Loading AI tools
ইতিহাসের বিভিন্ন দিক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ইউক্রেনের ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন। পন্টিক স্তেপের অংশ হিসেবে প্রাগৈতিহাসিক ইউক্রেন চ্যালকোলিথিক, ব্রোঞ্জ যুগ, ইন্দো-আর্য বিস্তার এবং ঘোড়ার গার্হস্থ্যকরণসহ ইউরোপীয় সাংস্কৃতিক যোগাযোগে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করেছে[1][2][3]।
ইউক্রেন প্রাচীনকালে স্কিথিয়ার অংশ ছিল এবং অভিবাসনের যুগে গেটাইরা এখানে বসতি স্থাপন করেছিল। ইউক্রেন প্রাচীন স্লাভিক সভ্যতারও কেন্দ্র ছিল। কিয়েভান রাশরা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ইউক্রেন প্রকৃত অর্থে ইতিহাসে প্রবেশ করে। কিয়েভান রাশরা মধ্যযুগে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হয়, কিন্তু দ্বাদশ শতাব্দীতে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। চতুর্দশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বর্তমান ইউক্রেন তিনটি বহি:শক্তির অধীনে ছিল: গোল্ডেন হোর্ড, লিথুয়ানিয়া এবং পোল্যান্ড। পঞ্চদশ শতাব্দীতে এই অঞ্চল পোল্যান্ড-লিথুয়ানিয়া (১৫৬৯ সাল থেকে) এবং ক্রিমিয়ান খানাতের অধীনে আসে[4]। ১৬৪৮ সালে পোলিশ ক্যাথলিক শাসনের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহের পর ১৬৫৪ সালের জানুয়ারিতে স্থানীয় গণপরিষদ (রাদা) পেরেয়স্লাভ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। শীঘ্রই নিপার নদীর পূর্বদিকে অবস্থিত পোলিশ–লিথুয়ানীয় সাম্রাজ্যের দক্ষিণ-পূর্ব অংশ রুশ শাসনাধীনে আসে এবং কয়েক শতাব্দীব্যাপী এতদঞ্চলে রুশ শাসন বজায় থাকে[5]।।1775 সালে, ইউক্রেনীয় কস্যাকগুলি রাশিয়ান সরকার দ্বারা ধ্বংস করা হয়েছিল, এবং কস্যাকগুলির সম্পূর্ণ সংরক্ষণাগার (30 হাজার নথি), যা XVI-XVIII শতাব্দীতে ইউক্রেনের ইতিহাসের সাক্ষ্য দেয়, দুর্গে দীর্ঘ সময়ের জন্যরাখা হয়েছিল। সেন্ট এলিজাবেথ। পোল্যান্ড বিভক্তিকরণের (১৭৭২–১৭৯৫) এবং রাশিয়া কর্তৃক ক্রিমিয়ান খানাত অধিকারের ফলে ইউক্রেন রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
রুশ বিপ্লবের পর ইউক্রেনে তীব্র অরাজকতার পরিস্থিতি দেখা দেয় এবং বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে বিক্ষিপ্ত যুদ্ধ শুরু হয়। ইউক্রেনের অভ্যন্তরে গৃহযুদ্ধের ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গণপ্রজাতন্ত্রী ইউক্রেন রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। এরপর সোভিয়েত–ইউক্রেনীয় যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং বলশেভিক লাল ফৌজ ১৯১৯ সালের শেষের দিকে ইউক্রেনের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে[6]। ইউক্রেনীয় বলশেভিকরা কিয়েভের জাতীয় সরকারকে পরাজিত করে ইউক্রেনীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র গঠন করে এবং ১৯২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রজাতন্ত্রটি সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি প্রতিষ্ঠাতা সদস্যে পরিণত হয়। ইউক্রেনীয় ভাষা ও ইউক্রেনীয় সংস্কৃতির প্রতি প্রাথমিক সোভিয়েত নীতির ফলে সোভিয়েত-ইউক্রেনে ইউক্রেনীয় ভাষা শিক্ষা ও প্রশাসনের সরকারি ভাষায় পরিণত হয়। কিন্তু ১৯৩০-এর দশকে সোভিয়েত সরকার রুশীকরণ নীতি গ্রহণ করে। হলোদোমোর নামে পরিচিত একটি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ফলে ১৯৩২ ও ১৯৩৩ সালে ইউক্রেনে লক্ষ লক্ষ মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হয়। এই সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নে ৬০ থেকে ৮০ লক্ষ মানুষ দুর্ভিক্ষে প্রাণ হারায়, যাদের মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ লক্ষই ছিল ইউক্রেনীয়[7]। ১৯৩৮ সালে নিকিতা ক্রুশ্চেভ ইউক্রেনীয় কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান নিযুক্ত হন।
১৯৩৯ সালে নাৎসি(নাজি) জার্মানি ও সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক পোল্যান্ড আক্রমণের পর সোভিয়েত ইউক্রেনের পরিসীমা পশ্চিম দিকে বিস্তৃত হয়। ১৯৪১ থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত ইউক্রেন জার্মান বাহিনীর দখলে ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউক্রেনিয়ান ইনসার্জেন্ট আর্মি ইউক্রেনকে স্বাধীন করার জন্য জার্মানি ও সোভিয়েত ইউনিয়ন উভয়ের বিরুদ্ধেই যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ১৯৪৫ সালে সোভিয়েত ইউক্রেন একটি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে জাতিসংঘে যোগদান করে[8] স্ট্যালিনের মৃত্যুর পর সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হিসেবে ক্রুশ্চেভ একটি ইউক্রেনীয় পুনর্জাগরণের সুযোগ সৃষ্টি করে দেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্যান্য অংশের মতো ইউক্রেনেও কবি, ঐতিহাসিক এবং অন্যান্য বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক নিপীড়ন চলতে থাকে। ১৯৫৪ সালে ক্রিমিয়া ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটলে ইউক্রেন আবার একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়। স্বাধীনতা লাভের পর ইউক্রেনে বাজার অর্থনীতি চালু হয়, যার ফলে দেশটি ৮ বছরব্যাপী অর্থনৈতিক সঙ্কটে নিমজ্জিত হয়[9]। তারপর থেকে দেশটির মোট দেশজ আয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু ২০০৮ সালে ইউক্রেন আবার অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়ে এবং অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০০৮ থেকে ২০০৯ সালে মোট দেশজ উৎপাদন ২০% হ্রাস পায়[10]।
২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ ইউক্রেন–ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহযোগিতা চুক্তি বাস্তবায়ন স্থগিত করলে সুদীর্ঘ ইউক্রেনীয় সঙ্কট শুরু হয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.