শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
আহত ফুলের গল্প
২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশী চলচ্চিত্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
আহত ফুলের গল্প (ইংরেজিঃ A flower in flame) ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। স্বাধীন ধারার[১] ছায়াচিত্রটির কাহিনি, চিত্রনাট্য, সংলাপ রচনা ও পরিচালনা করেছেন অন্ত আজাদ।[২][৩] চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছে ওশান মাইন্ড এন্টারটেইনমেন্ট।[৪][৫] আহত ফুলের গল্পে মূলত তিনজন নারীর জীবনের ঘটনাবলি সমান্তরাল ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। গাজী রাকায়েত ছাড়া একদল নতুন অভিনয় শিল্পী এই চলচ্চিত্রের বিভিন্ন মুখ্য ও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছেন। চলচ্চিত্রটি ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট মুক্তি পায়। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি না দিয়ে অন্ত আজাদ বিকল্প ব্যবস্থায় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার শিল্পকলা একাডেমি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে প্রদর্শন করেন। চলচ্চিত্রটি সেন্সর বোর্ডের সদস্য ও দর্শকদের মাঝে প্রশংসিত হয়।[৬]
Remove ads
Remove ads
গল্পসূত্র ও বিশেষত্ব
দুই ঘণ্টা আট মিনিট ব্যাপ্তির[১] 'আহত ফুলের গল্প' একটি নারীবাদী বা নারীবান্ধব চলচ্চিত্র। তিনজন নারী- শাপলা, কামিনী ও মোহনা'র জীবনে পিতৃতান্ত্রিক বাংলাদেশের মুসলিম সমাজ ব্যবস্থা, সামাজিক কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রযুক্তির অসৎ ব্যবহার ও অপসংস্কৃতির সংস্পর্শের প্রভাব নিয়ে এই চলচ্চিত্রের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে।[৭][৮][৯] শাপলা ও তার প্রেমিক সবুজের অপরিণত বিরহনির্ভর প্রেমের গল্পকে কেন্দ্র করে অন্য দুই নারী চরিত্রের গল্প সমান্তরালে চিত্রিত হয়েছে।[১০]
এই চলচ্চিত্রে পঞ্চগড়ের আঞ্চলিক বিয়ের গান, রবীন্দ্রসঙ্গীত ব্যবহারের পাশাপাশি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ব্যবহার করা হয়েছে।[৮][১১] সংলাপে প্রমিত বাংলা'র উচ্চারণের পাশাপাশি পঞ্চগড়ের আঞ্চলিক ভাষা ও প্রচলিত গ্রামীণ শ্লোক ব্যবহার করা হয়েছে।[১]
Remove ads
কুশীলব

অভিনয় শিল্পী
এই চলচ্চিত্রে গাজী রাকায়েত ছাড়া প্রথিতযশা কোন শিল্পী ছিলেন না।[১২] শাপলা নামের কেন্দ্রীয় চরিত্র রূপদান করেছেন তাহিয়া তাজিন খান। সবুজের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুজন মাহাবুব[৫][১১]। অন্ত আজাদ তার বাবা-মাকে অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছেন। আজাদের বাবা তৌহিদুল আলম, গ্রামের প্রতাপশালী চেয়ারম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করেন। একটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অন্ত আজাদের মাকে অভিনয় করতে দেখা গেছে।[১৩] আহত ফুলের গল্প ছবির অভিনয় শিল্পীদের তালিকা নিম্নরূপ[২][১০][১৪]-
- গাজী রাকায়েত
- সুজন মাহাবুব
- তাহিয়া তাজিন খান
- আলী আহসান
- অনন্যা হক
- শেলী আহসান
- শহীদুল ইসলাম
- ইকতারুল ইসলাম
- অভি চৌধুরী
- কামরুল হাসান
- শান্ত কুণ্ডু
- জয়া রায়
- তৌহিদুল আলম
