Loading AI tools
হিন্দুদের পবিত্র তীর্থঘাট উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হর কি পৌরি ভারতের উত্তরাখণ্ড প্রদেশের হরিদ্বারে গঙ্গার তীরবর্তী একটি বিখ্যাত ঘাট। পবিত্র নগরী হরিদ্বারের অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্য এই শ্রদ্ধেয় স্থানটি প্রধান। আক্ষরিকভাবে, "হর" শব্দের অর্থ দেবতা "শিব", "কি" হচ্ছে বিভক্তিসূচক বর্ণগুচ্ছ যার অর্থ "এর" এবং "পাউরি" এর অর্থ "সিড়ি"।[1] হর কি পৌরি অর্থ দাড়ায় শিব বা বিষ্ণুর পদচিহ্ন।[2] [3] বিশ্বাস করা হয় যে, ভগবান বিষ্ণু এবং শিব বৈদিক যুগে হর কি পৌড়িতে এসেছিলেন। [4][5]
ভৌগলিকভাবে এটা ঠিক সেই স্থান যেখানে গঙ্গা গঙ্গোত্রী হিমবাহ ছেড়ে ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমিতে প্রবেশ করেছে। ঘাটটি গঙ্গা খালের পশ্চিম তীরে বিদ্যমান, এই খালের মাধ্যমে গঙ্গার প্রবাহ উত্তর দিকে দোয়াব অঞ্চলে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। হর কি পৌরি এমন এক অঞ্চল যেখানে হাজারো তীর্থযাত্রী একত্রিত হন। প্রতি বারো বছর পর এখানে একটি কুম্ভ মেলা এবং প্রতি ছয় বছর অন্তর একটি অর্ধ-কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। উপরন্তু প্রতি বছর এপ্রিল (চৈত্র-বৈশাখ) মাসে পাঞ্জাবি ফসলোৎসব বৈশাখী পালিত হয়।[6][7][8]
কথিত আছে যে, রাজা বিক্রমাদিত্য খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে তাঁর ভাই ভার্তৃহরির স্মরণে এটি নির্মাণ করেছিলেন যিনি গঙ্গার তীরে এই স্থানে ধ্যান করতে এসেছিলেন। হর কি পৌরির যেখানে সন্ধ্যাবেলা গঙ্গা আরতি হয় এবং সবচেয়ে পবিত্ররূপে বিবেচিত হয় তা হল ব্রহ্মকুণ্ড। সমুদ্র মন্থনের পর বিষ্ণুর বাহন গরুড় যখন কলসিতে করে অমৃত নিয়ে উড়ে যাচ্ছিলেন তখন অমৃতের একটি ফোঁটা ঠিক এখানেই পড়ে বলে ধরা বিশ্বাস করা হয়। হর কি পৌরি ঘাট প্রতিদিন হাজারো মানুষের গঙ্গা স্নানের প্রত্যক্ষদর্শী। স্থানটি খুব শুভ হিসেবে বিবেচিত হয়। ক্রমাগতভাবে কুম্ভ মেলায় ভিড় বাড়তে থাকায় বছরের পর বছর ধরে ঘাটের পরিধি বড় রকমে সম্প্রসারণ ও সংস্কার করা হয়েছে। পাহাড়ের সিড়িতে বেশ কয়েকটি মন্দির উত্থান হয়েছে এসেছে যাদের অধিকাংশই ১৯শ শতকের শেষদিকে নির্মিত।
এই ঘাটগুলির একটি সম্প্রসারণ হয়েছিল আগ্রার জমিদার হরজ্ঞান সিং কাতারা উদ্যোগে ১৯৩৮ সালে,আরেকটি হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। [9]
প্রতি সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের সময় হর কি পৌরির ঘাটের স্রোতে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেওয়া হয় যেগুলো গঙ্গার স্রোতের সাথে প্রবাহিত হয়।পুরোহিতেরা এসময় পুরানো ঐতিহ্যে গঙ্গা-আরতি প্রদর্শন করেন এবং বিপুল সংখ্যক তীর্থার্থী গঙ্গার উভয় তীরে সমবেত হয়ে গঙ্গার প্রশস্তিগীত গান। ঘাটের মন্দির প্রাঙ্গনে পুরোহিতেরা হাতে বড় বড় অগ্নিপাত্র ধরে রাখেন এবং ঘণ্টা ধ্বনি বাজানোর তালে তালে এবং মন্ত্র জপ করতে থাকেন। ভক্তরা তখন গঙ্গার জলের উপর আশা এবং শুভেচ্ছার প্রতীক স্বরূপ পাতা ও ফুলের তৈরি দিয়া জ্বালিয়ে দেন। তবে গ্রহণের ন্যায় কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে সেই অনুযায়ী সময়সূচীর পরিবর্তন করা হয়।
প্রতিবছর বিজয়া দশমী রাতে নদীর তলদেশ পরিষ্কার ও ঘাটের সংস্কারের জন্য গঙ্গা খালের পানি আংশিকভাবে শুকিয়ে ফেলা বা সরিয়ে নেয়া হয় আর সচরাচর দীপাবলির রাতে খালটি পুনরায় ভরিয়ে ফেলা হয় হয়। তবে গঙ্গা আরতি যথারীতি প্রতিদিনের মতই অনুষ্ঠিত হয়। এটি বিশ্বাস করা হয় যে গঙ্গা দেবী বিজয়া দশমীর দিনে তার পৈতৃক বাড়িতে ঘুরতে যান এবং ভাইফোঁটার দিন ফিরে আসেন। [10][11]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.