Loading AI tools
বাংলাদেশের একটি শহর উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মেহেরপুর বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের একটি শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি খুলনা বিভাগের মেহেরপুর জেলার সদরদপ্তর। এর আয়তন ১৫.৯ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ৪৩,১৩৩ জন।এটি একটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা।
মেহেরপুর | |
---|---|
শহর | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
জেলা | মেহেরপুর জেলা |
উপজেলা | ৩টি। মেহেরপুর সদর উপজেলা, মুজিবনগর, এবং গাংনী |
সরকার | |
• ধরন | পৌরসভা |
• শাসক | মেহেরপুর পৌরসভা |
• মেয়র | মাহফুজুর রহমান রিটন |
আয়তন | |
• মোট | ১৫.৯ বর্গকিমি (৬.১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা | |
• মোট | ৪৩,১৩৩ |
• জনঘনত্ব | ২,৭০০/বর্গকিমি (৭,০০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বাংলাদেশ সময় (ইউটিসি+৬) |
মেহেরপুর নামকরণের পিছনে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে, ঐতিহাসিক কুমুদনাথ মল্লিকের মতে, কেহ কেহ এই স্থানটিকে মিহির-খনার বাসস্থান বলিয়াও নির্দেশ করেন এবং মিহিরের নাম হইতে মিহিরপুর, অপভ্রংশে মেহেরপুর কল্পনা করেন। নামকরণ সম্পর্কিত এ ধারণাটি অনুমান ও কল্পনানির্ভর। নামকরণ নিয়ে আরো একটি মতামত রয়েছে। ড. আশরাফ সিদ্দিকীর মতে, ১৬শ শতাব্দীর একজন দরবেশ মেহের আলী শাহের নামে এ অঞ্চলের নামকরণ হয়েছে।
মেহেরপুর একটি প্রাচীন জনপদ ছিল। ১৭৬৫ সালে কোম্পানি কর্তৃক দেওয়ানি লাভের ফলে মেহেরপুরও চলে যায় কোম্পানি শাসনে। ১৭১০ সালে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র নদীয়ার গদীনসীন হন। এই নদীয়ার অন্যতম অঞ্চল ছিল মেহেরপুর এবং রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের শাসনাধীনে মেহেরপুর দীর্ঘদিন শাসিত হয়েছে। ১৭৫০ সালের ইতিহাস থেকে জানা যায়, মেহেরপুর শহর ষোড়শ শতাব্দীতে স্থাপিত হলেও তৎকালীন সময়েই এখানে জনবসতি গড়ে উঠেনি। কেননা, ১৭৫০ সালে মোগল শাসনের অধীন নবাবদের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৫০ সালে বাংলার সুবাদার আলীবর্দী খাঁ মেহেরপুরের বাগোয়ান গ্রামে নদীপথে আসতেন শিকার করতে। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধের পূর্ব পযর্ন্ত রাজা গোয়ালা চৌধুরী নদীয়া সদর কৃষ্ণনগর থেকে সরাসরি মেহেরপুর পযর্ন্ত সড়ক নির্মাণ করেছিলেন। ১৮৫৪ অথবা ১৮৫৭ সালে মেহেরপুর মুহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময়ে করিমপুর,তেহট্র ও চাপড়া ভারতে অন্তভূর্ক্ত হয়, শুধুমাত্র গাংনী ও মেহেরপুর সদর নিয়ে মেহেরপুর মহকুমা গঠিত হয়। ১৯৮৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মেহেরপুর জেলা শহরের মর্যাদা লাভ করে।
মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার ১০ এপ্রিল ১৯৭১ সালে গঠন করা হয়, এরপর তৎকালীন ভবেরপাড়ার বৈদ্যনাথতলার (বর্তমান মুজিবনগরের) আম্রকাননে ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ সালে সরকার শপথ গ্রহণ করে। এই সরকারের রাষ্ট্রপতি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এই স্থানের নামকরণ মুজিবনগর করেছিলেন। তখন সরকারি নথির শীর্ষে লেখা থাকত ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, মুজিবনগর’। সরকারের ঠিকানা ছিল মুজিবনগর। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ পর্যন্ত মুজিবনগর ছিল সরকারের রাজধানী।
মুজিবনগর সরকারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখানে গড়ে তোলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স।
মেহেরপুর খুলনা থেকে উত্তর পশ্চিমে এবং কুষ্টিয়া থেকে দক্ষিণ পশ্চিমে, ২৩°৪৬'৩৪" উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৩৮'৩০" পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।[1] সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এর গড় উচ্চতা ২১ মিটার এবং আয়তন ১৫.৯ বর্গকিলোমিটার। ভূসংস্থান অনুসারে এটি সমতলভূমিতে অবস্থিত হলেও উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে কিছুটা ঢালু। বছরের অধিকাংশ সময়ই এখানে ক্রান্তীয় গরম এবং শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে। মেহেরপুরের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭.১° সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.২° সেলসিয়াস। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত এখানেও এপ্রিল থেকে জুন হল সবচেয়ে উষ্ণতম মাস এবং ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারী হল সবচেয়ে শীতলতম মাস। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৪৬৭ মি.মি।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মেহেরপুরের জনসংখ্যা ৪৩,১৩৩ জন।[2] যার মধ্যে পুরুষ ২১৭৮৪ জন এবং নারী ২১৩৪৯ জন। নারী ও পুরুষের লিঙ্গ অনুপাত হল ১০০ঃ১০২, যেখানে জাতীয় লিঙ্গ অনুপাত হল ১০০.৩ এবং জাতীয় নগরাঞ্চলীয় লিঙ্গ অনুপাত হল ১০৯.৩। মেহেরপুর শহরের স্বাক্ষরতার হার ৬৬.৩%, যেখানে জাতীয় নগরাঞ্চলীয় স্বাক্ষরতার হার ৫৯.৪%।
১৮৬৯ সালে ব্রিটিশ আমলে মেহেরপুর পৌরসভা গঠিত হয়েছিল। পাকিস্তান শাসনামলে বেসিক ডেমোক্রেটিক অর্ড্যার, ১৯৫৯ অনুযায়ী ১৯৬০ সালে মেহেরপুর টাউন কমিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ লোকাল কাউন্সিল অ্যান্ড মিউনিসিপাল কমিটি (অ্যামেমেন্ট) অর্ডার, ১৯৭২ অনুযায়ী টাউন কমিটিকে মেহেরপুর পৌরসভায় রুপান্তর করা হয়।
মেহেরপুর পৌরসভা ৯ টি ওয়ার্ড এবং ৭১টি মহল্লা নিয়ে গঠিত। প্রতি ওয়ার্ডের জন্য সরাসরি ভোটে নির্বাচিত একজন কাউন্সিলর থাকেন। পৌরসভার প্রধান হলেন মেয়র।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.