Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ ফাইনাল ছিল ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপের শেষ এবং বিজয়ী নির্ধারণী খেলা, যা ২০০৬ সালের ৯ জুলাই বার্লিনের ওলিম্পিয়াস্তাদিয়নে অনুষ্ঠিত হয়। খেলাটি ১–১ গোলে শেষ হওয়ায় পেনাল্টি শুটআউট পর্যন্ত গড়ায় যেখানে ইতালি ৪–৩ ব্যবধানে ফ্রান্সকে পরাজিত করে। এটি ছিল ফ্রান্সের খেলোয়াড় জিনেদিন জিদানের ফুটবল ক্যারিয়ারের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক খেলা, এবং তিনি এই খেলায় লাল কার্ড পেয়ে মাঠ থেকে বিতাড়িত হন। ইতালির রক্ষণভাগের খেলোয়াড় মার্কো মাতেরাজ্জির মৌখিক গালির প্রতিক্রিয়ায় তাকে মাথা দিয়ে আঘাত করে ফেলে দেওয়ার ফলশ্রুতিতে জিদানকে লাল কার্ড দেওয়া হয়।
প্রতিযোগিতা | ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ ফাইনাল | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
| |||||||
পেনাল্টি শুটআউটে ইতালি ৫–৩ ব্যবধানে বিজয়ী | |||||||
তারিখ | ৯ জুলাই ২০০৬ | ||||||
ম্যাচসেরা | আন্দ্রেয়া পিরলো (ইতালি) | ||||||
রেফারি | ওরাসিও এলিজোন্দো (আর্জেন্টিনা) | ||||||
দর্শক সংখ্যা | ৬৯,০০০ | ||||||
আবহাওয়া | পরিষ্কার ২৫ °সে (৭৭ °ফা)[1] | ||||||
ইতালি | পর্ব | ফ্রান্স | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
প্রতিপক্ষ | ফলাফল | গ্রুপ পর্ব | প্রতিপক্ষ | ফলাফল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘানা | ২–০ | খেলা ১ | সুইজারল্যান্ড | ০–০ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ১–১ | খেলা ২ | দক্ষিণ কোরিয়া | ১–১ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
চেক প্রজাতন্ত্র | ২–০ | খেলা ৩ | টোগো | ২–০ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
|
ফাইনাল স্ট্যান্ডিং |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
প্রতিপক্ষ | ফলাফল | নকআউট পর্ব | প্রতিপক্ষ | ফলাফল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
অস্ট্রেলিয়া | ১–০ | ১৬ দলের পর্ব | স্পেন | ৩–১ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ইউক্রেন | ৩–০ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ব্রাজিল | ১–০ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জার্মানি | ২–০ (অ.স.প) | সেমি-ফাইনাল | পর্তুগাল | ১–০ |
খেলার শুরুতে সমাপণী অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গায়িকা শাকিরা ও ওয়াইক্লেফ জঁ ঐ বিশ্বকাপের থিম সঙ্গীত হিপস ডোন্ট লাই গানের বাম্বু সংস্করণটি পরিবেশন করেন।
ফাইনাল খেলা শুরুর ২০ মিনিটের মাঝেই উভয় দল গোল পেয়ে যায়। জিনেদিন জিদান খেলার ৭ম মিনিটে একটি বিতর্কিত পেনাল্টি থেকে প্রথম গোল করেন।[2] যা ক্রসবারের নিচের অংশে স্পর্শ করে গোলপোস্টের ভেতরে ঢুকে যায়। খেলার ১৯তম মিনিটে মাতেরাজ্জি গোল করে ইতালিকে সমতায় ফেরান, আন্দ্রেয়া পিরলোর কর্নার কিক থেকে গোলপোস্টের প্রায় ৬ গজ দূর থেকে হেডে তিনি গোলটি করেন। উভয় দলই সাধারণ সময়ের মধ্যেই জয়সূচক গোল কলার সুযোগ পায়: খেলার ৩৫তম মিনিটে ইতালির লুকা তনির শট ক্রসবারে আঘাত করে, পরবর্তীতে হেড থেকে করা একটি গোল অফসাইড হিসেবে বাতিল হয়, অন্যদিকে খেলার ৫৩তম মিনিটে ফ্রান্সকে একটি সাম্ভব্য পেনাল্টি দেয়া হয় নি, ইতালির জানলুকা জামব্রত্তা ফ্রান্সের ফ্লোরাঁ মালুদাকে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ট্যাকল করলে তিনি পরে যান। ফ্রান্সের পক্ষেই জয়ের সুযোগ বেশি ছিল, তারা গোলপোস্টে অধিক সংখ্যক সঠিক শট নিয়েছিল। যদিও তারা গোল করতে ব্যর্থ হয় এবং খেলাটি ১–১ সমতাতেই থেকে যায়।
৯০ মিনিট শেষে খেলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় খেলাটি অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। ইতালির গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন অতিরিক্ত সময়ে দূর্দান্তভাবে জিদানের মাথা দিয়ে করা একটি শট রুখে দেন। যা ফ্রান্সের পক্ষে জয়সূচক গোল হতে পারত। বুফন বলটিকে আলতো আঘাতে ক্রসবারের উপরে পাঠিয়ে দেন।
