বাহুবলী
সুন্দরী
ব্রাহ্মী
্কল্যাণক / গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি
চ্যবন তারিখজেঠ বাদ ৪
চ্যবন স্থানঅযোধ্যা
জন্মফাগন বাদ ৮
অযোধ্যা
দীক্ষার তারিখফাগন বাদ ৮
দীক্ষার স্থানঅযোধ্যা
কেবল জ্ঞানের তারিখমহা বাদ ১১
কেবল জ্ঞানের স্থানঅযোধ্যা
মোক্ষের তারিখপোষ বাদ ১৩
মোক্ষের স্থানকৈলাস
বৈশিষ্ট্য
বর্ণসোনালি
প্রতীকবৃষ[]
উচ্চতা৫০০ ধনুষ (১,৫০০ মিটার)[]
বয়স৮৪ লক্ষ পূর্ব (৫৯২.৭০৪ x ১০১৮ বছর)[]
কেবলকাল
যক্ষগোমুখ
যক্ষিণীচক্রেশ্বরী
গণধরপুণ্ডরীক ও ব্রাহ্মী
বন্ধ

প্রেক্ষাপট

সারাংশ
প্রসঙ্গ

জৈন বিশ্বতত্ত্ব অনুসারে, জাগতিক সময়চক্র দুটি ভাগে বিভক্ত। যথা: ‘অবসর্পিণী’ ও ‘উৎসর্পিণী’। প্রত্যেকটি অর্ধ আবার ছয়টি ‘অরসে’ (চক্রের দণ্ড) বিভক্ত। উভয় অর্ধের ‘দুষ্মা-সুষ্মা’ (উচ্চারণ ‘দুখমা-সুখমা’) অরসে চব্বিশজন তীর্থঙ্কর ব্রহ্মাণ্ডের এই অংশকে কৃপা করেন। বর্তমান চক্রার্ধ (অবসর্পিণী) একটি বিশেষ যুগ। প্রথম তীর্থঙ্কর ঋষভনাথ এই অর্ধের তৃতীয় পর্যায়ের (দুষ্মা-সুষ্মা) শেষভাগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[] জৈন ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, তিনি এমন এক যুগে জন্মগ্রহণ করেন, যে যুগে সর্বত্র আনন্দ বিরাজ করত এবং মানুষের কোনও কাজ ছিল না।[] ধীরে ধীরে চক্র আবর্তিত হয় এবং ইচ্ছাপূর্ণকারী বৃক্ষগুলি তিরোহিত হয়। মানুষ তখন সাহায্যের জন্য তাদের রাজার কাছে ছুটে যান।[] কথিত আছে, ঋষভনাথ মানুষকে ছয়টি প্রধান পেশার শিক্ষা দেন। এগুলি ছিল: (১) ‘অসি’ (আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্রধারণ), (২) ‘মসী’ (লিখন দক্ষতা), (৩) ‘কৃষি’ (কৃষিকাজ), (৪) ‘বিদ্যা’ (জ্ঞান), (৫) ‘বাণিজ্য’ (ব্যবসা ও বাণিজ্য) এবং (৬) ‘শিল্প’ (শিল্পকর্ম)।[][][১০] অন্য ভাষায় বলা যায়, গৃহস্থ ব্যক্তিদের জীবিকা উপার্জনের জন্য উপযুক্ত পেশার শিক্ষা দিয়ে ‘কর্মভূমি’ (কর্মের যুগ) প্রবর্তনের কৃতিত্ব তাকেই দেওয়া হয়।[১১][১২][১৩] তিনি যখন বিবাহ করে অন্য মানুষের কাছে একটি উদাহরণ স্থাপন করেন, তখনই বিবাহ প্রথা প্রবর্তিত হয়।[১৪][১২] সামগ্রিক দিক থেকে কথিত আছে, ঋষভনাথ বাহাত্তর রকমের বিজ্ঞান শিক্ষা দিয়েছিলেন। এগুলির মধ্যে ছিল পাটিগণিত, মৃৎশিল্প ও দৃশ্যশিল্প, রতিক্রিয়া, গীত ও নৃত্যকলা।[১৪] জৈন কালপঞ্জিতে ঋষভনাথকে প্রায় অগণ্য যুগ পূর্বে স্থাপন করা হয়েছে।[note ১][১৫]

জৈনধর্ম প্রতিষ্ঠা

কথিত আছে, ঋষভনাথ বর্তমান চক্রার্ধে জৈনধর্ম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[১৬] জৈনরা সম্প্রদায়-নির্বিশেষে তাকেই জৈনধর্মের প্রতিষ্ঠাতা মনে করেন। ভারতের প্রথম উপ-রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণন লিখেছেন:

