Loading AI tools
কলকাতা মেট্রোর একটি ভূগর্ভস্থ স্টেশন উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন কলকাতা মেট্রোর পূর্ব-পশ্চিম লাইনের একটি স্টেশন। শিয়ালদহ রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে দক্ষিণ প্রান্তিকের (সাউথ টার্মিনাল) নিকট অবস্থিত। বর্তমানে স্টেশনটিতে পরীক্ষামূলক রেল পরিষেবা চালু রয়েছে।[1][2][3]
কলকাতা মেট্রো স্টেশন | |||||||||||
অবস্থান | শিয়ালদহ, রাজাবাজার, কলকাতা - ৭০০০০৯ | ||||||||||
স্থানাঙ্ক | ২২.৫৬৬১৭৮° উত্তর ৮৮.৩৭১১৬৩° পূর্ব | ||||||||||
মালিকানাধীন | কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন | ||||||||||
পরিচালিত | কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন | ||||||||||
লাইন | লাইন ২ | ||||||||||
প্ল্যাটফর্ম | ৩ টি (১ টি দ্বীপ প্ল্যাটফর্ম এবং ১ টি পার্শ্ব প্ল্যাটফর্ম) | ||||||||||
রেলপথ | ৩ | ||||||||||
সংযোগসমূহ | কলকাতা শহরতলি রেল | ||||||||||
নির্মাণ | |||||||||||
গঠনের ধরন | ভূর্গভস্থ | ||||||||||
গভীরতা | ১৬.৫ মিটার (৫৪ ফু) | ||||||||||
পার্কিং | হ্যাঁ | ||||||||||
সাইকেলের সুবিধা | না | ||||||||||
অন্য তথ্য | |||||||||||
অবস্থা | চালু | ||||||||||
ভাড়ার স্থান | পূর্ব-পশ্চিম | ||||||||||
ইতিহাস | |||||||||||
চালু |
| ||||||||||
বৈদ্যুতীকরণ | হ্যাঁ | ||||||||||
পরিষেবা | |||||||||||
| |||||||||||
অবস্থান | |||||||||||
স্টেশনটি পূর্ব-পশ্চিম মেট্রো লাইনের অংশ হিসাবে প্রস্তাব করা হয়। এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ ২০০৯ সালে শুরু হয়। স্টেশনটির নির্মাণ সুভাষ সরোবর থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত সুড়ঙ্গের অংশ হিসাবে শুরু হয়। পূর্ব-পশ্চিম লাইনকে শিয়ালদহ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত প্রসারিত করার সাথে সাথে স্টেশনটি সম্পূর্ণ ভাবে চালু হবে।
মেট্রো স্টেশনটি শিয়ালদহ রেলওয়ে স্টেশনের মাধ্যমে শহরতলির রেলপথের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। এই মেট্রো স্টেশনের পূর্ব দিকে ফুলবাগান মেট্রো স্টেশন ও পশ্চিম দিকে এসপ্ল্যানেড মেট্রো অবস্থিত। ১১ই জুলাই ২০২২ স্টেশনটির শুভ উদ্বোধন হয় এবং ১৪ই জুলাই ২০২২ যাত্রী পরিষেবা চালু হয়। বর্তমানে স্টেশনটি সল্ট লেক সেক্টর ৫ এর সাথে যুক্ত।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ভিত্তিপ্রস্তর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ২০০৯ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে স্থাপন করেছিলেন। অনুষ্ঠানে তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন।[4] প্রাথমিকভাবে ২০১৪ সালের মধ্যে হুগলি নদীর পূর্ব ও পশ্চিম তীরকে যুক্তকারী ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা শুরু করার পরিকল্পনা করা ছিল। এই পরিকল্পনায় প্রান্তের স্টেশন হিসাবে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ ও পশ্চিম প্রান্তের স্টেশন হিসাবে হাওড়া ময়দানকে নির্বাচন করা হয়। এই একই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে কলকাতা মেট্রোর সংযোগ ঘটাতে শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।[4]
শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন তৈরি হয়েছে টপ-ডাউন পদ্ধতিতে। মাটির নিচে শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনটি ২০৫ মিটার লম্বা, ৪৩ মিটার পরিসরের। পুরনো মেট্রোর মতো ধাপ কেটে বিপুল জায়গার মাটি বার করার নির্মাণ পদ্ধতি এখন অচল। নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী, মাটি বার করার আগে তার চারপাশে এক মিটার পুরু কংক্রিটের শক্ত দেওয়াল (ডায়াফ্রাম ওয়াল) তৈরি করা হয়েছে। এর পরে উপর থেকে যন্ত্রের সাহায্যে ধীরে ধীরে সেটি নির্দিষ্ট গভীরতায় পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ভাবে চারদিক ঘিরে ফেলে মাটি সরানো হয়েছে। একই সঙ্গে ছাদ তৈরি করতে করতে নিচে নামা হয়েছে। মেট্রো কর্তাদের ব্যাখ্যা, মাটির ধস নামা ঠেকাতে এই ব্যবস্থা। কারণ উপর থেকে ছাদ ঢালাই করতে করতে নিচে নামলে, চারপাশের মাটির চাপ দেওয়ালে সমান ভাবে পড়ে। পাশাপাশি এর ফলে নির্দিষ্ট পরিসরের বেশি মাটি কাটতে হয় না বলে জায়গা, পরিশ্রম এবং অর্থ বাঁচে।
ফুলবাগান সহ শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনটি নির্মাণে মোট ১২৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল।[2]
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সঙ্গে শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনটি ২০১৪ সালে চালু হওয়ার কথা থাকলেও নির্মাণ কাজের বিলম্ব ও জমিজটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে ২০২০ সালে মেট্রো করিডরের একাংশ সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা উদ্বোধন করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ছ'টি স্টেশনের মধ্যে শুরু হয়েছিল যাত্রী পরিষেবা। একই বছরের ৪ অক্টোবর ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ফুলবাগান স্টেশন পর্যন্ত মেট্রো রেল পরিষেবা চালু হয়েছিল। এই স্টেশনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করার জন্য রেলওয়ে নিরাপত্তা কমিশনার ২০২২ সালের মার্চ মাসে অনুমোদন দিয়েছিলেন। এরপরে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে স্টেশনটির উদ্বোধনের সম্ভাব্য তারিখ ২০২২ সালের ১৫ই এপ্রিল করা হয়েছিল।[5] তবে, রেলওয়ে নিরাপত্তা কমিশনার দ্বারা নির্দেশিত কিছু সমস্যার কারণে পয়লা বৈশাখে উদ্বোধন স্থগিত করা হয়েছিল। এর পরে মেট্রো রেলওয়ের পক্ষ থেকে উদ্বোধনের তারিখ ২০২২ সালের ১১ই জুলাই স্থির করা হয়েছিল। কেন্দীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানী ২০২২ সালের ১১ই জুলাই শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনের উদ্বোধন করেন। স্টেশনটি থেকে যাত্রী পরিষেবা ২০২২ সালের ১৪ই জুলাই শুরু হয়।[6]
কলকাতা মেট্রোর লাইন ২-এর অন্তর্গত শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনটি গঠনগতভাবে ভূর্গভস্থ মেট্রো স্টেশন। মাটির প্রায় ১৫ মিটার নিচে অর্থাৎ ৫০ ফুটের বেশি গভীরে নির্মিত হয়েছে হচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ। শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনও ওই গভীরতাতেই নির্মিত।
