হাসান ইবনুল হায়সাম
আরব পদার্থবিদ, গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী / From Wikipedia, the free encyclopedia
হাসান ইবনে আল-হায়সাম (ল্যাটিনকৃত: আলহাজেন [1]; /ælˈhæzən/[2]; লাতিন: Alhazen[3]; পূর্ণ নামঃ আরবি: أبو علي، الحسن بن الحسن بن الهيثم, প্রতিবর্ণীকৃত: আবু আলি হাসান ইবনুল হাসান ইবনুল হায়সাম, অনুবাদ 'Abū ʿAlī al-Ḥasan ibn al-Ḥasan ibn al-Haytham'; আনু. ৯৬৫ – আনু. ১০৪০), ছিলেন ইসলামী স্বর্ণযুগের একজন মুসলিম আরব গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং পদার্থবিদ।[4][5][6][7] তিনি "আধুনিক আলোকবিজ্ঞানের জনক"[8][9] হিসেবে উল্লেখিত হন, আলোকবিদ্যার নীতি এবং বিশেষ করে দর্শনানুভূতির ব্যাখ্যায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। তার সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী কাজ হচ্ছে তার কিতাবুল মানাজির ("আলোকবিদ্যার গ্রন্থ", আরবি: كتاب المناظر), যা ১০১১–১০২১ সালের মধ্যে লেখা এবং লাতিন সংস্করণে বিস্তার লাভ করেছিল অনুমান করা হয়।[10] তিনি একজন বহুবিদ্যাবিশারদ ছিলেন, যিনি একাধারে দর্শন, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসাশাস্ত্রের সম্পর্কেও বিশেষ অবদান রেখেছেন।[11]
হাসান ইবনুল হায়সাম | |
---|---|
ابن الهيثم | |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | আনু. ৯৬৫ (আনু. ৩৫৪ হিজরী) বসরা, বুয়াদ আমিরাত |
মৃত্যু | আনু. ১০৪০ (আনু. ৪৩০ হিজরী) (প্রায় ৭৫ বয়সে) |
ধর্ম | ইসলাম |
আখ্যা | সুন্নি |
ধর্মীয় মতবিশ্বাস | আশআরি |
প্রধান আগ্রহ | |
উল্লেখযোগ্য কাজ | কিতাব আল-মানাজির |
মুসলিম নেতা | |
যাদের প্রভাবিত করেন |
ইবনে আল-হায়সাম ছিলেন যিনি দর্শনানুভূতির ব্যাখ্যার সর্বপ্রথম প্রমাণ দিতে সক্ষম হয়েছিলেন, যে 'আলো কোন বস্তু হইতে প্রতিফলিত হয়ে চোখে আসে বলেই সেই বস্তুটি দৃশ্যমান হয়'।[12] এছাড়াও তিনিই প্রথম যিনি এটাও দেখিয়ে ছিলেন, দর্শনানুভূতির কেন্দ্র চোখে নয়, বরং মস্তিষ্কে।[13] তিনি তার এই তত্ত্বের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলের কাছ থেকে। তিনি আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির একজন প্রাচীনতম প্রবক্তা, যে তত্ত্ব ও অনুমান অবশ্যই পুনরায় পরিচালনাযোগ্য পরীক্ষণের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হয়, এতে তিনি রেনেসাঁর পণ্ডিতগণের পাঁচ শতাব্দী পূর্বেই বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের পরিপূর্ণ ও স্পষ্ট বর্ণনাদাতার মর্যাদা পান।[14][15][16][17] এ কারণের জন্যই, তাকে কখনও কখনও বিশ্বের "প্রথম সত্যিকারের বিজ্ঞানী" হিসাবে বর্ণনা করা হয়।[18]
হায়সাম বসরায় জন্মগ্রহণ করলেও তিনি তার কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় কায়রোর রাজধানী ফাতেমীয়তে কাটিয়েছিলেন এবং বিভিন্ন গ্রন্থ রচনা ও অভিজাত ব্যক্তিবর্গের শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে তিনি তার জীবিকা নির্বাহ করেছিলেন।[19] কখনও কখনও হায়সামকে তার জন্মস্থানের নামানুসারে আল-বসরি বা আল-মিসরী উপনামেও ডাকা হয়ে থাকে।[19][20] এছাড়াও আল-হায়সামকে ফরাসি ইতিহাসবিদ আবু'ল-হাসান বায়হাকি "দ্বিতীয় টলেমি"[21][22] এবং জন পেকহ্যামের "দ্য ফিজিসিস্ট" নামে অভিহিত করেন।[23] ইবনুল হায়সাম অবদান আধুনিক আলোকবিজ্ঞানের পথ প্রশস্ত করার জন্য অনস্বীকার্য।[24]