২০০১ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সংঘর্ষ
From Wikipedia, the free encyclopedia
২০০১ বাংলাদেশ–ভারত সীমান্ত সংঘর্ষ ছিল ২০০১ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি ধারাবাহিক সশস্ত্র সংঘর্ষ। দুই রাষ্ট্রের মধ্যে দুর্বলভাবে চিহ্নিত আন্তর্জাতিক সীমান্তে বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
২০০১ বাংলাদেশ–ভারত সীমান্ত সংঘর্ষ | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
| |||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||
বাংলাদেশ | ভারত | ||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||
আ. ল. ম. ফজলুর রহমান | গুরবচন জগৎ | ||||||
জড়িত ইউনিট | |||||||
বাংলাদেশ রাইফেলস | বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স | ||||||
শক্তি | |||||||
পদুয়া অনুপ্রবেশ: ৮০০ বিডিআর কর্মী[1] |
প্রাথমিক অনুপ্রবেশ: পদুয়াতে ৩১ জন সীমান্তরক্ষী, ৩০০ অতিরিক্ত বর্ডার গার্ড রিইনফোর্সমেন্ট বড়াইবাড়িতে যুদ্ধের জন্য পাঠানো হয়।[2][5] মানকাচরে চূড়ান্ত সংঘর্ষ: ৫০-৬০[1] মোট শক্তি: ৩৯১ | ||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||
৩ সৈন্য নিহত, ৫ আহত |
১৬ সৈন্য নিহত[6][7][8][9][10] | ||||||
২৪ জন বেসামরিক নাগরিক আহত[12] ১০,০০০ জন বেসামরিক নাগরিক সাময়িকভাবে বাস্তুচ্যুত[12] |
সংঘর্ষ ২০০১ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই এপ্রিল শুরু হয়,[13] যখন প্রায় ৮০০ জন থেকে ১০০০ জন বাংলাদেশী আধাসামরিক সৈন্যের একটি বাহিনী পদুয়া/পিরদিওয়াহ গ্রাম আক্রমণ করে ও দখল করে, স্থিতাবস্থা ভঙ্গ করে এবং সেখানকার বেসামরিক নাগরিকদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করে।[3][4][14] বাংলাদেশের দাবি, ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে গ্রামটি অবৈধভাবে ভারতের দখলে ছিল।[15][6] পদুয়া/পিরদিওয়াহ গ্রামে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) চৌকিটি ঘিরে ফেলা হয়েছিল, যার মধ্যে ৩১ জন বিএসএফ সৈন্য আটকা পড়েছিল। যাইহোক, উভয় পক্ষ তাদের গোলাগুলি জারি রেখে আলোচনা শুরু করে। পরের দিনগুলিতে, প্রায় তিন কোম্পানি বিএসএফ ফাঁড়িটিকে শক্তিশালী করার জন্য এগিয়ে যায়।[1] পরে কোনো রক্তপাত ছাড়াই এই ঘটনার সমাধান করা হয়।
এই অচলাবস্থার পরে, বাংলাদেশ–ভারত সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফ আধাসামরিক বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা এবং নিবিড় টহল শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কয়েকদিন পরে, ৩০০ জন বিএসএফ সৈন্যের একটি ছোট দল পদুয়া/পিরদিওয়াহ থেকে ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে বড়াইবাড়ি গ্রামের কাছে বাংলাদেশী ভূখণ্ডে প্রবেশ করে, পাড়ুয়ায় ঘটে যাওয়া আগের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ভারত পাল্টা আক্রমণ হিসেবে অনুপ্রবেশকে ব্যবহার করেছিল। ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনী ২০০১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই এপ্রিল বাংলাদেশী ভূখন্ডে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই, ১১ জন বাংলাদেশী সীমান্ত রক্ষীদের দ্বারা অতর্কিত আক্রমণ করা হয় এবং বিডিআর ফাঁড়িতে হামলা প্রতিহত করা হয়েছে;[6] বাংলাদেশী সীমান্ত রক্ষীদের শত শত গ্রামবাসী সাহায্য করেছিল।[6]
আটকের পর, ভারতীয় সৈন্যদের মৃতদেহ ২০ই এপ্রিল ভারতে ফেরত পাঠানো হয়।[10] উভয় পক্ষ অস্ত্র-সম্বরণে সম্মত হওয়ার পর, অবশেষে ২০০১ খ্রিস্টবাদে ২১শে এপ্রিল সংঘর্ষ শেষ হয়।[10] সংঘর্ষে ১৬ জন ভারতীয় সৈন্য ও তিনজন বাংলাদেশী সীমান্তরক্ষীসহ মোট ২১ জন নিহত হয়।
সংঘর্ষটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্কের উন্নতির জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল। দুই রাষ্ট্রের মধ্যে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে স্থল সীমানা চুক্তি সহ সংঘর্ষের বছরগুলিতে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল, যা ভারত থেকে বাংলাদেশে ১১১ টি ছিটমহল (১৭,১৬০.৬৩ একর) বিনিময়ের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল এবং পারস্পরিকভাবে, পরবর্তীতে ৫১ টি ছিটমহল (৭,১১০.০২ একর) ভারতে হস্তান্তর করেছিল।[16]