আত্মীয় সভা ছিল ভারতের একটি দার্শনিক আলোচনা কেন্দ্র। রাজা রামমোহন রায় ১৮১৫ সালে কলকাতায় এই সমিতি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[1] সমিতির সদস্যরা বিভিন্ন দার্শনিক বিষয়ে বিতর্ক ও আলোচনার অধিবেশন পরিচালনা করার মাধ্যমে অবাধ ও সম্মিলিত চিন্তাভাবনা এবং সামাজিক সংস্কার প্রচার করতেন। ১৮১৫ সালে আত্মীয় সভার প্রতিষ্ঠাকে কলকাতায় আধুনিক যুগের সূচনা হিসাবে বিবেচিত হয়।[2][3] ১৯২৩ সালে সমিতিটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।[4]
গঠিত | ১৮১৫ |
---|---|
প্রতিষ্ঠাতা | রাজা রামমোহন রায় |
বিলুপ্ত | ১৮২৩ |
অবস্থান | |
যে অঞ্চলে | বঙ্গ |
পরিষেবা | মুক্ত চিন্তার প্রসার ঘটানো এবং কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামি বন্ধ করা |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা |
সভাপতি | রাজা রামমোহন রায় |
মূল ব্যক্তিত্ব |
পটভূমি
প্রকৃত এবং সত্য ধর্ম সম্পর্কে জানতে রাজা রামমোহন রায় ব্যাপক অধ্যায়ন শুরু করেন। বেদ সহ বিভিন্ন হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ছাড়াও তিনি আরবিতে মূল কুরআন, হিব্রু ও গ্রিক বাইবেল পাঠ করে ইসলাম, খ্রিষ্টান ধর্ম সহ বিভিন্ন একেশ্বরবাদী ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন। এসব বই পড়ে তিনি একেশ্বরবাদের প্রতি আকৃষ্ট হন। এছাড়াও হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি রোধে তিনি সচেষ্ট হন। এসব বিষয়ে আলোচনা করতে তিনি সমমনা বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে আত্মীয় সভার আয়োজন করেন।
এই আত্মীয় সভাই পরবর্তীকালে ১৯২৮ সালে ব্রাহ্মসমাজে পরিণত হয়। ড. দিলীপকুমার বিশ্বাসের ভাষায়,[5]
“ | এই আত্মীয়সভার মাধ্যমে বিকশিত ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংস্কারের ঐতিহ্য অবশেষে সম্পূর্ণ রূপায়িত হয় ১৮২৮ সালে স্থাপিত ব্ৰাহ্মসমাজ নামক প্রতিষ্ঠানে। | ” |
কার্যক্রম
সভায় প্রধান কার্যক্রম ছিল একেশ্বরবাদী হিন্দু বেদান্তবাদ ও অনুরূপ বিষয়গুলিতে আলোচনা ও বিতর্কের আয়োজন করা। এছাড়াও তারা বিভিন্ন ধর্মীয় এবং সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে নিজেদের মধ্যে মতবিনিময় করতেন। মানিকতলায় অবস্থিত রাজা রামমোহন রায়ের বাগানবাড়িতে সাপ্তাহিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হতো। [6] এই সমাবেশগুলির মধ্যে বেশিরভাগই অনানুষ্ঠানিক ছিল এবং এই সভাগুলোতে কেবলমাত্র কয়েকজন বাঙালি বুদ্ধিজীবী যোগ দিতেন। এটি কোন আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান ছিল না, এর এবং কোন সদস্যপদ নিবন্ধন পদ্ধতি ছিল না। প্রতি সপ্তাহে একদিন এই সভার আয়োজন হতো। শিবপ্রসাদ মিশ্র এই সভায় বেদপাঠ করতেন এবং গোবিন্দ মালা গান গাইতেন। সভার আলোচনার বিষয়ের মধ্যে অন্যতম ছিল মূর্তি পূজার অসারতা, বর্ণ প্রথা এবং সতীদাহ প্রথা ও বহুবিবাহের কুফলসমূহ এবং বিধবা বিবাহ প্রচলনের গুরুত্ব।[1][3]
উল্লেখযোগ্য সদস্য
এই সভায় যোগদানকারী উল্লেখযোগ্য কিছু ব্যক্তি হলেন:[6]
- প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর
- প্রসন্নকুমার ঠাকুর
- নন্দকিশোর বসু
- বৃন্দাবন মিত্র
- শিবপ্রসাদ মিশ্র
- হরিহরনন্দ তীর্থস্বামী
শিবপ্রসাদ মিশ্র এবং হরিহরনন্দ তীর্থস্বামী সংস্কৃত পণ্ডিত ছিলেন।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand in your browser!
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.