মাঠে জিদান এবং মাতেরাজ্জি পরস্পরের নিকটে থাকাকালে মাতেরাজ্জি জিদানের জার্সি ধরে টানেন এরপর তারা নিজেদের মধ্যে সংক্ষিপ্তভাবে শব্দ বিনিময় করেন এবং জিদান মাতেরাজ্জির কাছে থেকে চলে যেতে শুরু করেন। কিছুক্ষন পর, জিদান হঠাত্ করে থেমে যান এবং পুনরায় উল্টো দিকে ঘুড়ে এসে মাতেরাজ্জির বুকে মাথা দিয়ে আঘাত করে তাকে মাটিতে ফেলে দেন। খেলা সাময়িকভাবে থেমে থাকার পরও, রেফারি ওরাসিও এলিজোন্দো ঘটনাটি দেখতে পাননি। ম্যাচ অফিসিয়ালদের প্রতিবেদন অনুসারে, চতুর্থ অফিসিয়াল লুইস মেদিনা কান্তালেহো হেডসেটের মাধ্যমে এলিজোন্দোকে ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত করেন।[3]
সহকারীদের সাথে পরামর্শ করার পর, খেলার ১১০তম মিনিটে এলিজোন্দো জিদানকে লাল কার্ড দেখান।[4] এটি জিদানের ক্যারিয়ারের ১৪তম লালা কার্ড ছিল। এবং তিনিও ক্যামেরুনের রিগোবের্ত সং এর মত দুইটি আলাদা বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় লাল কার্ড পাওয়া খেলোয়াড় ছিলেন।[5] এবং তিনি বিশ্বকাপের ফাইনালে লাল কার্ড পাওয়া চতুর্থ খেলোয়াড় ছিলেন, এছাড়া অতিরিক্ত সময়ে লাল কার্ড পাওয়া প্রথম খেলোয়াড় ছিলেন।[6]
অতিরিক্ত সময়েও কোন গোল না হওয়ায়, খেলাটি পেনাল্টি শুটআউটে গড়ায়, যেখানে ৫–৩ ব্যবধানে জয় লাভ করে ইতালি। ফ্রান্সের দাভিদ ত্রেজেগে, যিনি ইউরো ২০০০ এর ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে গোল্ডেন গোল করেছিলেন, একমাত্র খেলোয়াড় যিনি বিশ্বকাপের ফাইনালে পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারেননি। তার স্পট কিক ক্রসবারে আঘাত করে।[7]
ভিডিও চিত্র থেকে মাতেরাজ্জির জিদানকে শব্দগতভাবে প্ররোচিত করার প্রমাণ পাওয়ার পর, ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমের তিনটি সংবাদপত্র মাতেরাজ্জি কি বলেছিল তা জানার জন্য ঠোঁটের পাঠক নিযুক্ত করে। দ্য টাইমস, দ্য সান এবং ডেইলি স্টার দাবী করে যে মাতেরাজ্জি জিদানকে বলেছিলেন, "সন্ত্রাসী বেশ্যা পুত্র"। ২০০৮ সালে, দ্য সান এবং ডেইলি স্টার মাতেরাজ্জির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করে,[8][9] এবং মাতেরাজ্জি তিনটি ব্রিটিশ সংবাদপত্র থেকে ক্ষতিপূরণ লাভ করে।[10]
জিদান শুধুমাত্র আংশিকভাবে ব্যাখ্যা করেন যে তার মা সম্পর্কে কঠোর অপমানের পুনরাবৃত্তির কারণে তিনি এমন প্রতিক্রিয়া করেছেন।[11] মাতেরাজ্জি জিদানকে বাজে কথা বলার কথা স্বীকার করেন, কিন্তু যুক্তি দেখান যে জিদানের ব্যবহার খুবই অহংকারী ছিল এবং তার মন্তব্য ছিল তুচ্ছ।[12] মাতেরাজ্জি এছাড়াও জোড় দিয়ে বলেন যে তিনি জিদানের মাকে অপমান করেননি (যিনি সেসময় অসুস্থ ছিলেন), তিনি বলেন, "আমি তার মা সম্পর্কে কথা বলিনি। আমার বয়স যখন পনের, তখন আমি আমার মাকে হারিয়েছি, এবং এখনও এ সম্পর্কে কথা বললে আমি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি।"[13]
জিদান পরবর্তীকালে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন, তবে যোগ করেন যে তিনি তার অপরাধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন না, কারণ তিনি মনে করেন যে তা মাতেরাজ্জির কর্মকে ক্ষমার যোগ্য করে তুলবে।[14] দুই মাস পর, মাতেরাজ্জি ঘটনাটি সম্পর্কে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন, তিনি বলেন যে যখন তিনি জিদানের জার্সি ধরে টান দেন, তখন জিদান বলেন, "যদি তুমি আমার শার্ট চাও, তাহলে আমি এটি তোমাকে পরে দেব," এবং তিনি জিদানের কথার উত্তরে বলেন যে তাহলে তিনি তার বোনকেই পছন্দ করেন। তবে মাতেরাজ্জি সাক্ষাত্কারে বলেন যে তিনি জানতেন না জিদানের নিজের কোন বোন আছে।[15] ঘটনার এক বছরেরও বেশি সময় পর, মাতেরাজ্জি নিশ্চিত করেন যে জিদানের প্রতি তার সুনির্দিষ্ট কথাটি ছিল: "আমি সেই বেশ্যাকে পছন্দ করি যে তোমার বোন"।[16]
ইতালি
|
ফ্রান্স
|
|
|
ম্যান অফ দ্য ম্যাচ:
সহকারী রেফারি:
|
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.