এমনও প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে, খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দীতেও মানুষ প্রথম তীর্থঙ্কর ঋষভদেবকে পূজা করত। বর্ধমান বা পার্শ্বনাথের পূর্বেও যে জৈনধর্মের অস্তিত্ব ছিল, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। যজুর্বেদে তিনজন তীর্থঙ্করের নাম পাওয়া যায় – ঋষভ, অজিতনাথঅরিষ্টনেমি। ঋষভ যে জৈনধর্মের প্রতিষ্ঠাতা সে কথা ভাগবত পুরাণে স্বীকৃত।

কিংবদন্তি

সারাংশ
প্রসঙ্গ

আদিপুরাণ নামে একটি প্রধান জৈন ধর্মগ্রন্থে ঋষভনাথের জীবনকথা ও দশটি পূর্বজন্মের কথা উল্লিখিত হয়েছে।

ঋষভনাথ তার বৃষ প্রতীক, ন্যগ্রোধ বৃক্ষ, গোমুখ যক্ষ ও চক্রেশ্বরী যক্ষিণীর সঙ্গে যুক্ত।[১৮]

জন্ম

পঞ্চ কল্যাণক’ নামে পরিচিত পাঁচটি মাঙ্গলিক ঘটনার প্রথমটি হল ‘গর্ভ কল্যাণক’। এর অর্থ, নশ্বর দেহে প্রাণের (আত্মা) প্রবেশের মাধ্যমে জরায়ুকে সপ্রাণ করা।[১৯] হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে আষাঢ় মাসের কৃষ্ণা দ্বিতীয়া তিথিতে রানি মরুদেবী ষোলোটি মাঙ্গলিক স্বপ্ন দেখেছিলেন। রাজা নাভি তাকে এই স্বপ্নগুলির অর্থ ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন যে, এগুলি তীর্থঙ্করের জন্মের চিহ্ন।

রাজা নাভি ও রানি মরুদেবীর পুত্র ঋষভনাথ অযোধ্যায় চৈত্র মাসের কৃষ্ণা নবমী তিথিতে জন্মগ্রহণ করেন।[২০] এই দ্বিতীয় মাঙ্গলিক ঘটনাটির নাম ‘জন্ম কল্যাণক’।

রাজ্য

ঋষভনাথের রাজ্য ছিল শান্তিপূর্ণ। জৈন বিশ্বাস অনুসারে, তিনি একটি আদিবাসী সমাজকে সুশৃঙ্খল সমাজে রূপান্তরিত করেছিলেন।[২১] অন্যান্য সকল তীর্থঙ্কর এবং ভারতের ইতিহাসে খ্যাতনামা মহান ঐতিহাসিক যোদ্ধাদের মতো ঋষভনাথও ছিলেন প্রবল শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব। যদিও তাকে তার যোদ্ধারূপ প্রদর্শনের প্রয়োজন কখনও পড়েনি।[১৪] ঋষভনাথ অহিংসার প্রচারক হিসেবে পরিচিত।[১৪] তাকে মানব উন্নতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ পথপ্রদর্শকও মনে করা হয়।[১২]

ঋষভনাথের দুই পত্নী ছিলেন। তাদের নাম ছিল সুনন্দা ও যশবতী দেবী।[২২] যশবতী দেবী ছিলেন ভরত সহ নিরানব্বই পুত্র এবং ব্রাহ্মী নাম্নী এক কন্যার জননী।[২৩] সুনন্দ ছিলেন বাহুবলী ও সুন্দরীর মাতা।[২৪] ঋষভনাথ তার কন্যা ব্রাহ্মী ও সুন্দরীকে যথাক্রমে ব্রাহ্মী লিপি ও সংখ্যা বিজ্ঞান (‘অঙ্কবিদ্যা’) শিক্ষা দেন।[২৫] কথিত আছে, ঋষভনাথ ৮৪ লাখ পূর্ব সময় জীবিত ছিলেন। এর মধ্যে ২০ লাখ ছিল পূর্ব ছিলেন তার যৌবন (‘কুমার কাল’) এবং ৬৩ লাখ পূর্ব ছিল তার রাজত্ব কাল (‘রাজ্জ্য কাল’)[২০]

সন্ন্যাস গ্রহণ

Thumb
ভাস্কর্যে ‘কায়োৎসর্গ’ ভঙ্গিমায় ঋষভনাথের ধ্যান, আজমের জৈন মন্দির

একদিন প্রথম স্বর্গের ইন্দ্র ঋষভনাথের সভাগৃহে অপ্সরাদের নৃত্যের আয়োজন করেছিলেন।[২৬] এই অপ্সরাদের অন্যতম ছিলেন নীলাঞ্জনা। তার জীবনকাল কয়েক মুহুর্ত মাত্র বাকি ছিল।[২০][২৭] তিনি সোৎসাহে নৃত্য করছিলেন। হঠাৎ তার নৃত্য থেমে গেল। পরের মুহুর্তেই তিনি ‘বিলীন’ হয়ে গেলেন। তার আর অস্তিত্বই রইল না।[২৮] নীলাঞ্জনার এই হঠাৎ মৃত্যু ঋষভনাথকে জগতের ক্ষণস্থায়ী প্রকৃতির কথা মনে করিয়ে দিল। তার মধ্যে সন্ন্যাস গ্রহণের ইচ্ছা জেগে উঠল।[২৬][২৮] তিনি তার শতপুত্রকে রাজ্য দান করলেন। ভরত পেলেন বিনিতা (অযোধ্যা) শহরটি এবং বাহুবলী পেলেন পোদনপুর (তক্ষশীলা) শহরটি।[২৭] চৈত্র কৃষ্ণা নবমীর দিন ঋষভনাথ সন্ন্যাস গ্রহণ করলেন। এই ঘটনাটিকে বলা হয় ‘দীক্ষা কল্যাণক’।[২৯]

অক্ষয় তৃতীয়া

Thumb
রাজা শ্রেয়াংশ ঋষভনাথকে ‘অহর’ দান করছেন।

জৈনরা অক্ষয় তৃতীয়া তিথিটিকে পবিত্র ও সর্বাপেক্ষা অধিক মঙ্গলময় মনে করেন। মনে করা হয়, এই দিনেই ঋষভনাথ প্রথম ‘অহর’ (ভিক্ষা) গ্রহণ করেছিলেন। ঋষভনাথই অবসর্পিণী চক্রার্ধের প্রথম সন্ন্যাসী।[৩০] তাই মানুষ জানত না কীভাবে দিগম্বর সন্ন্যাসীকে খাদ্য (‘অহর’) প্রদান করতে হয়। হস্তিনাপুরের রাজা শ্রেয়াংশ তার পূর্বজীবনের কথা স্মরণ করে ঋষভনাথকে আখের রস (‘ইক্ষু রস’) প্রদান করেন।[৩১] জৈনরা এই দিনটির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। কারণ, ১১ মাস ১৩ দিন পর ঋষভনাথকে খাদ্য নিবেদন করা হয়েছিল। এটি বৈশাখ মাসের শুক্লা তৃতীয়া তিথিতে পালন করা হয়।[৩২] ‘ইক্ষু’ (আখ) শব্দটি থেকে[৩৩] তিনি ‘ইক্ষ্বাকু’ নাম লাভ করেন।[১২] সেই কারণে তার রাজবংশের নাম হয় ইক্ষ্বাকু রাজবংশ[৩৪]

সর্বজ্ঞতা

Thumb
সর্বজ্ঞতা লাভের উপর পদ্মের উপর ঋষভনাথের বিচরণ

ঋষভনাথ এক হাজার বছর কঠোর তপস্যা করার পর ফাল্গুন কৃষ্ণা একাদশী তিথিতে ‘কেবল জ্ঞান’ (অনন্ত শুদ্ধ জ্ঞান) লাভ করেন। জৈন ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, দেবগণ (স্বর্গীয় সত্ত্বা) ‘সমবসরণ’ নামে পরিচিত একটি দিব্য প্রচার সভা সৃষ্টি করেন। এটি ‘পঞ্চ কল্যাণকে’র চতুর্থ কল্যাণক। এর নাম ‘কেবল জ্ঞান কল্যাণক’। জৈন ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গ ঋষভনাথের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন:[৩৫]

  • চুরাশি জন গণধর (সাক্ষাৎ শিষ্য)।
  • কুড়ি হাজার সর্বজ্ঞ সন্ত।
  • ১২,৭০০ ষষ্ঠেন্দ্রিয়সম্পন্ন সন্ত।[৩৬]
  • নয় হাজার অলোকদৃষ্টিসম্পন্ন সন্ত।
  • ৪,৭৫০ জন ‘শ্রুত-কেবলী’ সন্ত (জৈন আগমের জ্ঞানসম্পন্ন সন্ত)।
  • ২০,৬০০ অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন সন্ত।
  • তিনশো তিন হাজার সন্ন্যাসিনী, যাঁদের নেত্রী ছিলেন ব্রাহ্মী।[৩৭]
  • তিনশো হাজার গৃহস্থ।

কথিত আছে, সর্বজ্ঞ হিসেবে তীর্থঙ্কর এক হাজার বছর কম এল লাখ পূর্ব সময়কাল (‘কেবলকাল’) ধর্মপ্রচার করেছিলেন।[২৮]

