আলী যাকের (৬ নভেম্বর ১৯৪৪ - ২৭ নভেম্বর ২০২০)[1] ছিলেন একজন বাংলাদেশী অভিনেতা, ব্যবসায়ী ও কলামিস্ট। দেশীয় বিজ্ঞাপনশিল্পের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব যাকের টেলিভিশন ও মঞ্চ নাটকে সমান জনপ্রিয়।[2] আলী যাকের বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি-র কর্ণধার ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখতেন। তার সহধর্মিনী সারা যাকেরও একজন অভিনেত্রী।

দ্রুত তথ্য আলী যাকের, জন্ম ...
আলী যাকের
Thumb
২০১১ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে আলী যাকের
জন্ম(১৯৪৪-১১-০৬)৬ নভেম্বর ১৯৪৪
মৃত্যু২৭ নভেম্বর ২০২০(2020-11-27) (বয়স ৭৬)
সমাধিবনানী কবরস্থান
২৩.৭৯৯° উত্তর ৯০.৪০৪° পূর্ব / 23.799; 90.404
জাতীয়তাবাংলাদেশী
পেশাঅভিনেতা , পরিচালক, ব্যবসায়ী, বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিকের কর্ণধার
পরিচিতির কারণমঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেতা
দাম্পত্য সঙ্গীসারা যাকের (বি. ১৯৭৭)
সন্তান
পিতা-মাতা
  • মুহাম্মদ তাহের
  • রেজিয়া তাহের
বন্ধ

শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদক এবং মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেছেন।

প্রারম্ভিক জীবন

আলী যাকের ১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর তৎকালীন চট্টগ্রাম জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার (বর্তমানে জেলা) রতনপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। মাহমুদ তাহের ও রেজিয়া তাহেরের চার সন্তানের মধ্যে যাকের ছিলেন তৃতীয়। পিতার সরকারি চাকরির সুবাদে তিনি কুষ্টিয়া ও মাদারীপুরে শৈশব অতিবাহিত করেন।

আলি যাকের ১৯৬০ সালে সেন্ট গ্রেগরিজ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকার নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে[1] ভর্তি হন এবং সেখান থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এ সময় তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হন।[3]

মঞ্চনাটক

১৯৭২ সালের আলী যাকের আরণ্যক নাট্যদলের হয়ে মামুনুর রশীদের নির্দেশনায় মুনীর চৌধুরীর কবর নাটকটিতে প্রথম অভিনয় করেন যার প্রথম প্রদর্শনী হয়েছিল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে। ১৯৭২ সালের জুন মাসের দিকে আতাউর রহমানজিয়া হায়দারের আহ্বানে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে যোগ দেন। ঐ দলে তিনি আতাউর রহমানের নির্দেশনায় বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন, যার প্রথম মঞ্চায়ন হয়েছিল ওয়াপদা মিলনায়তনে । ১৯৭৩ সালে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে তিনি প্রথম নির্দেশনা দেন বাদল সরকারের বাকি ইতিহাস নাটকে, যা ছিল বাংলাদেশে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে নাট্য প্রদর্শনীর যাত্রা।[4]

ব্রেটল ব্রেশটের দ্য লাইফ অব গ্যালিলিও গ্যালিলি অবলম্বনে গ্যালিলিও নামে অনুবাদ নাটকে নামচরিত্র "গ্যালিলিও" হিসেবে অভিনয়ের জন্য আলী যাকেরকে "বাংলার গ্যালিলিও" হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।[5]

আলী যাকের ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাভিশনের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অনুষ্ঠান ভালোবাসার বাংলাদেশ উপস্থাপনা করেন।[6]

ব্যক্তিগত জীবন

নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ের জন্য বিশ্বখ্যাত বিদেশী নাটকের বাংলা রূপান্তর আর নাটক নির্দেশনা এসব কাজে আলী যাকের ব্যস্ত ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ঐ দলে যোগ দেন সারা যাকের যাকে শুরুতে চোখেই পড়েনি আলী যাকেরের। একটি নাটকের প্রদর্শনীর আগের দিন একজন অভিনেত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে গেলে সারা যাকেরকে দেওয়া হয় চরিত্রটিতে অভিনয় করতে। আলী যাকেরের ওপর দায়িত্ব পড়ে চরিত্রটার জন্য তাকে তৈরি করার এবং খুব দ্রুত চরিত্রটির সাথে নিজেকে মানিয়ে নেন সারা যাকের। এই প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে যান আলী যাকের। ১৯৭৭ সালের এই ঘটনার রেশ ধরেই আলী যাকের আর সারা যাকেরের বিয়ে হয়।[7] এই দম্পতির দুই সন্তান, পুত্র অভিনেতা ইরেশ যাকের ও কন্যা শ্রিয়া সর্বজয়া।

কর্মতালিকা

চলচ্চিত্র

টেলিভিশন

ধারাবাহিক
একক নাটক
  • একদিন হঠাৎ (১৯৮৬)
  • নীতু তোমাকে ভালোবাসি
  • পাথর সময়
  • অচিনবৃক্ষ
  • আইসক্রিম
  • পান্ডুলিপি
  • গণি মিয়ার পাথর

মঞ্চ নাটক

আরও তথ্য নাটক, নির্দেশক ...
নাটক নির্দেশক
কবর মামুনুর রশীদ
বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ আতাউর রহমান
বাকী ইতিহাস আলী যাকের
বিদগ্ধ রমণী কুল আলী যাকের
তৈল সংকট আলী যাকের
এই নিষিদ্ধ পল্লীতে আলী যাকের
দেওয়ান গাজীর কিস্‌সা আসাদুজ্জামান নূর
সৎ মানুষের খোঁজে আলী যাকের
অচলায়তন আলী যাকের
কোপেনিকের ক্যাপ্টেন আলী যাকের
ম্যাকবেথ ক্রিস্টোফার স্যানফোর্ড
টেমপেস্ট ডেবোয়া ওয়ারনার
নূরলদীনের সারাজীবন আলী যাকের
কবর দিয়ে দাও আতাউর রহমান
গ্যালিলিও আতাউর রহমান
গ্যালিলিও পান্থ শাহরিয়ার
কাঁঠাল বাগান (চেরি অরচার্ড) আলী যাকের
বন্ধ

মৃত্যু

আলী যাকের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে তিনি ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ নভেম্বর সকালে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।

পুরস্কার

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.