- ওমরচাঁদ
- সজীব
- রিফাত
- পেয়ারা বেগম
- আরিফ
- মিনহাজ
- রাব্বি
- শিরিন।
অন্যান্য কলাকুশলী
আহসান দীপ এই চলচ্চিত্রের প্রধান সহকারী পরিচালকের কাজ করেছেন।[১৫] প্রধান চিত্রগ্রহণ করেছেন মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান। সম্পাদনা করেছেন সৈকত খন্দকার। শব্দ ধারণ করেছেন শৈব তালুকদার। প্রস্ফুটনে ছিলেন রাশেদুজ্জামান সোহাগ। নাজমুল হাসান টাইটেল অ্যান্ড ভিএফএক্স সম্পাদনা করেছেন।[১][১৪] পোশাকসজ্জা করেছেন নুসরাত জাহান নীপা।[৩]
Remove ads
নির্মাণ
২০১৬ সালের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে অন্ত আজাদ তার নিজস্ব অর্থায়নে এই ছায়াচিত্রের চিত্রগ্রহণ শুরু করেন।[১৬][১৭] চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করতে দুই বছর সময় লাগে।[১০] ১৯ মে, ২০১৮ তারিখে শব্দ ধারণের মাধ্যমে চলচ্চিত্রটির নির্মাণ সম্পন্ন হয়।[১৮] সিংহভাগ চিত্রগ্রহণ করা হয় পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার মাটিয়ারপাড়া গ্রামে।[৮][১১]
সঙ্গীত
সারাংশ
প্রসঙ্গ
আহত ফুলের গল্পে একটি রবীন্দ্রসঙ্গীত ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া তিনটি মৌলিক গান, পঞ্চগড়ের আঞ্চলিক বিয়ের গীত[৮] সহ সর্বোমোট পাঁচটি গান রয়েছে।[১১][১৯] মৌলিক গানগুলি লিখেছেন টোকন ঠাকুর, কামরুজ্জামান কামু ও সোলায়মান আকন্দ এবং কণ্ঠ দিয়েছেন যথাক্রমে পিন্টু ঘোষ, কামরুজ্জামান রাব্বি[২০] ও লিপু অসীম। রবীন্দ্রসঙ্গীতটি রোকন ইমনের কন্ঠে ধারণ করা হয়। পঞ্চগড়ের এক ঝাঁক আঞ্চলিক শিল্পী বিয়ের গীতে কন্ঠ দেন[৫][১০] পিন্টু ঘোষ ও রোকন ইমন গানে কন্ঠদানের পাশাপাশি আবহ সংগীত ও মৌলিক গানের সঙ্গীতায়োজন করেছেন।[১৪]
অবমুক্ত গানের তালিকা
অবমুক্তি
- আমি তোমারে চাইরে বন্ধু শিরোনামের মৌলিক গানটি চলচ্চিত্রটি প্রথম প্রদর্শণীর প্রাক্কালে ১১ আগস্ট, ২০১৮ তারিখে ওশেন মাইন্ড এন্টারটেইনমেন্ট-এর আনুষ্ঠানিক ইউটিউব চ্যানেলে অবমুক্ত করা হয়।[২১][২২]
- নিঃস্ব হইয়া শিরোনামের গানটি ৬ জানুয়ারি, ২০১৯ তারিখে ওশেন মাইন্ড এন্টারটেইনমেন্ট-এর আনুষ্ঠানিক ইউটিউব চ্যানেলে অবমুক্ত করা হয়।[২৩]
- দিঘি বান্ধা ঘাটে গানটি ঢাকায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে প্রদর্শণীর প্রাক্কালে ১৪ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখে ওশেন মাইন্ড এন্টারটেইনমেন্ট-এর আনুষ্ঠানিক ইউটিউব চ্যানেলে অবমুক্ত করা হয়।[২৪][২৫]
Remove ads
প্রচারণা ও মুক্তি
সারাংশ
প্রসঙ্গ

প্রচারণা
ছাড়পত্র পাওয়ার পূর্বে অন্ত আজাদ এই চলচ্চিত্রের প্রচারণা শুরু করেন। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ওশেন মাইন্ড এন্টারটেইনমেন্ট নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল হতে ২১ নভেম্বর, ২০১৭ তারিখে ১ মিনিটের প্রথম 'টিজার' ট্রেইলার প্রকাশ করে।[২৬] ৯মার্চ, ২০১৮ তারিখে চলচ্চিত্রটির আনুষ্ঠানিক ফেসবুক পাতায় প্রথম পোস্টার অবমুক্ত করা হয়। ১ জুলাই, ২০১৮ তারিখে চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড হতে বিনা কর্তনে ছাড়পত্র পায়।[৩][২৭][২৮] ২২ জুলাই, ২০১৮ চলচ্চিত্রটির ২ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের[১২] প্রথম ট্রেইলার প্রকাশ করা হয়।[৫][১৪][২৯]
