ইন্দ্রাবতী নদী
ভারতের নদী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ভারতের নদী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ইন্দ্রাবতী নদী ওড়িয়া: ଇନ୍ଦ୍ରାବତୀ ନଦୀ, (মারাঠি: इंद्रावती नदी, হিন্দি: इन्द्रावती नदी, তেলুগু: ఇంద్రావతి నది) হল মধ্য ভারতের গোদাবরী নদীর একটি উপনদী।
ইন্দ্রাবতী নদী | |
---|---|
স্থানীয় নাম | इंद्रावती नदी ఇంద్రావతి నది {{স্থানীয় নামের পরীক্ষক}} ত্রুটি: প্যারামিটারের মান ত্রুটিপূর্ণ (সাহায্য) |
অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | তেলেঙ্গানা, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র |
জেলা | কালাহান্ডি, নবরঙ্গপুর |
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য | |
উৎস | |
• অবস্থান | দন্ডকারণ্য শ্রেণী, কালাহান্ডি, ওড়িশা, ভারত |
• স্থানাঙ্ক | ১৯°২৬′৪৬″ উত্তর ৮৩°০৭′১০″ পূর্ব |
• উচ্চতা | ৯১৪ মি (২,৯৯৯ ফু) |
মোহনা | গোদাবরী নদী |
• অবস্থান | সোমনূর সংগম, সিরোঞ্চা, গড়চিরোলি, মহারাষ্ট্র, ভারত |
• স্থানাঙ্ক | ১৮°৪৩′২৫″ উত্তর ৮০°১৬′১৯″ পূর্ব |
• উচ্চতা | ৮২.৩ মি (২৭০ ফু) |
দৈর্ঘ্য | ৫৩৫ কিমি (৩৩২ মা) |
অববাহিকার আকার | ৪০,৬২৫ কিমি২ (১৫,৬৮৫ মা২) |
অববাহিকার বৈশিষ্ট্য | |
উপনদী | |
• বামে | নন্দীরাজ নদী |
• ডানে | ভাস্কেল নদী, নারাঙ্গী নদী, নিমব্রা নদী, কোটরি নদী, বান্দিয়া নদী |
ইন্দ্রবতী নদী গোদাবরী নদীর একটি ধারা। ওড়িশা রাজ্যের কালাহান্ডি জেলার থুয়ামুলা রামপুর ব্লকের পাহাড়ের এক গ্রাম, মারডিগুদা গ্রামের দন্ডকারণ্যের ঘাটে এর উৎস। তিনটি স্রোতের মিলনের কারণে, নদীটি পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে ছত্তিশগড় রাজ্যের জগদলপুরে প্রবেশ করেছে। এখান থেকে নদীটি দক্ষিণে প্রবাহিত হয়েছে, এবং শেষে তিনটি রাজ্যের সীমান্তে গোদাবরীর সাথে গিয়ে মিলেছে। এগুলি হল ছত্তিসগড়, মহারাষ্ট্র এবং তেলেঙ্গানা রাজ্য। নদীটি তার চলনপথের বিভিন্ন পর্যায়ে ছত্তিশগড় ও মহারাষ্ট্রের মধ্যে সীমানা তৈরি করেছে। ইন্দ্রাবতী নদী ছত্রিশগড় রাজ্যের বস্তার জেলার অক্সিজেন হিসাবেও পরিচিত। এই জেলাটি সমগ্র ভারতবর্ষের অন্যতম সবুজ এবং পরিবেশ-বান্ধব জেলা। ইন্দ্রবতী নদীর উপর মোট পাঁচটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এগুলি হল কুত্রু প্রথম, কুতরো দ্বিতীয়, নুগ্রু প্রথম, নুগ্রু দ্বিতীয় এবং ভোপালপট্টনম। যাইহোক, পরিকল্পনাটি ভুলভাবে চালিত হয়েছিল এবং পরিবেশগত কারণে বাস্তবায়িত হয়নি। ইন্দ্রবতী নদী ভারতের ওড়িশা রাজ্যের কালাহান্ডি ও নবরঙ্গপুর এবং ছত্তিসগড় রাজ্যে ভারতের অন্যতম সবুজ জেলা বস্তার জেলার "জীবনী শক্তি" হিসাবে পরিচিত।
বেশিরভাগ নদী পথটি নবরঙ্গপুর এবং বস্তারের ঘন বনাঞ্চলের মধ্যে দিয়ে গেছে। নদীটি প্রবাহিত হয়েছে ৫৩৫ কিলোমিটার (৩৩২ মা) এবং এর নিকাশী অঞ্চল ৪১,৬৬৫ বর্গকিলোমিটার (১৬,০৮৭ মা২).
