Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দিলীপকুমার বিশ্বাস (ইংরেজি: Dilipkumar Biswas) ( ০৭ জুলাই, ১৯২০ — ২৩ নভেম্বর, ২০০৩) প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের একজন ঐতিহাসিক, জনপ্রিয় অধ্যাপক। ব্রাহ্ম ধর্ম, ব্রাহ্ম সমাজ ও রাজা রামমোহন রায়ের বিষয়ে তার গবেষণা প্রামাণ্য হিসাবে স্বীকৃত।[1]
দিলীপকুমার বিশ্বাস | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৩ নভেম্বর ২০০৩ ৮৩) | (বয়স
জাতীয়তা | ভারতীয় |
নাগরিকত্ব | ভারতীয় |
পেশা | ইতিহাসবিদ,অধ্যাপনা |
পরিচিতির কারণ | রামমোহন সমীক্ষা, |
পুরস্কার | রবীন্দ্র পুরস্কার |
দিলীপকুমার বিশ্বাসের জন্ম ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ৭ ই জুলাই ব্রিটিশ ভারতের অধুনা ভারতের ওড়িশা রাজ্যের কটক শহরে তার মামার বাড়িতে। পিতা জিতেন্দ্রকুমার বিশ্বাস (১৮৮৮-১৯৬৫) ছিলেন মুনসেফ ও মাতা ওড়িশার উৎকল সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক বিশ্বনাথ করের (১৮৬৪-১৯৩৪) কন্যা নর্মদা দেবী (১৮৯২-১৯৮৪) ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন। তবে দিলীপকুমার বিশ্বাসের পৈতৃক নিবাস ছিল অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদীয়াজেলার শান্তিপুরে। পিতামহ দ্বিজদাস বিশ্বাস ( ১৮৬০ -১৮৯২) বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর প্রভাবে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হলে রক্ষণশীল সামাজিক পরিবেশের প্রতিকূলতায় শান্তিপুরের বাসভূমি হতে তারা বিতাড়িত হন এবং কলকাতায় চলে আসেন। পিতামহ কলকাতায় পোস্ট অ্যান্ড টেলিগ্রাফ বিভাগে পোস্টাল সুপারিনটেন্ডন্ট ছিলেন, কিন্তু মাত্র বত্রিশ বৎসর বয়সে তার মৃত্যু হয়। তার স্ত্রী গিরিবালা এক পুত্র ও এক কন্যাকে নিয়ে অকুল পাথারে পড়েন। সেই সময় আচার্য শিবনাথ শাস্ত্রী তার পুত্র ও কন্যার ভরণপোষণের ভার গ্রহণ করেন। দিলীপ কুমারের পিতা এবং পিসিমা শাস্ত্রী মশায়ের পুত্র কন্যাদের সঙ্গে সমভাবে পালিত হয়েছেন। দিলীপকুমারের পিতা ওড়িশার শোনপুর স্টেট-এ ওকালতি শুরু করেন এবং পরে অবিভক্ত বাংলায় বিচারক নিযুক্ত হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তরিত হতে হত। সেকারণে প্রথম দিকে মাতার তত্ত্বাবধানে পড়াশোনা শুরু করেন। প্রথমে পূর্ববঙ্গের গাইবান্ধার পর তমলুকে তমলুক হ্যামিলটন স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হন ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে। থেকে ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ৷ আবার বরিশালের পিরোজপুর সরকারী স্কুলে ভর্তি হন ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে। এখান থেকেই ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন৷ কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইতিহাসে অনার্সে নিয়ে বি.এ. পাশ করেন ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে৷ ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে "প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি" বিষয়ে এম.এ.পাশ করেন।
ঘটনাক্রমে বিয়াল্লিশের ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু হলে তিনি তাতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। কংগ্রেস সমাজতান্ত্রিক দলের উদয়ন চট্টোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে প্রথমে 'ফ্রি ইন্ডিয়া বুলেটিন' প্রচারে ও পরে রামমনোহর লোহিয়ার পরিকল্পনা অনুযায়ী কলকাতার গোপন আস্তানা হতে সম্প্রচারিত "কংগ্রেস রেডিও" র রাত্রির অনুষ্ঠানে কথিকা উপস্থাপন করতেন তিনি। অন্যান্যদের সঙ্গে আত্মগোপনে থেকে এই অর্পিত কাজ করতে হত তাঁকে।[2]
১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীর গ্রন্থাগারে সহকারী গ্রন্থাগারিক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার সিটি কলেজে ইতিহাসের অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন। স্বাধীনতার পরে সরকারি কলেজে যোগ দিয়ে যথাক্রমে কৃষ্ণনগর সরকারী কলেজ, দার্জিলিং কলেজে অধ্যাপনা করে ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপকরূপে যোগদান করেন। এখানে প্রায় এগারো বৎসরের অধ্যাপনার পর সংস্কৃত কলেজে বদলি হন এবং সেখান থেকেই ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে অবসর নেন। এর পাশাপাশি তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচীন ভারতবর্ষের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে অংশকালীন অধ্যাপনা করেন। তিনি তার ছাত্রদের অনেক সহজ সরল দৃষ্টিতে ইতিহাস বোধে দীক্ষিত করতেন, জনপ্রিয়তাও অর্জন করেছিলেন।
দিলীপকুমার ব্রাহ্ম সমাজের সভাপতি ও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সম্পাদক ও সভাপতি হয়েছিলেন। পরিষদের পত্রিকায় তার প্রথম লেখা হল কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে মদিরা গৃহ। ব্রাহ্ম ধর্ম, ব্রাহ্ম সমাজ ও প্রতিষ্ঠাতা রাজা রামমোহন রায়ের জীবন ও কর্মকাণ্ড নিয়ে অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রামাণ্য হিসাবে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে। মূলত তার গবেষণামূলক রচনা প্রাচীন ভারতের ইতিহাস ও সংস্কৃতি এবং ঊনবিংশ শতকের বঙ্গীয় নবজাগরণ নিয়ে। তিনি আটটি ভাষা জানতেন। সত্তর বৎসর বয়সে শিখেছিলেন জার্মান ভাষা। ফরাসি ভাষা থেকে অনুবাদ করেছেন অনেক গ্রন্থ। তার রচিত পুস্তিকাগুলি হল -
সম্পাদিত গ্রন্থ-
অনুবাদ গ্রন্থ-
ওড়িশা হতে বাংলায় -
ফরাসি হতে ইংরেজিতে অনূদিত-
অধ্যাপক দিলীপকুমার বিশ্বাস "রামমোহন সমীক্ষা" বইটির জন্য ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন।[3][4]
অধ্যাপক দিলীপকুমার বিশ্বাস ২০০৩ খ্রিস্টাব্দের ২৩ শে নভেম্বর কলকাতায় প্রয়াত হন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.