বিকল্প ব্যবস্থায় মুক্তি
চলচ্চিত্রটি ২০১৮ সালের ঈদুল আযহা'র সপ্তাহে মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়; তবে প্রথিতযশা শিল্পীবিহীন স্বাধীন ধারার এই চলচ্চিত্রটি ক্যাপ্টেন খান, মনে রেখো, বেপরোয়া ও জান্নাত-এর মত বড় বাজেটের বাণিজ্যিক ছায়াছবির সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রেক্ষাগৃহ সংস্থান করতে পারেনি। আর্থিক সংকট ও পরিবেশক না পাওয়ায় অন্ত আজাদ 'আহত ফুলের গল্প' প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি না দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় প্রদর্শন করেন। বিকল্প ব্যবস্থায় ২২ আগস্ট, ২০১৮ তারিখে ঈদুল আযহার দিনে 'আহত ফুলের গল্প' পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার টাউন হল মিলনায়তনে মুক্তি পায়।[৪] দেবীগঞ্জের টাউন হল মিলনায়তনটি আগে 'আমার টকিজ' নামের প্রেক্ষাগৃহ ছিল যা পরে টাউন হলে রূপান্তর করা হয়।[৩০] চলচ্চিত্রটি পরিবেশনার জন্য অন্য কোন প্রতিষ্ঠান না খুঁজে অন্ত আজাদ নিজ উদ্যোগে দেবীগঞ্জ টাউন হল মিলনায়তন ভাড়া ও সংস্কার করে 'আহত ফুলের গল্প' মুক্তি দেন। দেবীগঞ্জে টানা দুই সপ্তাহ চলচ্চিত্রটির প্রদর্শণী চলে[৩১][৩২]
২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত চলচ্চিত্রটি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি, বগুড়া শিল্পকলা একাডেমি,নওগাঁ জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ ও ঢাকায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে[৩৩] প্রদর্শিত হয়েছে।[৩৪] চলচ্চিত্রটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি না দিয়ে বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায় বিভিন্ন মিলনায়তন ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদর্শনী করার পরিকল্পনা করা হয়।[৩৫]
অন্যান্য মাধ্যমে
২০২১ সালের ইদুল ফিতরে চ্যানেল আইয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রটি প্রথম বারের মত টেলিভিশনের দর্শকদের জন্য[৩৬] এবং ইউটিউবে উন্মুক্ত করা হয়।[৩৭]
Remove ads
অভ্যর্থনা ও প্রতিক্রিয়া
- বিকল্প ব্যবস্থায় দেবীগঞ্জে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করার কারণে পরিচালক অন্ত আজাদ প্রশংসিত হন।[৩২] দেবীগঞ্জ টাউন হলে প্রতিটি শো-তে ১০০ থেকে ১৩০ জন দর্শক পায়।[৩৮] চলচ্চিত্রটি দর্শকদের প্রশংসা পায়।[৬]
- সেন্সর বোর্ডের সদস্য রোকেয়া রফিক বেবী এই চলচ্চিত্রের গানগুলির প্রশংসা করছেন। সেন্সর বোর্ডের আরেক সদস্য ও প্রদর্শক সমিতির সভাপতি মধুমিতা প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধার ইফতেখার নওশাদ 'আহত ফুলের গল্প' সম্পর্কে 'বেশ ভালো লেগেছে ছবিটি। হয়তো তারকা নেই বলে বাণিজ্যিক সাফল্যের ব্যাপারে অনিশ্চয়তা থেকে গেছে।' মর্মে মন্তব্য করেছেন।[৪]
- বাংলা মুভি ডেটাবেজে রহমান মতি আহত ফুলের গল্প সম্পর্কে লিখেছেন- "এ ছবিটি ক্লাইম্যাক্সের কারণে কিছুটা হলেও মার্ক বেশি পাবে। চিন্তাভাবনায় পিছিয়ে থাকা মানুষ কীভাবে নিজেকে পরিবর্তন করছে এবং তার প্রকাশ কতটা চমৎকার হতে পারে ক্লাইম্যাক্সে পরিচালক দেখিয়েছেন।" তিনি
রেটিং প্রদান করেন।[৩৯]
Remove ads
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads