শুমেকার-লেভি ৯ ধূমকেতু
From Wikipedia, the free encyclopedia
শুমেকার-লেভি ৯ ধূমকেতু (ইংরেজি: Comet Shoemaker–Levy 9) ছিল ১৯৯২ সালের জুলাই মাসে বিচূর্ণীভূত এবং ১৯৯৪ সালের জুলাই মাসে বৃহস্পতির সঙ্গে সংঘৃষ্ট একটি ধূমকেতু। ইতিপূর্বে এই ধূমকেতুটিকে ডি/১৯৯৩ এফ২ (ইংরেজি: D/1993 F2) নামে চিহ্নিত করা হয়েছিল। বৃহস্পতির সঙ্গে এই ধূমকেতুর সংঘাতের ঘটনাটিই সৌরজগতের বস্তুগুলির মধ্যে পৃথিবী-বহিঃস্থ সংঘর্ষের প্রথম ঘটনা যেটিকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা গিয়েছিল।[4] জনপ্রিয় গণমাধ্যমে এই ঘটনাটির বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশিত হয়েছিল। সারা বিশ্বের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সযত্নে ধূমকেতুটি পর্যবেক্ষণ করেন। এই সংঘর্ষের ফলে বৃহস্পতি সম্পর্কে কিছু নতুন তথ্যও পাওয়া যায় এবং অভ্যন্তরীণ সৌরজগতে মহাকাশ দূষণের পরিমাণ হ্রাস করার ক্ষেত্রে এই গ্রহের সম্ভাব্য ভূমিকাটির উপর বিশেষভাবে আলোকপাত করে।
শুমেকার-লেভি ৯, সংঘাতের ফলে বিচূর্ণ ধূমকেতু[1] (সামগ্রিকভাবে ২১টি খণ্ড, ১৯৯৪ সালের জুলাই মাসে গৃহীত আলোকচিত্র) | |
আবিষ্কার | |
---|---|
আবিষ্কারক: | ক্যারোলিন শুমেকার ইউজিন শুমেকার ডেভিড লেভি |
আবিষ্কারের তারিখ: | ২৪ মার্চ, ১৯৯৩ |
কক্ষীয় বৈশিষ্ট্যA | |
নতি: | ৯৪.২° |
মাত্রা: | ১.৮ কিমি (১.১ মা)[2][3] |
১৯৯৩ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্যারোলিন ও ইউজিন এম. শুমেকার এবং ডেভিড লেভি এই ধূমকেতুটি আবিষ্কার করেছিলেন।[5] সেই সময় শুমেকার-লেভি ৯ (এসএল৯) বৃহস্পতির মাধ্যাকর্ষণে আবদ্ধ হয়ে গ্রহটিকে প্রদক্ষিণ করছিল। সেই বছর ২৪ মার্চ তারিখের রাতে ক্যালিফোর্নিয়ায় পালোমার মানমন্দিরে ৪৬ সেমি (১৮ ইঞ্চি) স্মিট দূরবীন যন্ত্রে তোলা একটি আলোকচিত্রে এই ধূমকেতুর অবস্থানটি ধরা পড়ে। এটিই ছিল কোনও গ্রহকে প্রদক্ষিণকারী প্রথম পর্যবেক্ষিত সক্রিয় ধূমকেতু। সম্ভবত ২০-৩০ বছর আগে এটি বৃহস্পতির মাধ্যাকর্ষণে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল।
বৈজ্ঞানিকদের পরিগণনার ফলে জানা গিয়েছে যে, এটির অস্বাভাবিক রকমের খণ্ডিত রূপটির কারণ ১৯৯২ সালের জুলাই মাসে ধূমকেতুটির পূর্বতন নিকটতর অগ্রসরণ। সেই সময় শুমেকার-লেভি ৯ ধূমকেতুর কক্ষপথ বৃহস্পতির রশ সীমার অভ্যন্তরভাগ দিয়ে অতিক্রম করেছিল এবং বৃহস্পতির জোয়ার-সংক্রান্ত বল ধূমকেতুটিকে খণ্ডিত করেছিল। পরবর্তীকালে ধূমকেতুটি পর্যবেক্ষিত হয়ে খণ্ডাংশগুলির একটি শ্রেণি হিসেবে, যেগুলির মধ্যে সর্ববৃহৎ খণ্ডটির ব্যাস ছিল ২ কিমি (১.২ মা)। এই খণ্ডাংশগুলি ১৯৯৪ সালের জুলাই মাসের ১৬ ও ২২ তারিখে প্রায় ৬০ কিলোমিটার/সেকেন্ড (৩৭ মাইল/সেকেন্ড) (বৃহস্পতির পলায়নী গতিবেগ) বা ২,১৬,০০০ কিলোমিটার/ঘণ্টা (১,৩৪,০০০ মাইল/ঘণ্টা) গতিতে বৃহস্পতির দক্ষিণ গোলার্ধে আঘাত করে। সংঘর্ষের ফলে সৃষ্ট সহজলক্ষ্য ক্ষতচিহ্নগুলি বৃহৎ লাল বিন্দুর তুলনায় অধিকতর সহজে দৃশ্যমান হয় এবং অনেক মাস সেগুলির অস্তিত্ব বজায় থাকে।