ইন্দ্রবতী নদী গঠনের পিছনে একটি হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে। একসময় জায়গাটি চম্পা ও চন্দন গাছে পূর্ণ ছিল, যার সুগন্ধ সমগ্র বনে ছড়িয়ে থাকত। পৃথিবীতে এত সুন্দর জায়গা থাকার কারণে, দেবরাজ ইন্দ্র এবং ইন্দ্রানী স্বর্গ থেকে নিচে নেমেছিলেন এখানে কিছুক্ষণ থাকার জন্য। প্রকৃতির সৌন্দর্য তাঁরা গভীরভাবে উপভোগ করেছিলেন; জঙ্গলে ঘোরাফেরা করার সময় ইন্দ্র একটি ছোট গ্রাম সুনাবেড়াতে গিয়েছিলেন (নুয়াপাডা), সেখানে, এক সুন্দরী মেয়ে উদন্তীর সাথে তাঁর সাথে দেখা হয়েছিল। প্রথম দর্শনেই তাঁরা একে অপরকে ভালোবেসে ফেলেন; এবং ইন্দ্র আর ফিরে যেতে চাননি। অন্যদিকে, ইন্দ্রের সঙ্গে এই বিচ্ছেদজনিত কারণে ইন্দ্রাণী দুঃখের সাথে কাঁদছিলেন এবং সেখানে যারা জড়ো হয়েছিল তাদের কাছে নিজের বেদনা প্রকাশ করেছিলেন। লোকেরা ইন্দ্র এবং উদন্তী সম্পর্কে জানত; তারা ইন্দ্রাণীকে সব কথা খুলে বলে এবং সেখানে থাকার পরামর্শ দেয়। ইন্দ্রাণী ইন্দ্রের উপরে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে উঠলেন এবং ইন্দ্র ও উদন্তীকে তিরস্কার করলেন। এরপর তাঁরা আর কখনও দেখা করেননি এবং ইন্দ্রাণী সেখানে ইন্দ্রাবতী নদী হিসাবে থেকে গেলেন, এখনো অবধি সেই নদী প্রবাহিত হয়ে চলেছে। আর, ইন্দ্রানীর প্রতি অপরাধের কারণে একে অপরের সাথে দেখা না করে ইন্দ্র ও উদন্তী নদীও পৃথকভাবে সেখানে প্রবাহিত হচ্ছে।
ইন্দ্রাবতী নদী ওড়িশার কালহান্ডি জেলার পূর্ব ঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে, ৯১৪ মিটার (২,৯৯৯ ফু) উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হয়েছে। এটি কালাহান্ডি, নবরঙ্গপুর এবং কোরাপুট জেলার মধ্য দিয়ে পশ্চিম মুখে ১৬৪ কিলোমিটার (১০২ মা) প্রবাহিত হয়েছে এবং ওড়িশা এবং ছত্তিশগড় রাজ্যের মধ্যে ৯.৫ কিলোমিটার (৫.৯ মা) সীমানা গঠনের পরে, ছত্তিসগড়ের বস্তার জেলায় প্রবেশ করেছে। ছত্তিসগড়ে ২৩৩ কিলোমিটার (১৪৫ মা) প্রবাহিত হওয়ার পর, এটি দক্ষিণমুখী হয়ে এবং প্রায় ছত্তিশগড় এবং মহারাষ্ট্রের সীমানা ধরে ১২৯ কিলোমিটার (৮০ মা) বয়ে গেছে। এরপর এটি মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড় এবং তেলেঙ্গানা রাজ্যের সীমানার সংযোগে গোদাবরী নদীতে মিলিত হয়েছে।[1]
ইন্দ্রাবতীর উপ-অববাহিকা অঞ্চল প্রায় মোট ৪০,৬২৫ বর্গকিলোমিটার (১৫,৬৮৫ মা২) জুড়ে আছে। ওড়িশায় ইন্দ্রাবতীর অববাহিকা অঞ্চল ৭,৪৩৫ বর্গকিলোমিটার (২,৮৭১ মা২) জায়গা জুড়ে রয়েছে। নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৩৫.৮০ কিলোমিটার (৩৩২.৯৩ মা), কালাহান্ডি পাহাড় থেকে শুরু হয়ে এটি ছত্তিশগড়ের বিজাপুর জেলার ভদ্রকালী গ্রামের কাছে গোদাবরী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে।[2] এর উৎস থেকে শুরু করে গোদাবরী নদীর সঙ্গম পর্যন্ত এটির একটি সুস্পষ্ট যাত্রাপথ রয়েছে। ওড়িশায় দক্ষিণ-পূর্ব মুখী হয়ে একটি ক্ষুদ্র নদী হিসাবে শুরু করে, এটি ছত্তিশগড়ের বস্তার জেলার মধ্যে দিয়ে পশ্চিম দিকে চলেছে। এরপর এটি দিক পরিবর্তন করে উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়েছে এবং তারপরে আবার দক্ষিণ-পশ্চিম মুখে ফিরে এসেছে। এর সম্পূর্ণ যাত্রাপথের ৫৩৫.৮০ কিলোমিটার (৩৩২.৯৩ মা) রাস্তায় নদীটি ৮৩২.১০ মিটার (২,৭৩০.০ ফু) নিম্নমুখী হয়েছে। গোদাবরী নদীর সাথে সংযোগস্থলে এর নদীতলের উচ্চতা আর.এল. ৮২.৩ মি, যেখানে কালাহান্ডির উৎসমুখে এর উচ্চতা ছিল ৯১৪.৪ মিটার।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.