জি | রাস্তার স্তর | প্রস্থান/প্রবেশ |
এম | মধ্যবর্তী তলা | ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, স্টেশন এজেন্ট, টিকিট/টোকেন, দোকান |
পি১ | পার্শ্ব প্ল্যাটফর্ম, দরজা বাম দিকে খুলবে | |
পূর্বদিকগামী | দিকে →ফুলবাগান→→ | |
দ্বীপ প্ল্যাটফর্ম, দরজা ডানদিকে খুলবে | ||
পশ্চিমদিকগামী | দিকে ←এসপ্ল্যানেড← | |
পার্শ্ব প্ল্যাটফর্ম, দরজা বাম দিকে খুলবে |
স্টেশন থেকে ফুলবাগানগামী সুড়ঙ্গ থেকে একটি ক্রসওভার রয়েছে। ক্রসওভারটির মধ্যেমে পূর্বদিকগামী সুড়ঙ্গ ও পশ্চিমদিকগামী সুড়ঙ্গের মধ্যে সংযোগ ঘটানো হয়। স্টেশনের মধ্যে একটি পূর্বদিকগামী ও একটি পশ্চিমদিকগামী মোট দু'টি রেলট্রাক রয়েছে। এসপ্লানেডগামী যমজ সুড়ঙ্গ দু'টির মধ্যে কোন ক্রসওভার নেই।
স্টেশনটি থেকে রবিবার ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৭ ঘটিকা থেকে রাত ৯ ঘটিকা পর্যন্ত কলকাতা মেট্রো রেলের পক্ষ থেকে রেল পরিষেবা পরিচালনা করা হয়।[2] শিয়ালদা মেট্রো স্টেশন থেকে ব্যস্ত সময়ে প্রতি ১০ মিনিট অন্তর ও অন্য সময়ে ১২ মিনিট অন্তর ট্রেন চলাচল করে। ২০২২ সালের জুলাই মাসের তথ্যমতে স্টেশনটি থেকে আপ ও ডাউন মিলিয়ে প্রতিদিন মোট ১০০ টি ট্রেন পরিষেবা পরিবেশন করা হয়।
শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন থেকে ট্রেনের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা ও সর্বোচ্চ ভাড়া ২০ টাকা।[2]
স্টেশনে মোট তিনটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। সমগ্র স্টেশনটি কেন্দ্রীয়ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। আপ ও ডাউন লাইনের জন্য দু’টি প্ল্যাটফর্ম ছাড়াও মাঝে ‘দ্বীপ’ প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, এই স্টেশনে ট্রেনগুলি দরজা খুলে দু’দিকেই দেওয়া হয়। ফলে যাত্রীরা ট্রেনে দ্রুত ওঠা-নামা করতে সক্ষম হন। দৃষ্টিহীনদের যাতায়াতের জন্য স্টেশনের প্রবশপথ থেকেই বিশেষ ট্যাক-টাইলস (হলুদ রঙের অসমান টাইলস) রয়েছে। শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনে প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের দু’প্রান্তে দু’টি করে মোট ৬ টি চলমান সিঁড়ি রয়েছে। মোট পাঁচটি প্রদেশ প্রবেশ/প্রস্থান পথ, ৫৩টি সিসি ক্যামেরা, ২৯টি টিকিত বুকিং কাউন্টার ও ৫টি লিফট রয়েছে। সমগ্র স্টেশন জুড়ে যাত্রীদের স্টেশনের একটি তল থেকে অন্য তলে চলাচলের জন্য মোট ১৮ টি চলমান সিঁড়ি রয়েছে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে স্টেশন থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দু’প্রান্তে তিনটি করে মোট ছ’টি রাস্তা রয়েছে। এ ছাড়াও দু’দিক থেকে দমকলকর্মীদের জন্য আলাদা পথ রাখা হয়েছে।[7][8]
বয়স্ক নাগরিকদের জন্য স্টেশনে পৃথক সুবিধা রয়েছে। স্টেশনে তিন আসন বিশিষ্ট ২৪টি বেঞ্চ, এছাড়া খাওয়ার জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা রয়েছে। স্টেশনে কুপন বা কার্ড ব্যবহার করে বয়স্ক নাগরিকগণ সাধারণের থেকে পৃথক ও অধিক চওড়া পথ ব্যবহার করতে সক্ষম।[7]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.