অ্যামিবা (গণ)
প্রোটিস্টা রাজ্যের সদস্য এককোষী জীব উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
অ্যামিবা (ইংরেজি: Amoeba) অ্যামিবোজোয়া পর্বের অ্যামিবিডা পরিবারের একটি গণ বিশেষ।[২]
অ্যামিবা | |
---|---|
![]() | |
অ্যামিবা প্রোটিয়াস | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
ক্ষেত্র: | ইউক্যারিওটা |
পর্ব: | অ্যামিবোজোয়া |
উপপর্ব: | লোবোসা |
শ্রেণী: | টিউবিউলিনিয়া |
পরিবার: | অ্যামিবিডা |
গণ: | অ্যামিবা বোরি দে সেন্ট-ভিনসেন্ট, ১৮২২[১] |
প্রজাতি | |
|
শ্রেণিবিন্যাসের ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ

১৭৫৫ খ্রিষ্টাব্দে অগস্ট যোহান রোসেল ভন রোসেনহফ গ্রিক পৌরাণিক রূপ-পরিবর্তনকারী সমুদ্র দেবতা প্রোতিয়ুসের নামে দের ক্লেইন প্রোটিয়াস (জার্মান: Der Kleine Proteus; ছোট্ট প্রোটিয়াস) নামে অ্যামিবা সদৃশ একটি জীবের বর্ণনা দেন।[৩] যদিও রোসেলের চিত্রে এই জীবের সঙ্গে বর্তমানযুগে পরিচিত অ্যামিবা প্রোটিয়াস প্রজাতির অনেক মিল রয়েছে, কিন্তু কোন প্রজাতির সঙ্গে নিশ্চিতভাবে এক করা যায় না।[৪] অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে অ্যামিবা সদৃশ যে কোন স্বাধীন এককোষী জীবকে প্রোটিয়াস অ্যানিমেলকিউল বলা হত।[৫]
১৭৫৮ খ্রিষ্টাব্দে রোসেলের প্রোটিয়াসের চিত্র না দেখেই কার্ল লিনিয়াস তার নিজের শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতিতে এই জীবকে ভলভক্স ক্যাওস নাম দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করেন। কিন্তু যেহেতু ফ্ল্যাজেলাযুক্ত শৈবালের একটি গণের নামের সঙ্গে ভলভক্স শব্দটি যুক্ত করা হয়ে গেছিল, তাই তিনি এর নাম পরিবর্তন করে রাখেন ক্যাওস ক্যাওস। ১৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ডেনমার্কের প্রকৃতিবিদ অটো ফ্রেইডরিশ্ মূলর একটি প্রজাতির বর্ণনা করেন, যার নাম তিনি রাখেন প্রোটিয়াস ডিফ্লুয়েন্স, যা সম্ভবতঃ অ্যামিবা প্রোটিয়াস প্রজাতি হিসেবে বর্তমানযুগে পরিচিত।[৬]
১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে বোরি দে সেন্ট-ভিন্সেন্ট গ্রিক আমোইবে (গ্রিক: ἀμοιβή; পরিবর্তন) শব্দটি থেকে আমিবা (ইংরেজি: Amiba) নামটি রাখেন।[৭][৮] ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে জার্মান প্রকৃতিবিদ ক্রিশ্চিয়ান গটফ্রেইড এহ্রেনবার্গ তার নিজের তৈরিকৃত আণুবীক্ষণিক জীবের শ্রেণিবিন্যাসে এই গণকে অন্তর্ভুক্ত করেন, কিন্তু বানান পরবর্তন করে Amoeba (অ্যামিবা) রাখেন।[৯]
বৈশিষ্ট্য
সারাংশ
প্রসঙ্গ

উইকিপ্রজাতিতে-এ বিষয় সম্পর্কিত তথ্য রয়েছে: Amoeba

উইকিমিডিয়া কমন্সে অ্যামিবা (গণ) সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।
ঐতিহাসিকভাবে, গবেষকরা অ্যামিবার সাইটোপ্লাজমকে দানাদার এন্ডোপ্লাজম এবং স্বচ্ছ এক্টোপ্লাজম এই দুই ভাগে ভাগ করেছেন, যা একটি নমনীয় কোষ পর্দা দ্বারা বেষ্টিত থাকে।[১০] এই কোষে একটিমাত্র দানাদার নিউক্লিয়াসের মধ্যে জীবের প্রায় সমস্ত ডিএনএ থাকে।
অ্যামিবা গণের প্রজাতিরা সিউডোপড নামক অস্থায়ী অঙ্গ তৈরী করে চলাফেরা ও খাদ্যসন্ধান করে থাকে। সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত মাইক্রোফিলামেন্ট দ্বারা সমন্বয়মূলক ভাবে কাজ করে কোষ থেকে কোষ পর্দাকে বাইরের দিকে ঠেলে দেয়।[১১] অ্যামিবার সিউডোপড নলাকার ও শেষ প্রান্তে গোলাকার মুণ্ড বিশিষ্ট হয়ে থাকে। সিউডোপড ক্রমাগত প্রসারিত ও সঙ্কুচিত হয় বলে অ্যামিবার আকার খুব দ্রুত পরিবর্তনশীল হয়। ভাসমান অবস্থায় অ্যামিবা অনেকগুলি সিউডোপড একসঙ্গে তৈরী করলেও কঠিন ভূমির ওপর চলার সময় একটিমাত্র সিউডোপড চলনের দিকে তৈরী হয় এবং সমগ্র কোষটি একটি চোঙার আকৃতি ধারণ করে।[১২]
অ্যামিবা ফ্যাগোসাইটোসিস পদ্ধতিতে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীব ও জৈব পদার্থ এবং পিনোসাইটোসিস পদ্ধতিতে ভেসিকল তৈরি করে দ্রবীভূত পদার্থ গ্রহণ করে।[১৩] এই সকল খাদ্যকণা ভ্যাকুওল নামক অঙ্গাণুতে জমা হয়।
অন্যান্য এককোষী সুকেন্দ্রিক জীবের মত অ্যামিবা মাইটোসিস ও সাইটোকাইনেসিস পদ্ধতিতে অযৌন প্রজনন সম্পন্ন করে। অন্যান্য অ্যামিবাজোয়া প্রজাতির মধ্যে জিনগত বস্তুর যৌন আদানপ্রদান লক্ষ্য করা গেলেও এই জীবের দেহে যৌন প্রজনন লক্ষ্য করা যায়নি। এটি দ্বিবিভাজন প্রক্রিয়ায় প্রজনন সমপন্ন করে[১৪]
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.