মোক্ষ

কথিত আছে, ঋষভনাথ জৈনধর্মকে বহুদিকে ও বহুভাবে প্রচার করেছিলেন।[৩৮] তিনি ‘অষ্টপদ’ নামক স্থানে (যেটি কৈলাস পর্বত নামে পরিচিত) মোক্ষ (জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি) লাভ করেন।[৩৮] তার মোক্ষলাভের তিথিটি ছিল হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে মাঘ কৃষ্ণা চতুর্দশী। মোক্ষলাভের সময় তার বয়স ছিল ৮৪ লাখ পূর্ব (৫৯২.৭০৪ x ১০১৮ বছর।[] পূর্ব নামে পরিচিত চোদ্দোটি ধর্মগ্রন্থে তার উপদেশ লিপিবদ্ধ রয়েছে।[৩৯]

সাহিত্যে

ঋগ্বেদ, বিষ্ণুপুরাণভাগবত পুরাণ – এই তিন হিন্দু ধর্মগ্রন্থে ঋষভনাথের উল্লেখ পাওয়া যায়।[৪০][৪১]

বৌদ্ধ সাহিত্যেও ঋষভনাথের উল্লেখ পাওয়া যায়। ঋষভনাথ ছাড়াও তীর্থঙ্কর পদ্মপ্রভ, চন্দ্রপ্রভ, পুষ্পদন্ত, বিমলনাথ, ধর্মনাথনেমিনাথের উল্লেখ বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলিতে পাওয়া যায়। ধর্মোত্তরপ্রদীপ নামে একটি বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থে ঋষভনাথকে ‘অপ্ত’ (তীর্থঙ্কর) বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[২৩]

খ্রিস্টীয় ৯ম শতাব্দীতে রচিত সংস্কৃত কাব্য আদিপুরাণ[৪২] এবং খ্রিস্টীয় ১০ম শতাব্দীতে আদিকবি পম্পা (৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ) কর্তৃক ষোলোটি সর্গে গদ্য-পদ্য মিশ্রিত চম্পু আকারে লিখিত উক্ত কাব্যের কন্নড় টীকায় ঋষভনাথ ও তার দুই পুত্রের দশটি জীবনের বর্ণনা পাওয়া যায়।[৪৩][৪৪] ঋষভনাথের জীবনের বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় জিনসেনের মহাপুরাণ, পণ্ডিত হেমচন্দ্রের ত্রিষষ্টিশকলপুরুষচরিত্র, জৈন তীর্থঙ্করদের জীবনী সংবলিত গ্রন্থ কল্পসূত্রজম্বুদ্বীপপ্রজ্ঞপ্তি গ্রন্থে।[৪১][৪৫]

আচার্য মনতুঙ্গ রচিত ভক্তামর স্তোত্র হল সেই সব প্রধান প্রার্থনাগুলির অন্যতম, যেগুলিতে ঋষভনাথের উল্লেখ পাওয়া যায়।[৪৬]

মূর্তিতত্ত্ব

ঋষভনাথকে সাধারণত ধ্যানের পদ্মাসন বা কায়োৎসর্গ (দণ্ডায়মান) ভঙ্গিমায় চিত্রিত করা হয়। ঋষভনাথের একটি বৈশিষ্ট্য হল, তার দীর্ঘ জটা কাঁধের উপর প্রসারিত থাকে। একটি বৃষের চিত্র তার মূর্তিতে খোদাই করা থাকে।[৪৭] চিত্রকলায় সাধারণত তার জীবনের কিংবদন্তিমূলক ঘটনাগুলি প্রদর্শিত হয়। এগুলিতে তার বিবাহ, ইন্দ্র কর্তৃক তার অভিষেক অনুষ্ঠান, অনুগামীদের পাত্র দান এবং তাদের মৃৎশিল্প, গৃহচিত্র অঙ্কন ও বস্ত্রবয়ন শিক্ষাদানের ছবি দেখা যায়। মাতা মরুদেবীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎও অনেক চিত্রের বিষয়বস্তু।[৪৮]

ছবি

বৃহদাকার মূর্তি

মন্দির

  • কুলপাকজি জৈন মন্দির
  • বাতামান জৈন মন্দির
  • কুণ্ডলপুর জৈন মন্দির
  • বিবরোদ তীর্থ
  • পাপোরাজি জৈন মন্দির
  • ঋষভদেও জৈন মন্দির
  • আদিনাথ দিগম্বর জৈন মন্দির, লাডনু, রাজস্থান

আরও দেখুন

পাদটীকা

  1. জৈন ধর্মগ্রন্থগুলিতে ঋষভনাথের যে সময়কাল উল্লেখ করা হয়েছে, তা এতটাই পদ্ধতিগত যে গণনার অযোগ্য।

সূত্র

তথ্যসূত্র

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.